Pages

Tuesday, November 13, 2012

হিন্দু বোনদের জন্য সতর্কবার্তা


অতি স¤প্রতি সিলেটের একটি ঘটনা দেশের ছোট বড় প্রায় সব কটি পত্র পত্রিকায় নিউজ হিসেবে ছাপিয়েছেনিউজটি হল একজন সিলেটের ডাক্তার তার স্ত্রীকে তালাবদ্ধ অবস্থায় বন্দি করে হজ্জ ব্রত পালন করতে সৌদি আরব গেছেন
বলা বাহুল্য, তালাবদ্ধ অবস্থায় বন্দিনী স্ত্রীলোকটি এককালে হিন্দু ছিলেন এবং তিনিও পেশায় ডাক্তারলাভ জিহাদীদের খপ্পরে পড়ে নিজ পিতৃ ধর্ম পরিত্যাগ ও ভালবাসার টানে অতি আশা করে মুসলিম ডাক্তারের ঘরণী হয়েছে, আর এর চরম মূল্য কি করে দিচ্ছেন, তা আমরা সকলে পত্র পত্রিকা মারফত অবগত হলামএটা কোন বিচিন্ন ঘটনা নয়, এটি বহু পুরাতন ও ধারাবাহিক ঘটনার একটি মাত্রপ্রায় প্রত্যেকটি ধর্মান্তরিত বিয়ের পর ধর্মান্তরিত মেয়েদের ক্ষেত্রে এমনই হয়কারণ মূল কারণ হলো যে ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়েটা করলেন, ঐ ধর্ম দর্শনে একজন পূরুষের ৪ এর অনধিক বিয়ে করার অধিকার এবং ভাল না লাগলে দেন মোহরের টাকা দিয়ে বিদেয় করার বিধান সংরক্ষিত করা আছেহিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তরিত হয়ে বিবাহ ও পরবর্তী পরিনতি বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বহু দৃষ্টান্ত আমাদের প্রত্যেক্ষ হয়েছে নিচে এ রকম একটটি ঘটনার বিবরন হুবহু তুলে ধরলামএটি একজন লেখকের বরারব প্রেরিত চিঠি যা হবহু তুলে ধরা হল, সকল অববিবাহিত হিন্দু ভাই ও বোনদের পড়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি-
***********
মাননীয় রবীন্দ্রনাথ বাবু,
আপনার লেখা নিঃশব্দ সন্ত্রাসবইটা আমার এক বন্ধুর মারফৎ পেয়ে বিশেষ মনোযোগ সহকারে পাঠ করে আমি এতই অভিভূত হয়েছি যে, বইতে দেওয়া ফোন নাম্বার যোগাযোগ করার ঠিকানা নিয়ে আপনাকে এই পত্র দিচ্ছিআপনার বইতে আমার জীবনের একটা ঘটনার বা¯Íব চিত্র আপনি অঙ্কিত করেছেন এবং আমাদের একটা পরিবার কিভাবে ধ্বংস হয়েছে তা আপনাকে জানিয়ে মনটাকে কিছু হাল্কা করার চেষ্টা করছিআমার জন্ম নদীয়া জেলার একটি অতি প্রাচীন ব্রাহ্মণ বংশেআমাদের পরিবার এতই নিষ্ঠাবান যে মাছমাংস তো দূরের কথা পেঁয়াজ-রসুন, মসুর ডাল ইত্যাদিও খাওয়া বারণআমার ঠাকুরদাদা বেঁচে থাকতে পাঁজি-পুঁথি দেখে খাদ্য নির্বাচিত হতো; যথা- প্রতিপদে কুমড়ো, মাঘ মাসে মূলো, কুল ইত্যাদি ভÿণ নিষেধতাছাড়া একাদশী, অমাবস্যায় নিশিপালন, বারোমাসে তেরো পার্বনপূজা ব্রতকথা উপবাস ইত্যাদি তো লেগেই থাকতব্রাহ্মণ কন্যা ছাড়া আমাদের বাড়ীতে পরিচারিকা রাখা হতো নানদীয়া, বর্ধমানের গ্রাম অঞ্চল থেকে গরীব ব্রাহ্মণ কন্যাদেরকে বেশী মাইনে এবং খাওয়া-পরা দিয়ে নিযুক্ত করা হতোআমার পূর্বপুরুষদের অনেক শিষ্য অবিভক্ত বাংলার বিভনড়ব জেলা, আসাম, মণিপুর ইত্যাদি অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলপ্রতি বৎসর প্রচুর টাকা এম.ও. যোগে বিভিনড়ব সময় আসতোআমার ঠাকুরদাদা যখন শিষ্য বাড়ীতে যেতেন তখন ব্রাহ্মণ পাচক সঙ্গে নিয়ে যেতেনতিনি অন্য জাতির হাতের জল পর্যন্ত খেতেন নাএহেন গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে আমার জন্মআমরা ভইবোন দুজনে যমজ; প্রথমে জন্মেছি বলে আমি বড়, তার কিছুÿণ পরে জন্মেছে বলে বোন ছোটদুজনে মায়ের দুই ¯Íন পান করে একই বিছানায় শুয়ে বড় হয়েছিভাইবোনের যখন কোন অসুখ হত তখন দুজনেই ঐ অসুখে আক্রান্ত হতামযথা জ্বর হলে একই টেম্পারেচার, পেট খারাপ হলে একই রকম পায়খানা ইত্যাদিআমার বাবা-মা একজনকে ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে গিয়ে প্রেসক্রিপশান করিয়ে এনে দুজনকে একই ঔষধ খাওয়ালে রোগ নিরাময় হতোছোটবেলায় চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত দুজনে পাড়ার একই স্কুলে পড়েছি এবং সববিষয়ে দুজনে প্রায় একই নম্বর পেতামতারপর উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত দুজনে আলাদা স্কুলে পড়েছি

আমি ছেলেদের এবং বোন মেয়েদের স্কুলে পড়েছিএরপর কলেজে দুজনে আবার একই কলেজ ভর্তি হইসেই থেকেই আমাদের পরিবারে এক ভয়ানক বিপর্যয় আরম্ভ হয়আমাদের কিছু সহপাঠী ছিল গ্রাম অঞ্চল থেকে আসা চাষী পরিবারের মুসলমানসেই সুবাদে আমার বোন একটা গ্রাম্য মুসলমান সহপাঠীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা আরম্ভ করেপ্রায় এক বৎসর এভাবে চলার পর আমার বোন ঐ মুসলমান ছেলেকেই বিয়ে করবে বলে মনস্থির করে ফেলেশত বোঝানোর ফলেও তাকে ফেরানো যায়নিধীরে ধীরে এই সংবাদ বাবা এবং পরিবারের অন্যান্যদের গোচরীভূত হয়ইতমধ্যে বোন সকলের প্রচন্ড বাধা অতিক্রম করে গৃহত্যাগী হয়ে ঐ মুসলমান সহপাঠীর বাড়ীতে চলে যায়সামাজিক এবং লোকলজ্জার ভয়ে আমরা থানা পুলিশ বা তাকে উদ্ধারের কোন চেষ্টাই করিনিমুসলমান পরিবার তাকে সাদরে গ্রহণ করে ইসলাম ধর্মে দীÿিত করে তার বিবাহ সম্পনড়ব করেএরপর লজ্জায় এবং ঘৃণায় একমাস আর কলেজ যাইনিএরপর কলেজে যোগ দিয়ে ঐ গ্রামের অন্য মুসলমান সহপাঠীদের নিকট আমার বোনের দুঃসহ জীবনের সংবাদ পেতে থাকি, যথা খাওয়া-দাওয়ার প্রচন্ড অসুবিধাযে দিন গোমাংস রান্না হতো, সেদিন বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়া, মুসলমান জীবনের মত নিয়ম, অষ্টপাশ বন্ধন, স্বামীর সাথে কোথাও বের হলে বোরখা পরা অবস্থায় চলাফেরা, পাঁচবার নামাজ পড়া ইত্যাদি তার অসহ্য হয়ে উঠেকিন্তু এখন আর ফেরার কোন পথ নেইআমাদের পরিবারে তার কোন স্থান হবে না তা সে বুঝতে পারেসে আমাকে তার অনুতপ্ত জীবনের ঘটনা জানিয়ে গোপনে এক আত্মীয়ের বাড়ীর ঠিকানায় চিঠি দিয়ে সব জানায় এবং ÿমা প্রার্থনা করেকিন্তু দুঃখ পাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেইএরমধ্যে আরম্ভ হয়ে গেছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচন্ড অশান্তিসব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন না তালাক তালাক তালাকবলে ঘাড় ধরে ঘর থেকে বের না করে দেয়আমি তাকে উপদেশ দিয়ে পত্র দিতাম মানিয়ে চলতেকারণ এখন বাড়ীতে ফেরার কোন উপায় নেইবিয়ের পরেই তার স্বামী কলেজের পড়া ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চাষাবাদে মন দেয় এবং মাঝে মাঝে বাইরে কোথাও গিয়ে কিছু কাজকর্ম করে বাড়ী ফিরে আসেতার ৫ বৎসর বিবাহিত জীবনে সে ৪টি সন্তানের মা হয়কিন্তু স্বামী- স্ত্রীর মনোমালিন্য এবং অশান্তি চলতেই থাকেএরপর খবর পেলাম তার স্বামী বাইরে কোথাও চাকুরী নিয়ে চলে গেছে এবং আমার বোন এবং বাচ্চাদেরকে তার কর্মস্থলে নিয়ে গেছেএরপর অনেক দিন আর কোন সংবাদ পাইনিভাবলাম এবার হয়তো বোন একটু সুখে-শান্তিতে আছেকিছুদিন পর আমার এক আত্মীয়ের বাড়ীর ঠিকানায় খামে এক পত্র আসে আমার নামেখাম খুলে চিঠিটি পড়ে জানতে পারলাম বোন এখন মধ্য ভারতের কোন এক শহরের এক গণিকালয়ে অবস্থান করছে এবং তার স্বামীই মোটা টাকার বিনিময়ে ষড়যন্ত্র করে দালাল মারফৎ তাকে সেখানে বিক্রি করে দিয়েছেতার জীবনের জন্য তার কোন দুঃখ নেইতার কৃতকর্মের ফল সে ভোগ করছে, কিন্তু তার চারটে সন্তানের জন্য সে ভয়ানক চিন্তিতসে লিখেছে আমি সেন একটু খোঁজ করে দেখি তার সন্তানরা কোথায় কি অবস্থায় আছে

আমার হৃদয়ের ব্যথা কাউকে জানাবার লোক নেই তাই আপনাকে দীর্ঘ এই পত্র লিখে মনের বেদনা কিছুটা হাল্কা করলামআপনি হিন্দু মেয়েদের মুসলমান বিয়ে করে দুরবস্থার কথা চিন্তা করে পরিশ্রম করে বইটা লিখেছেনতার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই
ইতি, শ্রদ্ধাবনত.........
***********
(
বিঃদ্রঃ- কোটেড অংশটি নিঃশব্দ সন্ত্রাসনামক বই থেকে নেয়া ****** অরুন চন্দ্র মজুমদার, ঢাকা ১2/১১/২০১২ইং)

No comments:

Post a Comment