Pages

Monday, December 10, 2012

বিশ্বজিতকে মারল যারা







নিরীহ পথচারী বিশ্বজিৎ দাসকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরাই
মূল হামলাকারী পাঁচজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছেতাঁরা হলেনমো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল, মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমন, মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ, মো. ইমদাদুল হক ও মো. ওবাইদুল কাদেরএর মধ্যে চাপাতি দিয়ে প্রথমে কুপিয়েছেন শাকিলবাকিরা রড আর লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন বিশ্বজিৎকে

ছবিতে ঘড়ির কাটার দিকে

১।
ওবাইদুল কাদের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রবর্তমানে তিনি মাস্টার্সের ছাত্রতাঁর বাবার নাম মো. মহিউদ্দিনগ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ার চর কৈলাশে 

২।
ইমদাদুল হক দর্শন বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছেনতাঁর বাবার নাম মো. আকরাম আলীগ্রামের বাড়ি যশোরের শার্শা উপজেলার পাঁচ কায়রায় 

৩।
ছবিগুলোতে যে চারজনকে স্পষ্টভাবে বিশ্বজিৎকে চাপাতি, রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করতে দেখা যায় তারা হলো-
মাহফুজুর রহমান নাহিদকালো হাতা কাটা স্যুয়েটার ব্লু-জিন্স পরে ছিলেন তিনি
ছবিতে নাহিদ যখন বিশ্বজিৎকে পেটাচ্ছিলেন তখন তাদের দুজনের হাতের নিচ দিয়ে মাঝ বরাবর যে মুখটি দেখা যায় তিনি নুরে আলম লিমন
রড হাতে ফুল হাতা গেঞ্জি পরিহিত আরেকজনকে দেখা যায় নাহিদের পাশে থেকে বিশ্বজিৎকে আঘাত করছেন  তিনি আলামিনজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের ছাত্রসূত্র জানায়, আলামিনের পরিবাররের সবাই বিএনপির সমর্থকতিনি প্রথম দিকে ছাত্রদলের কর্মী ছিলেনকিন্তু পরে ছাত্রলীগেই নিজের ভাগ্যসন্ধানে নেমেছেনএই আলামিনও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের কর্মী বলেই অনেকের কাছে পরিচিতআলামিনের জন্মস্থান শরিয়তপুর লিমনের ডান পাশ থেকে গলায় চাদর গায়ে যাকে  বিশ্বজিৎকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায় তিনি আজিজআজিজও ছাত্র লীগের কর্মীজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২য় ব্যাচের ছাত্রতিনি সভাপতি প্যানেলে ছাত্রলীগ করেন বলেই জানা গেলো ক্যাম্পাস সূত্রেআজিজের জন্মস্থান খুলনায়

৪।
মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ওরফে নাহিদ বাংলা বিভাগের ছাত্রগত বছর মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছেনতাঁর বাবার নাম আবদুর রহমানভোলার দৌলতখানের দক্ষিণ জয়নগরে তাঁর গ্রামের বাড়ি বিশ্বজিতের  বাম হাত শক্ত করে ধরে রড দিয়ে পেটাচ্ছিলেন তিনিসূত্র জানায় এই মাহফুজুর রহমান নাহিদের আঘাতগুলোই বিশ্বজিতের মৃত্যু ত্বরান্বিত করেছেনাহিদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রবিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে ফেললেও এর ছাত্রলীগের মায়া কাটাতে পারেননিপড়ালেখা শেষ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি শরিফুল ইসলামের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসি কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেনশরিফুলের সঙ্গে একই বিভাগের একই বর্ষের ছাত্র ছিলেন নাহিদজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হলে এরই মধ্যে অছাত্রের খাতায় নাম লেখানো নাহিদ সহ-সভাপতির একটি পদ পেয়ে যাবেন এমনটা মনে করছেন ক্যাম্পাসের অনেকেইনাহিদের জন্মস্থান ভোলা জেলায় 

৫।
মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্রবর্তমানে তিনি ষষ্ঠ সেমিস্টারে অধ্যয়নরততাঁর বাবার নাম আনসার আলীপটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলায় তাঁর বাড়ি শাকিলের পরিবার বিএনপির ঘোর সমর্থকজগন্নাথে প্রথম পর্যায়ে শাকিলও ছাত্রদল করতেনপরে ছাত্র লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সিরাজুলের সাহচর্য পানশাকিলও বিশ্বজিৎকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছেন সেই ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে  প্রকাশ পেয়েছেশাকিলের জন্মস্থান বরিশাল

৬।
মীর মো. নূরে আলম ওরফে লিমন ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রবর্তমানে তিনি মাস্টার্সে অধ্যয়নরততাঁর বাবার নাম মীর মো. নূরুল ইসলামতাঁর গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগাছার শুলিপাড়ায় লিমন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রথম ব্যাচের ছাত্রবিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে ঢুকেই রাজনীতির কালো অঙ্গনটিকেই বেছে নেন লিমনসূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের কর্মী এই লিমনলিমনের জন্মস্থান রংপুর জেলায়
অপর একটি ছবিতে গালে কালো দাগ
, রড দিয়ে আঘাত করেছেন বিশ্বজিৎকেতিনি শাওনতিনিও সাধারণ সম্পাদক প্যানেলের কর্মীআর ইতিহাস বিভাগের ৩য় ব্যাচের ছাত্রশাওনের গ্রামের বাড়ী খুলনা

বিশ্বজিৎ হত্যায় জড়িত অপর একজন ইমরানরাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম ব্যাচের ছাত্রফরিদপুরের ছেলে ইমরান ছাত্রলীগের নামধারী সন্ত্রাসীভিক্টোরিয়া পার্ক সংলঘœ মার্কেটের দোতলায় ইমরান ছুরি দিয়ে আঘাতে জর্জরিত করেন বিশ্বজিৎকেক্যাম্পাসে জানা গেলে ইমরানও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের কর্মী

বিশ্বজিৎকে মারধরের সুত্রপাত ও তাকে টার্গেট করার মূলে ছিলেন রাজনবিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ৩য় ব্যাচের ছাত্ররাজনের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায় বলে জানায় ছাত্রলীগ সূত্রতবে তার বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানা যায়নি

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একাধিকবার সাময়িক বহিস্কার হওয়া ছাত্র তমালও ছিলেন এই হত্যাকা-ের একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারীবিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২য় ব্যাচের ছাত্র তমালের বাড়ি বগুড়ায়প্রথমে ছাত্রদল করলেও বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের আশ্রয়ে অপকর্মে জড়িত হওয়া তার জন্য নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে এশাধিক সূত্রবিশ্বজিৎকে মারধরে অংশ নেওয়ার আগে তমালের কোর্ট এলাকায় আইনজীবীদের মারধর করে মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার দৃশ্যও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছেযে কোন নাশকতাকে আশ্রয় করে জিনিসপত্র লুটে নেওয়া তার অভ্যাসগত বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রতমালও বর্তমানে সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের কর্মী

আইন বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের ছাত্র মিলনও ছিলেন এই হত্যাকা-েছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় মিলনও একাধিকবার রড দিয়ে আঘাত করেন বিশ্বজিৎকেমিলনের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী

হত্যাকারী দলের অপর সদস্য রুদ্র ইংরেজি বিভাগের ছাত্রবিশ্বজিৎ পালিয়ে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করলেও তাকে রেহাই দেননি ছাত্রলীগ নামধারী এই সন্ত্রাসীপেছন থেকে ছুটে গিয়ে বিশ্বজিৎকে আটকে ফেলেন রুদ্রতার দেশের বাড়ি খুলনা

এছাড়া বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মোশাররফতিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২য় ব্যাচের ছাত্রমোশারফের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়প্রথম পর্যায়ে মোশারফ ক্যাম্পাসে শিবিরের সক্রিয় কর্র্মী ছিলেন তিনি 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের ছাত্র কামরুলও বিশ্বজিৎকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে দাবি অনেকেরকামরুলের দেশের বাড়ি মাদারীপুর

বিশ্বজিৎ হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত মুন্নাও প্রথমে ক্যাম্পাসে শিবিরের কর্মী ছিলেনমুন্নার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জতিনি জগন্নাথ বিশ্বিবিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় ব্যাচের ছাত্র

সূত্রঃ

১।
http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=8adc98efd93ee04adf65acbf2031e934&nttl=11122012157377

২।


http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-12-11/news/312293