হিন্দু ধর্মের প্রকৃত নাম সনাতন ধর্ম । অর্থাৎ যা চিরন্তন , শাশ্বত । স্বামী বিবেকানন্দ একে সকল ধর্মের প্রসূতি স্বরূপ বলে নির্দেশ করেছেন । কারণ এই বিশ্বে প্রচলিত ধর্ম মত গুলির প্রায় সব গুলির মূল ভাব হিন্দু ধর্মে দেখা যায় ।
অনেক ভাষাতে হিন্দু ধর্মের উপর সাইট থাকলেও বাংলা ভাষাতে একেবারেই হাতে গোনা। কিছু ওয়েবসাইট আবার বন্ধও হয়ে গেছে। তাই বাংলা ভাষায় হিন্দু ধর্মের মহিমা প্রচারের জন্যই আমাদের এই আয়োজন বাঙ্গালি হিন্দু পোস্ট।
Pages
▼
Saturday, March 24, 2012
মেবারের রাণী পদ্মিনীঃ হিন্দু সতি নারীদের আদর্শকিন্তু আমরা কি জানি খিলজি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা জালাল আল-দীনের ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা তিনি। প্রাথমিক অবস্থায় তিনি এলাহাবাদ শহরের কারা অঞ্চলের শাসক ছিলেন। ১২৯৬ সালে তিনি জালাল আল-দীনকে হত্যা করেন। এ অবস্থায় জালাল আল-দীনের স্ত্রী মালিকা জাহান তার ছেলে রুকন-উদ-দীনকে সিংহাসনে বসান। তখন আলাউদ্দিন খিলজি দ্রুতবেগে দিল্লিতে উপস্থিত হয়ে মালিকা জাহানকে বন্দি করেন এবং রুকন-উদ-দীনকে অন্ধ করে দেন। এভাবেই তিনি দিল্লির সিংহাসনে উপবেশন করেন। কিন্তু এই পিশাচের সব থেকে ন্যক্কারজনক কৃতি আপনাদের কাছে এখন বলব। ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দের ২৬ আগস্ট আলাউদ্দিন খিলজি চিতোর গড় দখল করেন। চিতোরের রানী পদ্মিনীর রূপের কথা শুনে এ অভিযানে লিপ্ত হয়েছিলেন আলাউদ্দিন। মালিক মুহাম্মদ জয়সির মহাকাব্য পদ্মাভতে অমর হয়ে আছে এই কাহিনী। ১৩০৩ সালের ২৮ জানুয়ারি রাজপুতদের সবচেয়ে শক্ত ঘাঁটি মেবারের উদ্দেশে রওনা করেন আলাউদ্দিন। এ খবর রাজপুতদের কাছে পৌঁছার পর রাজপুত সেনাপতিরা কূটকৌশলে সুলতানকে পরাজিত করার ফন্দি আঁটে। তারা সুলতানকে জানান, পরদিন সকালে পদ্মিনীকে তার কাছে হস্তান্তর করা হবে। নির্দিষ্ট সকালে রাজপুতদের দেড়শ’ পাল্কি আলাউদ্দিনের তাঁবুর দিকে যাত্রা করে। পাল্কিগুলো তাঁবুর কাছে এমন জায়গায় থাকে যেখানে পদ্মিনীর স্বামী রাজা রতন সিং বন্দি ছিলেন। আকস্মিকভাবে পাল্কি থেকে রানী পদ্মিনী ও তার পরিচারিকাদের পরিবর্তে নেমে আসে সশস্ত্র সৈন্যবাহিনী। তারা রতন সিংকে মুক্ত করে নিয়ে যান আলাউদ্দিন কিছু বুঝে ওঠার আগে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সুলতান চিতোর গড় তছনছ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন। এ লক্ষ্যে চিতোর দুর্গ তিনি অবরোধ করেন। এ অবস্থায় রাজা রতন সিং দুর্গের ফটক খুলে দিয়ে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই করে যাওয়ার জন্য রাজপুতদের নির্দেশ দেন। রাজার এই নির্দেশে রানী পদ্মিনী হতচকিত হয়ে পড়েন। বুঝতে পারেন সুলতানের শক্তিশালী বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই হবে অসম। এ অবস্থায় তার সামনে দুটো পথ খোলা ছিল। হয় জহরপানে আত্মহত্যা, নয়তো রাজপুত রমণীসহ নিজেকে সুলতানের কাছে সমর্পণ করা। এদিকে প্রাসাদের বাইরে লড়াইয়ে রাজপুতদের পরাজয় ঘনিয়ে আসছিল। ১৩০৩ সালের ২৬ আগস্ট আলাউদ্দিন দলবলে চিতোর দুর্গে ঢুকে পড়েন। নগর রক্ষার্থে রাজপুতগণ প্রাণপণে যুদ্ধ করে নিহত হন। দুর্গের অভ্যন্তরে রানী পদ্মিনীর সঙ্গে তেরো হাজার রাজপুত রমণী ‘জহরবতের’ অনুষ্ঠান করে প্রাণ বিসর্জন করেন। তারা জীবন্ত অগ্নিকুণ্ডে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। একই ভাবে আরব লুটেরাদের হাত থেকে বাঁচতে সিন্ধুর নারীরা ‘জহরবতের’ অনুষ্ঠান করে প্রাণ বিসর্জন করেছিলেন। আত্মহত্যা করা সৈন্য ও রানীদের ছাইভস্ম দেখে আলাউদ্দিন হতাশ হয়ে পড়েন। তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন হিন্দু নারীদের কাছে সম্মান জীবনের চাইতেও বড়।
No comments:
Post a Comment