Pages

Friday, May 31, 2013

আমেরিকায় প্রথম কোনো হিন্দু পা রাখেন হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভে যার নাম তুলসী গেবার্ড



গত বছর নির্বাচনে আমেরিকায় প্রথম কোনো হিন্দু পা রাখেন হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভে যার নাম তুলসী গেবার্ড । বিরাট ব্যাবধানে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি ।তুলসীএসেছেন সম্পূর্ণ অহিন্দু পরিবেশ থেকে । তার বাবা হাওয়াইয়ের স্টেট সিনেটর মাইক গেবার্ড ও মা ক্যারল গেবার্ড শিক্ষাবিদ ।http://articles.timesofindia.indiatimes.com/2013-01-05/us-canada-news/36161188_1_tulsi-gabbard-mike-gabbard-carol-porter


                          রাজনৈতিক প্রচারনায় ব্যাস্ত

কিশোর বয়স থেকে সনাতন ধর্মের প্রতি অনুরক্ত এবং এই ধর্মে দীক্ষিত হন তিনি। শুধু সনাতন দর্শনকে গ্রহণই করেননি, যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মত এমন কেউ শপথ গ্রহন করলেন যিনি হাতে নিয়েছিলেন পবিত্র শ্রীমদ্ভগবদ গীতা । এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলোতে খবর আসে এভাবে, ‘’ গীতা হাতে শপথ নিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) প্রথম হিন্দু আইনপ্রণেতা হিসেবে শপথ নিয়েছেন হাওয়াইয়ের তুলসী গাব্বার্দ (৩১)। গীতা পাঠ করে শপথ নেওয়ার ঘটনাও মার্কিন পার্লামেন্টে প্রথম।

গতকাল বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে তুলসী বলেন, ‘শপথের সময় আমি আমার ব্যক্তিগত ভগবদগীতার কপিটি নিয়ে যাই। কারণ, এই শিক্ষাই আমাকে দেশ ও অন্যের সেবায় জীবন উত্সর্গ করতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’



                                                                        প্রার্থনারত তুলসী  



গীতা নিয়ে শপথ পাঠ প্রসঙ্গে তুলসী আরও বলেন, ‘আমার গীতা আত্মিক শান্তি ও শক্তিমত্তার উত্স। এর মাধ্যমে আমি জীবনের অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পেরেছি।’
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-01-04/news/318673 “
বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে যখন ভারত সহ অন্যান্য দেশ নিশ্চুপ অবস্থানে তখন দায়িত্ব গ্রহনের পরই তিনি এদেশের হিন্দুদের ব্যপারে খোঁজ খবর নেন। তুলসী গ্যাবর্ড (৩১) বাংলাদেশ ককাসে যোগ দেন ।



বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতা সিতাংশু গুহ, শ্রামল চক্রবর্তী, প্রদীপ দাস, ধ্রুব চক্রবর্তী, সন্তোষ দেবনাথ, প্রিয়তোষ মজুমদার, আল্পনা চক্রবর্তী প্রমুখ সাক্ষাত্ করেন নর্বনির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান তুলসীর সঙ্গে।

এ বৈঠকের সমন্বয় করেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সংগঠক দিলীপ নাথ। এ সময় তারা বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি তাকে অবহিত করেন এবং তাদের সার্বিক কল্যাণ তথা বাংলাদেশের কল্যাণে কাজের সুবিধার্থে কংগ্রেশনাল বাংলাদেশ ককাসে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ সময় তুলসি গ্যাবর্ড বলেন, এরই মধ্যে তিনি কংগ্রেশনাল বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলির সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন। 




                                                    বাংলাদেশের সংখ্যালঘু প্রতিনিধিদের সাথে


জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শপথ গ্রহণের পরই তিনি বাংলাদেশ ককাসে যোগদান করবেন। এর আগে নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং বাংলাদেশ ককাসে যোগদানে সম্মত হয়েছেন। গ্রেস মেংও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির টিকিটে জয়ী হয়েছেন।
এভাবেই দূরদেশের এক হিন্দু অনুরাগী তাঁর নিপীড়িত সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করছেন। আমাদের আশা এভাবে সবাই বাংলাদেশের নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করবেন এবং তুলসী গ্যাবারড অনুকরণীয় হয়ে রইবেন।

Thursday, May 30, 2013

২০০১ নির্বাচন পরবর্তী হিন্দু নির্যাতনের সংবাদ শিরোনাম

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা গোল্ডফিসের মতো এসব ভুলে যেতে ভালোবাসেন
আসুন তখনকার কিছু পত্রিকার হেডলাইন দেখিয়ে তাদেরকে উর্বর মস্তিষ্কের গোঁড়ায় কিছু সার দেওয়া যায় কিনা দেখি

সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা ভোলাবাসীর আতঙ্ক কাটছে না !
(
প্রথম আলো ৩.১০.০১)

২০ জেলায় আওয়ামি লিগের সমর্থক ও সংখ্যালঘুদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, সংঘর্ষ : নিহত ৯
(
প্রথম আলো ৫.১০.০১)

অব্যাহত হামলার মুখে উত্তরের অনেক জেলা থেকে সংখ্যালঘুরা দেশত্যাগ করছেন
(
প্রথম আলো ১০.১০.০১)

গলাচিপায় অর্ধশতাধিক সংখ্যালঘু পরিবার সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি
(
প্রথম আলো ১০.১০.০১)

গৌরনদী-আগৈলঝাড়ার চিত্র ধানের শীষে ভোট দিয়েও সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে
(
যুগান্তর ১০.১০.০১)

সংখ্যলঘুদের জন্য চনপাড়া এখন আতঙ্কের জনপদ, বিএনপির সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঘরছাড়া তরুণরা, মেয়েদের "তুলে নিয়ে" যাওয়ার হুমকি
(
আজকের কাগজ ১০.১০.০১)

আগৈলঝাড়ার সংখ্যালঘুরা বাড়ি ফিরতে চায়
(
জনকণ্ঠ ১৫.১০.০১)

নড়াইলের কালিয়া ও নড়াগাতীতে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন অব্যাহত: গোপালগন্জ্ঞের আশ্রিতরা বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না
(
জনকণ্ঠ ১৫.১০.০১)

নগরকান্দায় এক সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর হামলা '৭১-এর ঘটনাকেও হার মানিয়েছে
(
জনকণ্ঠ ১৫.১০.০১)

ভাঙ্গায় মায়ের সামনেই কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীকে ধর্ষণ ।
(
জনকণ্ঠ ১৫.১০.০১)

শুধু উৎকুলই নয়, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বাগেরহাটের সকল গ্রামই কার্যত এখন অবরূদ্ধ, তীব্র আতঙ্ক 
(
জনকণ্ঠ ১৫.১০.০১)

নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস : চোখের সামনে বাবা-মাকে মারধর করায় শিশুরাও আতঙ্কিত ।
সংখ্যালঘু নারীধর্ষণের উন্মাদনায় মেতেছে সন্ত্রাসীরা ।
বিএনপি ক্যাডারদের অত্যাচারে কালীগন্জ্ঞের ১১ হাজার মানুষ ঘরছাড়া : পৌর চেয়ারম্যান মান্নানের অভিযোগ 
(
জনকণ্ঠ ১৫.১০.০১)

আমি কিসের বিচার চাইবো -বলেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন শেফালীরানী
(
সংবাদ ১৫.১০.০১)

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা লুটপাট অব্যাহত 
(
সংবাদ ১৫.১০.০১)

মিরসরাইয়ে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতন অব্যাহত । পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। 
(
সংবাদ ১৫.১০.০১)

নাজিরপুরে বিএনপি সন্ত্রাসীদের তান্ডব : হামলার ভয়ে বরগুনা ও যশোর শহরে সংখ্যালঘুদের আশ্রয় গ্রহণ 
(
প্রথম আলো ১৫.১০.০১)

সংখ্যালঘু নির্যাতন : পরিবারের তিন নারীর সম্ভ্রমহানি 
(
প্রথম আলো ১৫.১০.০১)

মতলব ও শাহরাস্তিতে প্রতিমা ভাংচুর ! 
(
প্রথম আলো ১৫.১০.০১)

সরাষ্ট্রমন্ত্রির সামনেই কমলারানী তার বাড়িতে হামলার বিবরণ 
(
সংবাদ ১৬.১০.০১)

এই দুর্বৃত্তদের বিচার করবে কে? রামশীলের আশ্রয়কেন্দ্রে অসংখ্য নির্যাতিত মুখ
(
সংবাদ ১৬.১০.০১)

গৌরনদীতে সংখ্যলঘু দুই ভাইকে বেঁধে রেখে তাদের গণধর্ষণ করেছে বিএনপির ক্যাডাররা 
(
সংবাদ ১৬.১০.০১)

চাটখিলে আওয়ামি লিগ নেতা অপহূত ঈশ্বরগন্জ্ঞে ৯ টি মূর্তি ভাঙচুর
(
সংবাদ ১৬.১০.০১)

সংখ্যলঘু ও আওয়ামি লিগের ওপর চলছে সহিংস নির্যাতন, লুটপাট, ধর্ষণ ও দেশ ছাড়ার হুমকি 
(
সংবাদ ১৬.১০.০১)

গৌরনদী আগৈলঝাড়ার বাস্তুচ্যুত মানুষের কান্না : ' ৫ বছর চলেছে হাসানাতের সন্ত্রাস এখন চলছে স্বপনের সন্ত্রাস 
(
সংবাদ ১৭.১০.০১)

সংখ্যালঘু ও আদিবাসীরা আতঙ্কিত : টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি-মধুপুরে সহিংসতা অব্যাহত 
ঝালকাঠির পূর্বফুলহার গ্রামে সংখ্যালঘু পরিবারের ওপর নির্যাতন : বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে সন্ত্রাসীরা
(
সংবাদ ১৭.১০.০১)

জামালপুর, রংপুর ও নাটোরে প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দিরে হামলা
(
সংবাদ ১৭.১০.০১)

নির্বাচন-উত্তর সন্ত্রাসে স্বরূপকাঠির সংখ্যালঘু ও আওয়ামি লিগ নেতা কর্মীরা এলাকাছাড়া
(
সংবাদ ১৭.১০.০১)

সংখ্যালঘুর কিশোরীর সম্ভ্রমহানি : ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেন ভাঙ্গা বিএনপি সভাপতি
(
প্রথম আলো ১৭.১০.০১)

কালীগণ্জ্ঞের তিল্লা গ্রামে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা : রেহাই পায়নি অন্ধ বিবেককুমারও
(
প্রথম আলো ১৭.১০.০১)

বগুড়ার কাহালুতে প্রতিমা ভাঙচুর, সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক।। অনাড়ম্বর পূজার সিদ্ধান্ত
(
সংবাদ ১৯.১০.০১)

রায়পুরে পূজামন্ডপে মূর্তি ভাঙচুর
(
সংবাদ ১৯.১০.০১)

কালিয়াকৈর উপজেলার সংখ্যালঘু পরিবারগুলো এখনো বাড়িঘরে ফিরতে পারে নি
(
সংবাদ ১৯.১০.০১)

সংখ্যালঘুর নির্যাতন : পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে কূটনীতিকদের উদ্বেগ প্রকাশ
(
যুগান্তর ১৯.১০.০১)

সংখ্যালঘুর ওপর হামলা : ঘটনাগুলো অস্বীকার করার জন্য প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক চাপ
(
প্রথম আলো ১৯.১০.০১)

দুর্বৃত্তদের কাণ্ড : পূজামণ্ডপে গরুর হাড়
(
সংবাদ ২০.১০.০১)

নির্বাচন পরবর্তী সন্ত্রাসের সঙ্গে বিজয়ী দলের কর্মীরা জড়িত : ফেমার প্রতিবেদন প্রকাশ
(
সংবাদ ২০.১০.০১)

মিঠামইনে অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি : সংখ্যালঘুদের ওপর চলছে অকথিত অত্যাচার
(
সংবাদ ২০.১০.০১)

পালিয়ে যাওয়ার পর বাড়ি ফিরতেও সংখ্যালঘুদের টাকা দিতে হচ্ছে (প্রথম আলো ২০.১০.০১)
নীলফামারীতে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা : তদন্ত করে অবশেষে মামলা গ্রহণ
(
প্রথম আলো ২০.১০.০১)

নাটোরে সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ । মির্জাপুরে পূজামণ্ডপে ভাঙচুর । (২০.১০.০১)
রাজশাহী জেলা জুড়ে আওয়ামি লিগ নেতাকর্মী, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের ওপর চলছে নির্মম নির্যাতন
(
সংবাদ ২১.১০.০১)

দেবীদ্বারে আওয়ামি লিগ ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন । প্রশাসন নীরব
(
সংবাদ ২১.১০.০১)

ফরিদপুরে ও কিশোরগণ্জ্ঞে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর : ৬ জন গ্রেপ্তার 
(
প্রথম আলো ২১.১০.০১)

আমার মতো কেউ যেন অত্যাচারের শিকার না হয় : পূর্ণিমা 
(
সংবাদ ২১.১০.০১)

রামশীলের দুঃখী মানুষের কথা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী না যাওয়ার নেপথ্যে
(
সংবাদ ২১.১০.০১)

কচুয়ায় মানুষ আতঙ্কে কাঁপছে : সন্ত্রাসীদের নির্যাতন সেখানে সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে 
(
জনকণ্ঠ ২২.১০.০১)

রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা । অনেকেই পালিয়েছেন । 
(
প্রথম আলো ২২.১০.০১)

নির্বাচন বিজয়ের বেদিমূলে সংখ্যালঘু বলি 
(
জনকণ্ঠ ২২.১০.০১)

সিলেটে সংখ্যালঘু লোকজন আতঙ্কে আছেন 
(
জনকণ্ঠ ২৩.১০.০১)


মোড়লগণ্জ্ঞে সংখ্যালঘু ও আওয়ামি লিগ সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, লুটপাট চাঁদাবাজি । অভিযোগে ফল হচ্ছে না । 
(
জনকণ্ঠ ২৩.১০.০১)

হিজলায় সংখ্যালঘুর বাড়ি নিশ্চিহু : গৃহবধূ নির্যাতিত 
(
ইত্তেফাক ২৩.১০.০১)

ক্ষুদিরামের 'স্বাভাবিক মৃত্যু' ও প্রিয়বালার ক্ষেত্রে 'অপরাধজনিত নরহত্যা' (প্রথম আলো ২৩.১০.০১)

নৌকার ভোটার আর সংখ্যালঘুদের জন্য কালিয়াকৈর জিম্মি জনপদ (জনকণ্ঠ ২৩.১০.০১)

ভোলার নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের আজাহারি : প্রধানমন্ত্রীকে বলবেন, আমরা ভোট দিইনি আগামীতেও দেবো না, শুধু এদেশে থাকতে চাই
(
সংবাদ ২৩.১০.০১)

কাপাসিয়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ 
(
সংবাদ ২৩.১০.০১)

ভেগুরবাড়িতে এক বিভীষিকার রাত, ধর্ষণের মামলা একটি 
(
প্রথম আলো ২৪.১০.০১)

ঘটনাস্থল মিরসরাই, বাউফল, না'গণ্জ্ঞ, কালিয়াকৈর ও সৈয়দপুরের সোনাখুলি : সবখানে সংখ্যালঘু ও আওয়ামি লিগের নেতা কর্মীদের ওপর চলছে চরম নির্যাতন । চাঁদাদাবি না হলে দেশ ছাড়ার হুমকি 
(
সংবাদ ০১.১১.০১)

মাকে সন্তুষ্ট করতে নয়, বিএনপিকে সন্তুষ্ট করতেই এই পূজা 
(
সংবাদ ০৩.১১.০১)

সংখ্যালঘুরা আতঙ্কে, আওয়ামি লিগ নেতা কর্মীরা ঘরে ফিরতে পারছে না (সংবাদ ০৪.১১.০১)
মাধবপুরে আতঙ্কজনক পরিবেশে দুর্গোৎসব পালন । প্রতিমা ভাঙচুর ও পূজামণ্ডপে পাটকেল ছোড়া হয়েছে 
(
সংবাদ ০৪.১১.০১)

বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘু ও আওয়ামি লিগ কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা অব্যাহত 
(
সংবাদ ০৪.১১.০১)

নরসিংদীতে সংখ্যালঘুদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের নির্যাতন
(
জনকণ্ঠ ০৫.১১.০১)

নাটোরে সংখ্যালঘু নির্যাতন কমলেও ভয়ভীতি প্রদর্শন বন্ধ হয়নি 
(
সংবাদ ০৬.১১.০১)

সামাজিক আন্দোলনের নেতারা কালিয়াকৈরে নির্যাতনে হাত-পা ভাঙা হিন্দুরা এসে বিবরণ দিলেন 
(
প্রথম আলো ০৬.১১.০১)

মানিকগণ্জ্ঞে পরেশ হালদারকে হুমকি চাঁদা ২০ হাজার, নইলে মাথা (জনকণ্ঠ ০৬.১১.০১)
ঘটনাস্থ নীলফমারীর ডোমরা : হিন্দু বিধবার কোটি টাকার সম্পদ লুটে নেয়ার পাঁয়তারা 
(
সংবাদ ০৬.১১.০১)

বাগেরহাটে রামকৃষ্ণ আশ্রমে সন্ত্রাসী হামলা । গ্রেফ্তার ২ জন 
(
ভোরের কাগজ ০৬.১১.০১)

গলাচিপার হরিপদ শীলকে দিগম্বর করে বাজার ঘোরানো হয় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামির ছোট ভাইয়ের নির্দেশে 
(
জনকণ্ঠ ০৭.১১.০১)

মিরসরাইয়ের দাসপাড়ায় মধ্যরাতে বিএনপি সন্ত্রাসীদের হামলা সেবাইত খুন, আহত ৩০ 
(
জনকণ্ঠ ০৭.১১.০১)

সন্ত্রাসীদের ভয়ে নরসিংদীর রাজনগরে সংখ্যালঘুরা অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে
(
যুগান্তর ০৮.১১.০১)

গলাচিপাড় হরিদেবপুর : মহিউদ্দিন বাহিনীর হাত থেকে মেয়েদের সম্ভ্রম বাঁচাতে দুই হিন্দু পরিবারের এলাকাছাড়া 
(
জনকণ্ঠ ০৮.১১.০১)

সরেজমিন রাউজানের সরকারপাড়া : সন্ত্রাসীরা ঘোষবাড়িটি পুড়িয়ে দিলেও সাহায্য নিয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি 
(
সংবাদ ০৮.১১.০১)

কলাপাড়ায় এক সংখ্যালঘুর বাড়িতে আগুন, ছেলেকে অপহরণ । দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি, পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছেন একজন বিএনপি নেতা 
(
সংবাদ ০৯.১১.০১)

নির্বাচনের পরে ভোলা - ১ : অন্নদাপ্রসাদ গ্রামে এক বিভীষিকার রাত (প্রথম আালো ০৯.১১.০১)

নির্বাচনের পরে ভোলা - ২ : ক্ষেতমজুর প্রাণকৃষ্ণও স্ত্রী কন্যা নিয়ে ভারতে চলে যাবেন 
(
প্রথম আলো ১০.১১.০১)

নির্বাচনের পরে ভোলা - ৩ : পঙ্গু শেফালীর 'নাকফুল কেড়ে নেয়ার' কাহিনী 
(
প্রথম আলো ১১.১১.০১)

নির্বাচনের পরে ভোলা : জয়ন্তীর সংগ্রামের কাহিনী
(
প্রথম আলো ১২.১১.০১) 

রাউজানে সা.কা. বাহিনীর নির্যাতন : ৭ ইউনিয়নের ৫ হাজার সংখ্যালঘু নাগরিক ঘরবাড়ি ছাড়া 
(
সংবাদ ১৩.১১.০১)

ধর্ষিত সংখ্যালঘুর সংখ্যা হাজার ছাড়াতে পারে (জনকণ্ঠ ১৫.১১.০১)

কিশোরগণ্জ্ঞে সংখ্যালঘুর বাড়িতে হামলা, লুটপাট, আহত ৭ (যুগান্তর ১৫.১১.০১)

Wednesday, May 29, 2013

বাঁশখালীর সেই ১১ হত্যাকাণ্ড( জাতি কি ভুলে গেছে সে কাল রাতের কথা??)


বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুর শীলপাড়ায় পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের শিকার সেই তেজেন্দ্রলাল শীলের পরিবারটির কথা মনে পড়ে কি। পরিকল্পিতভাবে ঘরে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে মারা হয় ঐ পরিবারের চারদিন বয়সের এক শিশু ও নারীসহ ১১ জনকে। সে ভিটেমাটি এখনও শূন্য পড়ে আছে। সেখানে ওঠেনি নতুন ঘর। বাড়ি যাবার অবস্থা সৃষ্টি না হওয়ায় বিচার না পাওয়া পরিবারটির বেঁচে থাকা সদস্যদের কাটছে পরবাসী জীবন। ঘটনার সাড়ে ৮ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি মামলার। পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন মহাজোট সরকার আমলেও মামলা এভাবে ঝুলে থাকলে আর কখন পাওয়া যাবে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচার।

পরিবারের সদস্য মামলার বাদী বিমল শীল মঙ্গলবার জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা তিন ভাই বেঁচে আছি। ঘটনার দিন আমি ছিলাম শ্বশুর বাড়ি। বাকি দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই ছিল বিদেশে এবং আরেক ভাই ছিল বাইরে তার কর্মক্ষেত্রে। এ সুবাদেই আমাদের বেঁচে যাওয়া। শূন্য ভিটেতে সাধারণত নতুন ঘর ওঠে। কিন্তু আমাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি পড়ে আছে খালি। সেখানে কেউ আর বসবাস করে না। নিজের পৈত্রিক ভিটের সঙ্গে মানুষের আবেগ এবং স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। কিন্তু কিছুই করার নেই। এ যেন আমাদের নিয়তি।

বিমল শীল এখন বসবাস করেন চট্টগ্রাম নগরীতে। বাঁশখালীতে তাঁর একটি ওষুধের দোকান ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে তিনি সেখান থেকে এসে ওষুধের দোকান দেন শহরে। বাকি দুই ভাইয়ের মধ্য একজন এখনও বিদেশে, অপরজন রয়েছেন শিক্ষকতা পেশায়। কারোরই বাড়ি যাওয়া হয় না। কারণ বাড়ি যাওয়া মানেই স্বজন হারানোর বেদনায় ভেঙ্গে পড়া। একান্ত আপন কেউ নেই যাদের জড়িয়ে ধরে সান্ত¡না খুঁজে পাওয়া যাবে। তাছাড়া নেই থাকবার ঘরও।

বিমল শীল জানান, শূন্য ভিটায় ঘর উঠাবার জন্য আমরা সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছিলাম। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, দগ্ধ হয়ে নিহত ১১ জনের নামে একটি সড়কের নামকরণের। নিরাপত্তা চেয়ে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী বরাবরে। কিন্তু কিছুই মেলেনি এখনও। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আবেদনের জবাবে প্রায় দু’মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব নজরুল ইসলাম সাক্ষরিত একটি পত্র এসেছে, যাতে আমাদের ছবি ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব জমা দিয়েছি। এখন অপেক্ষার পালা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদনও করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, সে সুযোগ এখনও কেউ করে দেয়নি।

মামলার বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে বিমল শীল বলেন, সর্বশেষ গত ১৯ এপ্রিল আলোচিত এ মামলার দ্বিতীয় দফা চার্জ গঠিত হয়েছে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে। এতে বাদ পড়েছেন সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এমপির চাচাত ভাই বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান চৌধুরী ওরফে আমিন চেয়ারম্যান। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট আবুল হাশেম। এ ব্যাপারে গত ৫ এপ্রিল এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে সাক্ষাত হয়েছে বলে জানিয়ে বিমল শীল বলেন, তিনি এ ব্যাপারে যথাযথ আইনী সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

জেলা পিপি এ্যাডভোকেট আবুল হাশেম মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত না হওয়া মানে তাঁকে অব্যাহতি দেয়া নয়। আদালতে আসামির উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করা হয়। সেদিন তিনি (আমিন চেয়ারম্যান) উপস্থিত ছিলেন না বলেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়নি। তাছাড়া এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের একটি স্থগিতাদেশও রয়েছে। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে যে কোন সময়ে অন্তর্ভুক্ত হবেন এ আসামি। দফায় দফায় বিচার কাজ বিলম্বিত হওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবুল হাশেম বলেন, প্রথম দফা অভিযোগ যে ধারায় গঠিত হয়েছিল তাতে আমিন চেয়ারম্যানকে সেভাবে অভিযুক্ত করা যায় না। কারণ সেটি ছিল ডাকাতি করতে না পেরে হত্যার মামলা। আমিন চেয়ারম্যান যেহেতু পূর্বে ডাকাতির মতো কোন অভিযোগে অভিযুক্ত হননি, সেহেতু এমন অভিযোগ প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য ছিল। এ কারণেই বাদীর পক্ষ থেকে নারাজি দিয়ে ধারা পরিবর্তনের আবেদন করা হয়েছিল। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফায় চার্জ গঠিত হয়েছে অন্য ধারায়। এতে অভিযোগ আসে সংখ্যালঘু এ পরিবারের সম্পত্তি দখলের লক্ষ্যে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা। মামলাটি এখন গতি পেয়েছে বলে উল্লেখ করে পিপি এ্যাডভোকেট আবুল হোসেন বলেন, আগামী মাস থেকেই শুরু হচেছ সাক্ষ্যগ্রহণ।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৮ নবেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর শীলপাড়ায় তেজেন্দ্রলাল শীলের বাড়িতে ঘটে এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে একই পরিবারের ১১ জনকে। এ ঘটনায় তৎকালীন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর চাচাত ভাই আমিন চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে। পরে তিনি মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেও এখনও রয়েছেন আদালতে গঠিত অভিযোগের বাইরে। অনিশ্চয়তার মাঝেও তেজেন্দ্রলাল শীলের পরিবারটি রয়েছে বিচার পাওয়ার আশায়। এ সরকারের আমলেই তাদের সে আশা পূরণ হবে কী।

সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

স্বজনদের মৃত্যুদৃশ্যের বর্ণনা দিলেন বিমল শীল
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা বেগমের আদালতে প্রথম দিনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। গতকাল দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট থেকে বেলা একটা পর্যন্ত আংশিক সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী বিমল শীল। এ সময় তিনি হামলার বিবরণ দেন এবং স্বজনদের মৃত্যুদৃশ্যের বর্ণনা করেন। সাক্ষ্য অসমাপ্ত রেখেই দিনের কার্যক্রম শেষ হয়। ২৩ মে সাক্ষ্যের পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত। ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের শীলপাড়ায় তেজেন্দ্র লাল শীলের বাড়িতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত তেজেন্দ্র লাল শীলের ছেলে বিমল শীল সাক্ষ্যে বলেন, ‘২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে ঘটনাস্থল বাঁশখালীর সাধনপুরের শীলপাড়া গ্রামের বসতভিটায় আমিসহ মোট ১২ জন ছিলাম। ঘরটি মাটির দেয়ালঘেরা, টিনের ছাউনি ও দুই তলাবিশিষ্ট।’ সাক্ষ্যে বিমল শীল জানান, ঘটনার রাতে ঘরের নিচতলায় পাঁচজন ও দ্বিতীয় তলায় তিনিসহ সাতজন ছিলেন। সাক্ষ্যে তিনি বলেন, রাতের খাওয়া শেষে পরিবারের সবাই দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে আনুমানিক ৪০ জনের একটি দল দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। দরজা ভাঙার সময় আমার বাবা নিচের তলায় থাকা সবাইকে নিয়ে দুই তলায় উঠে যান এবং ঝাঁপ ফেলে দেন। সন্ত্রাসীরা ঘরে ঢুকলেও দুই তলায় ওঠার চেষ্টা করেনি।’ বিমল শীল বলেন, ‘আমি ওপর (দ্বিতীয় তলা) থেকে সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসী বলে চিৎকার করলে পাড়ার কিছু লোক এগিয়ে আসে। তখন সন্ত্রাসীরা দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং এতে প্রতিবেশীরা ভয়ে চুপ হয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসী ও প্রতিবেশী কারও কোনো আওয়াজ পাচ্ছিলাম না।’ তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে দাহ্য পদার্থ দিয়ে সন্ত্রাসীরা ঘরের ভেতর নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মুহূর্তে আমরা টের পাইনি। এরপর সন্ত্রাসীরা বেরিয়ে গিয়ে নিচতলার সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি।’
আগুন থেকে নিজের রক্ষা পাওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিমল শীল সাক্ষ্যে বলেন, ‘মাটির দোতলার ছাদ নিচে ধসে পড়ল। আমার মা, বাবা, ভাই, বোনসহ ১১ জন অগ্নিদগ্ধ হচ্ছিল। আমি ছোট একটা জানালা দিয়ে বাইরে লাফিয়ে পড়ার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে যাই। এতে আমার ডান পা ভেঙে যায়। ভাঙা পা টেনে নিয়ে ধানখেতে ঢুকে পড়ি। পাড়া-প্রতিবেশীরা আমাকে এক ঘণ্টা পর ধানখেত থেকে উদ্ধার করে।’ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষ্য স্থগিত রাখার আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেন। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় হাজতে থাকা তিনজন এবং জামিনে থাকা ১৬ জন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। প্রসঙ্গত, ঘটনার আট বছর পর ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির এএসপি হ্লা চিং প্রু আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালত ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ আগের ধারা বাদ দিয়ে নতুন ধারায় অভিযোগ গঠনের জন্য আদালতে আবেদন করেন। এরপর গত ১৯ এপ্রিল ৩৭ জন আসামির বিরুদ্ধে ‘সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে খুন’—এর অভিযোগ আনা হয়। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঘটনার অন্যতম আসামি বিএনপির নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়নি।

আদালতে দেওয়া প্রায় এক ঘণ্টার সাক্ষ্যে বিমল শীল ঘটনার বিবরণ ও মামলা তদন্তে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে বর্ণনা দেন। তাঁর অসমাপ্ত সাক্ষ্য আগামী ৩ জুন নেবেন আদালত। এর আগে ১৫ মে তাঁর সাক্ষ্য দেওয়া শুরু হয়। গতকালের সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাদের ঘরে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র ও স্বর্ণালংকার লুট না করে আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারা বাইরে ৪০-৫০ মিনিট সশস্ত্র পাহারা বসায়। ঘরের মানুষগুলো পুড়ে কঙ্কাল হওয়ার পর সন্ত্রাসীরা পশ্চিম দিকে চলে যায়।’ প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের শীলপাড়ায় তেজেন্দ্র লাল শীলের বাড়িতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
নিহত তেজেন্দ্র শীলের ছেলে বিমল শীল সাক্ষ্যে বলেন, ‘সকালে লাশগুলো একের পর এক বের করে ঘরের উঠানে রাখা হয়েছিল। ওইগুলো শনাক্ত করার মতো কোনো অবস্থা ছিল না। ঘরের ভেতর থাকা চার দিন বয়সের শিশু কার্তিক শীলের লাশের কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার লাশ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আপন ঘরেই হলো কার্তিক শীলের শ্মশান।’
উল্লেখ্য, ওই ঘটনায় বিমল শীলের মা বকুল বালা শীল (৬০), বাবা তেজেন্দ্র লাল শীল (৬৫), বউদি স্মৃতি শীল (৩০), ভ্রাতুষ্পুত্র চার দিন বয়সী কার্তিক শীল, মেসো দেবেন্দ্র শীল (৭০), মেজ ভাই অনিল শীল (৪২), অনিল শীলের দুই মেয়ে রুমি শীল (১১) ও সোনিয়া শীল (৭), অনিল শীলের তিন চাচাতো বোন বাবুটি শীল (২৫), প্রসাদী শীল (১৭) ও এনি শীল (১৫) মারা যায়।
সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘আমার মা-বাবা, বোন কারও লাশ শনাক্ত করা যায়নি। হাজার হাজার মানুষ দেখতে এসেছিল।’ সাক্ষ্যে বিমল শীল আরও বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমাদের বাড়িতে আসেন। ওসিকে ঘটনার কথা বলার পর তিনি প্রাথমিক একটি এজাহার লেখেন। এজাহারের বক্তব্যগুলো আমি পড়ি নাই। আমি শোকে কাতর ছিলাম। আমার চোখে অঝোরধারায় পানি পড়ছিল। তাঁরা আমাকে এজাহার পড়েও শোনাননি। ওসি আমাকে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি স্বাক্ষর দিয়েছি।’
সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর এই মামলার তদন্তভার পড়ে সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি ক্লারেন্স গোমেজের ওপর। দুই বছর তদন্ত চলার পরও আমি এবং আমার পরিবারের কারও বক্তব্য তিনি নেননি। আমি পরে তাঁকে টেলিফোনে জিজ্ঞেস করি, আমাকে দরকার আছে কি না। তিনি বলেন, “আপনাকে দরকার নেই। আপনি কাউকে দেখেননি এবং এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করেন নি”।’
২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই মামলায় ৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয় উল্লেখ করে সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘কিন্তু আমিনুর রহমান চৌধুরী, চেয়ারম্যান আবদুস সবুর, মো. ইউনুস, আবুল কালাম, নুরুন্নবী, আব্দুন নবী, নুরুল ইসলাম ও মেম্বার আব্দুর রশিদ আহাম্মদসহ আটজনের নাম যুক্ত না করায় আমি নারাজি দিয়েছিলাম।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল ৩৭ জন আসামির বিরুদ্ধে এই মামলায় নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হয়। এতে ‘ডাকাতির উদ্দেশ্যে খুন’-এর পরিবর্তে ‘সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে খুন’-এর অভিযোগ আনা হয়। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঘটনার অন্যতম আসামি বিএনপির নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত হয়নি।