Pages

Wednesday, May 29, 2013

বাঁশখালীর সেই ১১ হত্যাকাণ্ড( জাতি কি ভুলে গেছে সে কাল রাতের কথা??)


বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুর শীলপাড়ায় পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের শিকার সেই তেজেন্দ্রলাল শীলের পরিবারটির কথা মনে পড়ে কি। পরিকল্পিতভাবে ঘরে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে মারা হয় ঐ পরিবারের চারদিন বয়সের এক শিশু ও নারীসহ ১১ জনকে। সে ভিটেমাটি এখনও শূন্য পড়ে আছে। সেখানে ওঠেনি নতুন ঘর। বাড়ি যাবার অবস্থা সৃষ্টি না হওয়ায় বিচার না পাওয়া পরিবারটির বেঁচে থাকা সদস্যদের কাটছে পরবাসী জীবন। ঘটনার সাড়ে ৮ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি মামলার। পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন মহাজোট সরকার আমলেও মামলা এভাবে ঝুলে থাকলে আর কখন পাওয়া যাবে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচার।

পরিবারের সদস্য মামলার বাদী বিমল শীল মঙ্গলবার জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা তিন ভাই বেঁচে আছি। ঘটনার দিন আমি ছিলাম শ্বশুর বাড়ি। বাকি দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই ছিল বিদেশে এবং আরেক ভাই ছিল বাইরে তার কর্মক্ষেত্রে। এ সুবাদেই আমাদের বেঁচে যাওয়া। শূন্য ভিটেতে সাধারণত নতুন ঘর ওঠে। কিন্তু আমাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি পড়ে আছে খালি। সেখানে কেউ আর বসবাস করে না। নিজের পৈত্রিক ভিটের সঙ্গে মানুষের আবেগ এবং স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। কিন্তু কিছুই করার নেই। এ যেন আমাদের নিয়তি।

বিমল শীল এখন বসবাস করেন চট্টগ্রাম নগরীতে। বাঁশখালীতে তাঁর একটি ওষুধের দোকান ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার অভাববোধ থেকে তিনি সেখান থেকে এসে ওষুধের দোকান দেন শহরে। বাকি দুই ভাইয়ের মধ্য একজন এখনও বিদেশে, অপরজন রয়েছেন শিক্ষকতা পেশায়। কারোরই বাড়ি যাওয়া হয় না। কারণ বাড়ি যাওয়া মানেই স্বজন হারানোর বেদনায় ভেঙ্গে পড়া। একান্ত আপন কেউ নেই যাদের জড়িয়ে ধরে সান্ত¡না খুঁজে পাওয়া যাবে। তাছাড়া নেই থাকবার ঘরও।

বিমল শীল জানান, শূন্য ভিটায় ঘর উঠাবার জন্য আমরা সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছিলাম। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, দগ্ধ হয়ে নিহত ১১ জনের নামে একটি সড়কের নামকরণের। নিরাপত্তা চেয়ে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী বরাবরে। কিন্তু কিছুই মেলেনি এখনও। তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আবেদনের জবাবে প্রায় দু’মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব নজরুল ইসলাম সাক্ষরিত একটি পত্র এসেছে, যাতে আমাদের ছবি ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব জমা দিয়েছি। এখন অপেক্ষার পালা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের আবেদনও করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে, সে সুযোগ এখনও কেউ করে দেয়নি।

মামলার বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে বিমল শীল বলেন, সর্বশেষ গত ১৯ এপ্রিল আলোচিত এ মামলার দ্বিতীয় দফা চার্জ গঠিত হয়েছে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে। এতে বাদ পড়েছেন সাবেক বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এমপির চাচাত ভাই বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান চৌধুরী ওরফে আমিন চেয়ারম্যান। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট আবুল হাশেম। এ ব্যাপারে গত ৫ এপ্রিল এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের সঙ্গে সাক্ষাত হয়েছে বলে জানিয়ে বিমল শীল বলেন, তিনি এ ব্যাপারে যথাযথ আইনী সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

জেলা পিপি এ্যাডভোকেট আবুল হাশেম মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত না হওয়া মানে তাঁকে অব্যাহতি দেয়া নয়। আদালতে আসামির উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন করা হয়। সেদিন তিনি (আমিন চেয়ারম্যান) উপস্থিত ছিলেন না বলেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়নি। তাছাড়া এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের একটি স্থগিতাদেশও রয়েছে। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে যে কোন সময়ে অন্তর্ভুক্ত হবেন এ আসামি। দফায় দফায় বিচার কাজ বিলম্বিত হওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবুল হাশেম বলেন, প্রথম দফা অভিযোগ যে ধারায় গঠিত হয়েছিল তাতে আমিন চেয়ারম্যানকে সেভাবে অভিযুক্ত করা যায় না। কারণ সেটি ছিল ডাকাতি করতে না পেরে হত্যার মামলা। আমিন চেয়ারম্যান যেহেতু পূর্বে ডাকাতির মতো কোন অভিযোগে অভিযুক্ত হননি, সেহেতু এমন অভিযোগ প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য ছিল। এ কারণেই বাদীর পক্ষ থেকে নারাজি দিয়ে ধারা পরিবর্তনের আবেদন করা হয়েছিল। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় দফায় চার্জ গঠিত হয়েছে অন্য ধারায়। এতে অভিযোগ আসে সংখ্যালঘু এ পরিবারের সম্পত্তি দখলের লক্ষ্যে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা। মামলাটি এখন গতি পেয়েছে বলে উল্লেখ করে পিপি এ্যাডভোকেট আবুল হোসেন বলেন, আগামী মাস থেকেই শুরু হচেছ সাক্ষ্যগ্রহণ।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৮ নবেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর শীলপাড়ায় তেজেন্দ্রলাল শীলের বাড়িতে ঘটে এ নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে একই পরিবারের ১১ জনকে। এ ঘটনায় তৎকালীন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর চাচাত ভাই আমিন চেয়ারম্যানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে। পরে তিনি মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেও এখনও রয়েছেন আদালতে গঠিত অভিযোগের বাইরে। অনিশ্চয়তার মাঝেও তেজেন্দ্রলাল শীলের পরিবারটি রয়েছে বিচার পাওয়ার আশায়। এ সরকারের আমলেই তাদের সে আশা পূরণ হবে কী।

সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

স্বজনদের মৃত্যুদৃশ্যের বর্ণনা দিলেন বিমল শীল
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা বেগমের আদালতে প্রথম দিনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। গতকাল দুপুর ১২টা ২৫ মিনিট থেকে বেলা একটা পর্যন্ত আংশিক সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী বিমল শীল। এ সময় তিনি হামলার বিবরণ দেন এবং স্বজনদের মৃত্যুদৃশ্যের বর্ণনা করেন। সাক্ষ্য অসমাপ্ত রেখেই দিনের কার্যক্রম শেষ হয়। ২৩ মে সাক্ষ্যের পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত। ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের শীলপাড়ায় তেজেন্দ্র লাল শীলের বাড়িতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত তেজেন্দ্র লাল শীলের ছেলে বিমল শীল সাক্ষ্যে বলেন, ‘২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে ঘটনাস্থল বাঁশখালীর সাধনপুরের শীলপাড়া গ্রামের বসতভিটায় আমিসহ মোট ১২ জন ছিলাম। ঘরটি মাটির দেয়ালঘেরা, টিনের ছাউনি ও দুই তলাবিশিষ্ট।’ সাক্ষ্যে বিমল শীল জানান, ঘটনার রাতে ঘরের নিচতলায় পাঁচজন ও দ্বিতীয় তলায় তিনিসহ সাতজন ছিলেন। সাক্ষ্যে তিনি বলেন, রাতের খাওয়া শেষে পরিবারের সবাই দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টার দিকে আনুমানিক ৪০ জনের একটি দল দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। দরজা ভাঙার সময় আমার বাবা নিচের তলায় থাকা সবাইকে নিয়ে দুই তলায় উঠে যান এবং ঝাঁপ ফেলে দেন। সন্ত্রাসীরা ঘরে ঢুকলেও দুই তলায় ওঠার চেষ্টা করেনি।’ বিমল শীল বলেন, ‘আমি ওপর (দ্বিতীয় তলা) থেকে সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসী বলে চিৎকার করলে পাড়ার কিছু লোক এগিয়ে আসে। তখন সন্ত্রাসীরা দুই রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং এতে প্রতিবেশীরা ভয়ে চুপ হয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসী ও প্রতিবেশী কারও কোনো আওয়াজ পাচ্ছিলাম না।’ তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে দাহ্য পদার্থ দিয়ে সন্ত্রাসীরা ঘরের ভেতর নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মুহূর্তে আমরা টের পাইনি। এরপর সন্ত্রাসীরা বেরিয়ে গিয়ে নিচতলার সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি।’
আগুন থেকে নিজের রক্ষা পাওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিমল শীল সাক্ষ্যে বলেন, ‘মাটির দোতলার ছাদ নিচে ধসে পড়ল। আমার মা, বাবা, ভাই, বোনসহ ১১ জন অগ্নিদগ্ধ হচ্ছিল। আমি ছোট একটা জানালা দিয়ে বাইরে লাফিয়ে পড়ার সময় গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে যাই। এতে আমার ডান পা ভেঙে যায়। ভাঙা পা টেনে নিয়ে ধানখেতে ঢুকে পড়ি। পাড়া-প্রতিবেশীরা আমাকে এক ঘণ্টা পর ধানখেত থেকে উদ্ধার করে।’ সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষ্য স্থগিত রাখার আবেদন করলেও আদালত তা নাকচ করে দেন। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় হাজতে থাকা তিনজন এবং জামিনে থাকা ১৬ জন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। প্রসঙ্গত, ঘটনার আট বছর পর ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির এএসপি হ্লা চিং প্রু আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালত ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ আগের ধারা বাদ দিয়ে নতুন ধারায় অভিযোগ গঠনের জন্য আদালতে আবেদন করেন। এরপর গত ১৯ এপ্রিল ৩৭ জন আসামির বিরুদ্ধে ‘সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে খুন’—এর অভিযোগ আনা হয়। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঘটনার অন্যতম আসামি বিএনপির নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়নি।

আদালতে দেওয়া প্রায় এক ঘণ্টার সাক্ষ্যে বিমল শীল ঘটনার বিবরণ ও মামলা তদন্তে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে বর্ণনা দেন। তাঁর অসমাপ্ত সাক্ষ্য আগামী ৩ জুন নেবেন আদালত। এর আগে ১৫ মে তাঁর সাক্ষ্য দেওয়া শুরু হয়। গতকালের সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা আমাদের ঘরে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র ও স্বর্ণালংকার লুট না করে আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারা বাইরে ৪০-৫০ মিনিট সশস্ত্র পাহারা বসায়। ঘরের মানুষগুলো পুড়ে কঙ্কাল হওয়ার পর সন্ত্রাসীরা পশ্চিম দিকে চলে যায়।’ প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের শীলপাড়ায় তেজেন্দ্র লাল শীলের বাড়িতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
নিহত তেজেন্দ্র শীলের ছেলে বিমল শীল সাক্ষ্যে বলেন, ‘সকালে লাশগুলো একের পর এক বের করে ঘরের উঠানে রাখা হয়েছিল। ওইগুলো শনাক্ত করার মতো কোনো অবস্থা ছিল না। ঘরের ভেতর থাকা চার দিন বয়সের শিশু কার্তিক শীলের লাশের কঙ্কাল খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার লাশ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আপন ঘরেই হলো কার্তিক শীলের শ্মশান।’
উল্লেখ্য, ওই ঘটনায় বিমল শীলের মা বকুল বালা শীল (৬০), বাবা তেজেন্দ্র লাল শীল (৬৫), বউদি স্মৃতি শীল (৩০), ভ্রাতুষ্পুত্র চার দিন বয়সী কার্তিক শীল, মেসো দেবেন্দ্র শীল (৭০), মেজ ভাই অনিল শীল (৪২), অনিল শীলের দুই মেয়ে রুমি শীল (১১) ও সোনিয়া শীল (৭), অনিল শীলের তিন চাচাতো বোন বাবুটি শীল (২৫), প্রসাদী শীল (১৭) ও এনি শীল (১৫) মারা যায়।
সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘আমার মা-বাবা, বোন কারও লাশ শনাক্ত করা যায়নি। হাজার হাজার মানুষ দেখতে এসেছিল।’ সাক্ষ্যে বিমল শীল আরও বলেন, ‘সকাল আটটার দিকে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমাদের বাড়িতে আসেন। ওসিকে ঘটনার কথা বলার পর তিনি প্রাথমিক একটি এজাহার লেখেন। এজাহারের বক্তব্যগুলো আমি পড়ি নাই। আমি শোকে কাতর ছিলাম। আমার চোখে অঝোরধারায় পানি পড়ছিল। তাঁরা আমাকে এজাহার পড়েও শোনাননি। ওসি আমাকে স্বাক্ষর দিতে বলেন। আমি স্বাক্ষর দিয়েছি।’
সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর এই মামলার তদন্তভার পড়ে সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি ক্লারেন্স গোমেজের ওপর। দুই বছর তদন্ত চলার পরও আমি এবং আমার পরিবারের কারও বক্তব্য তিনি নেননি। আমি পরে তাঁকে টেলিফোনে জিজ্ঞেস করি, আমাকে দরকার আছে কি না। তিনি বলেন, “আপনাকে দরকার নেই। আপনি কাউকে দেখেননি এবং এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করেন নি”।’
২০০৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই মামলায় ৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয় উল্লেখ করে সাক্ষ্যে বিমল শীল বলেন, ‘কিন্তু আমিনুর রহমান চৌধুরী, চেয়ারম্যান আবদুস সবুর, মো. ইউনুস, আবুল কালাম, নুরুন্নবী, আব্দুন নবী, নুরুল ইসলাম ও মেম্বার আব্দুর রশিদ আহাম্মদসহ আটজনের নাম যুক্ত না করায় আমি নারাজি দিয়েছিলাম।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল ৩৭ জন আসামির বিরুদ্ধে এই মামলায় নতুন করে অভিযোগ গঠন করা হয়। এতে ‘ডাকাতির উদ্দেশ্যে খুন’-এর পরিবর্তে ‘সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে খুন’-এর অভিযোগ আনা হয়। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় ঘটনার অন্যতম আসামি বিএনপির নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠিত হয়নি।

No comments:

Post a Comment