Pages

Friday, April 6, 2012

ব্লগার দেবাশিস ভট্টাচার্য্যের কিছু কাল জয়ী লেখা


সমুদ্রমন্থনের রূপকার্থ
দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য


পুরাকালে বিভিন্ন রচনাগুলিতে অনেক ক্ষেত্রেই রূপকের ব্যবহার হত। যাতে সেইসব কাহিণী অনেক আকর্ষনীয় ও শ্রুতিমধুর হয়। আসলে হয়েত আজকের মতই ব্যপারটা ছিল। যখন মানুষ অতশত তত্বকথা শুনতেও চাইত না। বা হয়েত তা শোনার বা জানার মত জ্ঞান বা অধিকার বা যোগ্যতাও ছিলনা হতে পারে। তাই সুন্দর করে গল্পের আকারে তা লেখা হত যাতে তা সকলেরই পাঠ্যযোগ্য হয়। এবং সরল ভাষায় নিতিশিক্ষা ও ধর্মশিক্ষা দেওয়া যায়। আর সেই গ্রন্থগুউলিকেই আমরা পুরান বলে চিনি। সেই রুপক গুলি উদ্ধার করতে পারলে বা তাদের অভ্যন্তরের নিহীত জ্ঞানটিকে অনাবৃত করতে পারলে পাই এক অপূর্ব অনুভুতি। নতুন সুন্দর কিছু জানতে পারার অনুভুতি। আসুন একটু জানার চেষ্টা করে দেখা যাক কেমন লাগে।
আসলে আমাদের হিন্দুধর্মের বিষয়বস্তু হল অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। আর আমাদের ধর্মগ্রন্থগুলিতে লেখা বিষয়গুলিও তাই। শুধু কিছু মানুষের বোঝার ভুলে অনেক তর্ক, ভুলবোঝাবুঝি ইত্যাদির সৃষ্টি হয়। যদি কেউ ভেতর থেকে এর আসল মানে বা ভাব গ্রহনের একটুও চেষ্টা করেন তাহলে তিনি যে অপার জ্ঞানসমুদ্রের সন্ধান পাবেন তা হয়ত অন্য কোন কিছুতে পাওয়া যাবেনা। আর এটাই আমাদের এই সুন্দর ধর্মের বিশিষ্টতা ও বিশালতা। তবে আসলে হয় কি, আধ্যাত্মিক পড়াশোনায় অভ্যস্ত যাঁরা তারাই এইধরনের রসাস্বাদন করতে সমর্থ হন। সাধারন মানুষেরা সেই উচ্চতায় তা বুঝতে পারেনা বলেই কিন্তু এই বিশালতা একটি গন্ডিতেই সিমাবদ্ধ হয়ে রয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মতে এই বিষয় এমন কিছু বিষয়বস্তু রয়েছে যা কিন্তু সাধারন মানুশেরও বোঝা সহজ। শুধু ভাষা প্রয়োগ বা বোঝানর সরলতাটুকু লাগবে। আমি চেষ্টা করছি সেই কাজে কিছুটা এগোতে।
নিজের ভেতরে আধ্যত্মিক শক্তির জাগরণের পদক্ষেপগুলির সুন্দর উদাহরন হল পৌরানিক সমুদ্রমন্থনের কাহিনী। সাধারন এই বহুলপ্রচলিত কাহিনীটি অনেকেরি জানা। কিন্তু এই গল্পের মাধ্যমে যে কত গভীর একটি শিক্ষা পাওয়া যায় তা জানতে পারলে সাধারন মানুষ যারা এই ধরনের আধ্যাত্মীক পড়াশোনা প্রায় করেনিনা তাদের থেকে শুরু করে যারা করেন তাদের অবদি সকলেরই খুব ভালো লাগবে এই আশাই করি। আমি সরল ভাষায় সেই ব্যখ্যা করছি এখানে।
সমুদ্রমন্থনের কাহিনী এখানে আর সবিস্তারে দিলাম না কারন আশা করি সকলেরই তা জানা আছে কিছুটা হলেও। তাই শুধু মুল আলোচনাতেই প্রবেশ করি সরাসরি।
এই সমুদ্রমন্থন করেছিলেন দেবতা ও অসুররা মিলে। এখানে সমগ্র মন্থন কর্মটি হল আমাদের নিজেদের শরীরের আধ্যাত্মিক জাগরন, একাগ্রতা, আকাঙ্খা বা কামনাকে জয়, এবং সর্বপরি রিপুকে জয় করে পরমাত্মাকে লাভ করার পদ্ধতি। দেবতা হল আমাদের শরীরের ধনাত্মক শক্তি (Positive Energy), আর অসুর হল এর উলটো অর্থাৎ ঋণাত্মক শক্তি (Negative Energy) এর প্রতিক। আমাদের উদ্দ্যেশ্য এই ঋণাত্মক শক্তিগুলিকে দমন করে ধনাত্মক শক্তির মাধ্যমে সেই অমৃত অর্থাৎ পরমাত্মাকে লাভ করা। এখানে অমৃত আর কিছুই নয়, সয়ং পরমব্রমহ পরমাত্মার প্রতিক। রূপকটির মাধ্যমে বোঝানো হচ্ছে যে একটি কর্ম করতে আমাদের মধ্যে উপস্থিত দুই ধরনের শক্তিই একিসাথে কাজ করে।কিন্তু যদি ধনাত্মক শক্তি বিজয়লাভ করতে পারে তবেই আমরা পাব অমৃতের সন্ধান। এখানে এই সুত্রে এই উল্লেখও করেদি যে গীতার মুলকথাও কিন্তু এটিই। যেখানে পান্ডব ধনাত্মক ও কৌরব ঋনাত্মক শক্তির প্রতিক আর কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধজয় হল সেই পরমাত্মাকে প্রাপ্ত হয়ার জন্যে শরীরের আভন্ত্যরীন যুদ্ধ। যা যেকোন সাধককেই পেরিয়ে আসতে হয়।
মন্থন কাহিনীতে ফিরে আসি। এখানে ক্ষীরতসমুদ্র মানুষের চিন্তার প্রতীক। যার বিস্তৃতি ব্যাপক। সাধকের সাধনার শুরুতে এবং বিভিন্ন পরদক্ষেপে নানা ধরনের চিন্তার উদয় হয়। তাই হল এই সমুদ্রের ঢেউ। অর্থাৎ চিন্তার ঢেউ। যাকে প্রশমিত না করতে পারলে সাধনাইয় সিদ্ধিলাভ কদাপী সম্ভব নয়।
মন্ধারা পর্বত হল একাগ্রতার প্রতিক। পর্বত সোজা অনর ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে একই স্থানে। তেমনই হওয়া উচিত সাধকের একাগ্রতা। ওই সমুদ্রের মাঝে ওই পর্বতের এটাই অর্থ দাঁড়ায় যে সাধকের সাধনার বাঁধা হয়ে উঠে আসা চিন্তাগুলির ওপরে নিজের একাগ্রতাকে পর্বতের মত কঠিন ভাবে চেপে রাখতে হবে। মন্ধারা নামকরণটিও শুনুন এবার। মন + ধারা। মন কে একটি নদীর ধারার মতই একটি নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত কর। এটাই এর রূপকার্থ।
মন্ধারা পর্বতটিকে নিজের পিঠে ধারন করেছিলেন ভগবান শ্রীহরি বিষ্ণুর অবতার কুর্ম। এখানে কুর্ম অবতারের রূপকটি কি? এটি আরো সুন্দর ও মনজ্ঞ। কচ্ছপ এমন একটি প্রাণী যে নিজের শরীরের অংশগুলিকে নিজের কঠিন খোলোসের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখতে পারে। ঠিক তেমনি সাধকের প্রয়োজন ওইসব বাহ্যিক চিন্তাগুলিকে প্রশমিত করতে গেলে আপন একাগ্রতার দ্বারা চিন্তা ও ইচ্ছাগুলিকে প্রশমিত করে রাখা। নিজের মধ্যেই গুটিয়ে ফেলা। তবেই সাধনার উপরিস্তরে পৌঁছনো সম্ভব।
বাসুকি হল ইচ্ছাশক্তির প্রতিক। যেখানে সেই পরমাত্মাকে লাভকরার ইচ্ছায় এর সাহায্যে আপম কর্ম করে যাওয়া হচ্ছে। প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। আবার দেখুন বলা হচ্ছে বাসুকির মুখথেকে বেরহচ্ছে প্রচন্ড গরল। এর অর্থ ইচ্ছা যদি খারাপ হয় তা ক্ষতিকরও হয়ে ওঠে, তাই সৎ ইচ্ছাই কাম্য। অসৎ বা ভুল ইচ্ছা নয়। এবার কোন ইচ্ছা অসৎ বা ভুল তা কিকরে বুঝব সে বিষয় পরে আলোচনা করব।
মন্থনের শুরুর দিকেই উঠে এল গরল। এর অর্থ সাধনার শুরুতে আসা বাঁধা। বিভিন্ন কষ্ট সহ্য করা ইত্যাদি। অর্থাৎ শরীরের দিক দিয়ে আসা নানান প্রতিবন্ধকতা।
ভগবান শিব এখানে শক্তি, সাহস, চেষ্টা ও ইচ্ছাশক্তির প্রতিক। এই গুনগুলির দ্বারাই সেই বিষতুল্য বাঁধাগুলিকে প্রশমিত করা যায়। তাই যেন বলা হয়েছে একমাত্র তিনিই পারেন। এর অর্থ শিবের মত গুনাবলি প্রয়োজন এগুলিকে প্রশমিত করার জন্যে। তাই শিবকে সবথেকে বড় সাধকও বলা হয়।
এরপর বেরতে শুরু করল বিভিন্ন দামি মণিমুক্ত, ধনরত্ন। এগুলি হল সাধনার উন্নতির ফলে প্রাপ্ত বিভিন্ন সিদ্ধি। প্রথমের ওইসব বাঁধাগুলিকে প্রশমিত করার পরে ধীরে ধীরে সাধক নানান দামি সিদ্ধীর অধিকারি হতে পারেন। এখন এবিশয় আর সুন্দর ব্যখ্যা দি। ওইসব প্রাপ্ত সিদ্ধীগুলির লোভে বা মোহে পরে সাধক যদি আপন সাধনার মুল উদ্দেশ্যই ভুলে যান বা তার থেকে সরে আসেন তার অনেক সুযোগ থেকেই যায়। তাই সাধককে এবিশয় যথেষ্ট সচেতন থাকা আবশ্যক। নাহলে সেই পরমাত্মাকে লাভ সম্ভব নয়। আর তাই দেখান হয়েছে সেইসব উঠে আসা দ্রব্যাদি দেবতা ও অসুরেরা ভাগ করে নিয়ে আবার মন্থনে লেগে গেল। থামা চলবে না। নিজের লক্ষচ্যুত হওয়া চলবে না।
মোহিনী হল সেই মায়া যা মানুষকে লক্ষ্যচ্যুত করে। পথভ্রষ্ট করে। তাই অসুরের উপমার মাধ্যমে মানুষকে এটাই বোঝান হয়েছে সে সল্পবুদ্ধির ন্যায় সামান্য কিছুর লোভে পরে আসল ধনকে ভুলে যেওনা।
ধন্বন্তরি হল সেই শারিরিক শক্তি ও সুরক্ষা ও নিরোগের প্রতিক যা সাধনার পূন্যফলের দ্বারা সাধক প্রাপ্ত হন।
আর সর্বশেষে অমৃত হল সেই পরমাত্মার প্রতিক। দেখুন একটা বিষয় আর গুরুত্বপূর্ন যে অমৃত ওঠাতে দুই দলই কিন্তু পরিশ্রম করল। একই স্থানে থাকা সত্তেও কিন্তু দেবগনই বুঝলেন তার মহত্ত। অসুররা প্রথমে বোঝেনি। এর অর্থ আসুরি শক্তিতে আসল জ্ঞানের সন্ধান পাওয়া দুরুহ। আবার তাদের গুরু শুক্রাচার্য্য তাদের জানালেন ইন্দ্রের পুত্র জয়ন্ত ওই অমৃত কুম্ভ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এর অর্থ গুরু কিন্তু গুরুই হন। সে খারাপের গুরু হলেও তিনি জ্ঞানী। তাই অসুররা না দেখতে বা জানতে পারলেও গুরু কিন্তু জানতে পারেন। এখানেই গুরুর ক্ষমতার উদাহরন।
এই হল সমুদ্রমন্থনের সরলার্থ। আমি নিজের মত প্রচেষ্টা করলাম যথাসম্ভব বোঝানোর। আমি সাধক নই। তাই অজ্ঞানে ভুল কিছু লিখে থাকলে মার্জনা করবেন।



গুরু কে?
দেবাশীষ ভট্টাচার্য
অনেকের মনে এই প্রশ্নটি থাকে যে গুরু কে? গুরুকরণ করার প্রয়োজনীয়তাই বা কি? গুরু ছাড়া কি সেই উদ্দেশ্য সফল হয়না যা গুরু থাকলে হয়? ইত্যাদি। আমি এ বিষয় কিছু সহজ উদাহরন দিয়ে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। শুরুতেই বলে রাখি যারা আমার লেখা পরেছেন জানেন। কিন্তু যারা নতুন পরছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলি যে আমি বিরাট জ্ঞানী বা যোগী সাধকগনের জন্যে লিখিনা।কারন আমি নিজে তা নই। আর আমার তাদের ন্যায় অপার জ্ঞান ও নেই। আমি লিখি জনসাধারনের জন্যে। যারা সেই অর্থে আধ্যাত্মিক জগতের রসাস্বাদন করতে পারেননি। সাধক যোগী পন্ডিতগণতো সেই রস পেয়েইছেন। আমি আর তাদের কি জানাব। বরং আমারি জানা বাকি আছে। আমিও জ্ঞানের সন্ধানী। সত্যজ্ঞানসন্ধানী। কিন্তু আমি সাধারন মানুষদের কাছে সরল আলোচনার মাধ্যমে তাদেরও এই সুন্দর জগতটির প্রতি একটু আকর্ষন জন্মে তুলতে সহায়তা করতে চাই। কারন আমি নিজে জানি যে এই জগত সত্যের জগত। আর সত্যকে জানা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। তাই যারা আধ্যত্মীক বইগুলিকে ভাষা উদ্ধারের অসুবিধায় দূরে সরিয়ে রাখে, না বুঝে বলে এই জগত বয়স্কদের জন্যে তাদের বোঝাতে চাই তা সত্য নয়। সত্যটাকে দেখুন। কারন সত্যই শিব। আর শিবই সুন্দর। সত্যম শিবম সুন্দরম।
ছাত্রাবস্থায় আমাদের শিক্ষকের প্রয়োজন হয়। শিক্ষন কে? জিনি সেই বিষয় আমার অধিক পড়াশোনা করেছেন এবং যাঁর অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে অধিক। আমি তখন ছাত্র। তিনি শিক্ষক। এই শিক্ষক সেক্ষেত্রে আমার গুরু। শিক্ষাগুরু। এই শিক্ষা কিসের? সেই বিষয়ের। ধরি আমি অঙ্কের শিক্ষক রাখলাম। তিনি অঙ্কটা অন্তত আমার চেয়ে বেশি জানেন। তাই তিনি সেখাতে পারছেন আর আমি শিখতে যাচ্ছি তার কাছে। মানে এই গুরু বিশেষ কোন বিষয় শেখাচ্ছেন। ঠিক তেমনি যে শিক্ষক আমাদের আধ্যাত্ম জগতের শিক্ষা দেন, যিনি আমাদের চেয়ে সেই শিক্ষায় অনেক বেশি জ্ঞানী, তিনিই গুরু। বিষয় আধ্যাত্মীকতা। তাহলে প্রশ্ন হল, সাধারন বিষয়গুলি যা স্কুলে পড়ান হয়েথাকে সেগুলির শিক্ষক যেমন প্রচুর আছে, এই শিক্ষক অর্থাৎ গুরু সেই তুলনায় কম কেন? আর সেই শিক্ষা কি এইসব বিষয়গুলির থেকে বেশি কঠিন? উত্তর হল ধরি যেকোন একটি বিষয় যেমন ইংরাজী। এখন এই বিষয়টির ওপর যদি আপনাকে মাস্টার ডিগ্রি করতে হয় আপনাকে কত বছরের অধ্যাবসায় এর পেছনে খরচ করতে হবে ভেবে দেখুন তো? ২ বছর? না। ৫ বছর? তাও না। কারন আপনি শুধু স্নাতক এবং মাস্টার এই দুটির হিসাব করলে হবেনা।কারন তার আগে আপনি যদি মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাশটা না করতেন তাহলে এগুলি সম্ভব হত না।তার আগের ক্লাসগুলির ক্ষেত্রেও কিন্তু তাই। তারমানে আপনি যদি ক্লাস ১ থেকে ধরেন তাহলে প্রাএ ১৭বছর লাগল আপনার এই ডিগ্রী পেতে। আর এই বছরগুলিতে যদি শুধু ইংরাজী শিক্ষকের কথাই ভাবেন তাহলে ভেবে বলুনতো কজন শিক্ষক শিখিয়েছে ইংরাজি আপনাকে? হয়েতো এখন গুনে সাথে সাথে বলতেও পারবেন না। তাহলে ভেবে দেখুন যে একটি বিষয়, যা একটি বিশেষ ভাষা এবং যা মানুষেরই সৃষ্টি তা শিখতেই যদি আপনাকে এতগুলো বছর দিতে হয়, এতজন শিক্ষকের সম্মুখিন হতে হয় তাহলে সেই জ্ঞান, যা সয়ং পরমাত্মার জ্ঞান, যা সাধারন মানুষের ধারনারও বাইরে সেই জ্ঞান লাভ করে যিনি গুরু হয়েছেন তিনি কতটা শিক্ষিত। ভেবে দেখুন সেই জ্ঞান শিক্ষা পেতে কত বছর লাগতে পারে? হয়েত এক জীবনেও সেই জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। যে বিষয়টি এই বিশ্বব্রম্ভান্ডকে নিয়ন্ত্রণ করছে তা জানতে কতবছর লাগতে পারে? ভেবে দেখুন। আর এবিষয়টি নিয়ে যদি জানতে চান তাহলে কোন শিক্ষক ছাড়া শিখতে পারবেন তা কি সম্ভব?
আরেকটি উদাহরন দিচ্ছি। ধরুন আপনাকে কোন একটি স্থানের কোন এক ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে হবে। ধরুন তার বাড়ি আপনার চেনা এলাকাতেই। তাহলে তাকে খুঁজে বের করতে আপনাকে বেশি বেগও পেতে হবেনা। হয়েতো পথে কাউকে জিজ্ঞাসা না করেই আপনি তাকে খুজে বের করতে সক্ষম হলেন। এবার ভেবে দেখুন সেই বাড়ি অন্য কোন লোকালয়। আপনাকে ট্রেনে বাসে সেই স্থানে পৌঁছে তাকে খুঁজতে হবে। আপনি তখন ট্রেন বা বাস থেকে নেমে কাউকে সেই স্থানের ঠিকানা জানতে চাইলেন। মানে আপনি যখন একটু দূরে গেলেন যা আপনার পরিচিতির বাইরে তখন আপনি সেই স্থান সম্পর্কে আপনার জ্ঞানের সল্পতার কারনে একজন স্থানীয়ের সাহায্য নিলেন। যার সাহায্য নিলেন সে সেই স্থান সম্পর্কে অবগত হলে আপনাকে সেই স্থানের নির্দেশ দেখিয়ে দিল। আপনিও পৌঁছোলেন। এভাবে যদি আপনাকে দূর দেশে যেতে হলে তখন দেখবেন পথে পথে অনেকক্ষেত্রেই আপনার অজানার কারনে আপনাকে অনেকেরই সাহায্য নিতে হচ্ছে। কোথায় যাব, কোথা দিয়ে যাব, কোন বাস বা ট্রেন ধরব ইত্যাদি ইত্যাদি। মানের জ্ঞানের গন্ডী কমতে থাকলেই সাহায্যের প্রয়োজনও বেরে যায়।আবার উলটো দিকদিয়ে ভাবলে আপনি যার সাহায্যপ্রার্থী তাকেও কিন্তু সেই বিশয় অবগত থাকতে হবে।তবেই সে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। যাত্রার দুরত্ব যত বৃদ্ধি পাবে ততই এই সাহায্যের প্রয়োজন বারবে। এবার ভাবুন, যে স্থানটি এই পৃথিবিরই মধ্যে রয়েছে আপনার থেকে কিছুটা দুরেই সেইকাহ্নে যেতেই যদি আপনার সাহায্য লাগে জানার বিভিন্ন ক্ষেত্রে, তাহলে যে স্থান এসবের উর্দ্ধে, সেখানে যেতে আপনি কিভাবে ভাবছেন কারও সাহায্য ছাড়াই পৌঁছোতে পারবেন? সেই পথের আপনি স্বরুপ বা অবস্থান কিছুই যানেন না। কোথাদিয়ে কিভাবে যাবেন তাও ঠিক জানা নেই। তাহোলে? এই স্থলে আপনাকে সেই মানুষটিই সাহায্য করতে পারেন যিনি সেই রাস্তা সম্পর্কে অবগত। আর তা বুঝতেই পারছেন যেকোন মানুষেরই চেনার কথা নয়। কারন সাধারন জ্ঞানে তা জানার কথাও নয়, কারন তার জন্যে লাগে বিশেষ শিক্ষা, উচ্চস্তরের অধ্যাবশায় ও অনুশীলন। আর সেই শিক্ষা দিতে পারেন, আপনাকে সেই পথের সন্ধান যিনি বলতে পারেন, সেই স্থান সম্পর্কে যিনি অবগত তিনিই হলেন গুরু। আশা করি গুরুর আবশ্যকতা সম্পর্কিত প্রশ্নটি কিছুটা হলেও সমাধান হতে পারবে।



একি অপরূপ মায়া তব
দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য
সবেমাত্র আধ্যাত্মজগতের সন্ধান পাওয়া একজন মানুষের প্রলাপঃ
হে মা,অপার করুনাময়ী মা, একি অপরূপ মায়া তব হে মা। তুমি নিজেই সব সৃষ্টি কর আবার নিজেই ধ্বংসও কর। তাহলে বানাও কেন? যদি বানালেই তবে ঘোচাও কেন? হরিণ বানালে কত সুন্দর। বাঘ কেন বানালে মা। যে সেই সুন্দরকে গ্রাস করে? দেবতা থাকলেই শুধু কি ক্ষতি ছিল অসুরের কিবা প্রয়োজন? আবার অসুরই যদি বানালে তখন তাদের হাত থেকে দেবতা ও মনুষ্যকুলকে রক্ষা করতে তুমিই আবার দায়িত্ব নাও। আহা, কি অপরুপ মায়া তব। মানুষগুলোর কাজ দেখেও যে আমি পাগল না হয়ে পারিনা। তোমার বানান নাকি সব থেকে বুদ্ধিমান প্রানী এই আমরা মানুষ। কিন্তু সামান্য এই বুদ্ধিটাও নেই যে আজ যা পাওয়ার জন্যে এত মারামারি করছি, এত খুনোখুনি রাহাজানি করছি তা পেয়েই বা কি লাভ হবে? সেই তো চিতাতেই যেতে হবে। হ্যাঁগো মা, এই বুদ্ধিটুকু কেন হয়েনা গো মানুষের? বল যে সে সবথেকে বুদ্ধিমান? সকলে তো জানে যে এ বিশ্বের সবথেকে বড় ও চরম সত্য হল মৃত্যু। আর তার হাত থেকে কারোরই নিস্তার নেই। তবে কেন এত লোভ? এত হিংসা? যেখানে সকলে সকলের সাথে ভালোবেসে মিলেমিশে একসাথে যে কদিন এ পৃথিবীতে থাকার সুযোগ পাচ্ছে সেকদিন কাটাতে পারত তা নয়। কি করে বেরাচ্ছে দেখেছো একবার? কিছু মনে করনা মা, এই যদি বুদ্ধিমানের লক্ষন হয় তাহলে আমায় পরের জন্মে পাঁঠা কোরো। অন্তত জানব যে আমার এই বুদ্ধি নেই। তার ওপর আমি কারও ক্ষতিও করব না। চিরনিরামিশাষী হতে পারব পুরো জীবন কালে। ছাই পাঁশ কেয়ে জীবন ও শরীরকে অপবিত্র করবনা। আর শেষে যদি তোমার কৃপা হয়, তোমার কাছেই সমর্পীত হওয়ার সুযোগটাও পেতে পারি। এইভাবে হিংসাপূর্ণ লোভি মানুষ হওয়ার চেয়ে তা ঢের ভালো। তুমি নিজেই হয়েতো আজ ভাবছ কি ভেবে মানুষ বানিয়েছিলে আর কি হল। এদের শিক্ষার অভাব দেখে যুগে যুগে নিজের অংশ, নিজের কৃপাধন্য পুত্রদেরও পাঠালে। কিছু মানুষ তাতে কিন্তু প্রকৃত মানুষও হল। কিন্তু বাকিরা? কজন এনাদের কথা মানে? মানা দুরের কথা কজন তাঁদের বলা নিতিকথা জানে? ভাবতে পার?যাদের তুমি বানালে, যাদের তুমি খাওয়ার জোটালে, নিশ্বাসের প্রয়োজনীয় বাতাস যোগালে, থাকার যায়গা দিলে, তারা আজ উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত (?) হয়ে তোমাকেই মানেনা। হাহা। ভাবলেও পাগল হয়ে যাই। মনীষীগন সকলের ভালোর জন্যে, যাতে নিজের ভালো হয় এবং সমাজেরও কল্যান হয় তেমন কত পথই বাতলালেন। কিন্তু শুনল কজন?
তোমায় নিয়ে এখন ব্যাবসাও হচ্ছে। দেখতে পাওনাগো? তোমায় একবার চোখের দেখা দেখব বলে মন্দিরে ঢুকেছিলাম। কাছে পয়েসা ছিলোনা। মাগো, আমায় দেখতে দেওয়া হয়েনি। কারনটা জানলাম, কমকরে ৫০ টাকা না দিলে তোমায় নাকি দেখা যায় না। হাহা। আবার পাগল হয়েছি গো। মাগো, তুমি যে সর্বত্র তাই যারা জানেনা তারা তোমার মন্দিরের সেবক। আবার সর্বত্র থাকলেও তোমায় যে দেখা যায়না তাও এরা জানে না, আবার পরম ভক্তি থাকলে চর্মচক্ষু বিনাও যে তোমার দর্শন লাভ সম্ভব তাও জানে না গো।
এসব ভেবে রাগও হয়। আবার পরক্ষনেই কিন্তু নিজেকেই বোঝায়, এতে রাগের তো কারন নেই, কারন? এ সকলই যে তোমার মায়া মা। তাই তো বললাম, কি অপরূপ মায়া তব।
তবে আমার একটা আবদার আছে। আমাকে এই মায়ায় বেঁধোনা। আমার ভালো লাগেনা। আমি সত্যিকারের জ্ঞানী হতে চাই। মানুষ হয়ে জন্মেও কুকুরের মত আচরন করতে চাইনা। আমি চাই তোমার সবথেকে বড় সৃষ্টির মান রাখতে। যেমন রেখেছেন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ, মা সারদা, স্বামী বিবেকানন্দ। আমি অতি সামান্য, নির্বোধ। এনাদের মত হওয়াতো নিতান্ত কল্পনা মাত্র। আমায় শুধু এই মতি দাও যাতে এনাদের দেখানো পথে হাঁটতে পারি মা। তবেই যে তোমায় পেতে পারার সুযোগ পাব। আমি পাগলই হতে চাই। বাবার মত পাগল হলে মা যে তোমার চরন পাব। জয় মা। জয় মা। জয় মা।


জাতির নব অভ্যূত্থানের আশায়
দেবাশীষ ভট্টাচার্য
এ কথাটা শুনেছি মানুষ পৃথিবীর সবথেকে বুদ্ধিমান প্রানী। কিন্তু কজন ভেবে দেখেছি কি সেই কারন? বুদ্ধি বেশি? কোন দিক দিয়ে? আসুন একটি আলোচনা করা যাক। আচ্ছা, কোন মানুষ কি পারে ভুমিকম্পের আগে তা জানতে? নিশ্চয়ই পারে। তবে মেশিনের সাহায্যে। তাই তো? মানুষ বুদ্ধিমান প্রানী। তাই সেই বুদ্ধির সাহায্যে মেশিন বানিয়ে নিয়েছে। কিন্তু জানেন কি পিঁপড়েরা কিন্তু ওইটুকু প্রানী হয়েও আগে থেকেই ভুমিকম্পের খবর বুঝতে পারে। তাই মাটির ওপরে বেরিয়ে আসে। তাদের কিন্তু কোন মেশিন লাগেনা। আচ্ছা, পরিযায়ী পাখির কথা নিশ্চয়ই জানেন। তারা শীত কালে নিজেদের যায়গা ছেরে বহু দুরের পথ অতিক্রম করে চলে আসে আমাদের দেশে। আচ্ছা, ভেবে দেখুন তো, এদের তো কোন কম্পাস লাগে না। তবুও এত হাজার কিলোমিটার কিভাবে খুঁজে চলে আসে? আর ছোট পাখিও আসে, এটা বলতে পারবেন না যে তারা অভিজ্ঞ, পথ চেনে। ওদের মধ্যে এমনি প্রযুক্তি আছে জন্ম থেকেই যা পৃথিবীর চৌম্বকীয় শক্তির মাধ্যমেই তাকে কাজে লাগিয়ে দিক চিনতে সক্ষম হয়। ভাবুন। আরেকটি কথা ভাবুন। বিভিন্ন পশুদের দেখুন যেমন বাঘ সিংহ ইত্যাদির শিশুদের শিকার করা, কোন খাবার খাবে কোনটা খাবেনা তা শেখান ইত্যাদির প্রয়োজন পরেনা। নিজেদেরই সেই শক্তি জন্ম থেকেই ততৈরি। আর হাঁটা? তাও সেখাতে হয়েনা। মানুষের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখুন। এবার আরো সাঙ্ঘাতিক। আমাদের পাঁচটা ইন্দ্রিয় আছে, তা আমরা জানি। এবার দেখুন, একটা কুকুরের ঘ্রাণশক্তি আমাদের চেয়ে বেশি। মানেন তো? আর দৃষ্টি শক্তি? সেটাও তো প্রমান হয়েছে যে কুকুররা এমন কিছু বেশি দেখতে পায় যা আমরা পারিনা। ওরা শুনতেও পায় বুঝি আমাদের চেয়ে বেশি। রাতে চোর পরলে টের পাওয়া যায়। কত্তা জাগার আগেই ওরা কিন্তু চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। রইল বাকি দুই। আস্বাদ গ্রহন আর ত্বকের কথা জানিনা। তবুও দেখুন ৫ এ কিন্তু ৩ এই ওরা এগিয়ে গেল। নাঃ বুঝছি ভাবছেন আমি মানুষের সাথে বিভিন্ন জন্তুদের তুলোনা করছে মানুষকে অপমান করার জন্যে। না, তা নয়। আসলে আমি এটাই এবার তুলতে যাচ্ছি যে মানুষ হয়ে তো জন্মালাম, তা করলামটা কি? কিসে আমরা ওদের চেয়ে বেশি হলাম? বিজ্ঞানের উন্নতি করলাম? অবশ্যই করলাম। সেবিষয় সন্দেহ নেই। কিন্তু সেতো বিজ্ঞানিরা করল। আপনি আমি কি করলাম? আমি সাধারন মানুষের কথাই বলতে চাইছি। বিজ্ঞানিরা খেটে খুটে আবিষ্কার করে চলেছেন, আমরা কজন তারই বা হদিস রাখি? পরের নিন্দা করব না ভাল কথা আলোচনা করব। তখন কোন খেলোয়ার একটু খারাপ খেলায় দেশ হারল তা নিয়ে বিদ্বেশ ছড়াতেই ব্যাস্ত। কিন্তু দেখুন একদিনও ব্যাট নিয়ে মাঠে নামলেননা। এদিকে এমন করে বলছেন যেন ওর যায়গায় আপনাকে নামালে আপনি ম্যাচটা জিতিয়ে দিতেন। এই চলছে আরকি। ভালো কাজ করব এসব ভাবার সময় কোথায়? “আরে ধুর মশায়, আপনি বাঁচলে বাপের নাম। শোনেননি? নিজেকে নিয়ে ভাবতেই দিন কেটে যাচ্ছে, পরকে নিয়ে ভাববার সময় কোথায়। ওসব আপনি ভাবুন। পেটে ভাত জোটার চিন্তা না থাকলে এসব ভাবার সময় থাকে।”
এই ধারনাই আজ আমাদের ধ্বংস করছে। করে চলেছে। ভেবে দেখবেন। এর মাধ্যমের আমরা কি স্বার্থপর হয়ে যাইনি? এই স্বার্থপরতা কি মানুষের ভালো করে না ক্ষতি করে? কেন, পারিনা আমরা এর থেকে বেরিইয়ে আসতে, নতুন কিছু করতে? অন্যের জন্যে কিছু করতে? এবার শুনুন তাহলে আমরা ওদের চেয়ে কোথায় কোথায় আলাদা।
মানুষ সৃষ্টিশীল, সে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারে। ওরা পারেনা। মানুষ নতুন আবিষ্কার করে দেশকে, জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, ওরা পারেনা। কবিতা, গল্প, গান, আঁকা, ইত্যাদি কে পারে? সে এই মানুষ। নিজের জীবনকে, পরের জীবনকে কোন পথে চালনা করলে পাবে আলোকের সন্ধান, সত্যের সন্ধান, তা জানাতে ও জানতে পারে একমাত্র মানুষ। মানুষই পারে, নিজেকে দেবতা করতে। জন্তু নয়। মানুষই পারে নিজের জ্ঞানের আলোয় দেশকে উজ্জ্বল করতে। জাতির অভভুত্থান ঘটাতে। জানোয়ার পারেনা। এখানেই মানুষের সাথে তাদের পার্থক্য। আরো অনেক কিছুই আছে কিন্তু এখানে এটুকুই বললাম কারন আগামী আলোচনা এর ওপরে ভিত্তি করেই করতে চলেছি।
শুধু খাওয়া, ঘুম আর গতানুগোতিক কাজই যদি করে যাব সারাজীবন ধরে, তাহলে আর মানুষ হলাম কিকরতে। ভাবুন, একটা স্টেশনের কুকুর, রোজ নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে উঠে স্টেশনের দোকানটায় গিয়ে দাঁড়ায়, ওই সময় একজন আসে সে রোজ তাকে বিস্কুট খাওয়ায়। এভাবে সারাদিন খাওয়ার খুঁজে দিন কেটে যায়, রাত হলে ঘুমিয়ে পরে আবার পরের দিন সকালে একই কাজ। মাঝে সন্তান সন্ততি হয়, সেতো প্রাকৃতিক নিয়মেই হচ্ছে। এই ভাবেই একদিন মৃত্যু এসে যায়। জীবনের সমাপ্তি হয়। এবার ভেবে দেখুনতো, আমাদের জীবনও কি এরকমই কিছু একটা হয়ে যাচ্ছেনা? সকালে উঠে অফিস ছোটা, স্টেশনের লোকটার বিস্কুটের মতই মাসের শেষে মাইনে পাওয়ার জন্যে কাজ করে যাওয়া। এভাবেই সংসার, ছেলেমেয়ে, শেষে মৃত্যু। বাকিটা কি করলাম? কজন মনে রাখলো মৃত্যুর পর আমায়? কেউ না। নিজের লোককটা বাদে। তাহোলে গীতায় ভগবান যে কর্মের কথা বলেছেন তা কি শুধু এই কর্ম? ভেবে দেখবেন। নিজের লোক কারা? পরের লোকই বা কারা? কেউ কি নিজের? বা কেউ কি পরের? কি জানি। ভেবে দেখু। গীতাতেই এর উত্তর আছে। বইটা একটু পরবেন। তুলসি পাতা হাতে নিয়ে পরতে হবেনা। মনে প্রেম নিয়ে, ভক্তি নিয়ে পরবেন। সত্যকে জানবার ইচ্ছা নিয়ে, এবং তা জানতে পারবেন সেই বিশ্বাস নিয়ে পরবেন। আর একবার যদি এর মানে বোঝেন, জানবেন সত্যের ছোঁয়া লেগেছে আপনার চোখে। একটা কথাই শুধু বলি, মানুষ হয়ে জন্মেছি যখন মানুষের কর্মই করতে চাই। আর রামকৃষ্ণ ঠাকুরের একটা কথা মাথায় রাখবেন যে সব কাজই তার জন্যে (পরমেশ্বরের জন্যে) করবেন, নিজের জন্যে নয়। সবই তাতেই সমর্পন করবেন। তাই বুঝতেই পারছেন, এমন কিছু করবেন না যা তাকে সমর্পন করতে লজ্জা পাবেন। এমন কিছু করুন যাতে এই ভাগ্য করে পাওয়া মানুষের জীবনটা স্বার্থক হয়। তাতে তিনিও খুশি হবেন। যে, তাঁর সবথেকে বড় সৃষ্টি বিফলে যায়নি।

No comments:

Post a Comment