শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুন

শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুন
অর্জুন তোমার আমার বহুবার জন্ম হয়েছে। সে কথা তোমার মনে নেই, সবই আমার মনে আছে।

Sunday, June 29, 2014

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম ও গণ মাধ্যম গুলোতে হিন্দু বিদ্বেষী তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের একটি সস্তা রবীন্দ্র বিদ্বেষ মুলক তথ্য হল,কবিগুরু নাকি সে সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন।পেজে অনেকই এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় জানতে চেয়েছেন।তাদের জন্য এ লেখা। এখন থেকে কোথাও এই ধরনের অপপ্রচার শুনলেই ওদের মুখের উপর এ লেখা ছুড়ে দেবেন।  

তৎকালীন পূর্ববাংলার (বর্তমান বাংলাদেশ) পশ্চাৎপদ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে উচ্চশিক্ষায় আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার বিরোধিতাও সে সময় কিছু লোকজন করেছিলেন। এই বিরোধিতাকারীদের মধ্য ছিলেন মুসলমান ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গ ছিলেন।  মৌলানা আকরাম খান আশঙ্কা প্রকাশ করেন যেসরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ করলে সাধারণ মুসলমানদের শিক্ষা সংক্রান্ত বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দানের ক্ষেত্রে অর্থের ব্যবস্থা করবেন না। মুসলমানদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অপেক্ষা প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি (প্রাথমিক ও মাধ্যমিক) শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার উপর তিনি গুরুত্ত্ব আরোপ করেন। আবদুর রসুল আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় মুসলমানদের পক্ষে ‘বিলাসিতা’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।চব্বিশ পরগণার জেলা মহামেডান এসোসিয়েশন ১৯১২-র ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যায় স্থাপনের বিরোধিতা করে। হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোকজনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেন সে সময়ে। রাসবিহারী ঘোষ,আশুতোষ মুখারজি,সুরেন্দ্রনাথ ব্যানারজি প্রমুখ ছিলেন সে দলে।তবে পরবর্তিতে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষক নিয়োগে সহযোগিতা করেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্যার নীলরতন সরকার।
ঢাকার নবাব,এ কে ফজলুল হকদের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় পূর্ব বাংলার সব হিন্দুরা এগিয়ে এসেছিলেন। এদের মধ্যে ঢাকার বলিয়াদির জমিদার অন্যতম। জগন্নাথ হলের নামকরণ হয় তাঁর পিতা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে। জগন্নাথরায় চৌধুরীর নামেই ঢাকার জগন্নাথ কলেজের নামকরণ করা হয়েছিল।এদের অকাতর আর্থিক সহযোগিতা ও সর্বাত্মক সমর্থনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি ছিল।
থেকেই। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শে পরিকল্পিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বহু গুণী মানুষের সান্নিধ্যে ধন্য হয়ে ওঠে। বাংলা ভাষার কালজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৬১-১৯৪১) সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল সম্পর্কের কথা এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডি লিট উপাধি প্রদান করেছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ উপস্থাপন করেছেন গুরুত্বপূর্ণ দুটো বক্তৃতা। 


রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোর বিরোধী ছিলেন বলে একটা কথা বেশ কিছুকাল ধরে বাংলাদেশে মুখে মুখে প্রচার করছে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক কীটেরা কেউ কেউ কোনো প্রমাণ উপস্থিত না করেই লিখিতভাবে জানাচ্ছেন যে, ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ মার্চ কলকাতায় গড়ের মাঠে রবীন্দ্রনাথের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে এক বিরাট জনসভা হয়।কিন্তু মজার ব্যাপার হল মিথ্যাবাদীরা বরাবরই মিথ্যা তথ্য দিতেও ভুল করে।

 ১৯১২ সালের ১৯ মার্চ সিটি অব প্যারিস জাহাজযোগে রবীন্দ্রনাথের বিলাতযাত্রার কথা ছিল। তাঁর সফরসঙ্গী ডাক্তার দ্বিজেন্দ্রনাথ মিত্র জাহাজে উঠে পড়েছিলেন, কবির মালপত্রও তাতে তোলা হয়ে গিয়েছিল; কিন্তু আকস্মিকভাবে ওইদিন সকালে রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মাদ্রাজ থেকে তাঁর মালপত্র ফিরিয়ে আনা হয়কলকাতায় কয়েক দিন বিশ্রাম করে ২৪ মার্চ রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে চলে আসেন এবং ২৮ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে সেখানে বসে ১৮টি গান ও কবিতা রচনা করেন, যা পরে গীতিমাল্য (১৯১৪) গ্রন্থে সংকলিত হয়। গীতিমাল্য-এর ৪ সংখ্যক কবিতা স্থিরনয়নে তাকিয়ে আছিযে শিলাইদহে ১৫ চৈত্র ১৩১৮ তারিখ (২৮ মার্চ ১৯১২) রচিত হয়, তা ওই গ্রন্থে কবিতাটির নিচেই লেখা আছে। উল্লেখযোগ্য যে, ইংরেজি গীতাঞ্জলির (১৯১২) সূচনাও হয় এ সময়ে।
এতথ্য আপনারা যাচাই করতে পড়তে পারেনঃ রবিপুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘পিতৃস্মৃতি গ্রন্থ,ঠাকুরবাড়ির ক্যাশবহিতে লেখা আছেশ্রীযুক্ত রবীন্দ্র বাবু মহাশয় ও শ্রীযুক্ত রথীন্দ্র বাবু মহাশয় ও শ্রীমতি বধুমাতাঠাকুরাণী সিলাইদহ গমনের ব্যায় ৩৭৯ নং ভাউচার ১১ চৈত্র ১৫।।৩।. পরদিন সোমবার ১২ চৈত্র ২৫ মার্চ ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ মৌচাক পত্রিকার সম্পাদক সুধীরচন্দ্র সরকারের ভগ্নী  কাদম্বিনী দত্তকে (১২৮৫১৩৫০ বঙ্গাব্দ) এক চিঠিতে লেখেনএখনো মাথার পরিশ্রম নিষেধ। শিলাইদহে নির্জ্জনে পালাইয়া আসিয়াছি।২৪ মার্চ ১৯১২ (১১ চৈত্র ১৩১৮ বঙ্গাব্দ) বিশ্রামের উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে রওনা হন। ১৯১২ সালের ২৮ শে মার্চ রবীন্দ্রনাথ একটি চিঠি লিখেছেন জগদানন্দ রায়কে। জগদানন্দ রায়  বিজ্ঞান বিষয়ক লেখকরবীন্দ্রনাথের পুত্রকন্যাদের গৃহশিক্ষক ও শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমের শিক্ষক। (বিভা. পমাঘ-চৈত্র ১৩৭৬। ২৫৩পত্র৫)।প্রশান্তকুমার পাল রবিজীবনী গ্রন্থের ষষ্ঠ খণ্ডে জানাচ্ছেনএদিনই তিনি একটি কবিতা লেখেন। কবিতার নাম—‘ স্থির নয়নে তাকিয়ে আছি এই কবিতাটি গীতিমাল্য কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত ৪ সংখ্যক কবিতা। এর পর বাকী ১৫ দিনে শিলাইদহে থেকে রবীন্দ্রনাথ আরও ১৭টি কবিতা বা গান লেখেন। এর মধ্যে একটি গানআমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ। ১৪ চৈত্র১৩১৮ বঙ্গাব্দ। রচনার স্থান শিলাইদহ।


অর্থাৎ ১৯১২ সালের ২৮ মার্চ রবি ঠাকুর কোলকাতাতেই ছিলেন না, ছিলেন শিলাইদাহতে।অথচ এই মিথ্যুকেরা প্রচার করে ২৮ মার্চ নাকি কোলকাতার জনসভাতে সভাপতিত্ব করেন।

এ প্রসঙ্গে আরও একটি কথা। ১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঢাকা সফরে এসে যেভাবে প্রথমে ঢাকার নবাবের আতিথ্যলাভ করেন এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধিত হন, তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিরোধিতা করে থাকলে তা সম্ভব হতো না এটা বুঝতে রকেট সাইন্টিস্ট হওয়া লাগে না
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকায় আসেন মোট দুবার১৮৯৮ সালে প্রথমবার, আর দ্বিতীয়বার ১৯২৬ সালে। এ ছাড়া ১৯২৮ সালে তাঁকে আরেকবার ঢাকায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়, কিন্তু ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে তিনি সেবার ঢাকায় আসতে পারেননি। একইভাবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৯৩৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেও তিনি আসতে সমর্থ হননিতাঁর অনুপস্থিতিতেই তাঁকে প্রদান করা হয় ডি লিট উপাধি।

দ্বিতীয়বার ঢাকায় আসার পর রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঢাকায় আসেন ঢাকার জনগণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আমন্ত্রণে। Dacca University Students Union-এর ব্যবস্থাপনায় এ সময় রবীন্দ্রনাথ কার্জন হলে দুটো বক্তৃতা প্রদান করেন। ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তিনি উপস্থাপন করেন প্রথম বক্তৃতা: ‘The Big and the Complex’কার্জন হলে উভয় দিনেই রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর জি এইচ ল্যাংলি। সভার প্রারম্ভে সমবেত সুধীদের কাছে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় দিতে গিয়ে উপাচার্য বলেন: এটা আমাদের পক্ষে আজ একটা পরম সুযোগ যে, এই সন্ধ্যায় পৃথিবীর একজন শ্রেষ্ঠ শিল্পী সম্বন্ধে আমাদের কাছে কিছু বলবেন।ওই সন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথ দীর্ঘ ভাষণ উপস্থাপন করেন। তাঁর ভাষণের মূল কথা ছিল:শিল্প-সৃষ্টি বিষয় ও ভাবের আবেগময় বিবরণ বা নিবেদন। তাই এটা কখনোই ক্যামেরায় তোলা ফটোর মতো নয়। শিল্পী খুবই ভাবপ্রবণ এবং তাঁর এই প্রবণতা বিষয় নির্বাচনের রুচি-বাগীশতাতেই নয়, তাঁর শিল্পের প্রত্যেকটি বিস্তৃত ব্যাপারেও।...আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টির মধ্যে বাস করেন। শিল্পীও তেমনি নিজেকে মেলে ধরেন তাঁর শিল্পের মাঝে। শিল্পীর শিল্পাদর্শ নিছক বিলাস বা কল্পনা-উদ্ভূত নয়, তা পরম বাস্তব।
কার্জন হলে রবীন্দ্রনাথের দ্বিতীয় বক্তৃতার বিষয় ছিল: ‘The Big and the Complex’ তবে প্রকাশের সময়ে তিনি বক্তৃতার নতুন নাম দেন ‘The Rule of the Giant’

কার্জন হল ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ একাধিক হলের সংবর্ধনায় বক্তৃতা দেন। ১০ ফেব্রুয়ারি অপরাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম হলের (বর্তমানে সলিমুল্লাহ হল) ছাত্ররা রবীন্দ্রনাথকে সংবর্ধনা জানান। সংবর্ধনা সভায় হলের ছাত্ররা রবীন্দ্রনাথকে  শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি অভিনন্দনপত্র পাঠ করেন। মুসলিম হলের শিক্ষার্থীদের আন্তরিক সংবর্ধনায় রবীন্দ্রনাথ বিশেষভাবে অভিভূত হয়ে পড়েন। সংবর্ধনার উত্তরে তাই তিনি প্রথমেই বলেন, ‘এই সভাগৃহে প্রবেশ করার পর থেকে এ পর্যন্ত আমার ওপর পুষ্পবৃষ্টি হচ্ছে। প্রাচীন শাস্ত্রে পড়েছি কৃতী ব্যক্তির উপর পুষ্পবৃষ্টি হয়। এ পুষ্পবৃষ্টি যদি তারই প্রমাণ করে তবে আমি আজ আনন্দিত।অভিভাষণের শেষে কবি বলেন, ‘ঈশ্বর এক, তাঁর মধ্যে কোনো ভেদ নাই। যিনি সকল বর্ণের, সকল জাতির জন্য নিত্য, তার গভীর প্রয়োজন প্রকাশ করছেন। 

এছাড়া জগন্নাথ হলের ছাত্ররা যে সংবর্ধনা দেন তার মানপত্রখানি কার্জন হলে কবির হাতে  দেওয়ার সময় জগন্নাথ হলের ছাত্ররা হল বার্ষিকী বাসন্তিকার জন্য কবির কাছে একটি কবিতার জন্য অনুরোধ করেন। ছাত্রদের অনুরোধে বাসন্তিকা পত্রিকার জন্য বাসন্তিকাশিরোনামে রবীন্দ্রনাথ নিম্নোক্ত গীতিকবিতা রচনা করে হল প্রাধ্যক্ষ ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদারের কাছে পরবর্তী সময়ে প্রদান করেন:
এই কথাটি মনে রেখো,/তোমাদের এই হাসি খেলায়/আমি যে গান গেয়েছিলেম/জীর্ণ পাতা ঝরার বেলায়।/শুকনো ঘাসে শূন্য বলে, আপন মনে./আদরে অবহেলায়/আমি যে গান গেয়েছিলাম/জীর্ণ পাতা ঝরার বেলায়/...

ঢাকা হল সমিতি কবির উদ্দেশে যে সংবর্ধনাপত্র রচনা করে, তার অংশবিশেষ ছিল নিম্নরূপ:নিখিলের প্রাণময়! পূরবের দীপ্তিমান রবি/বাঙালার চিরপ্রিয়তম।/ভারতের দীক্ষাগুরু। /সত্যাশিবসুন্দরের কবি।/ হে বিচিত্র। নমো নমো নমঃ।
১৯৩৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার উপাধি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৩৬ সালের ২৯ জুলাই এক বিশেষ সমাবর্তনে কবিকে এই উপাধি প্রদানের ব্যবস্থা  উল্লেখ্য, ওই সমাবর্তনেই স্যার আবদুর রহিম, স্যার জগদীশচন্দ্র বসু, স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, স্যার যদুনাথ সরকার, স্যার মুহাম্মদ ইকবাল এবং কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কেও সম্মানসূচক ডি লিট, উপাধি প্রদান করা হয়। 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এ বিষয়ে কৌতূহলী গবেষক আরও তথ্য আবিষ্কার করতে পারেন। রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে দুটি বক্তৃতা উপস্থাপন করেন, বিষয়গৌরবে তা অতি উঁচুমানের। রবীন্দ্রনাথের ইংরেজি রচনার প্রায় সবকিছু বাংলায় অনূদিত হলেও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত বক্তৃতাদ্বয় এখনো বাংলায় অনূদিত হয়নি। এ সম্পর্কে বিশদ কোনো আলোচনাও কোথাও দৃষ্ট হয় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন প্রফেসর রফিকুল ইসলাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশি বছর নামে বই লিখেছেন। সেই বইয়ের কোথাও রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায় না।  ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন জানাচ্ছেন– রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে এই  অপপ্রচারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট বার্ষিক অধিবেশনের (২৮-২৯ জুন২০১১) আলোচনায় আসে।  অধ্যাপক ফকরুল আলমের কথার অংশ থেকে লিখছি…”….অবশ্যই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গ্রহণ করেছেন বলে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মাননায় এসেছিলেন।….যারা ইতিহাসকে এক জায়গায় রেখে দেয় তারা ইতিহাসকে বিকৃত করেতারা সত্যকে বিকৃত করে।….” (কার্যবিবরণীপৃ:১৭৮)।
বিরোধিতা করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছরের মধ্যেই ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করা হত না। ১৯৩৬ সালে তাকে ডিলিট উপাধী প্রদানের বিষয়েও বিরোধিতা হত। বরং তাঁকে দুবারই মুসলমান-হিন্দু সকল শ্রেণীর ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠান আন্তরিকভাবে  সম্মাননা প্রদান করেছে। সর্বোপরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতার সংবাদাদি সে সময়কার পত্রিপত্রিকায় পাওয়া যায়। কোথাও রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতার কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় না।


No comments:

Post a Comment

Labels

বাংলা (171) বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন (22) ethnic-cleansing (17) ভারতীয় মুসলিমদের সন্ত্রাস (17) islamic bangladesh (13) ভারতে হিন্দু নির্যাতন (12) : bangladesh (11) হিন্দু নির্যাতন (11) সংখ্যালঘু নির্যাতন (9) সংখ্যালঘু (7) আরব ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদ (6) minority (5) নোয়াখালী দাঙ্গা (5) হিন্দু (5) hindu (4) minor (4) নরেন্দ্র মোদী (4) বাংলাদেশ (4) বাংলাদেশী মুসলিম সন্ত্রাস (4) ভুলে যাওয়া ইতিহাস (4) love jihad (3) গুজরাট (3) বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন (3) বিজেপি (3) ভারতে অনুপ্রবেশ (3) মুসলিম বর্বরতা (3) হিন্দু নিধন (3) George Harrison (2) Julia Roberts (2) List of converts to Hinduism (2) bangladesh (2) কলকাতা (2) গুজরাট দাঙ্গা (2) বাবরী মসজিদ (2) মন্দির ধ্বংস (2) মুসলিম ছেলেদের ভালবাসার ফাঁদ (2) লাভ জিহাদ (2) শ্ত্রু সম্পত্তি আইন (2) সোমনাথ মন্দির (2) হিন্দু এক হও (2) হিন্দু মন্দির ধ্বংস (2) হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা (2) Bhola Massacre (1) English (1) april fool. মুসলিম মিথ্যাচার (1) converted hindu celebrity (1) converting into hindu (1) dharma (1) facebook (1) gonesh puja (1) gujrat (1) gujrat riot (1) jammu and kashmir (1) om (1) religion (1) roth yatra (1) salman khan (1) shib linga (1) shib lingam (1) swami vivekanada (1) swamiji (1) অউম (1) অক্ষরধাম মন্দিরে জঙ্গি হামলা ২০০২ (1) অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী (1) অর্পিত সম্পত্তি আইন (1) আওরঙ্গজেব (1) আদি শঙ্কর বা শঙ্করাচার্য (1) আর্য আক্রমণ তত্ত্ব (1) আসাম (1) ইতিহাস (1) ইয়াকুব মেমন (1) উত্তরপ্রদেশ (1) এপ্রিল ফুল (1) ওঁ (1) ওঁ কার (1) ওঁম (1) ওম (1) কবি ও সন্ন্যাসী (1) কাদের মোল্লা (1) কারিনা (1) কালীঘাট মন্দির (1) কাশী বিশ্বনাথ মন্দির (1) কৃষ্ণ জন্মস্থান (1) কেন একজন মুসলিম কোন অমুসলিমের বন্ধু হতে পারে না? (1) কেন মুসলিমরা জঙ্গি হচ্ছে (1) কেশব দেও মন্দির (1) খ্রিস্টান সন্ত্রাসবাদ (1) গনেশ পূজা (1) গুজরাটের জঙ্গি হামলা (1) জাতিগত নির্মূলীকরণ (1) জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (1) জেএমবি (1) দেশের শত্রু (1) ধর্ম (1) ধর্মযুদ্ধ (1) নবদুর্গা (1) নববর্ষ (1) নালন্দা (1) নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় (1) নোয়াখালি (1) পঞ্চ দেবতার পূজা (1) পহেলা বৈশাখ (1) পহেলা বৈশাখ কি ১৪ এপ্রিল (1) পাকিস্তানী হিন্দু (1) পূজা (1) পূজা ও যজ্ঞ (1) পূজার পদধিত (1) পৌত্তলিকতা (1) ফেসবুক (1) বখতিয়ার খলজি (1) বরিশাল দাঙ্গা (1) বর্ণপ্রথা (1) বর্ণভেদ (1) বলিউড (1) বাঁশখালী (1) বিহার (1) বুদ্ধ কি নতুন ধর্ম প্রচার করেছেন (1) বৈদিক ধরম (1) বৌদ্ধ দর্শন (1) বৌদ্ধ ধর্ম (1) ভারত (1) মথুরা (1) মরিচঝাঁপি (1) মানব ধর্ম (1) মিনি পাকিস্তান (1) মীরাট (1) মুক্তমনা (1) মুক্তিযুদ্ধ (1) মুজাফফরনগর দাঙ্গা (1) মুম্বাই ১৯৯৩ (1) মুলতান সূর্য মন্দির (1) মুলায়ম সিং যাদব (1) মুসলিম তোষণ (1) মুসলিম ধর্ষক (1) মুসলিমদের পুড়ে মারার ভ্রান্ত গল্প (1) মুহাম্মদ বিন কাশিম (1) মূর্তি পুজা (1) যক্ষপ্রশ্ন (1) যাদব দাস (1) রথ যাত্রা (1) রথ যাত্রার ইতিহাস (1) রবি ঠাকুর ও স্বামীজী (1) রবি ঠাকুরের মা (1) রবীন্দ্রনাথ ও স্বামীজী (1) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (1) রিলিজিওন (1) রুমি নাথ (1) শক্তিপীঠ (1) শঙ্করাচার্য (1) শিব লিংগ (1) শিব লিঙ্গ (1) শিব লিঙ্গ নিয়ে অপপ্রচার (1) শ্রীকৃষ্ণ (1) সনাতন ধর্ম (1) সনাতনে আগমন (1) সাইফুরস কোচিং (1) সালমান খান (1) সোমনাথ (1) স্বামী বিবেকানন্দ (1) স্বামীজী (1) হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম (1) হিন্দু জঙ্গি (1) হিন্দু ধর্ম (1) হিন্দু ধর্ম গ্রহন (1) হিন্দু বিরোধী মিডিয়া (1) হিন্দু মন্দির (1) হিন্দু শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাই (1) হিন্দুধর্মে পৌত্তলিকতা (1) হিন্দুরা কি পৌত্তলিক? (1) ১লা বৈশাখ (1) ১৯৭১ (1)

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

সর্বোচ্চ মন্তব্যকারী