Pages

Thursday, April 19, 2012

শতাধিক ছাত্রীকে বিষ খাইয়ে মারার চেষ্টা তালেবানদের


আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্রীকে বিষ খাইয়ে মারার চেষ্টা চলেছে। নারীশিক্ষা বিরোধী কট্টরপন্থি জঙ্গিরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা। 
মঙ্গলবার স্কুলটির প্রায় ১৫০ ছাত্রী বিষাক্ত পানি পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদের মধ্যে মাথাব্যথা ও বমি উপসর্গে আক্রান্ত কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরেছে। 
উত্তরাঞ্চলের তাখার প্রদেশের শিক্ষা বিভাগের মুখপাত্র জান মোহাম্মদ নবিজাদা বলেন, “শ্রেণীকক্ষে তারা যে পানি পান করেছে তা বিষাক্ত ছিল এ ব্যাপারে আমরা শতভাগ নিশ্চিত। এটা হয় নারীশিক্ষা বিরোধীদের অথবা দায়িত্বজ্ঞানহীন সশস্ত্র ব্যক্তিদের কাজ।” 
কর্মকর্তারা বলছেন, তারা নিশ্চিত যে পানিতে বিষ মেশানো হয়েছিল। কেননা যে বড় ট্যাংক থেকে পানির জগগুলো ভরা হত তা দূষিত ছিল না। 
তাখার জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান হাফিজুল্লাহ সূফী বলেন, “এটি স্বাভাবিক অসুস্থতা নয়। ছাত্রীদের মারার চেষ্টায়ই একাজ করা হয়েছে।” 
তবে কর্মকর্তাদের কেউ প্রতিশোধের ভয়ে এ হামলার দায়ে অভিযুক্ত কোন সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নাম বলেননি। 
তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর সব বয়সী নারীদের জন্য শিক্ষা নিষিদ্ধ করে। ২০০১ সালে তারা ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানে বিশেষ করে কাবুলে নারীরা স্কুলে যাচ্ছে। 
কিন্তু তারপরও মেয়েদের, শিক্ষকদের এবং স্কুল ভবন মাঝে মাঝেই হামলার শিকার হচ্ছে। আর সাধারণত এ ধরণের হামলা তুলনামূলকভাবে বেশি হয় দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে যেখান থেকে তালেবান জঙ্গিরা সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাচ্ছে। 
তবে আফগানিস্তান সরকার অবশ্য দাবি করেছিল যে তালেবানরা নারী শিক্ষা বিরোধীতা থেকে সরে এসেছে। 
কিন্তু জঙ্গিদের কর্মকাণ্ডে এর বিপরীত চিত্রই ফুটে উঠেছে। অতীতে বহুবার ইসলামী চরমপন্থিরা স্কুলে যাওয়ার পথে নারী ও কন্যাশিশুদের মুখে এসিড নিক্ষেপ করেছে। 
১৯৯৬-২০০১ সালে তালেবান সরকার ইসলাম বিরোধী ঘোষণা দিয়ে নারী শিক্ষাকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে।
কোন খ্রিষ্টানকে তো গডের নামে বিমান নিয়ে বিল্ডিঙে পড়তে দেখা যায় না, জিসাসের কার্টুন আঁকলে তো কাউকে মরতে হয় না, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক কিংবা হেয়ারস্টাইলের জন্য কোন ইহুদি-খ্রিষ্টানের গায়ে পাথর পড়ে না, ধর্মত্যাগের জন্য কল্লা কাটা পড়ে না, শতাধিক ছাত্রীকে বিষ খাইয়ে মারার চেষ্টা হয় না । তাহলে ওদের ব্যাপারে কি নিয়ে বলব? অন্য ধর্ম নিয়ে কিছু বলার আগে তো দশবার ইসলাম নিয়েই বলা প্রয়োজন। প্রয়োজন এজন্য নয় যে ইসলাম খারাপ (কারণ বস্তুত ধর্ম মাত্রই খারাপ), বলা প্রয়োজন কারণ মুসলমানদের কীর্তিকলাপ বলতে বাধ্য করায়।

ইসলাম নাকি আব্রাহামিক রিলিজিয়নগুলোর মধ্যে সবচেয়ে মানবতাবাদী। তবে বাস্তবে দেখা যায় উল্টো চিত্র। এর কারণ মৌলবাদ। আধুনিক বিজ্ঞান ও যুগের সাথে তাল মেলাতে ইহুদি-খ্রিষ্টানরা ওদের ধর্মগ্রন্থগুলোকে আক্ষরিক অর্থে নেয়া বাদ দিয়েছে। মধ্যযুগীয় বর্বর ধর্মীয় আইন-কানুন তো আছেই, পৃথিবীর বয়স ছয় হাজার বছর কিংবা অ্যাডাম-ইভের কিচ্ছাকাহিনীকেও এখন ওরা রূপকাশ্রয়ী মনে করে। দৈনন্দিন আচার-সংষ্কৃতির সঙ্গে ওদের মূল ধর্মীয় বিধিবিধানগুলোর দূরত্ব যোজন যোজন। তাই বলে ওদের মৌলবাদীর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তবে মুসলমানরা এই ব্যাপারটাতে এখনো অনেক পিছিয়ে, আর এ কারণেই ইসলামে যত বিপত্তি।




No comments:

Post a Comment