সুশান্ত বন্দ
প্রথম পর্বের পর
পাঁচ
বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডে প্রাণী আছে কিনা ? (Are there any life in defferent Universe)
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আমাদের সৌর জগতের মত মহাবিশ্বে আরো অসংখ্য সৌর জগত রহিয়াছে । সে সকল স্থানে বুদ্ধিমান জীব থাকা সম্ভব । এ ব্যাপারে ভাগবত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডে অনন্ত কোটি জীব রহিয়াছে । তবে বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের পরিবেশ এবং ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন সেজন্য্ সে সকল স্থানে বিভিন্ন প্রকারের জীব রহিয়াছে । ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে এ মহাবিশ্বে ৮৪ লক্ষ রকমের জীব রয়েছে ।
মহাবিশ্বের বিভিন্ন গ্রহে মানুষ আছে
নভো দদাতি শ্বসতাং পদং যন্নিয়মাদদঃ ।
লোকং স্বদেহং তনুতে মহান্ সপ্তভিরাববৃতম্ ।। (ভাগবত ৩/২৯/৪৩)
অনুবাদ
পরমেশ্বর ভগবানের নিয়ন্ত্রণে আকাশ অন্তরীক্ষে বিভিন্ন গ্রহদের স্থান প্রদান করে, যেইখানে অসংখ্য প্র্রাণী বাস করে । তাঁহার পরম নয়ন্ত্রনে সমগ্র ব্রহ্মান্ডের বিরাট শরীর সপ্ত আবরণসহ বিস্তৃত বিশ্বব্রহ্মান্ডের আবরণের ধারণা হয় ।
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে সমগ্র ব্রহ্মান্ডের অসংখ্য গ্রহে অসংখ্য প্রাণী বাস করে এবং বিশ্বব্রহ্মান্ডের ৭ টি আবরণ আছে । সে বিষয়টি উল্লেখ করা হইয়াছে । বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের ৭ টি আবরণ আছে ।
অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডে অনন্ত কোটি জীব আছে, সে সকল ব্রহ্মান্ডে মানুষসহ সব ধরনের জীব আছে । সে সব ব্রহ্মান্ডের মানুষের ধর্ম কি ? তাদের জীবনযাত্রার মান কেমন ? তাহাদের সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা ভাগবতে আছে । আমি সংক্ষেপে বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের মানুষের বৈশিষ্ট্য কিছু আলোচনা করছি ।
বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের জীবের বর্ণনা
ভাবয়ত্যেষ সত্ত্বেন লোকন্ বৈ লোকভাবনঃ ।
লীলাবতারানুরতো দেবতির্যঙ্ নরাদিষু ।। (ভাগবত ১/২/৩৪)
অনুবাদ
এ ভাবে সমস্ত জগতের পতি দেবতা, মনুষ্য এবং পশু অধ্যুষিত সমস্ত গ্রহ লোকগুলি প্রতিপালন করেন । বিভিন্ন অবতারে তিনি তাঁহার লীলা-বিলাস করিয়া বিশুদ্ধ-সত্ত্বে অধিষ্ঠিত হইয়াও জীবসমূহকে উদ্ধার করেন ।
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে অনন্ত কোটি জড় ব্রহ্মান্ড রয়েছে এবং প্রতিটি ব্রহ্মান্ডে অসংখ্য গ্রহ রয়েছে । সেখানে অসংখ্য জীব প্রকৃতির বিভিন্ন গুণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিরাজ করছে । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ছায়ারূপ প্রতিটি ব্রহ্মান্ডে এবং প্রতিটি গ্রহে অবতরণ করেন । তিনি বিভিন্ন গ্রহে জীবদের মাঝে তাঁহার বৈদিক আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন, যাহাতে তাহারা চিন্ময় জগতে ফিরিয়া যাওয়ার যোগ্যতা লাভ করিতে পারে । ভগবাণ তাঁহার অপ্রাকৃত স্থিতির পরিবর্তন করেন না, কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিবেশে এবং বিভিন্ন সমাজে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন বলিয়া মনে হয় ।
প্রতিটি ব্রহ্মান্ড নিয়ন্ত্রনের জন্য কৃষ্ণ একজন প্রতিনিধি নির্ধারণ করিয়াছেন, তাঁহার নাম ব্রহ্মা । প্রত্যেক ব্রহ্মান্ডের সর্বোচ্চ গ্রহের নাম ব্রহ্মালোক বা সত্যলোক, সেই গ্রহে ব্রহ্মা বসবাস করেন । ব্রহ্মার ১ দিনকে উক্ত ব্রহ্মান্ডের ১ দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়, বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের দিনের সময় উক্ত ব্রহ্মান্ডের আয়তন দ্বারা নির্ধারণ করা হয় । যেমন – আমাদের ব্রহ্মান্ড সবচেয়ে ছোট, এই ব্রহ্মান্ডের ১ দিন আমাদের পৃথিবীর হিসাবে ৪৩২ কোটি বছর সেরকম আমাদের পাশ্ববর্তী ব্রহ্মান্ডের আয়তন আমাদের চেয়ে সামান্য বড়, সেখানকার ব্রহ্মান্ডের ১ দিন ৪৩২ কোটি বছরের কিছু বেশী হইবে । এভাবে প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের ১ দিন অন্য ব্রহ্মান্ড থেকে আলাদা । ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে প্রত্যেক ব্রহ্মান্ডের ১ দিনে কৃষ্ণ একবার করে সেই ব্রহ্মান্ডে যান । আজ থেকে ৫০০০ বছর আগে কৃষ্ণ আমাদের ব্রহ্মান্ডের পৃথিবী বা মর্ত্যলোক নামক গ্রহে আসিয়েছিলেন, তিনি পৃথিবীতে আবার ৮৬৪ কোটি বছর পর আসিবেন ।
ব্রহ্মার ১ দিনে কৃষ্ণ একবার সেই ব্রহ্মান্ডে যান
ব্রহ্মার এক দিনে তিহোঁ একবার ।
অবতীর্ণ হঞা করেন প্রকট বিহার ।। (চৈতণ্য চরিতামৃত পাতা ১২৬ শ্লোক ৬)
অনুবাদ
ব্রহ্মার একদিনে একবার তিনি তাঁহার আপ্রাকৃত লীলা প্রকট করিবার জন্য এই জড় জগতে অবতীর্ণ হন ।
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে ব্রহ্মার ১ দিনে কৃষ্ণ সেই ব্রহ্মান্ডে একবার যান । এভাবে বিবেচনা করলে বোঝা যায় প্র্রতিটি ব্রহ্মান্ডে অসংখ্য মানুষ রহিয়াছে এবং সে সকল ব্রহ্মান্ডে সনাতন ধর্ম বর্তমান রয়েছে । অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডে ও চিন্ময় জগতে বৈদিক ধর্ম বিদ্যমান । এ জন্য এই ধর্মের নাম সনাতন ধর্ম ।
ব্রহ্মান্ড সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের ধারণা (Concept of Scientists About Universe)
ব্রহ্মান্ড বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সুস্পষ্ট কোন ধারনা নাই, তারা বিশ্বব্রহ্মান্ডের মাঝে কিছু মসৃণ অঞ্চল দেখতে পান সেগুলিকে আমাদের মত সৌর জগত মনে করেন, এই মসৃণ অঞ্চলগুলি সৌর জগত সেটা সঠিক এবং ভাগবতের আলোকে এই মসৃণ অঞ্চলগুলিকে ব্রহ্মান্ডের অভ্যন্তরভাগ বলা হয় আর ইহার চতুর্দিকে যে অমসৃণ স্থান বিদ্যমান সেগুলি ব্রহ্মান্ডের আবরণ । বিজ্ঞানীরা ব্রহ্মান্ড এবং বিশ্বব্রহ্মান্ডের মধ্যে কোন সুস্পস্ট পার্থক্য আবিষ্কার করতে পারে নাই । সেজন্য মহাবিশ্ব বিষয়ে তারা যে মতবাদগুলি আবিষ্কার করেছেন সেগুলি অসম্পূর্ণ এবং পরস্পর বিরোধি বলে মনে হয়, যা পরবর্তীতে বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি পর্বে আলোচনা করা হবে । ভাগবতে যেমন প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের বর্ণনা নির্দিষ্ট ভাবে করা হয়েছে বিজ্ঞানীরা সেভাবে আবিষ্কার করতে পারে নাই ।যেমন আমরা যে ব্রহ্মান্ডে বসবাস করি ইহার ব্যাস ৫০ কোটি যোজন বা ৪০০ কোটি মাইল [১ যোজন = ৮ মাইল] এবং এর আবরণ ব্যাসের ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ বেশি চওড়া এবং আবরণগুলি ৭ টি স্তরে বিভক্ত, ইহাতে আগুনের স্তর ৪০,০০০ কোটি মাইল চওড়া এভাবে অন্য আবরণগুলি বর্ণনা নিখুঁতভাবে করা হয়েছে যাহা করিতে বিজ্ঞানীরা অক্ষম ।
ব্রহ্মান্ড বিষয়ে আলোচনার সারাংশ (A brief discussion about Universe)
১ । বিশ্বব্রহ্মান্ড বা মহাবিশ্বের সংখ্যা ১ টি ।
২ । ব্রহ্মান্ডের সংখ্যা অনন্ত কোটি ।
৩ । বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের ব্যাস বিভিন্ন রকম ।
৪ । ব্রহ্মান্ডের আবরণ (Covering) ব্রহ্মান্ডের ব্যাসের ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ বড় ।
৫ । আমাদের ব্রহ্মান্ডের ব্যাস ৫০ কোটি যোজন বা ৪০০ কোটি মাইল ।
৬ । প্র্রতিটি ব্রহ্মান্ডের আবরণের ২য় স্তর আগুনের তৈরী । ইহাকে বিজ্ঞানীরা জ্বলন্ত তাঁরকা বলে ।
৭ । ব্রহ্মান্ডগুলি পরমানুর মত গোল ।
৮ । আমাদের নিকটতম ব্রহ্মান্ডের দূরত্ব ১৫৫০০ আলোক বর্ষ [৫৮৬৫৬৯৬০০০ ০০০ মাইল = ১ আলোক বর্ষ]
৯ । মহাবিশ্বে মসৃণ ব্রহ্মান্ডের তুলনায় অমসৃণ আন্তঃনাক্ষত্রিক পদার্থ বা ব্রহ্মান্ডের আবরণের পরিমাণ ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ বেশী ।
১০ । ব্রহ্মান্ডগুলি ঘটনা চক্রে তৈরী হয় নাই ।
১১ । প্রতিটি ব্রহ্মান্ডে অসংখ্য জীব বসবাস করে ।
১২ । প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের কেন্দ্রে একটি করে সূর্য আছে ।
১৩ । ব্রহ্মান্ডগুলি ব্রহ্মান্ডের আবরণ থেকে সৃষ্টি হয়েছে ।
১৪ । বিজ্ঞানীদের ব্রহ্মান্ড সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারনা নাই ।
প্রথম পর্বের পর
পাঁচ
বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডে প্রাণী আছে কিনা ? (Are there any life in defferent Universe)
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আমাদের সৌর জগতের মত মহাবিশ্বে আরো অসংখ্য সৌর জগত রহিয়াছে । সে সকল স্থানে বুদ্ধিমান জীব থাকা সম্ভব । এ ব্যাপারে ভাগবত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডে অনন্ত কোটি জীব রহিয়াছে । তবে বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের পরিবেশ এবং ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন সেজন্য্ সে সকল স্থানে বিভিন্ন প্রকারের জীব রহিয়াছে । ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে এ মহাবিশ্বে ৮৪ লক্ষ রকমের জীব রয়েছে ।
মহাবিশ্বের বিভিন্ন গ্রহে মানুষ আছে
নভো দদাতি শ্বসতাং পদং যন্নিয়মাদদঃ ।
লোকং স্বদেহং তনুতে মহান্ সপ্তভিরাববৃতম্ ।। (ভাগবত ৩/২৯/৪৩)
অনুবাদ
পরমেশ্বর ভগবানের নিয়ন্ত্রণে আকাশ অন্তরীক্ষে বিভিন্ন গ্রহদের স্থান প্রদান করে, যেইখানে অসংখ্য প্র্রাণী বাস করে । তাঁহার পরম নয়ন্ত্রনে সমগ্র ব্রহ্মান্ডের বিরাট শরীর সপ্ত আবরণসহ বিস্তৃত বিশ্বব্রহ্মান্ডের আবরণের ধারণা হয় ।
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে সমগ্র ব্রহ্মান্ডের অসংখ্য গ্রহে অসংখ্য প্রাণী বাস করে এবং বিশ্বব্রহ্মান্ডের ৭ টি আবরণ আছে । সে বিষয়টি উল্লেখ করা হইয়াছে । বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের ৭ টি আবরণ আছে ।
অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডে অনন্ত কোটি জীব আছে, সে সকল ব্রহ্মান্ডে মানুষসহ সব ধরনের জীব আছে । সে সব ব্রহ্মান্ডের মানুষের ধর্ম কি ? তাদের জীবনযাত্রার মান কেমন ? তাহাদের সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা ভাগবতে আছে । আমি সংক্ষেপে বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের মানুষের বৈশিষ্ট্য কিছু আলোচনা করছি ।
বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের জীবের বর্ণনা
ভাবয়ত্যেষ সত্ত্বেন লোকন্ বৈ লোকভাবনঃ ।
লীলাবতারানুরতো দেবতির্যঙ্ নরাদিষু ।। (ভাগবত ১/২/৩৪)
অনুবাদ
এ ভাবে সমস্ত জগতের পতি দেবতা, মনুষ্য এবং পশু অধ্যুষিত সমস্ত গ্রহ লোকগুলি প্রতিপালন করেন । বিভিন্ন অবতারে তিনি তাঁহার লীলা-বিলাস করিয়া বিশুদ্ধ-সত্ত্বে অধিষ্ঠিত হইয়াও জীবসমূহকে উদ্ধার করেন ।
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে অনন্ত কোটি জড় ব্রহ্মান্ড রয়েছে এবং প্রতিটি ব্রহ্মান্ডে অসংখ্য গ্রহ রয়েছে । সেখানে অসংখ্য জীব প্রকৃতির বিভিন্ন গুণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিরাজ করছে । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ছায়ারূপ প্রতিটি ব্রহ্মান্ডে এবং প্রতিটি গ্রহে অবতরণ করেন । তিনি বিভিন্ন গ্রহে জীবদের মাঝে তাঁহার বৈদিক আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেন, যাহাতে তাহারা চিন্ময় জগতে ফিরিয়া যাওয়ার যোগ্যতা লাভ করিতে পারে । ভগবাণ তাঁহার অপ্রাকৃত স্থিতির পরিবর্তন করেন না, কিন্তু বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পরিবেশে এবং বিভিন্ন সমাজে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন বলিয়া মনে হয় ।
প্রতিটি ব্রহ্মান্ড নিয়ন্ত্রনের জন্য কৃষ্ণ একজন প্রতিনিধি নির্ধারণ করিয়াছেন, তাঁহার নাম ব্রহ্মা । প্রত্যেক ব্রহ্মান্ডের সর্বোচ্চ গ্রহের নাম ব্রহ্মালোক বা সত্যলোক, সেই গ্রহে ব্রহ্মা বসবাস করেন । ব্রহ্মার ১ দিনকে উক্ত ব্রহ্মান্ডের ১ দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়, বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের দিনের সময় উক্ত ব্রহ্মান্ডের আয়তন দ্বারা নির্ধারণ করা হয় । যেমন – আমাদের ব্রহ্মান্ড সবচেয়ে ছোট, এই ব্রহ্মান্ডের ১ দিন আমাদের পৃথিবীর হিসাবে ৪৩২ কোটি বছর সেরকম আমাদের পাশ্ববর্তী ব্রহ্মান্ডের আয়তন আমাদের চেয়ে সামান্য বড়, সেখানকার ব্রহ্মান্ডের ১ দিন ৪৩২ কোটি বছরের কিছু বেশী হইবে । এভাবে প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের ১ দিন অন্য ব্রহ্মান্ড থেকে আলাদা । ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে প্রত্যেক ব্রহ্মান্ডের ১ দিনে কৃষ্ণ একবার করে সেই ব্রহ্মান্ডে যান । আজ থেকে ৫০০০ বছর আগে কৃষ্ণ আমাদের ব্রহ্মান্ডের পৃথিবী বা মর্ত্যলোক নামক গ্রহে আসিয়েছিলেন, তিনি পৃথিবীতে আবার ৮৬৪ কোটি বছর পর আসিবেন ।
ব্রহ্মার ১ দিনে কৃষ্ণ একবার সেই ব্রহ্মান্ডে যান
ব্রহ্মার এক দিনে তিহোঁ একবার ।
অবতীর্ণ হঞা করেন প্রকট বিহার ।। (চৈতণ্য চরিতামৃত পাতা ১২৬ শ্লোক ৬)
অনুবাদ
ব্রহ্মার একদিনে একবার তিনি তাঁহার আপ্রাকৃত লীলা প্রকট করিবার জন্য এই জড় জগতে অবতীর্ণ হন ।
এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে ব্রহ্মার ১ দিনে কৃষ্ণ সেই ব্রহ্মান্ডে একবার যান । এভাবে বিবেচনা করলে বোঝা যায় প্র্রতিটি ব্রহ্মান্ডে অসংখ্য মানুষ রহিয়াছে এবং সে সকল ব্রহ্মান্ডে সনাতন ধর্ম বর্তমান রয়েছে । অনন্ত কোটি ব্রহ্মান্ডে ও চিন্ময় জগতে বৈদিক ধর্ম বিদ্যমান । এ জন্য এই ধর্মের নাম সনাতন ধর্ম ।
ব্রহ্মান্ড সম্বন্ধে বিজ্ঞানীদের ধারণা (Concept of Scientists About Universe)
ব্রহ্মান্ড বিষয়ে বিজ্ঞানীদের সুস্পষ্ট কোন ধারনা নাই, তারা বিশ্বব্রহ্মান্ডের মাঝে কিছু মসৃণ অঞ্চল দেখতে পান সেগুলিকে আমাদের মত সৌর জগত মনে করেন, এই মসৃণ অঞ্চলগুলি সৌর জগত সেটা সঠিক এবং ভাগবতের আলোকে এই মসৃণ অঞ্চলগুলিকে ব্রহ্মান্ডের অভ্যন্তরভাগ বলা হয় আর ইহার চতুর্দিকে যে অমসৃণ স্থান বিদ্যমান সেগুলি ব্রহ্মান্ডের আবরণ । বিজ্ঞানীরা ব্রহ্মান্ড এবং বিশ্বব্রহ্মান্ডের মধ্যে কোন সুস্পস্ট পার্থক্য আবিষ্কার করতে পারে নাই । সেজন্য মহাবিশ্ব বিষয়ে তারা যে মতবাদগুলি আবিষ্কার করেছেন সেগুলি অসম্পূর্ণ এবং পরস্পর বিরোধি বলে মনে হয়, যা পরবর্তীতে বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি পর্বে আলোচনা করা হবে । ভাগবতে যেমন প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের বর্ণনা নির্দিষ্ট ভাবে করা হয়েছে বিজ্ঞানীরা সেভাবে আবিষ্কার করতে পারে নাই ।যেমন আমরা যে ব্রহ্মান্ডে বসবাস করি ইহার ব্যাস ৫০ কোটি যোজন বা ৪০০ কোটি মাইল [১ যোজন = ৮ মাইল] এবং এর আবরণ ব্যাসের ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ বেশি চওড়া এবং আবরণগুলি ৭ টি স্তরে বিভক্ত, ইহাতে আগুনের স্তর ৪০,০০০ কোটি মাইল চওড়া এভাবে অন্য আবরণগুলি বর্ণনা নিখুঁতভাবে করা হয়েছে যাহা করিতে বিজ্ঞানীরা অক্ষম ।
ব্রহ্মান্ড বিষয়ে আলোচনার সারাংশ (A brief discussion about Universe)
১ । বিশ্বব্রহ্মান্ড বা মহাবিশ্বের সংখ্যা ১ টি ।
২ । ব্রহ্মান্ডের সংখ্যা অনন্ত কোটি ।
৩ । বিভিন্ন ব্রহ্মান্ডের ব্যাস বিভিন্ন রকম ।
৪ । ব্রহ্মান্ডের আবরণ (Covering) ব্রহ্মান্ডের ব্যাসের ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ বড় ।
৫ । আমাদের ব্রহ্মান্ডের ব্যাস ৫০ কোটি যোজন বা ৪০০ কোটি মাইল ।
৬ । প্র্রতিটি ব্রহ্মান্ডের আবরণের ২য় স্তর আগুনের তৈরী । ইহাকে বিজ্ঞানীরা জ্বলন্ত তাঁরকা বলে ।
৭ । ব্রহ্মান্ডগুলি পরমানুর মত গোল ।
৮ । আমাদের নিকটতম ব্রহ্মান্ডের দূরত্ব ১৫৫০০ আলোক বর্ষ [৫৮৬৫৬৯৬০০০ ০০০ মাইল = ১ আলোক বর্ষ]
৯ । মহাবিশ্বে মসৃণ ব্রহ্মান্ডের তুলনায় অমসৃণ আন্তঃনাক্ষত্রিক পদার্থ বা ব্রহ্মান্ডের আবরণের পরিমাণ ১ কোটি ১১ লক্ষ গুণ বেশী ।
১০ । ব্রহ্মান্ডগুলি ঘটনা চক্রে তৈরী হয় নাই ।
১১ । প্রতিটি ব্রহ্মান্ডে অসংখ্য জীব বসবাস করে ।
১২ । প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের কেন্দ্রে একটি করে সূর্য আছে ।
১৩ । ব্রহ্মান্ডগুলি ব্রহ্মান্ডের আবরণ থেকে সৃষ্টি হয়েছে ।
১৪ । বিজ্ঞানীদের ব্রহ্মান্ড সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারনা নাই ।
No comments:
Post a Comment