ওঁ মনোবুদ্ধ্যহঙ্কারচিত্তানি নাহং ন চ শ্রোত্রজিহ্বে ন চ ঘ্রাণনেত্রে।
ন চ ব্যোম ভূমির্ন তেজো ন বায়ুশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন চ প্রাণসংজ্ঞো ন বৈ পঞ্চবায়ুর্ন বা সপ্তধাতুর্ন বা পঞ্চকোষাঃ।
না বাক্পাণিপাদং ন চোপস্থপায়ুশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন মে দ্বেষরাগৌ ন মে লাভমোহৌ মদো নৈব মে নৈব মাৎসর্যভাবঃ।
ন ধর্মো ন চার্থো ন কামো ন মোক্ষশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন পুণ্যং ন পাপং ন সৌখ্যং ন দুঃখং ন মন্ত্রো ন তীর্থং ন বেদা ন যজ্ঞাঃ।
অহং ভোজনং নৈব ভোজ্যং ন ভোক্তা চিদানন্দরূপং শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন মৃত্যুর্ন শঙ্কা ন মে জাতিভেদঃ পিতা নৈব মে নৈব মাতা ন জন্ম।
ন বন্ধুর্নমিত্রং গুরুর্নৈব শিষ্যশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
অহং নির্বিকল্পো নিরাকাররূপো বিভুত্বা সর্বত্র সর্বেন্দ্রিয়াণাম্।
ন চাসঙ্গতং নৈব মুক্তির্নমেয়শ্চিদানন্দরূপং শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
বেদান্ত বলেন, এই জগৎটা মিথ্যা , একমাত্র ব্রহ্মই সত্য । সত্য বলতে যা চিরন্তন তাকেই বোঝানো হয় , যা ভবিষ্যতে থাকবেনা , যাকে শুধুমাত্র এখন আছে বলে মনে হচ্ছে , এরকম বিষয়কে সত্য বলা যায়না ; কারণ যার প্রকৃত অস্তিত্ব থাকে , সে কখনও 'নেই ' হয়ে যেতেপারেনা ।
এখানে 'সমুদ্রের জল' আর 'ঢেউ' এর উপমা দিয়ে বিষয়টি বোঝানো যেতে পারে । একটি তরঙ্গায়িত রূপ এবং ' ঢেউ ' - এই নাম, ঢেউকে সমুদ্র থেকে পৃথক করেছে , কিন্তু ওই ঢেউ যখন সমুদ্রে মিলিয়ে যায় তখন নাম - রূপও চলে যায় অর্থাৎ নাম - রূপ মিথ্যা হয়ে যায় । শুধু অবশিষ্ট থাকে ওর আসল স্বরূপ অর্থাৎ জল । ঠিক এই রকম ভাবে এক সত্তাই আছেন । তিনিই সত্য বা সৎ-স্বরূপ । অসংখ্য নাম - রূপের বিন্দুতে তিনি নিজেকে projected করেছেন । এই projection ই জগৎ ।
বেদান্ত বলে , ব্রহ্ম আসলে জগতে পরিণত হননি , এটা seeming projection ; অর্থাৎ আপাত প্রতীয়মান । আকাশ যেমন বাটির মতো নয় , সূর্য যেমন পূর্বে উঠে পশ্চিমে অস্তগামী হয়না , রেল লাইন যেমন দূরে গিয়ে পরস্পর মিশে যায়না , তেমন সৃষ্টিটাও আসলে হয়নি , রজ্জুতে সর্প ভ্রম হয়েছে । অন্ধকারে একগাছা দড়ি দেখে কেউ ভয় পেল , তারপর আলো এনে দেখা গেল ওটা একগাছা দড়ি , সাপ নয় , তখন সর্প ভীতিও চলে গেল । ঠিক তেমনই মায়া বশতঃ ব্রহ্ম জগত হিসাবে কল্পিত হচ্ছেন । নাম রূপের প্রহেলিকা ভেদ করতে পারলে সাধকের এই জগৎ বোধ চলে যায় , তখন আর জন্ম - মৃত্যুর প্রসঙ্গে কোনও প্রশ্নই ওঠেনা । যা নেই তার আবার ব্যাখ্যা কি ?
বেদান্ত বলেন ঈশ্বর কেন জগৎ সৃষ্টি করলেন এই প্রশ্নই সঠিক নয় । ' কার্য-কারণ সম্বন্ধ ' মায়াধিকৃত জগতের বৈশিষ্ট্য । তাই ' কেন ' ও ' কিভাবে ' -- এই প্রশ্নগুলি মায়ার জগতের বাইরে নিয়ে যাওয়া যায়না । ঈশ্বর কেন সৃষ্টি করলেন এই প্রশ্নের দ্বারা আমরা মায়ার বাইরে ' কার্য-কারণ ' খুঁজতে চাইছি ।
আমরা স্বরূপতঃ ব্রহ্ম , সুতরাং ''আমরা বদ্ধ'', - এটা ভুল । যেহেতু বদ্ধতার ধারণাই ভুল , তাই - ''সাধনা দ্বারা আমাদেরকে মুক্ত ( স্ব - স্বরূপে স্থিত ) হতে হবে'' , - এটা আরেকটা ভুল । এই দুই ভুল একত্রিত হয়ে পরস্পরকে প্রশমিত করবে । বিষে - বিষে বিষক্ষয় হয়ে যাবে । আমরা যা ছিলাম তাই থাকব , ব্রহ্ম ছিলাম ব্রহ্মই থাকব ।
জগতের মুল কারণ স্বরূপ সেই অনন্ত অদ্বৈত সত্তা কেই সনাতন ধর্মে '' ব্রহ্ম '' বলা হয়েছে । ভক্ত সেই অখণ্ড সত্তাকে 'তিনি' বলেন । আর জ্ঞানী বলেন 'আমি' । যেমন স্বামীজী বলেছেন -- '' আমি করি খেলা , শক্তি-রূপা মম মায়া সনে ...... '' । আবার অন্যত্র স্বামীজী ভক্তের ভাবে নিজের সম্বন্ধে বলছেন , --- '' দাস তব জনমে জনমে দয়ানিধে ! ...... '' বস্তুতঃ জ্ঞানীর 'আমি ' আর ভক্তের 'তিনি' একই । হয় বল সবই তিনি , অথবা বল সবই আমি ।
ন চ ব্যোম ভূমির্ন তেজো ন বায়ুশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন চ প্রাণসংজ্ঞো ন বৈ পঞ্চবায়ুর্ন বা সপ্তধাতুর্ন বা পঞ্চকোষাঃ।
না বাক্পাণিপাদং ন চোপস্থপায়ুশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন মে দ্বেষরাগৌ ন মে লাভমোহৌ মদো নৈব মে নৈব মাৎসর্যভাবঃ।
ন ধর্মো ন চার্থো ন কামো ন মোক্ষশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন পুণ্যং ন পাপং ন সৌখ্যং ন দুঃখং ন মন্ত্রো ন তীর্থং ন বেদা ন যজ্ঞাঃ।
অহং ভোজনং নৈব ভোজ্যং ন ভোক্তা চিদানন্দরূপং শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
ন মৃত্যুর্ন শঙ্কা ন মে জাতিভেদঃ পিতা নৈব মে নৈব মাতা ন জন্ম।
ন বন্ধুর্নমিত্রং গুরুর্নৈব শিষ্যশ্চিদানন্দরূপঃ শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
অহং নির্বিকল্পো নিরাকাররূপো বিভুত্বা সর্বত্র সর্বেন্দ্রিয়াণাম্।
ন চাসঙ্গতং নৈব মুক্তির্নমেয়শ্চিদানন্দরূপং শিবোঽহং শিবোঽহম্।।
বেদান্ত বলেন, এই জগৎটা মিথ্যা , একমাত্র ব্রহ্মই সত্য । সত্য বলতে যা চিরন্তন তাকেই বোঝানো হয় , যা ভবিষ্যতে থাকবেনা , যাকে শুধুমাত্র এখন আছে বলে মনে হচ্ছে , এরকম বিষয়কে সত্য বলা যায়না ; কারণ যার প্রকৃত অস্তিত্ব থাকে , সে কখনও 'নেই ' হয়ে যেতেপারেনা ।
এখানে 'সমুদ্রের জল' আর 'ঢেউ' এর উপমা দিয়ে বিষয়টি বোঝানো যেতে পারে । একটি তরঙ্গায়িত রূপ এবং ' ঢেউ ' - এই নাম, ঢেউকে সমুদ্র থেকে পৃথক করেছে , কিন্তু ওই ঢেউ যখন সমুদ্রে মিলিয়ে যায় তখন নাম - রূপও চলে যায় অর্থাৎ নাম - রূপ মিথ্যা হয়ে যায় । শুধু অবশিষ্ট থাকে ওর আসল স্বরূপ অর্থাৎ জল । ঠিক এই রকম ভাবে এক সত্তাই আছেন । তিনিই সত্য বা সৎ-স্বরূপ । অসংখ্য নাম - রূপের বিন্দুতে তিনি নিজেকে projected করেছেন । এই projection ই জগৎ ।
বেদান্ত বলে , ব্রহ্ম আসলে জগতে পরিণত হননি , এটা seeming projection ; অর্থাৎ আপাত প্রতীয়মান । আকাশ যেমন বাটির মতো নয় , সূর্য যেমন পূর্বে উঠে পশ্চিমে অস্তগামী হয়না , রেল লাইন যেমন দূরে গিয়ে পরস্পর মিশে যায়না , তেমন সৃষ্টিটাও আসলে হয়নি , রজ্জুতে সর্প ভ্রম হয়েছে । অন্ধকারে একগাছা দড়ি দেখে কেউ ভয় পেল , তারপর আলো এনে দেখা গেল ওটা একগাছা দড়ি , সাপ নয় , তখন সর্প ভীতিও চলে গেল । ঠিক তেমনই মায়া বশতঃ ব্রহ্ম জগত হিসাবে কল্পিত হচ্ছেন । নাম রূপের প্রহেলিকা ভেদ করতে পারলে সাধকের এই জগৎ বোধ চলে যায় , তখন আর জন্ম - মৃত্যুর প্রসঙ্গে কোনও প্রশ্নই ওঠেনা । যা নেই তার আবার ব্যাখ্যা কি ?
বেদান্ত বলেন ঈশ্বর কেন জগৎ সৃষ্টি করলেন এই প্রশ্নই সঠিক নয় । ' কার্য-কারণ সম্বন্ধ ' মায়াধিকৃত জগতের বৈশিষ্ট্য । তাই ' কেন ' ও ' কিভাবে ' -- এই প্রশ্নগুলি মায়ার জগতের বাইরে নিয়ে যাওয়া যায়না । ঈশ্বর কেন সৃষ্টি করলেন এই প্রশ্নের দ্বারা আমরা মায়ার বাইরে ' কার্য-কারণ ' খুঁজতে চাইছি ।
আমরা স্বরূপতঃ ব্রহ্ম , সুতরাং ''আমরা বদ্ধ'', - এটা ভুল । যেহেতু বদ্ধতার ধারণাই ভুল , তাই - ''সাধনা দ্বারা আমাদেরকে মুক্ত ( স্ব - স্বরূপে স্থিত ) হতে হবে'' , - এটা আরেকটা ভুল । এই দুই ভুল একত্রিত হয়ে পরস্পরকে প্রশমিত করবে । বিষে - বিষে বিষক্ষয় হয়ে যাবে । আমরা যা ছিলাম তাই থাকব , ব্রহ্ম ছিলাম ব্রহ্মই থাকব ।
জগতের মুল কারণ স্বরূপ সেই অনন্ত অদ্বৈত সত্তা কেই সনাতন ধর্মে '' ব্রহ্ম '' বলা হয়েছে । ভক্ত সেই অখণ্ড সত্তাকে 'তিনি' বলেন । আর জ্ঞানী বলেন 'আমি' । যেমন স্বামীজী বলেছেন -- '' আমি করি খেলা , শক্তি-রূপা মম মায়া সনে ...... '' । আবার অন্যত্র স্বামীজী ভক্তের ভাবে নিজের সম্বন্ধে বলছেন , --- '' দাস তব জনমে জনমে দয়ানিধে ! ...... '' বস্তুতঃ জ্ঞানীর 'আমি ' আর ভক্তের 'তিনি' একই । হয় বল সবই তিনি , অথবা বল সবই আমি ।
No comments:
Post a Comment