শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুন

শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুন
অর্জুন তোমার আমার বহুবার জন্ম হয়েছে। সে কথা তোমার মনে নেই, সবই আমার মনে আছে।

Sunday, September 30, 2012

রামু এবং পটিয়াতে একের পর এক বৌদ্ধ ও হিন্দুমন্দির ধ্বংস করে দিয়েছে মুসলমানরা





ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবসতিতে হামলা চালিয়ে রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে ধর্র্মীয় উগ্রপন্থীরা
 

শনিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলা এই হামলায় রামু উপজেলার ৭টি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছেহামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোববার সকাল থেকে রামুতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছেএলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও শিল্পী মন্ত্রী দীলিপ বড়য়া রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসছেন বলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কোরআন শরিফ অবমাননা করে ছবি সংযুক্ত করার অভিযোগ এনে একটি ইসলামী দলের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করা হয় শনিবার রাত ১০টার দিকে 

মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, রামু উপজেলার বৌদ্ধ পাড়ার উত্তম বড়ুয়া নামের এক যুবকের ফেইসবুক একাউন্টে কোরআন অবমাননাকর ছবিটি পোস্ট করা হয়েছেওই যুবককে আটকেরও দাবি জানান বক্তারা 

সমাবেশ শেষে কিছুক্ষণ পর আবারো একটি মিছিল বের হয়মিছিলটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামুর বড়ুয়া পাড়ায় পৌঁছানোর পর কয়েকজন যুবক স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয় 

এরপর ওই এলাকার অন্তত ১৫টি বাড়ি, তিনটি বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়ভাঙচুর হয় শতাধিক বাড়ি 



রাত সাড়ে ৩টার দিকে হামলা হয় রামু সদর উপজেলা থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে রামু মিঠাছড়ির বনবিহারে ও কয়েকটি বাড়িতে 

সেখানে বিহারটি পুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে নির্মাণাধীন শতফুট উচু বুদ্ধ মুর্তিটিও ভাংচুর করা হয় বলে রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নিতিশ বড়ুয়া জানান 

কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলে কক্সবাজার জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন জিকু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঝিলংজার বিভিন্ন সংখ্যালঘু পল্লী ঘিরে রাতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের জড়ো হওয়া খবর পেয়ে তিনি গিয়ে তাদের সরিয়ে দেনপুলিশকেও তিনি বিষয়টি অবহিত করেন বলে দাবি করেন 

রাত দেড়টার দিকে স্থানীয় এক সাংবাদিক আক্রান্ত এলাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে টেলিফোনে জানান, তার বাড়ির পাশের চেরাংঘাটা বড়ক্যাং মন্দিরেও আগুন দেয়া হয়েছে 

রামু উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, রাতভার হামলায় রামুর সাদা চিং’, ‘লাল চিং’, রামু মেত্রী বিহার, সীনা বিহার, জাদী পাড়া বৌদ্ধ বিহার, বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র ও মিঠাছড়ি বনবিহারে অগ্নি সংযোগ করা হয়এর আগে প্রতিটি মন্দিরেই ভাংচুর ও লুটতরাজ চলেচৌমুহনী-চেরাংঘাটা সড়ক, মিঠাছড়ি ও বড়য়া পাড়ার প্রায় ৩০টি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয় 

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) সেলিম মো. জাহাঙ্গীর বলেন, স্থানীয় প্রশাসন ও বিজিবিকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ভোর ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিউত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা চলছেবৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসব এলাকায় বিজিবি সদস্যরাও টহল দিচ্ছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান



কক্সবাজারের রামু উপজেলার পর এবার চট্টগ্রামের পটিয়ার লাখেরা অভয় বৌদ্ধবিহারের মূল মন্দিরসহ পাঁচটি শাখামন্দির ভাঙচুর করা হয়েছেপরে একটি হিন্দুমন্দিরও ভাঙচুর করা হয়
আজ রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটেএর প্রতিবাদে ক্ষতিগ্রস্ত বৌদ্ধ ও হিন্দুধর্মাবলম্বীরা ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ করেছে
পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী জানায়, চার থেকে পাঁচ শ লোক লাখেরা অভয় বৌদ
্ধবিহারের মূল মন্দির ও একই চত্বরের আরও চারটি শাখামন্দির ভাঙচুর করেএ সময় তারা বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের ছয়টি বাড়িতেও ভাঙচুর চালায়
এরপর ওই সব লোক পার্শ্ববর্তী কোলাগাঁও বৌদ্ধবিহারে এবং নবারণ সংঘ দুর্গাবাড়ী হিন্দুমন্দির ভাঙচুর করে
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ শামসুল হক চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, শিকলবাহা এলাকায় জাহাজ নির্মাণ কারখানা ওয়েস্টার্ন মেরিনের শ্রমিকেরা ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে তিনি খবর পেয়েছেন
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশিদ জানান, গতকাল রাতে রামুর বৌদ্ধবিহারে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনার জের ধরে আজ দুপুর ১২টার দিকে ওয়েস্টার্ন মেরিনের শ্রমিকেরা ভাঙচুর চালান
লাখেরা অভয় বৌদ্ধবিহারের সাধারণ সম্পাদক সুজিত বড়ুয়া প্রথম আলো ডটকমকে জানান, তাঁরা খবর পেয়েছিলেন যে আজ সকালে ওয়েস্টার্ন মেরিনের শ্রমিকদের বৈঠক হয়েছেবৈঠকের পরে তাঁরা ভাঙচুর করেছেন

Tuesday, September 25, 2012

১০ বছরে ৯ লাখ হিন্দু কমেছে




২০০১ ও ২০১১ সালের শুমারির জেলাভিত্তিক তথ্য পাশাপাশি রাখলে দেখা যায়, ১৫টি জেলায় হিন্দু জনসংখ্যা কমে গেছে। বিবিএসের কর্মকর্তারা বলেছেন, এসব জেলার হিন্দুরা দেশের অন্য কোনো জেলায় চলে গেছে, পরিসংখ্যান তা বলছে না। অর্থাৎ, অন্য জেলায়ও হিন্দু জনসংখ্যা বাড়েনি। কর্মকর্তারা এদের বলছেন, ‘মিসিং পপুলেশন’ বা ‘হারিয়ে যাওয়া মানুষ’। 

বরিশাল বিভাগের কোনো জেলাতেই হিন্দুদের সংখ্যা বাড়েনি। বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা—এই ছয়টি জেলায় ২০০১ সালের আদমশুমারিতে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল আট লাখ ১৬ হাজার ৫১ জন। ২০১১ সালের শুমারিতে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে সাত লাখ ৬২ হাজার ৪৭৯ জনে।
খুলনা বিভাগের বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা—পাশাপাশি এই তিন জেলায় হিন্দুদের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। বিভাগের নড়াইল ও কুষ্টিয়া জেলার প্রবণতা একই। ঢাকা বিভাগের মধ্যে এ তালিকায় আছে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলা। অন্যদিকে রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলায়ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল রেখে হিন্দু বাড়েনি।
স্বাধীনতার আগের দুটি ও পরের পাঁচটি শুমারির তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মোট জনসংখ্যার তুলনায় হিন্দুদের সংখ্যা ও হার কমেছে। মুসলমানদের সংখ্যা ও হার সব সময়ই বেড়েছে। বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর হার মোটামুটি একই ছিল বা আছে। 
প্রবীণ রাজনীতিক ও গণঐক কমিটির আহ্বায়ক পঙ্কজ ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রদায়িক আবহ তৈরি করে সম্প্রীতি নষ্ট করায় এমনটা ঘটছে। জামায়াতের মতো শক্তিগুলো পরিকল্পিত ও নিয়মিতভাবে নানা ঘটনা ঘটাচ্ছে। সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, কুড়িগ্রামের চিরিরবন্দরে ধর্মীয় জিগির তুলে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা লক্ষ করা গেছে। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের পাশে কেউ দাঁড়াচ্ছে না, তাদের আশ্বস্ত করছে না। নীরবে তাই দেশত্যাগ হচ্ছেই। 
কেন কমছে: একাধিক শুমারির প্রতিবেদনে হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে মোট প্রজনন হার (টোটাল ফার্টিলিটি রেট—টিএফআর) তুলনামূলকভাবে কম বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু এর পক্ষে কোনো তথ্য পরিসংখ্যান ব্যুরোর কাছে চেয়ে পাওয়া যায়নি। 
তবে গোপালগঞ্জ, বরিশাল, ভোলার বিভিন্ন গ্রামে কথা বলে জানা গেছে, হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার বড় কারণ দেশত্যাগ। কয়েকটি জেলার লোকজন বলেছেন, ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগের সময় থেকে এই ভূখণ্ড ছেড়ে যাওয়া হিন্দু সম্প্রদায়ের একটা স্বাভাবিক প্রবণতা। কেউ বলেছেন, মূল কারণ শত্রু সম্পত্তি আইন। বলেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের চাপ ও নির্যাতনে পড়তে হয় হিন্দুদের। অন্যদিকে ভারতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দিলে তার আঁচও লাগে এ দেশের হিন্দুদের গায়ে। 
‘বুক বেঁধে দাঁড়াবার সংস্কৃতি কমে গেছে’—এমন মন্তব্য করেছেন ড. আনিসুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ইমেরিটাস অধ্যাপক বলেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার অভাববোধ বাস্তব ও অনুমিত। সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে কিছু লোক নানা ঘটনা ঘটাচ্ছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে কিছু নেতা বা রাজনৈতিক দল সংখ্যালঘুদের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে স্থানীয় পর্যায়ে সেই প্রতিশ্রুতি পালিত হয় না, কর্মী পাওয়া যায় না। 
আতঙ্ক আছে চাঁদশী-ইল্লা-ধানডোবায়: বরিশাল জেলার গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা থেকে বেশ কিছু হিন্দু পরিবার ২০০১ সালের পর এলাকা থেকে চলে গেছে। 
ধানডোবা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, মনোজ বৈদ্য তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ২০০১ সালের নির্বাচনের দুই দিন পর বাড়ি ছেড়ে চলে যান। আর ফিরে আসেননি। মনোজের প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই নির্বাচনের পরদিনই বিএনপির কর্মীরা গ্রামের হিন্দু ও খ্রিষ্টানবাড়িতে আক্রমণ ও লুটপাট করেন। তাঁরা মনোজের বাড়ি থেকে গরু, ধান নিয়ে যান। পানের বরজ নষ্ট করেন।
ইল্লা গ্রামের কালীপদ দফাদার, সুবল দফাদার, মন্টু দফাদার, জয়দেব নন্দীর পরিবারও দেশ ছেড়ে চলে যায় ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সন্ত্রাসের কারণে। একই কারণে সুতারবাড়ি গ্রামের আদিত্য নাগ ও সুবল দে পরিবার নিয়ে দেশ ছেড়েছেন।
৩ নম্বর চাঁদশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণকান্ত দে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর নিজের পরিবার, আত্মীয়, প্রতিবেশীসহ অনেক পরিবারে আক্রমণ, লুটপাট ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল। ওই ইউনিয়ন থেকে কোনো পরিবার এলাকা ছেড়ে যায়নি। তবে অনেক পরিবারের অংশবিশেষ দেশে থাকে না। তিনি বলেন, ‘ধরেন, কোনো পরিবারে পাঁচ ভাই আছে, তাদের দুই ভাই দেশে থাকে না।’ 
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ বলেন, সম্মান রক্ষায় অনেক বাবা-মা অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছেন, অথবা ভারতে রেখে স্কুলে বা কলেজে পড়াচ্ছেন। তবে তিনি দাবি করেন, দেশত্যাগের প্রবণতা কমেছে। শত্রু সম্পত্তি (অর্পিত সম্পত্তি) নিয়ে সরকারের উদ্যোগ পুরোপুরি সফল না হলেও সংখ্যালঘুরা আশা করছে, সম্পত্তি আর হাতছাড়া হবে না বা হাতছাড়া সম্পত্তি ফেরত পাবে। এখন বড় বড় শহরে হিন্দুরা বাড়ি করছে, ফ্ল্যাট কিনছে।
ভোলার পরিস্থিতি: বিবিএস পরিসংখ্যান বলছে, ভোলা জেলায় ২০০১ সালে হিন্দু ছিল ৭২ হাজার ২৭৫ জন। সর্বশেষ শুমারিতে দেখা যাচ্ছে, জনসংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ১৬২ জনে। 
ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের নলগোড়া গ্রামের সাধু সিংয়ের বাড়িতে ছিল ছয়টি পরিবার। পরিবারের প্রধান ছিলেন লক্ষ্মী নারায়ণ সিং। লক্ষ্মী নারায়ণ ১৯৯২ সালের পরে জমিজমা বিক্রি করে চলে যান। ওই গ্রামের লোকজন প্রথম আলোকে বলেছেন, ১৯৯২ সালের পর থেকে হিন্দু পরিবারগুলো চলে যেতে শুরু করে। ওই সময় বাররি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে ভারতে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল, তাতে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হয় এই গ্রামের মানুষ। 
২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনের পরও অনেক পরিবার চলে গেছে। গ্রাম ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯২ সালের পর থেকে সুতারবাড়ির চারটি, ডাক্তারবাড়ির ১০, মাঝের সিংবাড়ির ছয়, রাস কমল হাওলাদার বাড়ির সাত, লক্ষ্মীকান্ত হাওলাদার বাড়ির তিন, তীর্থবাস হাওলাদার বাড়ির সাত, পরেশ হাওলাদার বাড়ির সাত, তেলীবাড়ির তিন, রাধেশ্যাম সুতারবাড়ির তিন, মন্টু হাওলাদার বাড়ির এক এবং রাড়ি বাড়ির সব কটি পরিবারসহ গ্রামের ৭৫টি বাড়ির দুই শতাধিক পরিবার চলে গেছে।
উপজেলার নলগোড়া, লেজপাতা ও চরগুমানী—এই তিনটি গ্রাম ছিল হিন্দু-অধ্যুষিত। স্বাধীনতার সময় এই গ্রামে চার শতাধিক বাড়ি ছিল। এই গ্রামগুলোর ১৭২টি বাড়ির কয়েক শ পরিবার চলে গেছে। 
বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এক হাজারের বেশি হিন্দু পরিবার ছিল। বর্তমানে সেখানে আছে ৪৪টি পরিবার। 
লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে চারটি গ্রাম ছিল হিন্দু-অধ্যুষিত। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এই ইউনিয়নে চার হাজার ৬০০ হিন্দু ভোট ছিল। ইউনিয়নের অন্নদাপ্রসাদ গ্রামের যাত্রামণি লস্কর বলেন, ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদের ঘটনা ও ২০০১ সালে নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে গ্রামগুলোর অধিকাংশ হিন্দু পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে যায়। স্থানীয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রের দেওয়া তথ্যে বলা হচ্ছে, বর্তমানে ইউনয়নে হিন্দু ভোটারের সংখ্যা ৬০০। 
গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগের একক প্রাধান্য। সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, দলটির সঙ্গে সংখ্যালঘুদের সুসম্পর্ক আছে। স্বাধীনতার পর জেলায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনাও উল্লেখ করার মতো নয়। তার পরও এই জেলা থেকে নিয়মিতভাবে হিন্দুরা চলে যাচ্ছে। ২০০১ সালে এই জেলায় হিন্দু ছিল তিন লাখ ৭১ হাজার ৬২৯ জন। ১০ বছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৪ জনে।
জেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রবীণ সাংবাদিক প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘শত্রু সম্পত্তির’ নির্যাতন চেপে আছে প্রায় ৫০ বছর ধরে। এরপর বড় আঘাত আসে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার মধ্য দিয়ে। এসব ব্যাপারে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। 
একটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেছেন, উপযুক্ত হওয়ার পরও জেলা আওয়ামী লীগে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদকের পদ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা পায় না। সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সংসদে হিন্দু শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ পদ সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস)। ছোট গোপালগঞ্জ শহরে বড় দলের নেতারা সংখ্যালঘুদের বাড়ি-সম্পত্তি দখল করে দিব্যি বসবাস করছেন। এসব দৃশ্য দেখে নিরাপদ বোধ করে না হিন্দুরা।
গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি সম্পর্কে কাজল দেবনাথের মন্তব্য, ‘প্রদীপের নিচে অন্ধকার।’
উদ্যোগ নেই: দেশত্যাগ বন্ধের উদ্যোগ এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোপালগঞ্জ জেলার একজন চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘নিরাপদে জমি-বাড়ি যেন বিক্রি করতে পারে, সে ব্যাপারে কিছুটা সাহায্য করার চেষ্টা করি। থেকে যেতে বলতে পারি না।’
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা উদ্যাপন পরিষদ মাঝেমধ্যে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে সভা ও সেমিনার করে। এসব সভা-সেমিনারে দেশ না ছাড়ার, নির্যাতনের প্রতিবাদ করার কথা বলা হয়। কাজল দেবনাথের দাবি, এতে কাজ হচ্ছে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নেয়ামতউল্লাহ (ভোলা প্রতিনিধি), সুব্রত সাহা (গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি) ও জহুরুল ইসলাম (গৌরনদী, বরিশাল প্রতিনিধি)]

Wednesday, September 12, 2012

মনমোহনকে এক পাকিস্তানির খোলা চিঠি




ফাইজা মির্জা, পাকিস্তানের বিখ্যাত ইংরেজি পত্রিকা ‘দ্য ডন’-এর একজন সাংবাদিক। দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থায় বিব্রত ও বিরক্ত ফাইজা সম্প্রতি ডনের ব্লগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের উদ্দেশে একটা খোলা চিঠি লেখেন। ফাইজার এই খোলা চিঠিতে ফুটে উঠেছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের সরকারগুলোর সীমাহীন ব্যর্থতার আখ্যান। প্রথম আলোর পাঠকদের ফাইজা মির্জার চিঠিটি হুবহু প্রকাশ করা হলো। 


প্রিয় মনমোহন সিং,
আমি আমার জীবনে কোনো দিন আপনার মাপের কোনো মানুষের সঙ্গে কথা বলিনি। সুতরাং চিঠিতে আমার বক্তব্যের সহজ বিষয়টিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করি। প্রথমেই, পাকিস্তানের নয় শরও বেশি সংখ্যালঘু হিন্দুকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনা করার জন্য আপনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। এটা সত্যিই ওই হিন্দুদের জন্য আপনার চমত্কার এক বদান্যতা, যারা একসময় পাকিস্তানে বসবাস করত। কিন্তু আপনাকে বিবেচনায় রাখতে হবে যে পাকিস্তানে হিন্দু ছাড়াও খ্রিষ্টান এমনকি মুসলমানেরাও সত্যিকার অর্থে শান্তিতে জীবনযাপন করতে পারছে না।
আমি জানি, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আপনার সরকারের অগ্রাধিকার। কারণ, আপনার সরকারের অনেকেই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আমি তার পরও আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই ওই হাজারাদের দিকে, যাদের প্রায় প্রতিদিনই প্রকাশ্য দিবালোকে পাকিস্তানের রাজপথে কোনো না কোনো শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই ওই খ্রিষ্টানদের জন্য, যারা পাকিস্তানে নিদারুণ আতঙ্কের মধ্যে জীবনযাপন করছে; ব্লাসফেমি আইনে, যেকোনো সময়ই সেই খ্রিষ্টানদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে অথবা হত্যা করা হতে পারে। আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের সাধারণ মানুষের প্রতি, যারা প্রায় প্রতিদিনই জঙ্গি অথবা মার্কিন ড্রোন হামলার শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। আমি হিন্দুদের পাশাপাশি এসব মানুষের সমস্যাগুলোর দিকেও আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যদিও আমি জানি না এদের নিয়ে আপনার বা আপনার সরকারের কোনো পরিকল্পনা রয়েছে কি না।
আপনার ও আপনার সরকারের মানুষজনের নিশ্চয়ই পাকিস্তানের আহমেদিয়াদের সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, পাকিস্তানের আহমেদিয়ারা ধর্মীয় কারণে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কী ধরনের যন্ত্রণা ভোগ করছে! আমি আপনাকে অনুরোধ জানাব, পাকিস্তানের ওই মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে, যারা পাকিস্তানি সমাজে পরিবর্তন আনতে চায়। তাদের সঙ্গে কথা বললেই আপনি বুঝতে পারবেন, যারা পাকিস্তানের সমাজ-ব্যবস্থায় পরিবর্তন নিয়ে আসতে চায়, তারা কীভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। কিন্তু কেন তারা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে, কেন তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ছে, ব্যাপারগুলো ওইসব মানুষের কাছে একেবারেই দুর্বোধ্য। 
আমি নিশ্চিত যে রাজনৈতিক আশ্রয়বিষয়ক সব ধরনের খুঁটিনাটিই আপনার নখদর্পণে। এটা সত্যি, সব শ্রেণীর পাকিস্তানিদের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা কিংবা অস্ট্রেলিয়াতে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে ভারত তাদের জন্য একমাত্র আশার আলো। পাকিস্তান থেকে আটারি সীমান্ত দিয়ে খুব অল্প খরচে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য শুধু ভারতে যাওয়া সম্ভব।
পাকিস্তানে অনেক মানুষের মধ্যে হতাশার মাত্রাটা এতটাই বেশি যে তারা যেকোনো মূল্যে আফগানিস্তানের মতো দেশে গিয়েও পালিয়ে বাঁচতে চায়। অথচ এই আফগানিস্তানের মানুষই একটা সময় পাকিস্তানে শরণার্থী হিসেবে আসতো।
আমরা সবাই আপনার সরকারের মানবিক নীতিগুলোর প্রশংসা করি। আমরা চাই পাকিস্তানের নির্যাতিত হিন্দু, যারা প্রাণের ভয়ে ভারতে চলে গেছে, আপনার সরকার তাদের নাগরিকত্ব প্রদানের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করবে। তবে এ ক্ষেত্রে আপনাকে জানানো জরুরি যে পাকিস্তানে ভিন্নধর্মাবলম্বীরা সবাই নানাভাবে নির্যাতনের শিকার এবং তাদের সবাইকে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুযোগ দেওয়া উচিত। এই সুযোগটি কেবল হিন্দুদের জন্য থাকবে, তা বোধ করি ঠিক নয়। যেখানে ভারত সরকার ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সীমান্তে পাকিস্তানে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা যেকোনো মানুষকেই খাদ্য সরবরাহের নীতিগত পরিকল্পনা নিয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুযোগটিও হিন্দুদের পাশাপাশি অন্যান্য সংখ্যালঘু ও নির্যাতিতদের জন্য অবারিত করে দেওয়া উচিত।
পাকিস্তান থেকে যেসব হিন্দু ভারতে চলে গেছে এবং সেখানে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের প্রত্যাশা করছে, তাদের ব্যাপারে ভারত সরকারের অনেকেই আপনার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। এমনই একজন হলেন লক্ষ্মীকান্ত চাওলা। তিনি বলেছেন, ‘যেখানে পাকিস্তান সরকার সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেখানে ভারত সরকারের উচিত এই নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের দেখভালের দায়িত্ব নেওয়া।’
এ ক্ষেত্রে আমি আশা করব, মি. চাওলার মন্তব্যের সূত্র ধরে আপনি পাকিস্তান সরকারের প্রতি রুষ্ট না হয়ে পুরো ব্যাপারটি একটু ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখবেন। পাকিস্তান সরকার এই মুহূর্তে অনেক সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত। সর্বোচ্চ আদালতের সঙ্গে সরকারের এই মুহূর্তে ঠান্ডা লড়াই চলছে। যেখানে পাকিস্তান সরকার সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে, সেখানে তাদের সাধারণ মানুষের স্বার্থ দেখার সময় কোথায়? আপনাকে বুঝতে হবে, পাকিস্তান সরকার শুধু সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষা কিংবা তাদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতেই ব্যর্থ হয়নি, তারা ব্যর্থ দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতেও। 
অনেক পাকিস্তানিই হয়তো ব্যাপারটি সরাসরি স্বীকার করবে না, কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষিত ও প্রগতিশীল পাকিস্তানিই এই মুহূর্তে ভারতীয় নাগরিকত্বের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তাভাবনা করছে। এর নেপথ্য কারণ, ১৯৪৭ সালের পর দারিদ্র্য ও অন্যান্য সমস্যা সত্ত্বেও ভারত একটি জাতি, একটি অর্থনীতি, একটি রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। আমরা মনে করি, ভারতের রয়েছে একটি প্রগতিশীল সমাজব্যবস্থা। রাষ্ট্র হিসেবে ভারত শাসিত হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকদের দ্বারা। ভারতের সংসদ ও রাজনীতিতে ফ্যাসিস্ট রাজনীতির জায়গা খুব সীমিত। ভারতের জনগণের কাছেও ধর্মনিরপেক্ষতার ব্যাপারটি ভালো কিছু হিসেবেই পরিগণিত। 
আপনারা একজন কাসাবকে আটকে রেখেছেন। কিন্তু আপনারা কী জানেন, এই পাকিস্তানে আরও কত হাজার হাজার কাসাব ঘুরে বেড়াচ্ছে, যারা প্রতিনিয়ত পাকিস্তানের সাধারণ মানুষকে ‘নাস্তিক’, ‘ইসলামবিরোধী’, ‘ভারতের দালাল’, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পুতুল’, ‘কমিউনিস্ট’ ইত্যাদি অভিধায় অভিহিত করছে!
আমরা যারা সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি, তারা রীতিমতো অসহায় বোধ করি, যখন দেখি এই দেশে (পাকিস্তান) কট্টরপন্থীরা নির্ভয়ে ও দম্ভ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের সান্ত্বনার জায়গাটা কোথায়? 
গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমি পাকিস্তানে বাস করছি ঠিকই, কিন্তু সব সময় খুঁজে বেড়াচ্ছি বসবাসের উপযোগী একটি নিরাপদ দেশ। আমি সেই দেশে বাস করতে চাই, যে দেশে আমি নিজেকে প্রকাশ করতে পারব দ্বিধা ও ভয়হীন চিত্তে। 
কিছুদিন আগে করাচির রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে একটি পোস্টারে আমার চোখ আটকে যায়। সেই পোস্টারে ছিল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ছবি, আর নিচে লেখা ছিল, ‘পাকিস্তান তোমায় চায়’। 
পোস্টারটি দেখার পর আমার মনে এক অদ্ভুত অনুভূতি হয়। প্রথমবারের মতো আমি অনুভব করি, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ আমাদের যে পাকিস্তান দিতে চেয়েছিলেন, সেটা বিনির্মাণে আমরা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছি। 
আমার আগের ও পরের অনেকের মতোই আমি এই মুহূর্তে একটি নিরাপদ মাটির সন্ধানে রয়েছি, যেখানে আমার জীবনের মূল্য থাকবে, থাকবে নিরাপত্তা। আমি সেই নিরাপদ মাটির সন্ধানেই দেশের মানুষদের ছেড়ে চলে যেতে চাই। লড়াই চালাতে চাই ওই সব ক্ষতিকর বিষয়ের বিরুদ্ধে যা এই মুহূর্তে আমার মাতৃভূমি পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
আমি জানি না আমাকে ভারতে চলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে কি না। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে তখনই, যখন দেখব ভারত সরকার রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রশ্নে হিন্দুদের সঙ্গে আমাকেও একই পাল্লায় বিচার করছে।
ইতি,
আপনার অনুগত 
প্রগতিশীল পরিবর্তনের জন্য সচেষ্ট পাকিস্তানিদের একজন

পাকিস্তানে খ্রিষ্টান কিশোরী রিমশার স্বজনদের পুড়িয়ে মারার হুমকি মুসলিম প্রতিবেশিদের

পাকিস্তানে ব্লাসফেমি অভিযুক্ত খ্রিষ্টান কিশোরী রিমশার পরিবার



পাকিস্তানে ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমাননা) মামলায় অভিযুক্ত খ্রিষ্টান কিশোরী রিমশার পরিবারের সদস্যরা প্রাণহানির আশঙ্কায় রয়েছেন। মুসলিম প্রতিবেশিরা তাঁদের ঘরের ভেতরে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছেন। ইসলামাবাদের বাইরে অজ্ঞাত স্থান থেকে বিবিসির কাছে এ অভিযোগ জানিয়েছেন রিমশার বাবা।

নিরাপত্তার কারণে নিজের নাম প্রকাশ না করে রিমশার বাবা বলেন, হুমকিদাতারা বলেছেন, ‘আমরা তোমাদের ঘরের ভেতরে পুড়িয়ে মারতে যাচ্ছি। তারপর আমরা অন্যান্য খ্রিষ্টানের বাড়িও পুড়িয়ে দেব।’ হুমকিদাতা প্রতিবেশীদের নামও উল্লেখ করেছেন তিনি। রিমশার বাবা মেয়েকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তাঁর মেয়ের বয়স মাত্র ১১ বছর। পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মতো সে অশিক্ষিত ও কম বুদ্ধিসম্পন্ন।
পবিত্র কোরআনের পাতা পোড়ানোর অভিযোগে রিমশাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত শনিবার তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। তবে এখনো তাকে ব্লাসফেমির মামলা মোকাবিলা করতে হবে।
এদিকে রিমশার বিরুদ্ধে ব্লাসফেমির অভিযোগকারী ইমামকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমশাকে ফাঁসাতে তিনি নিজেও কোরআনের পাতা পুড়িয়েছেন বলে তাঁর কয়েকজন সহকর্মী অভিযোগ করেছেন। 
এ ঘটনা পাকিস্তানে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটিতে ব্লাসফেমি আইনের অপব্যবহারের দিকটিও নতুন করে সামনে চলে এসেছে।

Monday, September 10, 2012

পাকিস্তানের ব্লাসফেমি মামলায় খ্রিষ্টান মেয়েকে ফাঁসানো ও বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন একই সূত্রে গাঁথা




সনাতন সন্দেশ

সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার(ব্লাসফেমি)অভিযোগে আটক খ্রিষ্টান কিশোরী রিমশাকে কিছুদিন পূর্বে আটক করা হয়েছিল রিমশা কোরান পুড়িয়েছেন বলে অভিযোগ আনেন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম হাজী মোহাম্মদ খালিদ চিশতিতিনি দাবি করেন , রিমশার ব্যাগে কোরান শরীফের পোড়া অংশ রয়েছে এবং তল্লাশি করে তা পাওয়াও যায় ,তাই গত ১৬আগস্ট তাকে গ্রেফতার ও করা হয় কিন্তু পরে জানা যায় যে খালিদ ইচ্ছাকৃতভাবে মেয়েটিকে ফাঁসানোর জন্য ব্যাগে কাগজপত্র সরিয়ে কোরাণের ছেঁড়া অংশ প্রবেশ করে দেয় কিন্তু হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে অবশেষে গত শুক্রবার পাঁচ লাখ রুপির বিনিময়ে তাকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে আদালতউল্লেখ্য রিমশাই প্রথম ব্লাসফেমির মামলায় দেশটিতে জামিন পেলেন খবর-বিবিসি,রয়টার্স

বাংলাদেশেও হিন্দু নির্যাতনের জন্য ইস্যু হিসেবে দেখানো হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠের ধর্মানুভূতিতে আঘাতের মিথ্যে গুজব  
*সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের হাইস্কুল মাঠে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে 

মঞ্চস্থ করা হয়েছিল হুজুরে কেবলা নাটক যা মূলত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অংশ বিশেষ যেখানে অভিনেতা ,স্ক্রিপ্ট রচয়িতা প্রায় সকলকেই ছিল মুসলিম শুধুমাত্র যে শিক্ষিকার তত্ত্বাবধানে হয়েছিল তিনি ছিলেন হিন্দু ,তাই নাটক মঞ্চস্থ করার দু দিন পর মহানবীকে কটাক্ষ করার গুজব রটিয়ে শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করে উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে করা হল মামলা,শুধু কি তাই মসজিদে লিফলেট বিতরণ করে দুই গ্রামের হিন্দুদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হল, ট্রলি করে লুট করে নিয়ে যাওয়া হল হিন্দুদের সব মালপত্র 
*চট্রগ্রামের হাটহাজারীতে লোকনাথ বাবার অনুষ্ঠানের র্যালি তে পাথর নিক্ষেপ করে উল্টো মসজিদে হামলার কথা বলে হিন্দুদের শারীরিক নির্যাতন করা হল এরপর দুই দিন ব্যাপী পুলিশের সামনে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক অবরোধ করে হাটহাজারীর সব মন্দির ধ্বংস করে মন্দিরের দান বাক্স ও মূল্যবান মালপত্র করা হল লুট করল আর উল্টো মুফতি আমিনীদের পক্ষ থেকে করা হল নিরীহ হিন্দুদের বিরুদ্ধে মামলা

*দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের দুই হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে কিছুদিন আগেও হয়ে গিয়েছিল নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান এলাকার এক প্রভাবশালী হিন্দুর সুনামে ও সম্মানজনক পজিশনে ঈর্ষান্বিত অধ্যাপিকা হামিদা বানু দুই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে বলাইবাজারে জায়গা ক্রয় করে মার্কেট দেন এবং তিনি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেন কিন্তু স্থানীয় হিন্দু গ্রামবাসী মুসলিম শুণ্য সরকারি রাস্তার জমিতে মসজিদে নির্মাণে আপত্তি জানাইলে হামিদা বানু হিন্দুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এবং তারপর পুলিশ মোতায়ণ করা হয় এবং 144জারি করা হয় ,কিন্তু পরদিন 144 থাকা সত্ত্বেও যখন সাধারণ Hinduরা যখন মাঠে কাজ করছিল তখন অতর্কিত সশস্ত্র হামলা চালানো যায় জালিয়ে দেওয়া ঘরবাড়ি আর এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল বহিরাগত এলাকার টেরোরিস্টদের ,এ বছর নিরাপত্তার অভাবে গোটা উপজেলার দূর্গা পুজো না করার সিদ্ধান্ত রয়েছে

*সিলেটে একই সঙ্গে পুজো ও ঈদের শুভেচ্ছাস্বরুপ এক পাশে দুর্গার ত্রিনেত্র ও অপরপাশে মক্কার ছবি দেওয়া হলে ইউপি মেম্বার কে আটক করা হয়

Saturday, September 8, 2012

ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস চলছেই, এবার লালবাগের মন্দির






রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী পুরোনো ভবনগুলো ভেঙে ফেলার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগর সংরক্ষণ কমিটি ২০০৯ সালে ঢাকার সংরক্ষণযোগ্য ঐতিহ্যবাহী ভবনের যে তালিকা করেছিল, তার ধারাবাহিকতা রক্ষা না পাওয়া এর একটি বড় কারণ। ঐতিহ্যবাহী ভবন ধ্বংসের সর্বশেষ শিকার হয়েছে লালবাগের শেখ সাহেব বাজারের দৃষ্টিনন্দন মন্দিরটি।

পুরান ঢাকার কোনো কোনো মহল্লার প্রায় সব কটি ঐতিহ্যবাহী ভবন ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য ইতিহাসপ্রেমী ও বিশেষজ্ঞদের তাগিদ এবং ক্ষেত্রবিশেষে সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে নির্বিচারে পুরোনো স্থাপত্য ভাঙার হার বেড়েছে বলেই অনেকে মনে করেন।
পুরান ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় এখন ঐতিহ্যবাহী ভবনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। সম্প্রতি উত্তর মৈশুন্ডি এলাকায় গিয়ে কোনো পুরোনো ভবন পাওয়া যায়নি। সেখানে শত বছরের পুরোনো অন্তত ১০টি ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতের বেলায় এসব ভবন ভাঙা হয়। সেখানে বহুতল ভবন হবে বলে তাঁরা শুনেছেন।
ওয়ারী থানার গোলক পাল লেনে রাস্তার পাশের কয়েকটি পুরোনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে। লালবাগের আমলীগোলায় জগন্নাথ সাহার ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি ভেঙে বসানো হয়েছে গভীর নলকূপ। মোগল আমলে নির্মিত ঐতিহাসিক স্থাপনা ছোট কাটরা ও বড় কাটরার অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। বিধি অনুযায়ী, সংরক্ষিত এসব স্থাপনার চারদিক ফাঁকা রাখার কথা থাকলেও চারপাশে বড় বড় ভবন তোলা হচ্ছে।
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত নগর সংরক্ষণ কমিটি ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঐতিহ্যবাহী ভবনের যে তালিকা করেছিল, তার ধারাবাহিকতা রক্ষা না পাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ কমিটির সভাও অনেক দিন ধরে হয় না। ২০০৯ সালে এ বিষয়ে প্রকাশিত গেজেটে পুরান ও নতুন ঢাকার ৯৩টি ভবন ছাড়াও চারটি অঞ্চল ও এর ১৩টি রাস্তাকে সম্পূর্ণ সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছিল। কথা ছিল, ওই তালিকায় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা এবং এলাকা যুক্ত করা হবে। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। তা ছাড়া অর্পিত সম্পত্তি আইনের কয়েকটি ‘দুর্বলতার’ সুযোগেও অনেক ভবন ভেঙে ফেলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) শেখ আবদুল মান্নান জানান, কিছু ভবনকে নোটিশ করা হয়েছে। কয়েকটি ভবনের মালিক ও ভাঙার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সংরক্ষিত ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ বছরের শুরুর দিকে সরকারি-বেসরকারি পাঁচজন প্রতিনিধির একটি উপকমিটি করা হয়। এ উপকমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, রাজউক স্থাপনা ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এ ছাড়া কমিটি একটি নীতিমালা তৈরি করছে, যাতে মূল কাঠামো ঠিক রেখে পুরোনো ভবনগুলো সংস্কার করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
সর্বশেষ শিকার: পুরান ঢাকার সংরক্ষিত তালিকাভুক্ত ৩৩ প্যারীদাস রোডের বাড়ি, সংরক্ষিত এলাকা ২৮ উৎসব পোদ্দার লেনের দোতলা বাড়ি, টিপু সুলতান রোডের শঙ্খনিধি ভবনের একটি মন্দির, আলাউদ্দিন রোড ও ডালপট্টির একাধিক বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ প্রবণতার সর্বশেষ শিকার হয়েছে লালবাগের শেখ সাহেব বাজারে অবস্থিত জমিদার কেদারনাথ শীলের বাসভবনসংলগ্ন শৈলীময় স্থাপত্যের মন্দিরটি। ২৫৫ ও ২৫৬ নম্বর হোল্ডিংয়ে অবস্থিত স্থাপনাটি সপ্তাহ খানেক ধরে ভাঙা হচ্ছে। মন্দিরটি অনেক দিন ধরে কারখানা ও গুদামঘর হিসেবে ব্যবহূত হয়ে আসছিল।
স্থানীয় লোকজন জানান, মন্দিরের একাংশের বর্তমান ভোগদখলকারী মৃধা অ্যান্ড কোম্পানি কিছু দিন আগে ভবনটির ছাদ ভাঙার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে। ছাদটি দ্রুত ভেঙেও ফেলা হয়। 
মৃধা অ্যান্ড কোম্পানির একজন অংশীদার মাহমুদ আলী মৃধা বলেন, মন্দিরটি তাঁরা ভাঙেননি। দুই মাস আগের ঝড়-বৃষ্টিতে তা ভেঙে গেছে। তবে গত সোমবার সেখানে নিয়োজিত শ্রমিক ও আশপাশের বাসিন্দারা বলেন, মন্দিরের ছাদ আয়োজন করেই ভাঙা হয়েছে।
মন্দিরের মূল অংশটির সামনের দিকে রয়েছে কারুকার্যমণ্ডিত পাঁচটি অর্ধবৃত্তাকার খিলান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই দুটি হোল্ডিং নম্বরের মালিক কেদারনাথ শীল ও তাঁর ভাই পরিতোষ শীল ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর ভারতে চলে যান। পরে বিভিন্ন সময় বিহারিসহ কয়েকজনের কাছে ওই সম্পত্তি লিজ দেওয়া হয়। এভাবে সম্পত্তির একাংশ মৃধা অ্যান্ড কোম্পানির হাতে আসে।
নগর সমন্বয় কমিটির সদস্য এবং ‘আরবান স্টাডি গ্রুপ’ নামের একটি সংরক্ষণকামী সংগঠনের প্রধান নির্বাহী স্থপতি তাইমুর ইসলাম ঘটনাস্থল ঘুরে প্রথম আলোকে জানান, প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো স্থাপনাটি ধ্রুপদি স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের স্থাপনা ধ্বংস করা শুধু দুঃখজনকই নয়, আমাদের জন্য চরম অগৌরবজনক।’
স্থাপত্য ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন শুক্রবার এ বিষয়ে বলেন, সংরক্ষিত বা ঐতিহ্যবাহী ভবনগুলো রক্ষার সব প্রচেষ্টাই প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কথা ছিল রাজউক এ ধরনের ভবনের তালিকা করবে। সিটি করপোরেশন এ ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এখন তো সিটি করপোরেশনের কোনো মা-বাপ নেই।

Thursday, September 6, 2012

হিন্দুদের ঘর ছাড়ার হুমকি দিয়ে চিঠি দিল ইসলামিক সন্ত্রাসীরা

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় দেশ ত্যাগের হুমকি দিয়ে হিন্দুদের চিঠি দেয়া হয়েছে। 

মুসলিম ইয়াং গ্রুপ নামে একটি সংগঠনের নামে লেখা ওই চিঠিতে দেশত্যাগ না করলে হিন্দুদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলা সদরের হিন্দু মহল্লায় এ চিঠি বিলি করা হয় বলে জানান সেখানকার বাসিন্দা অনন্ত কুমার। 

তিনি বলেন, হিন্দু মহল্লার প্রায় ২৫টি বাড়িতে এ চিঠি দেয়া হয়েছে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, “তোমরা হিন্দু, মুসলিমের চরম শত্রু। তোমরা আসামের মুসলিমদের অন্যায়ভাবে দিনের পর দিন হত্যা করে আসছ। আর তোমাদের ঝিনাইগাতীর মাটিতে বেঁচে থাকার অধিকার নেই, আমরা দিব না। পরবর্তী চরমপত্র দেয়ার আগেই বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতবাসী হবে। তা না হলে গণহারে হত্যা করে আসামের মুসলিম নিধনের প্রতিশোধ নেয়া হবে।” 

“তোমরা আমাদের জাতীয় শত্রু। তোমরা আমাদের জমিতে ঘর-বাড়ী নির্মাণ করে আমাদের জায়গা-জমি দখল করে আছ। দেখি তোমাদের ভগবান কি করে বাঁচায়? ধন্যবাদান্তে মুসলিম ইয়াং গ্রুপ, শ্মশান ঘাট।” 

এ চিঠি পাওয়ার পর শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান দুপুরে স্থানীয় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আতঙ্কিত হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে একটি সভা করেন। 

পুলিশ সুপার বলেন, “যারা এসব চিঠি দিয়েছে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।” 

এছাড়া হিন্দুদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে বলেও জানান তিনি। 

Tuesday, September 4, 2012

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে কালি মন্দির ভাঙচুর



মোরেলগঞ্জ, ০৪ সেপ্টেম্বর, এবিনিউজ : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌর সদরে রাতের আধারে কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন একটি পারিবারী কালি মন্দির ভাঙচুর করেছে র্দূবৃত্তরাঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার গভীর রাতে
জানাগেছে, পৌর সদরের বাসিন্দা বাবুল পোদ্দারের গত দুই বছর পূর্বে তার নিজ বসত বাড়িতে পারিবারীক একটি কালি মন্দিরে নির্মাণ করে পূঁজাপার্বন চালিয়ে আসছিলঘটনার দিন সোমবার গভীর রাতে কে বা কাহারা ওই মন্ডপে সংরক্ষতি কালি মূর্তি ভাঙচুর করে মন্দিরের পিছনের বেড়া ভেঙ্গে ফেলে দেয়এঘটনায় আজ মঙ্গলবার ওই পরিবারের গৃহকর্তা বাবুল পোদ্দার বাদী হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেনএ ব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম উদ্দিন জানান, তিনি একটি অভিযোগ পেয়েছেন এবং বিষয়টি সরজমিনে তদন্তের জন্য এসআই বজলুর রশিদকে নির্দেশ দিয়েছেন

এবিএন/মঙ্গল-১ম/অপরাধ/কেএম রুহুল আমীন/মুস্তাফিজ/রাডার/শিলা

Monday, September 3, 2012

কর্ণাটক থেকে ১১ জন লস্কর জঙ্গি গ্রেপ্তার

এক বড় ধরনের পুলিসী অভিযানে কর্ণাটকে ধরা পড়লো ১১জন। সন্দেহ এদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে লস্কর-ই-তৈবা ও হরকত-উল-জিহাদি-ইসলামি (হুজি)-র মতো উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর। বেঙ্গালুরু পুলিস পরে একাই এই অভিযানের কৃতিত্ব দাবি করলেও প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল উত্তর পুলিসের একটি দল কর্ণাটকের পুলিসের সাহায্য নিয়ে এই অভিযানকে সফল রূপ দিয়েছে।

রাজ্য পুলিসের প্রধান এল আর পাচাউ বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর পুলিস কমিশনার জ্যোতিপ্রকাশ মিরজিকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, ধৃতদের কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, সাত রাউন্ড গোলাবারুদ ছাড়াও বেশ কিছু যন্ত্রপাতি উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে একটি ইংরাজী দৈনিকের এক সাংবাদিকও রয়েছেন বলে পুলিস সূত্রে জানানো হয়েছে। মিরজির দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরে জোগাড় করা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই গতকাল উত্তর কর্ণাটকের হুবলি ও বেঙ্গালুরু থেকে এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই অভিযানে উত্তর প্রদেশ পুলিসের যোগাযোগের সত্যতা অস্বীকার করেছেন। 

প্রাথমিকভাবে খবর ছিল, পুলিস ২০১০-এ চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের চারজন উগ্রপন্থীকে আটক করেছে। পুলিস সূত্রের দাবি, ধৃতদের মধ্যে একজনকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নিয়ে উপসাগরীয় দেশে প্রশিক্ষণ দিয়েছে লস্কর-ই-তৈবা। তাঁদের আরো দাবি, কর্ণাটকের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালাতে অন্তত তিনজন লস্কর সন্ত্রাসবাদীর হাত রয়েছে। ধৃতদের মধ্যে একজন বিজ্ঞানী এবং একজন চিকিৎসক রয়েছেন বলে ঐ সূত্রের দাবি।

পুলিস প্রধান মিরজি অবশ্য ধৃতদের নাম জানিয়েছেন। এদের  সকলেরই বয়স তিরিশের নিচে। ধৃতরা হলো, শোহীব আহমেদ মির্জা (২৫), আবদুল্লা (২৫), আজাজ আহমদ মির্জা (২৮), মতিউর রেহমান সিদ্দিকি (২৬)— এঁরা সকলেই বেঙ্গালুরুর। এছাড়া বাকিরা হলেন ওবেদুল্লা ইমরান বাহাদুর (২৪), মহম্মদ সাদিক লস্কর (২৮), ওয়াহিদ হুসেইন (২৬), বাবা (২৬) এবং ড. জাফর ইকবার শোলাপুর (২৭)। 

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর অশোক জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিণ্ডে তাঁকে টেলিফোন করে রাজ্য পুলিসের এই অভিযানের জন্য প্রশংসা করেছেন। 

তদন্তের স্বার্থে পুলিস এব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাতে না চেয়ে দাবি করেছে, শীঘ্রই হয়তো আরো কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। জানা গেছে, উত্তর প্রদেশ পুলিস এই অভিযানের জন্য দুটি দল গঠন করেছে। একটি দল গেছে কর্ণাটকে, দ্বিতীয়টি পশ্চিমবঙ্গে।

Labels

বাংলা (171) বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন (22) ethnic-cleansing (17) ভারতীয় মুসলিমদের সন্ত্রাস (17) islamic bangladesh (13) ভারতে হিন্দু নির্যাতন (12) : bangladesh (11) হিন্দু নির্যাতন (11) সংখ্যালঘু নির্যাতন (9) সংখ্যালঘু (7) আরব ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদ (6) minority (5) নোয়াখালী দাঙ্গা (5) হিন্দু (5) hindu (4) minor (4) নরেন্দ্র মোদী (4) বাংলাদেশ (4) বাংলাদেশী মুসলিম সন্ত্রাস (4) ভুলে যাওয়া ইতিহাস (4) love jihad (3) গুজরাট (3) বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন (3) বিজেপি (3) ভারতে অনুপ্রবেশ (3) মুসলিম বর্বরতা (3) হিন্দু নিধন (3) George Harrison (2) Julia Roberts (2) List of converts to Hinduism (2) bangladesh (2) কলকাতা (2) গুজরাট দাঙ্গা (2) বাবরী মসজিদ (2) মন্দির ধ্বংস (2) মুসলিম ছেলেদের ভালবাসার ফাঁদ (2) লাভ জিহাদ (2) শ্ত্রু সম্পত্তি আইন (2) সোমনাথ মন্দির (2) হিন্দু এক হও (2) হিন্দু মন্দির ধ্বংস (2) হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা (2) Bhola Massacre (1) English (1) april fool. মুসলিম মিথ্যাচার (1) converted hindu celebrity (1) converting into hindu (1) dharma (1) facebook (1) gonesh puja (1) gujrat (1) gujrat riot (1) jammu and kashmir (1) om (1) religion (1) roth yatra (1) salman khan (1) shib linga (1) shib lingam (1) swami vivekanada (1) swamiji (1) অউম (1) অক্ষরধাম মন্দিরে জঙ্গি হামলা ২০০২ (1) অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী (1) অর্পিত সম্পত্তি আইন (1) আওরঙ্গজেব (1) আদি শঙ্কর বা শঙ্করাচার্য (1) আর্য আক্রমণ তত্ত্ব (1) আসাম (1) ইতিহাস (1) ইয়াকুব মেমন (1) উত্তরপ্রদেশ (1) এপ্রিল ফুল (1) ওঁ (1) ওঁ কার (1) ওঁম (1) ওম (1) কবি ও সন্ন্যাসী (1) কাদের মোল্লা (1) কারিনা (1) কালীঘাট মন্দির (1) কাশী বিশ্বনাথ মন্দির (1) কৃষ্ণ জন্মস্থান (1) কেন একজন মুসলিম কোন অমুসলিমের বন্ধু হতে পারে না? (1) কেন মুসলিমরা জঙ্গি হচ্ছে (1) কেশব দেও মন্দির (1) খ্রিস্টান সন্ত্রাসবাদ (1) গনেশ পূজা (1) গুজরাটের জঙ্গি হামলা (1) জাতিগত নির্মূলীকরণ (1) জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (1) জেএমবি (1) দেশের শত্রু (1) ধর্ম (1) ধর্মযুদ্ধ (1) নবদুর্গা (1) নববর্ষ (1) নালন্দা (1) নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় (1) নোয়াখালি (1) পঞ্চ দেবতার পূজা (1) পহেলা বৈশাখ (1) পহেলা বৈশাখ কি ১৪ এপ্রিল (1) পাকিস্তানী হিন্দু (1) পূজা (1) পূজা ও যজ্ঞ (1) পূজার পদধিত (1) পৌত্তলিকতা (1) ফেসবুক (1) বখতিয়ার খলজি (1) বরিশাল দাঙ্গা (1) বর্ণপ্রথা (1) বর্ণভেদ (1) বলিউড (1) বাঁশখালী (1) বিহার (1) বুদ্ধ কি নতুন ধর্ম প্রচার করেছেন (1) বৈদিক ধরম (1) বৌদ্ধ দর্শন (1) বৌদ্ধ ধর্ম (1) ভারত (1) মথুরা (1) মরিচঝাঁপি (1) মানব ধর্ম (1) মিনি পাকিস্তান (1) মীরাট (1) মুক্তমনা (1) মুক্তিযুদ্ধ (1) মুজাফফরনগর দাঙ্গা (1) মুম্বাই ১৯৯৩ (1) মুলতান সূর্য মন্দির (1) মুলায়ম সিং যাদব (1) মুসলিম তোষণ (1) মুসলিম ধর্ষক (1) মুসলিমদের পুড়ে মারার ভ্রান্ত গল্প (1) মুহাম্মদ বিন কাশিম (1) মূর্তি পুজা (1) যক্ষপ্রশ্ন (1) যাদব দাস (1) রথ যাত্রা (1) রথ যাত্রার ইতিহাস (1) রবি ঠাকুর ও স্বামীজী (1) রবি ঠাকুরের মা (1) রবীন্দ্রনাথ ও স্বামীজী (1) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (1) রিলিজিওন (1) রুমি নাথ (1) শক্তিপীঠ (1) শঙ্করাচার্য (1) শিব লিংগ (1) শিব লিঙ্গ (1) শিব লিঙ্গ নিয়ে অপপ্রচার (1) শ্রীকৃষ্ণ (1) সনাতন ধর্ম (1) সনাতনে আগমন (1) সাইফুরস কোচিং (1) সালমান খান (1) সোমনাথ (1) স্বামী বিবেকানন্দ (1) স্বামীজী (1) হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্ম (1) হিন্দু জঙ্গি (1) হিন্দু ধর্ম (1) হিন্দু ধর্ম গ্রহন (1) হিন্দু বিরোধী মিডিয়া (1) হিন্দু মন্দির (1) হিন্দু শিক্ষার্থীদের মগজ ধোলাই (1) হিন্দুধর্মে পৌত্তলিকতা (1) হিন্দুরা কি পৌত্তলিক? (1) ১লা বৈশাখ (1) ১৯৭১ (1)

সাম্প্রতিক মন্তব্য

Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

সর্বোচ্চ মন্তব্যকারী