Pages

Saturday, June 30, 2012

পবিত্র বেদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার

অগ্নি সম্পদ 



"বেদ আমাদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ ,বিভিন্ন 
অপপ্রচার এবং স্বার্থন্বেষি দের চক্রান্তে আমাদের মধ্যে একটি দৃঢ় ধারনা হয়েছে যে বেদে ব্রাহ্মন ছাড়া সকলের অধিকার নাই ।এট পুরোটাই ভুল কারন যর্জুবেদ বলা হয়েছে

ওঁ যথেমাং বাচং কল্যানীমাবদানি জনেভ্যঃ ।
বহ্ম রাজন্যাভ্যাং শূদ্রায় চার্য্যায় চ স্বায় চারণায়
।।
প্রিয়ো দেবানাং দক্ষিণায়ৈ দাতুরিহ ,
ভূয়াসময়ং মে কামঃ সমৃধ্যতামুপ মাদো নমতু ।।
যজুর্বেদ ২৬/২

অনুবাদ :হে মনুষ্যগন
আমি যেরূপে ব্রাক্ষন ,ক্ষত্রিয় ,বৈশ্য ,শূদ্র
স্ত্রীলোক এবং অন্যান সমস্ত জনগনকে এই
কল্যানদায়িনী পবিত্র বেদবানী বলিতেছি ,তোমরাও
সেই রূপ কর ।যেমন বেদবানীর উপদেশ
করিয়া আমি বিদ্বানদের প্রিয় হয়েছি ,তোমরাও
সেরুপ হও ।আমার ইচ্ছা বেদ বিদ্যা প্রচার হোক ।
এর দ্বারা সকলে মোক্ষ এবং সুখ লাভ করুক ।

এখানে দেখা যাচ্ছে বেদের সত্যদ্রষ্টা ঋষি বলছেন
ব্রাহ্মন ,ক্ষত্রিয় ,বৈশ্য ,শূদ্র স্ত্রীলোক
এবং অন্যান্য সকল জনগনের জন্যই এই পবিত্র
বেদবানী ।সুতরাং বেদ মন্ত্র উচ্চারনে সকলেরই
সমান অধিকার ।
সব থেকে মজার বিষয় হল বেদের মন্ত্র
দ্রষ্ট্রা ঋষিদের মধ্যে মহিলা ঋষিও রয়েছেন যেমন

১/ ১ম মন্ডল১৭৯সূক্তের
দেবতা রতি ,ঋষি অগস্ত্যের পত্নী লোপামুদ্রা ।

২/ ৫মন্ডল ২৮সুক্তের
দেবতা অগ্নী ,ঋষি অত্রিকন্যা বিশ্ববারা ।

৩/ ৮মন্ডল ৯৬ সুক্তের
দেবতা ইন্দ্র ,ঋষি অত্রি কন্যা অপালা ।

৪/ ১০মন্ডল ৩৯ ও ৪০ সুক্তের
দেবতা অশ্বিদয় ,ঋষি কক্ষিবত্ কন্য ঘোষা ।

৫/ ১০মন্ডল ৮৫সুক্ত যা বিবাহ সূক্ত বলে খ্যাত
তার ঋষি সাবিত্রি সূর্যা ।

৬/ ১০মন্ডল ১২৫সুক্তের
দেবতা আত্মা ,ঋষি অশ্ভৃণ কন্যা বাকৃ

৭/ ১০মন্ডল ১৮৫ সুক্তের
দেবতা সপত্নীবাধন ,ঋষি ইন্দ্রানী ।
আমরা উপরে পেলাম সাত জন
মহিলা ঋষি যথাক্রমে :লোপামুদ্রা ,বিশ্ববারা ,অপালা ,ঘোষা ,সূর্যা ,বাকৃ
এবং ইন্দ্রানী ।আমাদের একটা প্রচলিত
কথা আছে যে বেদে মেয়েদেরও অধিকার নেই ।
এটা আসলে ঠিক নয় ,কারন দেখা যাচ্ছে বেদের
মন্ত্রদ্রষ্ট্রা ঋষিদের মধ্যে নারীরাও রয়েছন ।
যাদের অধিকারই নাই তারা ঋষি এবং মন্ত্রদ্রষ্ট্রা
হন কেমন ?আসলে এগুলো অসাধু মহলের কারসাজি ।
এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে ।

তাহলে উপরক্ত প্রমান অনুসারে আমরা অবশ্যই
বলতে পারি বেদে সকলেরই সমান অধিকার ।নমষ্কার
সবাই কে ......"।

Friday, June 29, 2012

কার্তিকের বাহন ময়ূর কেন ?



কার্তিক সৌন্দর্যের প্রতিমূর্তি। অপর দিকে সে সৌন্দর্যের আর ও উতকর্ষ সাধনে পক্ষীকুলের মধ্যে আরেক সুন্দর যুক্ত হয়েছে এক সঙ্গে। উভয়ের এ মিলন সৌন্দর্যকে অধিকতর বাড়িয়ে দিয়েছে।
কিন্তু সৌন্দর্যই একে অপরকে কাছে আনেনি।ময়ূর এবং মোগর সমবর্গীয় পাখি।পন্ডিত চানক্য ময়ূর আর মোগরের চারটি গুনের কথা উল্লেখ করেছেন।গুনগুলো হচ্ছে -
(১)যুদ্ধ
(২)প্রাতরুত্থান
(৩)স্বজাতি প্রীতি
(৪)স্ত্রী রক্ষা
অর্থাত্‍ ময়ূর আর মোগরের দিকে যদি আমরা দৃষ্টি দেই তাহলে উপরোক্ত চারটি গুণ সহজেই তাদের মাঝে অবলোকন করি।আর এ গুনগুলো যদি বিশ্লেষন করি তাহলে আমরা লক্ষ্য করি যে প্রতিটি গুন বিরাজিত থাকে একজন ক্ষত্রিয়ের মধ্যে।তাই ক্ষত্রিয়ের প্রতীক শ্রী শ্রী কার্তিকের বাহন হিসাবে যথার্থ বৈ কি ময়ূর।

ময়ূর সর্ম্পকে এখানে আরো বলা যায় ময়ূর তার পুচ্ছ দিয়ে শুধু সৌন্দর্যই প্রকাশ করে না - এটাকে ঢাল হিসাবেও ব্যবহার করে। সে হিংস্রতার প্রতীক সর্পের হন্তা। সাপের সাথে ময়ূরের যুদ্ধ কৌশল দর্শনীয়।

কার্তিকের বন্দনায় আমাদের মধ্যে জাগরুক হোক , ক্ষাত্রশক্তির সে অমোঘ ধারা যা আজকের হিন্দুর জন্য অতীব প্রয়োজন।

কার্তিকের প্রণাম মন্ত্র -
কার্তিকেয় মহাভাগ দৈত্যদর্পনিসূদন।
প্রণতোহহংমহাবাহো নমস্তে শিখিবাহন॥

Thursday, June 28, 2012

বিমান বন্দরে যুদ্ধ

সুশান্ত বান্দা




ছবিটি দেখে মনে হতে পারে কোন বিশাল আকৃতির স্টাচু কোন এক সুবিশাল যাদুঘর প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে । কিন্তু দেখে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি কোন যাদুঘরে নয় বরঞ্চ একটি বিমানবন্দরেই অবস্থিত । তাও আবার দেবতা এবং অসুরদের মধ
্যে অমৃত নিয়ে যুদ্ধের সময় কূর্ম অবতারের কাহিনীটি তুলে ধরা হয়েছে । তবে সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল এ সুবিশাল স্ট্যাচুটি অবস্থিত থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের সুবর্ণভূমি  বিমান বন্দরে । কোন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সনাতন ধর্মের এরকম প্রদর্শনী বোধহয় আর কোথাও নেই ।

Wednesday, June 27, 2012

ভারতীয় নাগরিক আবু হামজাই পাকিস্তানী সন্ত্রাসীদের সহায়তা করে ভারতীয়দের মারতে





ভারতীয় উচ্চারনে
,
সে মুম্বাই হামলাকারীদের নির্দেশ দেয় এবং যখন তারা মারা যাচ্ছিল, তখন সান্ত্বনা দেয়গত সপ্তাহে নতুন দিল্লীতে গ্রেফতার হওয়ার পর এখন আবু হামজা পুলিশী হেফাজতে রয়েছে

সৈয়দ জাবিউদ্দিন আনসারী, যে আবু হামজা নামেও পরিচিত এবং আবু জিন্দাল-কে লস্কর-ই- তৈয়বা (এল ই টি)-এর হয়ে কাজ করার মূল পরিকল্পনাকারীহিসাবে মনে করা হয়, যারা এই হামলা পরিচালনা করেছিলসে তাদেরকে লক্ষ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করেছিল, নির্দেশ প্রদান করেছিল, এবং উৎসাহব্যঞ্জক কথার মাধ্যমে তাদের মনোবল চাঙ্গা করেছিল
পরিকল্পনাকারী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানোর ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারন তার অভিজ্ঞতা, শিক্ষা এবং কাজের প্রতি তার শপথের কারনেসে ব্যক্তিগতভাবে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষন দিয়েছে এবং একজন ভারতীয় হওয়ার কারনে, মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানের অবস্থানের ব্যাপারে তাদের নির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল”, খবর সাউথ এশিয়াকে বলেন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষীর প্রধান, জে.কে. দত্ত
এটা আবু হামজার কণ্ঠস্বর বলে সন্দেহ করা হচ্ছে যা ফোনের জব্দ করা আলাপচারিতা থেকে শোনা যায় সে ১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দলকে নির্দেশনা দিচ্ছেতার উচ্চারন ভঙ্গি শুনে অনেকেই চমকে যায়, কারন মনে হচ্ছে যে, কথাগুলো আসছে কোন ভারতীয় কারো কাছে থেকে
জব্দ করা রেকর্ড যখন টেলিভিশনে প্রচার করা হয়, দর্শকশ্রোতা মর্মাহত হয় যখন তারা ভারতীয় উচ্চারন ভঙ্গির উর্দু ভাষী সন্ত্রাসীদের ভয়ংকর বার্তা দ্বারা উদ্বুদ্ধ করছেঃ এটা কেবল একটা সূচনা; আসল সিনেমা শুরু হতে এখনো বাকী আছে
দত্তের মতে, সে সন্ত্রাসের কণ্ন্ঠধ্বনি", “এই লোকটি সন্ত্রাসীদের অব্যাহতভাবে নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিল যে কি করতে হবে [এবং] কাকে হত্যা করতে হবে, এবং তাদের অব্যাহতভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছিল
কোন এক সময়, তাকে শোনা যায় যে সে একজন সন্ত্রাসীকে, যে তার আহত হওয়ার কারনে মারা যাচ্ছে, তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে, “তুমি তোমার সফল ভাবে অর্জিত জান্নাত ( স্বর্গ) পাবে
যদিও অন্যান্য পরিকল্পনাকারীদের কণ্ঠস্বর ও জব্দ করা হয় এবং চালানো হয় টেলিভিশনে, কেবল একজনই হিন্দী শব্দ যেমন প্রশাসন”-এর জন্য কর্তৃপক্ষ” , “সতর্কহওয়ারজন্য সাবধানএবং ধৈর্যহওয়ার জন্য ধৈর্য্যশব্দগুলি ব্যবহার করে
ভারতের ফেডারেল ইন্টেলিজেন্স ব্যূরো এর ভাষা বিশেষজ্ঞ হামিদ খান খবর কে বলেন,“অন্যান্যরা পাঞ্জাবী-উচ্চারনে যে উর্দু বলে তা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পাকিস্তানে সাধারনভাবে শোনা যায়
২১ শে জুন নতুন দিল্লীর ইন্দিরা গান্ধী বিমান বন্দর হতে গ্রেফতার এবং বর্তমানে অজানা কোনস্থানে রাখা হয়েছে, হামজাকে, যার বয়স ত্রিশের মত হবে বলে ধারনা করা হয়সে মহারাষ্ট্র রাজ্য, যার রাজধানী মুম্বাই, তার বিদ জেলার জিওরাইয়ের বাসিন্দা
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া, সে একসময় একজন ইলেক্ট্রিশিয়ান হতে চেয়েছিল কিন্তু সন্দেহ করা হয় যে ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার কারনে প্রলুব্ধ হয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতার সাথে যুক্ত হয়, যে ঘটনায় ৭৯০ জন মুসলমান এবং ২৫৪ জন হিন্দু মৃত্যুবরণ করেসে প্রথমে স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়াতে নাম লেখায়, যে দলটি ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে সংঘঠিত সন্ত্রাসী হামলার এক সপ্তাহের মধ্যেই নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়তার পর, কর্তৃপক্ষ বলে, সে ইন্ডিয়ান মুজাহেদীন-এ যোগ দেয় এবং শেষ পর্যন্ত, এলইটি-তে
তাকে মনে করা হয় যে, মুম্বাইয়ের পূর্বে সে কমপক্ষে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানোতে ভূমিকা পালন করেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, ব্যঙ্গালোরের চিন্বাস্বামী স্টেডিয়ামে সংঘঠিত বিস্ফোরন
মটরচালিত নৌকায় করে ভারতের অর্থনীতির রাজধানী শহরে অবতরন করা ১০ জন এল ই টি-র সক্রিয় সদস্য দ্বারা মুম্বাইয়ের হামলা তিনরাত ও দুই দিনেরও বেশী সময় ধরে চলেতারা ১১টি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে হামলা চালায়, যার মধ্যে রয়েছে, সৌন্দর্য মন্ডিত তাজ মহল হোটেল, আর এ হামলায় মারা যায় ১৬৬ জন আর আহত হয় আরো ৩০৮ জন
পাকিস্তানী আমেরিকান, ডেভিড কোলম্যান হেডলি যে এল ই টি-এর সাথে যোগসাজশে মুম্বাই হামলার পরিকল্পনা করে, তার সাথে ছিল ১০ ব্যক্তি বিশিষ্ট সন্ত্রাসী দলের একমাত্র জীবিত সদস্য, আজমাল কাসাব, তারা উভয়েই হামজার ভূমিকার ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে বলে ভারতের নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানায়
ইন্ডিয়ান মুজাহেদীনের সক্রিয় সদস্য, এহতেশাম, যে দিল্লীতে বর্তমানে পুলিশী হেফাজতে আছে, সেও হামজার জড়িত থাকার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে


এদিকে ২৬/১১ কাণ্ডে ধৃত 'প্রাইজ ক্যাচ' আবু জিন্দাল মুখ খুলতে না খুলতেই পিঠ বাঁচাতে আসরে নামলেন পাক প্রশাসনের কর্তারাবুধবার বিকেলে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রেহমান মালিক সাড়ে তিন বছর আগে যা বলেছিলেন সেই একই সুর বজায় রেখে একইভাবে বললেন, ভারতের হাতে ধৃত জঙ্গি কোনওভাবেই পাকিস্তানি নাগরিক নয়ওই জঙ্গি যা বলছে তা ভিত্তিহীন ও বানানো২৬/১১ কাণ্ডের সঙ্গে পাক সরকার বা পাক প্রশাসনের কোনও অংশের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগ ছিল নাথাকার প্রশ্নও ওঠে নাএমনকী আইএসআই-এর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তাও সর্বৈব মিথ্যামালিক জানান, আইএসআই পাকিস্তানের রক্ষাকর্তাপাক প্রতিরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অংশকিন্তু কোনও দেশে নাশকতা চালাতে আইএসআই কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে উৎসাহ দেয় না

ঠাকুর ঘরে কে? আমি তো...

এদিন মালিক ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে একহাত নিয়ে বলেন, উনি একতরফাভাবে আইএসআইকে টার্গেট করে পর পর মিথ্যে অভিযোগ করে যাচ্ছেনঅথচ আইএসআই বা জামাত উদ দাওয়ার প্রধানের বিরুদ্ধে কোনও অকাট্য প্রমাণ এখনও ভারত তুলে দিতে পারেনিতাছাড়া মুম্বই হামলার সঙ্গে কোনও পাকিস্তানি নাগরিক ও পাক সংস্থা কোনওভাবেই জড়িত নয়
এদিন রেহমান মালিক যা বলেছেন তা ভারতকে ক্রুদ্ধ করার পক্ষে বা চটিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্টযা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট করতে বা সংঘাত বাড়াতেই মদত দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলরেহমান মালিক আজ ইসলামাবাদে জানিয়েছেন, ভারত ২৬/১১ নিয়ে যে তথ্য প্রমাণ দিয়েছে তা যথেষ্ট নয়এমনকী বিশ্বাসযোগ্যও নয়তাই তার ভিত্তিতে পাকিস্তান কোনও তদন্ত করবে নাশুধু আইএসআই কেন? যে কাউকে দোষী বলে দেওয়া খুব সহজকিন্তু তা প্রমাণ করা খুবই কঠিনভারত যা বলছে তা প্রমাণ করতে পারছে কই?
এদিন, চিম্বরম দিল্লিতে জানান, সৌদি থেকে ধৃত আবু হামজা ওরফে আবু জিন্দাল ওরফে সৈয়দ জাবিউদ্দিন আনসারি এনআইএ-র জেরার মুখে জানিয়েছে, ২৬/১১-এর ঘটনায় জড়িত ১০ লস্কর জঙ্গিকে ২০০৮-এর ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর যে ৬ জন প্রশিক্ষণ দেয় তাদের মধ্যে সে ছিল একজনআসলে ১০ জন উর্দুভাষী জঙ্গিকে আবু হামজাই হিন্দিতে কথা বলতে শেখায়তাকে জেরা করে আরও জানা গেছে যে কন্ট্রোল রুমে আইএসআই আধিকারিকরাও ছিলেনএই পরিস্থিতিতে কাসব ও হামজাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করলে হামলা সম্পর্কে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছে মুম্বই পুলিশশুধু তাই নয়, আইএসআই-এর সক্রিয় মদতে ও সুচারু পরিকল্পনার ফসল হল ২৬/১১
প্রসঙ্গত, গত এক বছর ধরে আবু জিন্দালকে ধরার চেষ্টা করে অবশেষে সাফল্য এসেছেজিন্দাল পাক সম্পর্কের কথা ফাঁস করে দেওযায় আপাতত যথেষ্ট চাপে পাক সরকারগতকালই পাক অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী রেহমান মালিক ভারতের কাছে আবু জিন্দাল সম্পর্কে তথ্য জানতে চেয়েছেনচিদম্বরমের মতে, ভারতের চাহিদা মতই জঙ্গিদের ভয়েস স্যাম্পেল পাঠিয়ে পাকিস্তান প্রতিশ্রতি রক্ষা করলে তবেই এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবেএদিকে, ঔরঙ্গাবাদে সেনা অস্ত্রাগারে হামলা এবং ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জার্মান বেকারিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জিন্দালকে জেরা করতে অনুমতি পাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে মুম্বই পুলিশের সন্ত্রাস দমন স্কোয়াড
অন্যদিকে, ওড়িশা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে নাশকতার ছক কষছে ২৬/১১ ঘটানো লস্কর-এ-তৈবাঅসমের গোয়েন্দা পুলিশ এ ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছে রাজ্য সরকারকেরাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলা প্রশাসনগুলি অসমের উপদ্রুত অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেসম্ভাব্য হামলা সংক্রান্ত তথ্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছেওওড়িশা সরকার ও অসম সরকারকে এ বিষয়ে চুড়ান্ত সতর্কতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছেঅসমের সীমান্তবর্তী ও ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাসজাগ করা হয়েছে পুলিশকেএনআইএ'র ধারণা, আইএসআই-এর মদতে লস্কর জঙ্গিরা পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে বা মুম্বই সন্নিহিত পশ্চিম উপকূল দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবে নাকারণ এখন পশ্চিম উপকূল ও সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তার কড়াকড়ি রয়েছেবরং মায়ানমার বা বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে ঢুকে স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনগুলির সাহায্যে বড় হামলা বা বিস্ফোরণের ছক কষছে

আমি গর্বিত কারণ আমি হিন্দু





আমি গর্বিত কারণ আমি হিন্দু । এর অর্থ হল , 

আমি গর্বিত , কারণ আমি পৃথিবীর প্রাচীনতম আধ্যাত্মিক আদর্শের গোষ্ঠীভুক্ত । 
আমি গর্বিত , কারণ সারা পৃথিবীতে আমরাই প্রথম জ্ঞানের আলো জ্বেলেছি । 
আমি গর্বিত , কারণ আমরাই প্রথম জগতের মানুষকে তার অমৃতেরঅধিকার সম্পর্কে অবহিত করেছি । 
আমি গর্বিত , কারণ আমি ঋষির উত্তরাধিকারী ।

আমাদের ধর্মের নাম ' সনাতন ধর্ম' । নামটিকে বিশ্লেষণ করলে দুটি শব্দ পাই ,- ' সনাতন' ও ' ধর্ম ' । সনাতন হল তাই যা সর্বদাই সমভাবে সত্য । আমরা ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে যে সত্য উপলব্ধি করি তা আপেক্ষিক । একটি মাছি তার পুঞ্জাক্ষি দিয়ে জগৎকে যেরূপে দেখবে , মানুষের উন্নত চোখ সেরূপে দেখবেনা । অথচ উভয়েই একই জগৎকে দেখছে । এই দেখা নিরপেক্ষ সত্য নয় , এটা আপেক্ষিক সত্য । যে দেখছে শুধু তার সাপেক্ষেই সত্য । এভাবে আমরা নিজেদের ইন্দ্রিয় মন ও বুদ্ধি দ্বারা সীমায়িত আপেক্ষিক জগতে বাস করি ও আমাদের অনুভূত আপেক্ষিক সত্যকেই প্রকৃত সত্য বলে মনে করি

আমাদের প্রাচীন মুনি ঋষিরা বুঝেছিলেন - যতদিন মানুষ ইন্দ্রিয়ের দ্বারা আবদ্ধ ততদিন সত্যলাভ অসম্ভব । তাঁরা ইন্দ্রিয়ের বহির্দেশে যাবার উপায় আবিষ্কার করেছিলেন । এভাবেই জন্ম হয়েছে বেদান্ত বা উপনিষদের । মুনি ঋষিদের অতিচেতন স্তরের উপলব্ধির প্রকাশই উপনিষদ । ইন্দ্রিয়াতীত এবং দেশ-কাল নিরপেক্ষ হওয়ায় তা ' সনাতন ' ।

এবার আসি ' ধর্ম ' কথাটির প্রসঙ্গে । আক্ষরিক অর্থ যাই হোকনা কেন , আধ্যাত্মিক পরিভাষায় ' ধর্ম ' হল একটি বিকাশের প্রক্রিয়া । পাশবিক মানুষের আনন্দ শুধু শরীরগত । শরীরের সুখ বা ইন্দ্রিয়চরিতার্থতা ছাড়া সে আর কিছুই বোঝেনা । আর একটু উন্নত হলে মানুষ মানসিক আনন্দলাভের অধিকারী হয় , তখন সে সাহিত্য রস , শিল্পের রস অনুভব করতে পারে । এটাকে মানবীয় স্তর বলা যায় । আরও উন্নত অবস্থায় মানুষ ঈশ্বরীয় আনন্দে বিভোর হয় , ধ্যানাবস্থায় শান্তির অপূর্ব পরিবেশ অনুভব করতে পারে ; যাকে বলা যায় দৈবী স্তর । এভাবে উন্নত হতে হতে মানুষ যখন দেহ , মন ইন্দ্রিয়ের গণ্ডি অতিক্রম করে তখনই সে লাভ করে শাশ্বত জ্ঞান বা সনাতন সত্য ।

সে অনুভব করে সে ক্ষুদ্র নয় সে দেহ নয় , মন নয় এমনকি চিন্তা চেতনাও নয় , সে আত্মা । সে এক অনন্ত , অখণ্ড অস্তিত্ব । মানুষ তখন তার ক্ষুদ্রতার খোলস পরিত্যাগ করে অনন্ত ' আমিত্বে ' লীন হয়ে যায় । ' নির্গচ্ছতি জগজ্জালাৎ পিঞ্জরাদিব কেশরী ' -- সিংহ যেমন পিঞ্জর ভেঙ্গে ফেলে বেরিয়ে যায় ঠিক তেমনি সে এই জগৎ-জাল ভেদ করে মুক্ত হয়ে যায় । ধর্ম হল এই রূপান্তরের প্রক্রিয়া , যা পশুকে মানুষে , মানুষকে দেবতায় এবং দেবতাকে ঈশ্বরে বিকশিত করে ।

ঋষিদের আবিষ্কৃত এই সত্যলাভের পথই সনাতন ধর্ম । প্রাচীন সিন্ধুনদের তীরবর্তী আর্যজাতি এর আবিষ্কারক বলে এর আরেকনাম হিন্দু ধর্ম । সিন্ধু থেকেই হিন্দু কথাটির উৎপত্তি ।


– তাপস ঘোষ


আমি হিন্দু ,আমি একবার নয় ,বারবার চিত্‍কার করে বলব পৃথিবীবাসি শোন আমি হিন্দু ।আমি একবার হিন্দু হতে , জন্ম জন্মান্তর ঘুরে বেড়াব এই পৃথিবীর পথে ..........


Tuesday, June 26, 2012

ইসলামিক সন্ত্রাসীদের হাতে হিন্দু মন্দির ধ্বংসের কিছু চিত্র

অভিমন্যু 




২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইসলামিক সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে  ধ্বংস হনুমান মন্দির


মুসলমানরা প্রায়ই মিথ্যাচার করে তারা নাকি হিন্দু মন্দির ভাঙ্গে না।

দেখুন ইসলামিক সন্ত্রাসীদের হাতে হিন্দু মন্দির ধ্বংসের কিছু চিত্রঃ

১। মন্দির ধ্বংসের পর সিলেটে গীতা পুরানো 

২। ২০০৩ সালে ১ রাতে ৩ টি মন্দির ধ্বংসের কথা 

৩। মুসলিমদের হাতে শিব মন্দির ধ্বংস

৪। ভারতীয় মুসলমানদের হাতে ৩ মন্দির ধ্বংস 

৫। মুসলিমরা হনুমান মন্দির ভেঙ্গেছে 

৬। মন্দির ধ্বংস করে ঈদ উযযাপন ২০১১

৭। মন্দির ধ্বংস করে ঈদ উযযাপন ২০১০

৮। মানিকগঞ্জে মন্দির ধ্বংস ১

৯। মানিকগঞ্জে মন্দির ধ্বংস ২

১০। ১০০ বছরের পুরাতন হিন্দু মন্দির ধ্বংস করেছে মুসলিমরা 
১১। ছবিসহ তথাকথিত শ্রেষ্ঠ ধর্মের বান্দাদের কাজ দেখুন 


১২। নরসিনদিতে মুসলিমদের হাতে হিন্দু মন্দির ধ্বংস 

১৩। ২০০ বছরের পুরাতন কালি মন্দির ভেঙ্গেছে বাংলাদেশি মুসলিমরা 

১৪। ৮৭ বছরের পুরাতন মন্দির ভাঙতে চায় পাকিস্তানি জেহাদিরা 

১৫। মুসলিমদের হাতে ধ্বংস মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের মন্দির

১৬। নারায়ণগঞ্জে মন্দির ধ্বংস 

১৭। গুজরাটে ভারতীয় মুসলিমদের হাতে ধ্বংস হিন্দু মন্দির 

১৮। ভারতীয় মুসলিমদের তোষণ নীতির ফলঃ আরেকটি মন্দির ধ্বংস 
যারা তর্ক করবে তাদের মুখের উপর ছুড়ে দিবেন।


Monday, June 25, 2012

দশবিধ সংস্কার

•••দশবিধ সংস্কার•••
মনুসংহিতা, যাজ্ঞবাল্ক সংহিতা পরাশর সংহিতা, প্রভূতি স্মৃতিশাস্ত্রে দশকর্মের বিধি-বিধান বর্ণিত হয়েছে। 

•গর্ভাধান - 
পিতা-মাতার দেহে ও মনে যেসব দোষ- গুণ থাকে সেগুলো সন্তানের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়।এটা দেখে আর্য- ঋষিগণ গর্ভাধান বিধি প্রবর্তন করেছেন। শুভলগ্নে সন্তানের জন্মদানের জন্য যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান তাকে গর্ভাধান। 

•পুংসবন- 

পুত্র সন্তানের কামনায় যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান করা হয়, তাকে পুংসবন বলে। 

•সীমন্তোন্নয়ন- 

গর্ভাবস্থার অন্যতম সংস্কার সীমন্তোন্নয়ন।গর্ভধারনের পর চতুর্থ, ষষ্ঠ বা অষ্টম মাসে এই সংস্কার করা হয়। 

•জাতকর্ম- 
সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র এ সংস্কার করতে হয়।এ সংস্কার কার্য হল-পিতা প্রথমত পুত্রকে স্বর্ণ দিয়ে পুত্রের মুখে মধু ও ঘৃত দেন এবং তার সাথে মন্ত্রোচ্চারণ করেন। 

•নামকরণ- 

সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার দশম,একাদশ, দ্বাদশ বা শততম দিবসে নামকরণ করতে হয়।শৈশব সংস্কারের প্রথম সংস্কার সন্তানের নাম রাখার অনুষ্ঠানই নামকরণ সংস্কার।

•অন্নপ্রাশন- 
পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে যষ্ঠ অষ্টম মাসে এবং কন্যা সন্তানের জন্ম থেকে পঞ্চম বা সপ্তম মাসে প্রথম ভোজন করার জন্য যে মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান করা হয় তাকে অন্নপ্রাশন বলে।

•চূড়াকরণ- 
গর্ভাবস্থায় সন্তানের মস্তকে যে কেশ উৎপন্ন হয়, তা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানসহ মুণ্ডনের নাম চূড়াকরণ।

•উপনয়ন
উপনয়ণ সংস্কারে বিদ্যা শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীকে প্রথম গুরুর কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ‘উপনয়ন’ শব্দটির মানেই নিকটে নিয়ে যাওয়া। প্রচলিত একটি অর্থে উপনয়ন বলতে বোঝায় যজ্ঞপৌত বা পৈতা ধারণ।

•সমাবর্তন
অধ্যায়ন শেষে গুরু কর্তৃক শিষ্যকে গৃহে ফেরার অনুমতি প্রদান উৎসবকে সমাবর্তন বলে।উপনয়ন শেষে গুরুগৃহে বাস করাই ছিল রীতি।সেখানে পড়াশুনা শেষ করে গুরুর অনুমতি নিয়ে গৃহে প্রত্যাগমন করতে হত।বর্তমান কালে সাধারণত গুরুগৃহে থেকে বিদ্যা বিদ্যাশিক্ষার প্রচলন নেই। সে কারণে এ সংস্কারটি এখন পালিত হয় না। তবে বর্তমানে ‘সমাবর্তন’ নামটি আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র বিতরণ উৎসব এখন সমাবর্তন উৎসব নামে উদযাপিত হয়। যারা স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের উপাধি পত্র প্রদান উৎসবই পূর্বকালের গুরুগৃহ ত্যাগের উৎসব বলে মনে করা যেতে পারে।

•বিবাহ- 
যৌবন অবস্থার সংস্কার বিবাহ সংস্কার বিবাহ। বিবাহের দ্বারা পুরুষ সন্তানের পিতা হন। নারী হন মাতা । বিবাহের মাধ্যমে পিতা, মাতা, পুত্র কন্যা প্রভূতি নিয়ে গড়ে ওঠে একটি পরিবার। পরিবারে সকলে মিলেমিশে সুখ-দুঃখ ভাগ ও ভোগ করে জীবন-যাপন করে। বিবাহে যেমন কতকগুলো শাস্ত্রীয়বিধি বিধান পালিত হয়, তেমনি পালিত হয় কতগুলো লৌকিক ও স্থানীয় স্ত্রী- আচার।

বিবাহ উচ্চারণ করা হয় :-
যদেতৎ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম।
যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব।। 


অর্থাৎ তোমার হৃদয় আমার হোক আমার হৃদয় তোমার হোক। এ মন্ত্রের মধ্য দিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে গভীর ঐক্য গড়ে ওঠে। মনুসিংহতায় সেকালের অবস্থা অনুসারে ৮ রকমের বিবাহ- পদ্ধতির বর্ণনা আছে। যথা- ব্রাহ্ম, দৈব্য, আর্ষ, প্রজাপাত্য, আসুর, গান্ধর্ব, রাক্ষস ও পৈশাচ। কন্যাকে বিশেষ বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদন করে স্বর্ণ অলংকার ইত্যাদি দ্বারা সজ্জিত করে বিদ্বান ও সদাচর সম্পন্ন বরকে স্বয়ং আমন্ত্রন করে যে কন্যা দান করা হয় তাকে ব্রাহ্মবিবাহ বলে। “তোমরা উভয়ে সুখে গার্হস্থ্য ধর্মের আচরণ কর”- এই আর্শীবাদ করে যথাবিধি অলংকার ইত্যাদি দ্বারা অর্চনাপূর্বক বরকে যে কন্যা দান করা হয় তাকে প্রজাপত্য বিবাহ বলে।বিবাহের নানা প্রকার পদ্ধতি সেকালের সামাজিক প্রথাকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। বিবাহ-পদ্ধতি সমূহের মধ্যে ব্রাহ্ম বিবাহ পদ্ধতিটিই শ্রেষ্ঠ।


(সংগৃহীত এবং সংকলিত) 
রথ যাত্রা পেজ হতে 

এই পৃথিবী কি পূর্বে ভারতবর্ষ ছিল ??

এই পৃথিবী কি পূর্বে ভারতবর্ষ ছিল ??
Susanta Banda

কখনো কি প্রশ্ন জাগে না যে, বিচিত্র রকমের স্থান বা দেশ কেন হল । কেনই বা প্রতিটি দেশ ইউরোপ আফ্রিকার মত প্রাচুর্যময় নয় । কোথাও সমৃদ্ধশালী কোথাও কোন প্রাচুর্যের ছোঁয়া নেই । এর পেছনে কিই বা কারণ থাকতে পারে । আরও একটা প্রশ্ন থাকতে পারে তা হল এসমস্ত বিচিত্র দেশের নামকরণ নিয়ে । তাই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর বৈদিক শাস্ত্র থেকে এর সঠিক রহস্য গ্রুপের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল । বৈদিক শাস্ত্র মতে এক সময় সমগ্র পৃথিবীকেই ইলাবৃত বর্ষ বা ভারতবর্ষ নামে ডাকা হত । এই পৃথিবীর শাসনভারের দায়িত্ব ছিল ইতিহাস বিখ্যাত অনেক অনেক রাজাদের হাতে । এক সময় ধীরে ধীরে সেই ভারতবর্ষ ভেঙ্গে গড়ে সাতটি পৃথক মহাদেশ এবং বহু দেশ । মূলত, ককেশাস নামক স্থানকে বলা হয় শ্বেত মানবদের উৎপত্তি উৎস হিসেবে । বর্তমান বিশ্বের পশ্চিমা জগতের যেসব সাদা লোকদের দেখতে পাওয়া যায় তাদের উত্তরসূরীদের বসতি ছিল এই ককেশাস (coucasus) নামক স্থানে । জিউস, মোসলেম এবং খ্রিষ্টানদের মতে এ স্থানেই ছিল স্বর্গের উদ্যান এটি হল আব্রাহামের বসতভূমি । যেটিকে ইন্দো ইউরোপীয়ান ককেশিয়ানদের পিতৃভূমি হিসেবে মনে করা হয় । তৈত্তিরীয় (Aitareya) উপনিষদে এ বিষয়ে বলা হয়েছে । ব্রহ্মার পুত্র মরিচীর পুত্র ছিল কশ্যপ মুনি । ১২০ মিলিয়ন বছর পূর্বে কশ্যপ মুনি ইন্দো-ইউরোপীয়ানদের পিতা হয়েছিলেন । এসমস্ত ইন্দো-ইউরোপীয়ানদের কিছু পৃথিবীর পশ্চিমে গেল আর কিছু গেল পূর্বে । কশ্যপ মুনি স্বয়ং ক্যাসপিয়ান সাগরের নিকটে ধ্যান মগ্ন হয়ছিল । যার বর্তমান নামকরণ অর্থাৎ ক্যাসপিয়ান সাগর ঐ কশ্যপ মুনির নামেই নামকরণকৃত । সূর্যদেব বিবস্বান ছিলেন কশ্যপ মুনির পুত্র যার স্ত্রী ছিলেন অদিতি । সূর্যদেবের অস্থিত্ব যে পশ্চিমা দেশেও ছিল তার প্রমাণ এখন পৃথিবীর অনেক স্থানে সূর্যদেবতাকে পূজার প্রচলন । কশ্যপ মুনি এবং দিতি থেকে সৃষ্ট দৈত্যরা তখন ইউরোপ জুড়ে বিস্তার লাভ করেছিল । বর্তমানের টাইটানস (Titans) এবং টিউটনস (Teutons) ডাচ এবং ডিউটস্চল্যান্ড (Deutschland) এ নামগুলো দেয়া হয়েছে ‘দৈত্য’ শব্দ থেকে । এ থেকে দৈত্যদের অবস্থান যে একসময় ছিল তার প্রমাণ মেলে । ব্রহ্মার আরেক পুত্র অত্রি থেকে সোম বা চন্দ্র হয় । চন্দ্রের পুত্র বুদ্ধের পুত্র ছিল পুরুরভ । এভাবে বংশানুক্রমে আয়ু নহুম এবং পরে যথাতির জন্ম হয় । যথাতির পাঁচ সন্তান ছিল । ‘যদু’ থেকে বেড়ে উঠে যদুবংশ যেখানে কৃষ্ণ বলরাম আবির্ভূত হয় এবং পুরু থেকে বেড়ে উঠে পুরুবংশ (যে বংশে কৌরব এবং পান্ডবরা জন্মেছিল) যারা হল ভীষ্ম, ধৃতরাষ্ট্র, অর্জুন, যুদিষ্টির, ভীম, দূর্যোধন এবং মহারাজ পরিক্ষিত জন্ম নেয় । পুরু তখন বর্তমান মিশর স্থানটি পেয়েছিলেন তার রাজ্যের শাসনভার হিসেবে । পুরুর পুত্র ছিল প্রভির এবং প্রভিরের পুত্র ছিল মানুষ্য (Manasyu) যাকে মেনেস নামে ডাকা হত । যিনি পশ্চিমা ইতিহাসবিদদের মতে মিশরের প্রথম বংশের প্রতিষ্ঠাতা । পুরুর বংশ এভাবে ফারাও রাজা পর্যন্ত অতিবাহিত হয়েছিল । মিশরকে অজপতি নামে নামকরন করা হয় । এই অজ জাতের পুত্র ছিল অজপতি । অপরদিকে অজ ছিল ভগবান শ্রী রামচন্দ্রের পিতামহ রামচন্দ্র আবির্ভূত হয়ছিল সূর্যবংশে, সূর্যদেবের আরেক নাম রবি । ‘র’ তখন মিশরে সূর্য বংশের একটি শাখার অন্তর্গত ছিলেন । সেখানকার রাজা হলেন রামেস । যেটি রাম-ইস ভগবান শ্রী রামচন্দ্র থেকেই নামকরণকৃত । পান্ডব পরিবারবর্গও একসময় মিশর এবং ইউরোপে এসেছিল যা এখন সাগরে নিমজ্জিত হয় । এভাবে পিরামিডের গায়ে বৈদিক সংস্কৃতির ছোঁয়া এখনও দেখতে পাওয়া যায় তার বিবরণ আমি পরবর্তী পোষ্টে দিব ।
পরবর্তীতে তারা বর্তমানের ইসরাইলে গমন করে । যেটিকে বিশ্লেষন করলে দাঁড়ায় ইশ্বরাভলয় (ভূমি) তার অর্থ ইশ্বরের বাসস্থান । সুতরাং ইসরাইল ও তখন বৈদিক সংস্কৃতির সুরে নামকরণকৃত হয়েছিল । 
যযাতির তিনজন পুত্র বর্তমান ভারতের বাইরে যে দুটি রাজ্য পেয়েছিল সেগুলো হল তুর্কি এবং তুর্বাসা । যবনরা পেয়েছিল তুর্কি এবং তুর্বাসা পেয়েছিল ফার্সিয়া ইত্যাদি । মহাভারত অনুসারে (আদিপর্ব ৮৫.৩৪) তুর্বাসা দুর্যোধনের হয়ে কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধ করেছিল । অপরদিকে অনু পেয়েছিল গ্রীক এবং ইতালী । পরশুরামের বংশদূতরাও একসময় মিশরের রাজা ছিলেন । পরশুরাম ও যদু বংশজাত যাদের কিছু ইউরোপ এবং এশিয়াতেও এসেছিল । এর পরবর্তীতে বৈদিক সংস্কৃতির প্রধান নীতি বর্ণাশ্রম ধর্ম বিভিন্ন কারনে হারিয়ে যায় । মহাভারত (আদিপর্ব ১৭৪.৩৮) অনুসারে ভীম এবং সহদেব পুলিন্দ (গ্রীকদের) জয় করেছিল কেননা তার ধর্ম পরিত্যাগ করেছিল এর বাইরেও বিভিন্ন দেশে বর্তমান ক্ষেত্রেও সংস্কৃতির ব্যবহারটাও অপরিসীম । 
বর্তমান ‘নরওয়ে’ দেশটির নাম সংস্কৃত শব্দ ‘নরক’ থেকে এসেছে । ‘সোভিয়াত’ এসেছে ‘শ্বেত’ থেকে । ‘রাশিয়া’ ‘ঋষি’ থেকে এসেছে, এভাবে সাইবেরিয়া শব্দটিও সংস্কৃত থেকে আগত । ‘স্ব্যান্দিনাভিয়া’ ‘স্কন্দ’ থেকে এসেছে । যিনি দেবতাদের প্রধান কমান্ডার হিসেবে ছিলেন । (Viking এবং king) শব্দ দুটি এসেছে সিংহ থেকে পশ্চিমা দেশগুলোতে যে বৈদিক সংস্কৃতির বিদ্যমান ছিল তার প্রমাণ ইউরোপ জুড়ে আবিষ্কৃত কৃষ্ণ, শিব, সূর্যদেব সহ আরও বিভিন্ন মূর্তি । একসময় দেবতা এবং অসুরদের সঙ্গে প্রায় বার বার যুদ্ধ হয়েছিল । পরে ককেশাসের পূর্বদিক দেবতাদের এবং পশ্চিম দিক অসুরদের দেয় । কিছু অসুর সেখানে অবস্থান করেছিল । ময়দানব তখন অসুরদের রাজ ছিলেন । তার স্থায়ী বসতি ছিল আলাতল লোক (ভূমন্ডলের ১০,৮৮,০০০ কি.মি. দক্ষিনে) যেখানে ফ্লায়িং সসার নির্মিত হয় । ময়দানবের অনুসায়ী মগরা তাদের সেই বসতির স্থানকে ‘অমরক’ (Amaraka) নামে ডাকত । কেননা অসুরেরা প্রয়ই মনে করে মূত্যু তাদের কিছুই করতে পারবে না । তাই তারা তাদের মাতৃভূমিকে স্বর্গ মনে করত । আর এজন্যই এই নাম পরবর্তীতে আমেরিগো ভেসপুচ্চি (Amerigo vespucci) এটিকে বর্তমানে আমেরিকা নামে পুনস্থাপন করে । এভাবে বংশগত দিক বিবেচনা করলে আমরা সবাই শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণের গোত্রের অন্তর্ভুক্ত । কেননা ব্রহ্মা উৎপত্তির উৎস তাই বলে । আর এ সমগ্র পৃথিবী যে একদম পুরোটাই ভারতবর্ষ ছিল তারও প্রমান খুব সহজেই পাওয়া যায় শাস্ত্র থেকে । উপরোক্ত গবেষণামূলক প্রতিবেদন থেকে অনেক গবেষকগণ স্বীকার করতে এখন আর দ্বিমত করে না ।
(বিঃ দ্রঃ- এই প্রতিবেদনটি ছাপা হয় টাইম ম্যাগাজিন ও হিন্দু নিউসে……… তার বঙ্গানুবাদটি এখানে সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হল ।) http://www.gauranga.org/vedic.htm

Sunday, June 24, 2012

সূর্য মন্দির কোনার্ক


জয় রায় 






ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের এই সূর্য মন্দিরকে অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী ও সমৃদ্ধ ইতিহাসের জন্য ইউনেসকো বিশ্ব সভ্যতার একটি উত্তরাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে । উড়িষ্যায় পুরী ও ভুবনেশ্বরের কাছে বঙ্গোপসাগরের বেলাভূমিতে ১৩ শ শতকে পূর্ব-গঙ্গা রাজ্যের অধিপতি মহারাজ নরসিংহ দেব সূর্য দেবতার আরাধনার জন্য এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন ।এই মন্দির তার অভিনব আকার,বিশালত্ব আর কারুকার্যের জন্য ভারতের সপ্তমাশ্চর্যের অন্যতম । তামিল শব্দ কোণ আর সংস্কৃত শব্দ অর্ক মিলে কোনার্ক শব্দটির সৃষ্টি । উড়িষ্যা ও দ্রাবিড় স্থাপত্যরীতির সংমিশ্রণে নির্মিত মন্দিরটি ধূসর বেলে পাথরে বিশাল একটি রথের আকারে গড়া হয়েছে । সমুদ্র থেকে উঠে আসা সূর্যদেবের বিশাল রথ,তার সামনে রয়েছে সাত জোড়া ঘোড়া । বারো জোড়া বিশাল চাকার ওপর পুরো মন্দিরটি নির্মিত ।চাকার কারুকার্য দর্শকদের জন্য একটি প্রধান আকর্ষণ । প্রতিটি চাকা একেকটি সূর্যঘড়ি ।চাকার ভেতরের দাঁড়গুলো সূর্যঘড়ির সময়ের কাঁটা। এখনো নিখুঁতভাবে সময় জানা যায় এই সূর্যঘড়ির সাহায্যে ।মন্দিরের প্রবেশ পথেই রয়েছে বিশাল দুটি সিংহের মূর্তি যারা লড়াই করছে দুটি রণহস্তীর সঙ্গে ।


 মন্দিরের বেদী থেকে শুরু করে চূড়া পর্যন্ত প্রতি ইঞ্চি জায়গায় পাথরের ভাস্কর্য ও কারুকার্য রয়েছে । দেবতা,অপ্সরা,কিন্নর,যক্ষ,গন্ধর্ব,নাগ,মানুষ,বিভিন্ন প্রাণী,পৌরাণিক বিভিন্ন ঘটনার প্রতিরূপ,নৃত্যরত নরনারী,প্রেমিক যুগল,রাজদরবারের বিভিন্ন দৃশ্য,শিকারের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পাথরের বুকে ।মূর্তিগুলোর মানবিক আবেদন,নিখুঁত গড়ন,লীলায়িত ভঙ্গী শিল্পকলার চরম উত্কর্ষের নিদর্শন । মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ৮৫৭ ফুট ।তবে মন্দিরের অনেক অংশ এখন বালিতে দেবে গেছে । মন্দিরের দেউল এখনো ২০০ ফুট উঁচু। মন্দিরে সূর্যদেবতার যে বিশাল বিগ্রহ ছিল তা এখন নেই ।


কালের করাল গ্রাসে স্থাপনার অনেকটাই আজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ।কথিত আছে যে বাংলার সুলতান সুলেমান খান কারানির সেনাপতি কালাপাহাড়ের আক্রমণে কোনার্ক মন্দির প্রথম ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ।উড়িষ্যার ইতিহাস অনুযায়ী কালাপাহাড় ১৫০৮ সালে কোনার্ক আক্রমণ করে ।
১৬২৬ সালে খুরদার তত্কালীন রাজা পুরুষোত্তম দেবের পুত্র নরশিমা দেব সূর্যদেবের বিগ্রহটি পুরীর জগন্নাথের মন্দিরে নিয়ে যান । সেখানে একটি পৃথক মন্দিরে সূর্য ও চন্দ্র দেবতার বিগ্রহ স্থাপন করা হয় । শুধু বিগ্রহই নয় তিনি কোনার্ক মন্দির থেকে কারুকার্য করা অনেক পাথর পুরীর মন্দিরে নিয়ে যান। এমনকি নবগ্রহ পথ নামে একটি বিশাল প্রস্তর খন্ডও তিনি পুরীতে নিয়ে যান । মারাঠা শাসনামলে কোনার্ক মন্দির থেকে অনেক ভাস্কর্য ও প্রস্তরখন্ড পুরীতে নিয়ে যাওয়া হয় । ১৭৭৯ সালে কোনার্ক থেকে অরুণ কুম্ভ নামে বিশাল একটি স্তম্ভ নিয়ে পুরীর সিংহদ্বারের সামনে স্থাপন করা হয় । এই সময় মারাঠা প্রশাসন কোনার্কের নাট মন্ডপটি অপ্রয়োজনীয় মনে করে ভেঙ্গে ফেলে ।
সূর্যদেবের বিগ্রহ অপসারণের পর কোনার্কে পূজা ও আরতি বন্ধ হয়ে যায় । পর্তুগীজ জলদস্যুদের ক্রমাগত আক্রমণের ফলে কোনার্ক বন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয় । আঠারশ' শতক নাগাদ কোনার্ক মন্দির তার সকল গৌরব হারিয়ে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে ।মন্দিরের অনেক অংশ বালির নিচে চাপা পড়ে যায় ।মন্দির চত্বর ও এর আশেপাশের এলাকা ধীরে ধীরে ঘন অরণ্যে ছেয়ে যায় ।বুনো জন্তুরা বাসা বাঁধে মন্দিরের ভিতর । জলদস্যু ও ডাকাতের আস্তানায় পরিণত হয় কোনার্ক মন্দির । সেসময় দিনের আলোতেও সাধারণ মানুষ ভয়ে এর ত্রিসীমানায় যেত না । পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দীতে প্রত্নতত্ববিদরা কোনার্ক মন্দির পুনরাবিষ্কার করেন ।খননের ফলে লোকচক্ষুর সামনে উন্মোচিত হয়। কোনার্ক মন্দিরের অপূর্ব স্থাপত্য শৈলী,বিষ্ময়কর ভাস্কর্যকীর্তি ও অনন্য শিল্প সম্ভার । কোনার্ক মন্দিরের অনেক শিল্প কীর্তি এখন সূর্য মন্দির জাদুঘর ও উড়িষ্যার জাতীয় জাদুঘরে রয়েছে । বর্তমানে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী কোনার্কের সূর্য মন্দির দেখতে আসেন।

Saturday, June 23, 2012

বাংলাদেশী হিন্দুদের মানসিক পীড়নের কথা

পৃথিবীর যে মতগুলো (ধর্ম) প্রবল সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ঘেষা হিন্দুধর্ম তাদের প্রধানএটা বোধ হয় ভুল নয় যে হিন্দুধর্মই পৃথিবীর সেই ধর্ম যা প্রবল সাহিত্যিক চাপে, তরবারি চাপে, কথিত মুক্তবুদ্ধির বদ্ধ ধারণার চাপে পড়েছে সবচেয়ে বেশিএকজন সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে হিন্দুধর্মের অপ্রচার, অপবাদ, অপব্যাখ্যা এগুলোর সাথে আমি খুবই পরিচিতক্লাসে এহেন দিন থাকে না যেদিন হিন্দুধর্ম আক্রমণাত্ম পাঠ নেইএধরনের অনেক কথা গ্রথিত হয়ে আছে বলে একে মানসিক পীড়ন-০১ নামে অভিহিত করেছি, সুযোগ পেলে ধারাবাহিক লিখে যাব

শওকত আলী রচিত প্রদোষে প্রাকৃতজন’’ উপন্যাসের ওপর ক্লাস হচ্ছেযাঁরা উপন্যাসটি পড়েছেন তাঁদের জানা নিশ্চয়ই আছে এটি মুসলিম আগমনের সময়কে কেন্দ্র করে লেখা উপন্যাসক্লাসে কোর্স শিক্ষক একসময় বলে বসলেন, “ইসলাম ধর্ম নারীদের অধিকার দিয়েছে অধিক, স্বাধীনতা দিয়েছে অধিক আর যেকারণে মুসলিম আগমন ভারতে একটা সামাজিক ও ধর্মীয় পরিবর্তন এনেছিল’’ হিন্দু ছাত্রের সংখ্যা ক্লাসে কম ছিল না, প্রতিবাদটা করলাম আমি একাই কারণ ফার্স্ট ইয়ার থেকে এতসব কথা শুনে কান ঝালাপালা হয়ে গেছেতবে আমার প্রতিবাদটা ছিল ভিন্নধরনের, বক্তব্য ছিল-পৃথিবীর কোন ধর্ম আদৌ কি নারীকে স্বাধীনতা দিয়েছেকোরান বাইবেল থেকে সব গ্রন্থে নারীকে হেয় করার যথেষ্ট প্রমাণ আছে, আদমের জন্ম ইসলামে একটা পাপের ফল আর যে পাপে উৎসাহদাত্রী ছিল নারী হাওয়া’’ স্বয়ং শিক্ষক মেনে নিতে বাধ্য হলেন ধর্মে এগুলো অবশ্যই আছে আর ধর্ম নিয়ে বেশি ঘাটাঘাটি বিপদেরমনে মনে না হেসে পারলাম না যে- যেখানে প্রতিবাদের ভয় নেই সেখানে দিব্যি সমাজ, ধর্ম গুলিয়ে ব্যাখ্যা করা সহজ, ‘শক্তের ভক্ত নরমের যম!অনুরোধ সকলের প্রতি এসব কথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী শিক্ষককের মূল্যায়নগুলোকে মুখ বুজে মেনে নেওয়া যাবে নাএরাই আমদের অন্তর্গত সাহসকে প্রচ্ছন্নভাবে দমিয়ে দিচ্ছে কিন্তু এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী

এ বিষয়ে অরুণ চন্দ্র মজুমদারের মতে , শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বাংলাদেশের সংবিধান দেশের সব নাগরিককে সমান অধিকার দিয়েছেশিক্ষাক্ষেত্রেও সবার সমান অধিকার রয়েছেএই অধিকারে কেউ বাধা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবেমন্ত্রী আরও বলেন, কে কোন ধর্মেরসেটা দেখার বিষয় নয়সবাই নিজ ধর্ম পালন করবে******* মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রকৃতই একজন মানুষ 

প্রকৃতই একজন মানুষআমি এজন্য বলছি যে একজন মানুষের প্রথম পরিচয় হলো ঐ মানুষটির মনুষ্যত্বের পরিচিতি, অথাৎ আগে মানুষ হিসেবে পরিচিতি পক্ষান্তরে একজন ধমান্ধ গোড়ার কাছে তার প্রথম ঠিকানা/পরিচিতিই হলো ধমআজকাল প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে বিশ্ববিদ্যালয় কোন সংখ্যা লগু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রী বলতে পারবেনা যে, সে কোন না কোন সুমলিম ধমাবলম্ভী শিক্ষক কিংবা সহপাঠির নিকট হতে নিজ ধমের জন্য ঠাট্টা মসকরার স্বীকার হয়নিআমার একবন্ধুর ছোট ছোট দুটি ছেলে মেয়ে লালমাটিয়ার একটি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েবাচ্ছাটি প্রায়ই স্কুলে যেতে অনীহা প্রকাশ করেকারন জানতে চাইলে সে জানায় তার সহপাঠীরা তাকে ঐ হিন্দু ঐ হিন্দুবলে খেপায়ছেলেটির বাবা বিষয়টি নিয়ে স্কুলের অধ্যক্ষের বরাবর যোগাযোগ করলে কোন সদ্দুত্তর পায় নাইভাবখানা এমন যে স্কুলে থাকলে একটু আধটু শুনতেই হবে 

যেখানে দেশের চলমান সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্হায় কোমলমতি কোন শিশুর প্রাথমিক মানুষ পরিচয়ের পরিচিতির পরিবতে সে ধম পরিচয়ের পরিচিতি শেখায়, আবার সে শিশুটি কালক্রমে বড় হয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেয়, তখন সে তার ছাত্রছাত্রীদেরকে তাই শেখাবে এটাই স্বাভাবিক নয় কি? বিগত চল্লিশ বছর যাবৎ এখনো যে শিক্ষা ব্যবস্হায় যে পাঠ্য সূচী রাখা হয়েছে তা দিয়ে কী একজন প্রকৃত মুক্তমনা শিক্ষিত মানুষ তৈরী হচ্ছে না, বরং গোড়া ধমান্ধ মানুষ তৈরী হচ্ছে সে দিকে খেয়াল করছেন কী?

অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে অসুমলিম ছাত্রছাত্রী উচ্চতর ক্লাসে ইসলামের শিক্ষা ও ইসলামের ইতিহাস নিয়ে পড়তে হয়কেননা তাদের ধমের শিক্ষা ও ইতিহাস নিয়ে কোন বিষয় পাঠ্যক্রম নাইতার মানে কি এই ইসলামের শিক্ষা ও ইসলামের ইতিহাস ব্যতীত অন্য ধমের শিক্ষা ও ইতিহাস নাই?

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সমীপে অনুরোধ জাতির এ বধিরতা উত্তোরণের জন্যে হিন্দু ধম সহ অন্যান্য ধমের প্রকৃত ইতিহাস ও মহান মূল্যবোধ গুলি সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করুন১০-২০ বছর দেখবেন দেশটা এমনিতেই পাল্টে গেছে
 

“মালাউন কা বাচ্চা… কাভি নেহি আচ্ছা !!!”

মুশফিকুর রহমান তুষার 

সূত্র

শিরোনামের বাক্যটা আমার এক বন্ধুর বাবা’র কাছ থেকে শোনা। একটি আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে আরেক আংকেলের “ডিসকোয়ালিফিকেশন” এর কারন তিনি হিন্দু। এইদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে এমন বিষেদগার করেনা কিংবা মনে মনে এমন ভাবেনা, লোকের সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু এমন কথা শুনেনাই এরকম লোকের সংখ্যা শূন্য। কেন এই বিদ্বেষ? এই বিদ্বেষের দুইটি কারন পাওয়া যায়।
একনম্বর বা প্রধাণ কারন আমাদের দেশের অধিকাংশ (প্রায় ৮৯%) মানুষ মুসলিম। হিন্দুরা আমাদের দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। আমাদের দেশের মুসলিমদের মধ্যে হিন্দুদের নীচু ভাবার একটা প্রবণতা আছে। আবার হিন্দু অধ্যুষিত দেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধেও এমন মনোভাব দেখা যায়। ধর্ম আমাদের নানাভাবে এই মনোভাবের শিক্ষা দেয়। পৃথিবীর অনেক স্থানেই ধর্মের কারনে এমন “বর্ণপ্রথা” চালু আছে। আমি আমাদের দেশের পরিস্থিতিই বলি। বাংলাদেশে যারা মাদ্রাসা কিংবা পারিবাহিক সংস্কৃতির কারনে কোরআন-সুন্নাহ ভালোভাবে আয়ত্ব করেছেন তাদের মাধ্যমেই মূলত এই ধ্যান-ধারনার উদ্ভব। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বিস্তৃত হয়ে আজকের এই “বিষবৃক্ষ” ডালপালা মেলেছে। ভাসা-ভাসা জ্ঞান নিয়ে, বিশেষত “বিদায় হজ্বের ভাষণ” পড়ে আমরা অনেকে ভাবি ইসলাম হয়তো অন্য ধর্মের প্রতি অত্যন্ত সহনশীল। আসলে ব্যপারটা মোটেও তা নয়। যেমনঃ পবিত্র কোরআনের দীর্ঘতম সুরা বাকারা’র ১৯১ ও ১৯৩ নং আয়াতে বলা হয়;
আর তাদেরকে হত্যা করো যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে… (আল কোরআন, ২ : ১৯১)
আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই করো, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়। (আল কোরআন, ২ : ১৯৩)
যেখানে হত্যার কথা বলা হয়েছে সেখানে বিরুপ মনোভাব পোষণ করা তো খুব সাধারণ অপরাধ। তবে ১৯১ নং আয়াতের সম্পর্কে অনেকে বলে থাকেন এখানে “যেখানে পাও” বলতে “যুদ্ধের ময়দানে যেখানে পাও” বোঝানো হয়েছে। সেই ব্যাখ্যাও যদি মেনে নিই তবেও প্রশ্ন থাকে, শুধু ধর্ম আলাদা এই জন্য কেন যুদ্ধ করতে হবে? রক্ত-মাংসের মানুষ মহাত্মা গান্ধী যেখানে অহিংসা’র কথা বলেছেন, “রাহমানির রাহীম” কেন এই ধ্বংসাত্মক পদ্ধতি’র কথা বলছেন? ১৯৩ নং আয়াতের ব্যাখ্যা অনেক মাওলানা এভাবে দেন যে এখানে লড়াই বলতে অমুসলিমদের মুসলিমে রূপান্তরের চেস্টা বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এই ব্যাখ্যা মেনে নিলেও তা কিন্তু বিদায় হজ্বের “ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেনা। যার যার ধর্ম সে সে পালণ করবে। অন্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর তোমার ধর্ম চাপিয়ে দেবেনা ” ধারনাকে সমর্থন করেনা।
আজকাল একটি নতুন “ইসলামী কর্পোরেট কালচার” বা “অর্ধ ইসলাম ব্যবস্থা” চালু হয়েছে। এই কালচারে অভ্যস্ত মুসলিমরা ইসলাম কে একটু সরলায়ন করেছেন। যেমনঃ মেয়েদের আগাগোড়া পর্দা করার দরকার নাই। তবে শালীনভাবে শাড়ী বা সালোয়ার কামিজ পড়তে হবে। এরা অন্য ধর্মের বন্ধুদের সাথে তাদের আচার-অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। তারা ধর্মের চেয়ে মানবতা বড় টাইপ বুলি আওড়ান। এরা সাধারণত দিনে এক ওয়াক্ত (তাও খুব সকালের ফযর বা লম্বা এশা’র নামজ নয়) নামাজ পড়েন, শুক্রবার দুপুরে-শবে বরাত-শবে মেরাজের রাতে খুব গম্ভীরমুখে নামাজ পড়তে যান। জাকির নায়েক-হারুন ইয়াহিয়া’দের সম্পর্কে বিরুপ মনোভাব পোষণ করেন।তাদের সবকথার এক কথা ইসলাম আসলে খুবই শান্তির ধর্ম। কিন্তু আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে মেনে চলতে হবে। “আধুনিক” মানে কিছু আইন কেটে ফেলতে হবে। সবশেষে “ধর্মীয় মৌলবাদ”কে ইসলামের মূল শত্রু হিসাবে আখ্যা দিয়ে থাকেন। তবে তাদের আমি একটা কারনে ধন্যবাদ দিতে চাই কারন তারা সাধারণত অন্য ধর্মাবলম্বীদের ঘৃণা করেন না। কিন্ত অর্ধেক ইসলাম মেনে চললে কি মুসলিম বলা যায়?? এরা কোনো “সাচ্চা মুসলমান” ইসলামের আইন মেনে সমাজের চোখে কোনো ঘৃন্য কাজ (যেমনঃ হিন্দুদের মালাউন বলা, তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নিয়ে বিদ্রূপ করা, হিন্দু মেয়েদের “গণিমতের মাল” আখ্যা দেয়া) করলে তাদের “মৌলবাদী” আখ্যা দেয়। বলে গুটিকয় পথভ্রষ্ট “কট্টর” মুসলিমের জন্য পুরো ইসলামকে দোষারোপ করা ঠিক না।
কিন্তু ব্যাপারটা আসলে তা নয়। একদিন এক লোকের ফেসবুক স্ট্যাটাস (আমার পরিচিত নয়; কিন্তু আমার এক বন্ধুর ফেসবুক বন্ধু) এ দেখলাম তিনি তার সকল “মুসলিম” বন্ধুকে “শুভ সকাল” জানিয়েছেন। অনেক কর্পোরেট মুসলিমরা নিচে কমেন্ট করলো……“শুধু মুসলিম কেন? সবাইকে জানান” বা “এমন কথা তো ইসলামে নাই যে অমুসলিমরা বন্ধু হতে পারবেনা।”, এছাড়াও “আপনাদের জন্যই মানুষ ইসলামকে খারাপ বলে”। এরপর আমি এই বিষয়ে একটু পড়াশোনা করে দেখলাম ঐ “মুসলিম শুভাকাঙ্খী”কে দোষ দেয়া যায়না। পবিত্র কোরআনে আছে,
হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খ্রীষ্টানদের বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদের (ইহুদি ও খ্রীষ্টানদের) অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ যালিমদের পথ দেখান না। (আল কোরআন, ৫ : ৫১)
এই আয়াতে তাও দুই ধর্মের কথা আছে। সুরা আল-ইমরান’এর ২৮ নং আয়াতে একবারে সকল ধর্মকেই বন্ধুত্বের জন্য বাতিল ঘোষণা করা হয় এই বলে…
মুমিনগণ যেন মুমিন ব্যাতিরেকে অন্য কোনো অমুসলিমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এমন করবে আল্লাহর সাথে তাদের কোন সম্পর্ক থাকবেনা। (আল কোরআন, ৩ : ২৮)
এখন পাঠকদের কাছে প্রশ্ন যে, ঐ লোক কি ভুল কিছু করেছেন? অমুসলিমদের কে “শুভ সকাল” জানালে তো ব্যাটা’র ধর্মই চলে যাবে!! এইসব আয়াত কোথাও লেখা হলে কর্পোরেট মুসলিমরা প্রথমে যে কথাটি বলে তা হলো “তাফসীর পড়ে দেখ” অথবা “কোরআনে সবকথা সরাসরি বলা হয়নি, এর ব্যাখ্যা হবে……(একটি মনগড়া; অনেক সময় আজগুবি, কিন্তু ইতিবাচক ব্যাখ্যা)…”। এই কমেন্ট করতে ইচ্ছুকদের অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলতে চাই মানুষের মুখে ঝাল না খেয়ে নিজের মুখে খান। নিজেই তাফসীর বা নিজের বিচার-বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনা করে দেখুন ইসলাম আসলেই কি অমুসলিমদের ব্যাপারে সহনশীল?

দ্বিতীয় কারনটা হলো আমাদের সমাজে অনেকদিন আগে থেকেই বিধর্মীদের বিরুদ্ধে মনের মধ্যে “বিষ” পোষণ। আমি এমন বলবোনা যে সব হিন্দুরা মুসলিমদের সম্পর্কে মনে খুব ভালো ধারণা পোষণ করেন। এর পিছনেও সেই শতাব্দী প্রাচীণ ধর্ম থেকে পাওয়া “জ্ঞান”। আমাদের দেশের হিন্দুদের বিরুদ্ধে কিছু সাধারণ অভিযোগ উল্লেখ করা যাক।
যেমনঃ হিন্দুরা খুব খারাপ কারন তারা বাংলাদেশকে নয় বরং ভারতকে কে নিজের দেশ ভাবেন।ভারতকে নিজেদের দেশ ভাবার ব্যাপারটি সবসময় সত্য নয়। আর যদি ভেবেও থাকে তার পিছনে আছে অনেকগুলো কারন। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র দ্বি-জাতি তত্ত্বের (Two-nation Theory) অনু্যায়ী বাংলাদেশ তো আসলেই হিন্দুদের দেশ না। হয়তো এই ধারণা থেকে বাংলাদেশ তৈরী হয়নি, তবে “আদিরূপ” পাকিস্তান কিন্তু এই তত্ত্বেরই ফসল। এছাড়া এমন কিছু নিয়ম আছে যার মাধ্যমে এদেশের হিন্দুরা সবসময় মানসিক কষ্টে থাকতে থাকতে বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসা হারিয়ে ফেলে। ধর্মনিরপেক্ষ এইদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম!! তার মানে কি হিন্দুরা এদেশের মুসলিমদের সমান না? সংবিধানের শুরুতে আছে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম”। একজন হিন্দু বা ভিন্নধর্মী কেন এই সংবিধানকে মেনে নেবে? সরকারী টিভি’তে অধিবেশনের শুরুতে আল কোরআন’এর তেলাওয়াত-তর্জমা হয়; অথচ বাকি ধর্মের ধর্মগ্রন্থের আলোচনা হয় তিনদিনে একবার। আমাদের দেশে বাংলা-ইংরেজী বিষয়গুলো দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অবশ্যপাঠ্য। এই সরকারী বাংলা বইয়ে কেন “মরূ ভাস্কর” বা হযরত মুহাম্মদ (সা)’এর জীবনীসহ অন্যান্য ইসলামী কাহিনী থাকবে? একটা ক্লাস ফোর’র হিন্দু শিশু তার বাংলা পরীক্ষায় কেন “পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ কে?” প্রশ্নের উত্তরে “হযরত মুহাম্মদ (সা)” উত্তর করবে??? মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রতি সরকারই তাদের মনমত পরিবর্তন করে, কিন্তু “ধর্মনিরপেক্ষ” কোন সরকারই এই গদ্য বা কবিতা গুলো পরিবর্তন করেনা। ঢাকায় আমি এমন কমপক্ষে দশটি স্কুল দেখেছি যেখানে স্কুল পোষাকের একটি জরুরী অংশ টুপি। যদিও হিন্দু ছাত্ররা মাথায় টুপি দেয়না কিন্তু সবসময় তাকে ভাবতে বাধ্য করা হয় সে আলাদা। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলি, স্কুলজীবনে আমিও এমন স্কুলে পড়তাম(আইডিয়াল স্কুল)। সমাবেশে’র জন্য যখন আমরা মাঠে একসাথে দাড়াতাম গুটিকয় হিন্দু ছাত্রদের খুব সহজেই আলাদা করা যেত। কিছু শিক্ষক নামে কলংক (৯০% ক্ষেত্রে হুজুরটাইপ) প্রতিদিনই তাদের অপমান করতো। যেমনঃ “কিরে তুই হিন্দু নাকি? টুপি কই?” বা “তোদের জন্য আলাদা লাইন লাগবে”। ছোটবেলা থেকে এরকম ব্যাবহার পেলে কিভাবে একটি শিশু নিজেকে এদেশের মানুষ ভাববে? কোন ক্ষেত্র আছে যেখানে হিন্দুদের চাপে রাখা হয়না! আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে জানি বরিশালে আমাদের গ্রামে এখনও হিন্দুদের গাছ থেকে ডাব-খেজুর রস চুরি করাটাকে সহজ ও নিরাপদ মনে করা হয় কারন ধরা পড়লে মালিক বেশীকিছু করতে পারবেনা। এমনকি খেলার মাঠেও কোনো হিন্দু কোন দোষ করলে গালি দেওয়া হয় এই বলে যে “যা মালাউনের বাচ্চা…এই দেশ থেকে ভাগ!!”
হিন্দুরা ব্যবসা-বানিজ্য করে এদেশে কিন্তু বাড়ি-ঘর করে ভারতে। টাকা পয়সা জমায় ভারতে।…
এই ব্যাপারটি অনেক ক্ষেত্রে সত্য। আবার এটাও সত্য যে আমদের দেশে বাস করা অনেক হিন্দুদের আত্নীয়-স্বজন দেশভাগ বা একাত্তরে ভারতে চলে গেছেন। ফলে জীবনের শেষদিকে নিজের আপনজনদের কাছে পেতে ভারতে চলে যাবার অনেক ঘটনাও ঘটে থাকে। বাংলাদেশে বসবাস করায় ঝামেলা মনে করে বলেই তারা ভারতে যেতে চায়। এদেশে মুসলিম কেউ কিছু করলে আমরা প্রথমে দেখি তার বাড়ি কোথায়? যদি বরিশাল-নোয়াখালী-চাদপুর-কুমিল্লা হয় তাহলে বলি “বি এন সি সি’র মানুষ খুব খারাপ”। যদি না হয় অন্য কোনো খারাপ গ্রূপে ফেলার চেষ্টা করি। আবার উত্তরবঙ্গের হলে অবাক হয়ে বলি “নর্থবেঙ্গলের লোক তো ভাল হয়, এইটা এরকম ক্যান??”। কিন্তু হিন্দু কেউ অপরাধ করলে আর কোন বাছ-বিচার নেই। সাথে সাথে “মালাউন কা বাচ্চা, কাভি নেহি আচ্ছা”। এরকম মনোভাবের মধ্যে কয়দিন আপনার থাকতে ভাল লাগবে। আদমশুমারী অনুযায়ী ১৯৪১ সালে এদেশের মোট জনসংখ্যার ২৮ ভাগ ছিলো হিন্দু। ভারতভাগ নামক অদ্ভুত ঘটনার পর তা নেমে আসে ২২ ভাগে। পাকিস্তান শাসনামলে ২৩ বছর অত্যাচারের পর তা নেমে আসে ১৩.৫ ভাগে। বিগত বিএনপি-জামাত জোট সরকারের অসহয়নীয় অত্যাচারে তা নেমে আসে ৮ ভাগের কাছাকাছিতে।এমন অনেক মেধাবী ভারতীয় হিন্দু আছেন যারা বর্তমানে সারা বিশ্বে সম্মানিত । অথচ তারা বা তাদের পূর্বপুরুষরা এদেশের অধিবাসী ছিলো। ১৯৭১ এর কথায় এমন অনেক মুসলিম আছে যারা বলে “যুদ্ধের সময় হিন্দুরা ভারতে ভাগছে”। যুদ্ধের সময় প্রায় ৮০ লাখ বা তারও বেশী মুসলিমও “ভারতে ভাগছে”। আর দেশত্যাগ না করার মত অবস্থা কি তখনকার দুই পাকিস্তানের “সাচ্চা মুসলিম”রা রেখেছিলো? এমনকি যুদ্ধের পরও অত্যাচার কিন্তু থামেনি। গুজরাটে’র দাঙ্গায় হিন্দুরা মুসলিম হত্যা করেছে আর এদেশের হিন্দুরা কিছু না করলেও তাদের উপর অত্যাচার চলেছে। আর ২০০১-০২ সালে জামায়াতে ইসলামী নামক নর্দমার কীট-জঘন্য পশুদের নারকীয় তাণ্ডব তো সবকিছুকে হার মানায়। শুধুমাত্র হিন্দু হবার অপরাধে দক্ষিনবঙ্গের জেলাগুলোয় কি হয়নি? খুন-লুন্ঠণ এবং সেইসাথে “খোদাভীরু জেহাদরত মুসলিম”দের সবচেয়ে প্রিয়কর্ম ধর্ষণ, সব মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ওই সময়ের পরিস্থিতি যে কি জঘন্য ছিলো তা বলবার ভাষা নেই। এক হাজারের বেশী ধর্ষ্ণ হয়েছিলো যার মধ্যে শিশু ধর্ষণ বা মা-মেয়ে-পুত্রবধূ কে এক বিছানায় গণধর্ষণের ঘটনাও ছিলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে সেই নষ্টসময়ের কিছু পত্রিকা আছে। কেউ চাইলে পড়তে পারে। ওয়াজ-মাহফিলে অনেক হুজুর একটা কথা খুব বলে। কোন সাহাবীদের উদাহরন দিয়ে তারা সুর করে বলেন “দোজখের বর্ণণা শুনে তিনি দুই চোখের পানি ছাইড়া দেন”। লাইব্রেরীতে পত্রিকা পড়বার সময় সেই “দোজখ”এর বর্ণণা শুনেও যে কেউ দুই চোখের পানি ছেড়ে দেবেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) ও কাফেরদের অত্যাচারে হিযরত করছিলেন, আর হিন্দুরা মুসলিমদের অত্যাচারে দেশ ছাড়লে হয় দোষ। ভারতে কেউ শখে যায়না (কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদে)। আর এমনও না যে ভারত সরকার এদেশের হিন্দুদের খুব সাদরে আপ্যায়ন করে নেয়।
ব্যাক্তিগত ও ধর্মগত আক্রমনঃ
আরো কিছু খারাপ অভ্যাস শোনা যায়। যেমনঃ হিন্দুরা শুধু নিজেদের ভালো করে। হিন্দুরা কখনও মুসলিমকে সাহায্য করেনা। এই কিছুদিন আগে সুরঞ্জিত সেন দুর্নীতির দায়ে ধরা পড়ার পর দেখা গেলো তার মন্ত্রনালয়ে মন্ত্রী কতৃক সরাসরি নিয়োগ পাওয়া সকলেই হিন্দু। এরপর অনেকে বলতে শুরু করলো “দেখলা তো, হিন্দুরা খালি নিজেদের ভালো বোঝে”। প্রশ্ন হলো একজন মন্ত্রী তার এপিএস-ড্রাইভার-কেরাণী সহ কিছু পদে সরাসরি নিজ ইচ্ছায় নিয়োগ দিতে পারেন। সব মন্ত্রী সাধারণত তাদের আত্মীয় বা চেনাজানাদের ভেতর থেকেই নিয়োগ দেন। সুরঞ্জিত সেনও তাই করেছেন। ধর্ম আমাদের যেভাবে আলাদা করে রেখেছে তাতে একজন হিন্দুর কাছের মানুষ হিন্দুই হবার কথা।
আরেকটা কথা শোনা যায় সব হিন্দুরা ক্রিকেটে ভারত সাপোর্ট করে কিন্তু সব মুসলিম পাকিস্তান করেনা। এই কথাটা অনেক ক্ষেত্রে সত্য। ১৯৭১ এর কারনে হিন্দুদের মনে পাকিস্তান সংক্রান্ত যে অপরিমেয় ঘৃনার সৃস্টি হয়েছে তারই প্রতিফলন এটা। যদিও আমার নিজের এমন হিন্দু বন্ধু আছে যে ভারত সাপোর্ট করেনা। আর এই কথাটা বলাই একটা বড় নোংরামি। রাজনৈতিক কারনে ক্রিকেটে পাকিস্তান সাপোর্ট না করা যত বড় নোংরামি তার চেয়ে বড় নোংরামি ধর্মীয় কারনে ক্রিকেটে ভারত সাপোর্ট করা বা না করা।
বিগত বিএনপি আমলে “মোহাম্মদ বিড়াল” এর কার্টুন নিয়ে কতকিছুই না হলো। এদেশের আইন-আদালত বাদ দিয়ে ক্ষমা করার দায়িত্ব পেলেন বাইতুল মোকাররমের খতিব। এতটুকু অপমান(!!!) যদি ইসলাম সইতে না পারে তাহলে অলি-গলিতে, মসজিদে-ময়দানে ওয়াজ মাহফিলে উচ্চস্বরে মাইক বাজিয়ে হিন্দু ধর্ম নিয়ে, এমনকি দেব-দেবীদের কাপড়-যৌনতা নিয়ে যে অসুস্থ আলোচনা হয় তা হিন্দুরা কিভাবে মেনে নেবে??
আজকাল এই আক্রমন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’কেও বাদ রাখছেনা। ATN Bangla চ্যানেলের শুক্রবার দুপুরের ইসলামী অনুষ্ঠানের আলোচক মাওলানা তারেক মুনাওয়ারের এক ওয়াজের ভিডিওতে দেখলাম বলছেন “এই বাংলাদেশ শাহজালাল-শাহপরানের দেশ, কাজী নজরুলের দেশ কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুইর‌্যা’র দেশ না”। কাজী নজরুলকে এভাবে “ইসলামীকরণে”র কারন তিনি গজল লিখেছেন। (তারেক সাহেব হয়তো জানেননা তিনি শ্যামাসঙ্গীতও লিখেছেন) একবার ভাবুন যে ব্যাক্তি বাংলা সাহিত্যকে ১০০ বছর এগিয়ে দিয়েছেন তিনিও ধর্মের কাছে রেহাই পাচ্ছেন না।
লেখাটা এমনিতেই বেশ বড় হয়ে গেছে। চাইলে আরো বড় করা যায়। কিন্তু আমি শুধু আর কয়েকটা কথা বলতে চাই। এই লেখার পেছনে আমার উদ্দেশ্য এই না যে আমি হিন্দুদের পক্ষে সাফাই গাইবো কিংবা ইসলামকে ঢালাওভাবে দোষ দেবো। আমি শুধু দেখাতে চেষ্টা করেছি যে বাংলাদেশে যুগ যুগ ধরে ধর্ম কিভাবে মানুষকে, পশুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ধর্মের কারনে এই হানাহানি নতুন কিছু নয় কিংবা শুধু এদেশের কোন ঘটনা নয়। সারা পৃথিবীতে এই অনাচার হাজার বছর ধরেই চালু আছে। আমার লেখায় হিন্দুদের প্রতি সহমর্মিতা’র কারন এদেশের খ্রীষ্টান বা বৌদ্ধদের চেয়ে হিন্দুরা অনেক বেশী নির্যাতিত। আবার পৃথিবীতে এমন দেশও আছে যেখানে মুসলিমরা এর চেয়ে আরো অনেক বেশী নির্যাতিত। এর পিছনে একটাই কারন ধর্ম। যা কোনদিন সকল মানুষের মাঝে সম্প্রীতি আনতে পারেনি, পারবেওনা। এই পৃথিবীতে ধর্মের কারনে যত যুদ্ধ-হত্যা-লুন্ঠন-ধর্ষণ হয়েছে আর কোন কারনে তার সিকিভাগও হয়নি। দেশে দেশে ভাগাভাগি কিংবা যুদ্ধ প্রায় ৮০% ক্ষেত্রেই ধর্মের কারনে হয়। সব ধর্মই শান্তির কথা বলে তবে কেন আজ পৃথিবীর মোটামুটি সবদেশেই যুদ্ধ চলছে বা অশান্তি বিরাজ করছে? কারন মুখে শান্তির কথা বললেও ধর্মই মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরী করে দিয়েছে। ধর্মই আমাদের “রক্তের বদলে রক্ত” শিক্ষা দেয়। যেকারনে গুজরাটে মুসলিম মরলে এদেশে হিন্দু মরে। শুধুমাত্র দক্ষিন আমেরিকা ও ইউরোপের কিছু ধর্মছাড়া (ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা খুউউবই কম)দেশ আছে যেখানে কোন যুদ্ধ-অশান্তি নেই। সেসব দেশে মাসে দুয়েক’টা খুন হয়। দাঙ্গা-মারামারি তো একেবারেই হয়না। এর দ্বারাই বোঝা যায় শান্তির জন্য মানবতা দরকার; ধর্ম কোনভাবেই নয়। মানবতাই আমাদের শিক্ষা দেয় মহানুভবতার। মানুষের মধ্য বিভেদকারী ধর্মকে ভুলে আসুন মানুষ হয়ে আরেকজন মানুষকে ভালোবাসি। মহাত্মা গান্ধীর একটি অসাধারন কথা দিয়ে এই সাধারন লেখাটা শেষ করি। “যদি সবাই চোখের বদলে চোখ নীতি মেনে চলে, তাহলে একদিন এই পৃথিবীর সব মানুষ অন্ধ হয়ে যাবে”।