Pages

Saturday, July 14, 2012

জন্মান্তরবাদ









Shree Krishna - The Supreme Personality of Godhead ∫fαcєвook vєяsίon∫•• 





এ বিশ্বজগতের ধর্ম গুলোর মধ্যে হিন্দু ধর্ম অন্যতম
। এ ধর্মের আরেক নাম সনাতন ধর্ম বা বৈদিক ধর্ম। প্রাচীনকালে হিন্দু ধর্ম আর্য ধর্ম নামেই পরিচিত ছিল এবং এর অনুগামীদের আর্য বলা হত। আর্যগণ ভারতে এসে প্রথমে সপ্ত সিন্ধু প্রদেশে বাস করতেন। পারসিকরা সপ্তসিন্ধুকে বলতেন হপ্তহিন্দু। তারা ’ কে ’ উচ্চারন করতেন। তাদের এ হপ্তহিন্দু থেকে ভারতীয় আর্যদের নাম দেওয়া হয় হিন্দু। যুগ যুগ ধরে নানা জাতি উপজাতির মানুষের সাধিত চিন্তা-চেতনাঅনুভূতির ব্যবহার থেকে নেওয়া বিচিত্র ধর্মীয় নৈতিকতাঅভিজ্ঞতা এবং উপদেশের সমষ্টি হল এ ধর্মের মূলভিত্তি। এখানে আমিহিন্দু সমাজে জন্মান্তরবাদ নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাই। জন্মান্তরবাদ নিয়ে অনেকেরই মাঝেই কৌতূহল আছেআমার এই প্রয়াস কিছুটা হলেও এই কৌতূহল মেটাবেএটাই কামনা

জন্মান্তরবাদের কি? 
হিন্দু ধর্ম বিশ্বাস করেজীবের মৃত্যুর পর আত্মা পুনরায় জীবদেহ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেজন্মান্তর’ কথাটির মূল অর্থ হলজীবাত্মা একদেহ পরিত্যাগ করলে কর্মফল ভোগ করার জন্য অন্য দেহ ধারণ করে এ জগতেই পুনরায় জন্মগ্রহণ করে

বেদউপনিষদ এবং ভগবৎ গীতায় বলা হয়েছেজীবাত্মা স্বরূপতঃ ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু জাগতিক বস্তুর প্রতি আসক্তিবশতই আত্মাকে দেহ ধারণ করতে হয়। জীবাত্মার একাধিক জন্মগহণের কারণ হল তার ভোগাকাঙ্ক্ষা। আর এরূপ পুনঃপুনঃ জন্ম গ্রহণকেই বলা হয় জন্মান্তরবাদ
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায় অর্জুনকে উদ্দেশ্য করে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের উক্তিটি প্রণিধানযোগ্য-

"
বহুনি মে ব্যতীতানি জন্মনি তব চার্জুন
তান্যহং বেদ সর্বাণি ন ত্বং বেথু পরন্তপ ।।"
অর্থাৎ যে অর্জুন তোমার আমার বহুবার জন্ম হয়েছে। সে কথা তোমার মনে নেইসবই আমার মনে আছে। এই বক্তব্যর মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ যে অর্জুনের সখা এবং তাঁর রথের সারথি এ সত্য অতিক্রম করে আর একটি পরম সত্য প্রকাশিত হয়েছেতা হল তিনি সর্বজ্ঞপরেমেশ্বর। তিনি শাশ্বত. অব্যয় পরমাত্মার প্রতীক। আবার যখন বলা হয় অর্জুনের বহুবার জন্ম হয়েছেএ থেকে বোঝা যায় অর্জুনের মধ্যেও পরমাত্মার ন্যায় কোন শাশ্বত বস্তু রয়েছে যা বহু বার জন্ম-মৃত্যুর মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েও নষ্ট হয়ে যান নি। শাস্ত্রের ভাষায় জীবদেহের ঐ শাশ্বত বস্তুটি হল জীবাত্মাসংক্ষেপে আত্মা। এখানে উল্লেখ্যজীবাত্মা পরমাত্মার অংশ বিশেষ। অংশের মধ্যেও মূলবস্তুর গুনাগুন বিদ্যমান। তাই পরমাত্মার ন্যায় জীবাত্মাও অব্যয়জন্ম মৃত্যুহীনশাশ্বতবস্তু। তবে কোন অনাদী অতীতে পরমাত্মা থেকে বিযুক্ত হয়ে জীবাত্মা ঐ পরমাত্মার পুনরায় মিলিত হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা বলা কঠিন। তবে যত দিন পরমাত্মা বা ঈশ্বরপ্রাপ্তি না ঘটে তত দিন জীবাত্মাকে বারবার নতুন দেহ ধারণ করে মোক্ষলাভ বা ঈশ্বর প্রাপ্তির জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে হয়

গীতায় এও বলা হয়েছেমানুষ প্রকৃতির সংসর্গবশত প্রকৃতিরগুণ অর্থাৎ সত্ত্বঃ তমোঃ এবং রজঃ গুণের প্রভাবে সুখ-দুখমোহাদিতে আবদ্ধ হয়ে পড়ে এবং আমি সুখীআমি দুঃখীআমি কর্তাআমার কর্ম ইত্যাদি আমিত্ব প্রকাশ করতঃ কর্মনাশে প্রবৃত্ত হয়। এ সকল কর্মফল ভোগের জন্য তাকে বারবার জন্মগ্রহণ করতে হয়। আর একাধিকবার জন্মগ্রহণ করাকেই বলা হয় জন্মান্তরবাদ

দেহ ও আত্মাঃ
দেহ ও আত্মার মধ্যে এক ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ রয়েছে। দেহকে আশ্রয় করে আত্মার অভিযাত্রাআবার আত্মাকে লাভ করে দেহ সজীব। দেহহীন আত্মা নিষ্ক্রিয়আত্মাহীন দেহ জড়। তবে দেহের মধ্যে যে আত্মার অবস্থান এটা উপলব্ধি করা সহজ কাজ নয়। আত্মা যে দেহকে আশ্রয় করে সেটি কিন্তু নশ্বর। ক্ষিতিঅপতেজমরুৎব্যোম-এই পঞ্চভূতে বা উপাদানে গড়া দেহ। এই দেহের বিনাস আছে । যিনি জীবদেহ ধারণ করে এসেছেন তারই দেহনাশ নিশ্চিত হয়ে রয়েছে। গীতায় এ সম্পর্কে বলা হয়েছে,- ‍‌‍‌‌‌‌

"
জাতস্য হি ধ্রবো মৃত্যুঃ”- জাত ব্যাক্তির মৃত্যু অবধারিত 
তবে ঐ যে দেহে জীবাত্মা ছিল তার কিন্তু বিনাশ নেই। ঐ জীবাত্মা এক দেহ ত্যাগ করে অন্য নতুন দেহে চলে যায়

জন্মান্তর প্রক্রিয়া :
জীবাত্মার পক্ষে মৃত্যুর অর্থ হল দেহত্যাগ। জীবাত্মা কেমন করে এবং কেনইবা দেহ ত্যাগ করেগীতায় এ প্রসংঙ্গেও বলা হয়েছে যেদেহত্যাগ ব্যাপারটি একটি সহজ কাজযেমন একই দেহে বাল্যকৈশোরযৌবন বার্ধক্য আসেতেমনি আত্মাও স্বাভাবিকভাবেই জীর্ণ দেহ ত্যাগ করে চলে যায়। যেমন একই লোকে পুরাতন ছিন্ন বস্ত্র ত্যাগ করে নতুন বস্ত্র পরিধান করে. সেইরূপ জীবাত্মাও জীর্ণ দেহ ত্যাগ করে নতুন দেহ গ্রহন করে
এভাবে পুরাতন দেহ ত্যাগ করে জীবাত্মা যে নতুন দেহ ধারন করছে অর্থাৎ দেহের সংঙ্গে তার যে সংযোগ বিয়োগ ঘটেছে এটাই জন্মান্তরবাদ

কর্মবাদ :
প্রশ্ন আসতে পারেএখানে আবার কর্মবাদ কেনউত্তরজন্মান্তরবাদের সংঙ্গে কর্মবাদ অতন্ত্য ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত। আত্মার অবিনাশিতা ও জন্মান্তরবাদের ন্যায় কর্মবাদও হিন্দু ধর্মের ভিত্তি প্রস্তর স্বরূপ। কর্মবাদের মূল কথা হচ্ছে বিশ্ব জগৎ স্রষ্টার বিরাট কর্মক্ষেত্র। এখানে জীব ভাবনাবাসনা ও চেষ্টার দ্বারা নানা রকম কর্ম করে যাচ্ছে। আর প্রত্যেকটা কর্মের রয়েছে পৃথক পৃথক কর্মফল। হিন্দুধর্মের মতে কর্ম করলেই তার ফল উৎপন্ন হবেআর কর্মকর্তাকে তা অবশ্যই ভোগ করতে হবে। আর এই কর্মফল ভোগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মোক্ষপ্রাপ্তি বা জন্ম মৃত্যুরূপ সংসারচক্র থেকে মুক্তি হবে না

মুক্তির উপায়:
তবে এর থেকে জীবের মুক্তির উপায় কীহ্যাঁউপায় অবশ্যই আছেআর তা হল নিস্কাম কর্ম। একমাত্র নিষ্কামভাবে কর্ম করলেসে কর্মের যে ফল উৎপন্ন হবে তা কর্মকর্তাকে ভোগ করতে হবে না। সুতরাং নিষ্কাম কর্মের অনুশীলন করাই সঙ্গত কাজ। নিষ্কাম কর্ম করে জীব মুক্তি লাভ করতে পারে
গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, ‘হে অর্জুনসব কর্মফল আমাকে সমর্পণ করে এবং কামনাহীন ও মমতাহীন হয়ে তুমি যুদ্ধ কর”( অধ্যায় ৩শ্লোক ২৯)
তিনি এও বলেছেন, “একমাত্র কর্মেই তোমার অধিকারকর্মফলে নয়

হিন্দু ধর্ম যতগুলো স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়েতার মধ্য জন্মান্তরবাদ অন্যতম। মূলতএখানে আমি জন্মান্তরবাদ সম্পর্কে ধর্মীয় দৃস্টিভঙ্গি তুলে ধরলাম। যদি কোন ভুল করে থাকিতবে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যদি পরমেশ্বর কৃপা করে তাহলে একদিন বৈজ্ঞানিক দৃস্টিভঙ্গিও তুলে ধরার চেষ্টা করবো

3 comments:

  1. অনেক ভাষাতে হিন্দু ধর্মের উপর সাইট থাকলেও বাংলা ভাষাতে একেবারেই হাতে গোনা। কিছু ওয়েবসাইট আবার বন্ধও হয়ে গেছে।অনেক ভাষাতে হিন্দু ধর্মের উপর সাইট থাকলেও বাংলা ভাষাতে একেবারেই হাতে গোনা। কিছু ওয়েবসাইট আবার বন্ধও হয়ে গেছে।

    ReplyDelete
  2. অনেক ভাষাতে হিন্দু ধর্মের উপর সাইট থাকলেও বাংলা ভাষাতে একেবারেই হাতে গোনা। কিছু ওয়েবসাইট আবার বন্ধও হয়ে গেছে।

    ReplyDelete
  3. I request you to publish more and more topics about Hinduism in Bangla language.

    ReplyDelete