Pages

Tuesday, October 20, 2015

বিদুর নীতি

'বিদুর-নীতি '


এই নীতির বক্তা কৌরব রাষ্ট্রের মহামন্ত্রি 'বিদুর' এবং শ্রোতা কৌরব রাষ্ট্রকে কোনরকমে ধারণ করে রাখা মহারাজ 'ধৃতরাষ্ট্র'।
তখন দৃষদ্বতী নদীর তীরে কৌরব এবং পাণ্ডব তথা তাদের পক্ষাবলম্বী রাজারা তাদের বিশাল সেনা নিয়ে মরণপণ যুদ্ধের জন্য সমবেত হয়েছেন । সেই মহারণের আগের রাতে ধৃতরাষ্ট্র দুঃশ্চিন্তায় অধীর, নিদ্রাহীন । তার মনে তখন চলছে লোভ আর বিবেকের দ্বন্দ্ব । চিন্তায় বিদীর্ণ ধৃতরাষ্ট্র একইসাথে পুত্রদের রাজ্যভোগের ইচ্ছার প্রতি সহানুভূতিশীল আবার এত রক্তপাতের জন্য হৃদয়-দহনে দগ্ধও হচ্ছেন । 

তখনই ধৃতরাষ্ট্রে্র মনে হল তার রাজ্যের মহামন্ত্রি, প্রাজ্ঞ, ধৃতরাষ্ট্রেরই সৎভাই 'বিদুর'-র কথা । সেই ঘোর ধ্বংসের পূর্বরাতে ধৃতরাষ্ট্র কর্তৃক আহূত হয়ে 'ধর্মরাজ' বিদুর রাজধর্ম, সংসারধর্ম তথা মানবপ্রবণতা সম্পর্কে তার অগ্রজকে যে উপদেশ দিয়েছিলেন তাকেই বলা হয় 'বিদুর-নীতি' ।

এই 'বিদুর-নীতি' মহাভারতের 'উদ্যোগপর্বে' সন্নিবেশিত । 'বিদুর-নীতি'-র সুখি হবার উপায় সম্পর্কিত একটি উপদেশ নিম্নরূপ-

'এক দিয়ে দুইয়ের পার্থক্য করা, চার দিয়ে তিনকে বশে আনা, পাঁচকে জয় করা, ছয় সম্পর্কে সতর্ক থাকা এবং সাত থেকে দূরে থাকা । এটাই হচ্ছে সুখী হবার উপায় ।'
বেশ হেঁয়ালিপূর্ণ কথা নিশ্চয়ই!! 


তবে এখানে-
এক= বুদ্ধি, দুই= কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়, তিন= শত্রু, বন্ধু ও নিরপেক্ষ ব্যক্তি, চার= সন্ধি, উপহার, বিভেদ, শাস্তি দেওয়া, পাঁচ= মানুষের পাঁচটি ইন্দ্রিয়, ছয়= কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য এই ষড়রিপু এবং সাত= ব্যভিচার, জুয়াখেলা, অকারণ প্রাণিহত্যা, কটু কথা বলা, বিষদান, নির্দোষকে শাস্তি দেওয়া, পরের সম্পদের উপর লোভ করা ।

No comments:

Post a Comment