২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি। দুর্বৃত্তরা রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ঢুকে ২শ' ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও সাড়ে চার লাখ টাকা চুরি করে। উদযাপন কমিটির নেতারা জানান, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ইতিপূর্বে লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও এত বড় চুরির ঘটনা আর কখনোই ঘটেনি। এ দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় মন্দির সংশ্লিষ্ট লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এদিকে এ দুর্ধর্ষ চুরির পর গতকাল ঢাকেশ্বরী মন্দিরে কোনো পূজা করেননি পুরোহিতরা। মন্দিরে চুরির খবর পেয়েই মন্দির কমিটির লোকজন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। মন্দিরের লোকজন জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে পুরোহিত রতন চক্রবর্তী ও নিত্য গোপাল চক্রবর্তী পূজা শেষ করে মন্দিরের ভেতরের গেট বন্ধ করে যান। বরাবরের মতো রোববার ভোর সাড়ে ৬টায় তারা মন্দিরের কলাপসিবল গেট খুলতে এসে দেখেন গেটের চারটি তালার মধ্যে তিনটি তালাই নেই। অপর তালাটিরও কিছু অংশ লোহা
কাটার যন্ত্র দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। তারা মন্দিরের ভেতরে ঢুকে দেখেন পুরো কক্ষটিই তছনছ করা। দেবীর অঙ্গসজ্জার কাজে ব্যবহৃত কোনো স্বর্ণালঙ্কারই নেই। ৬টি প্রণাম বাক্স ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। দেবীর ঘরে এমন দৃশ্য দেখে দুই পুরোহিতই অবাক হন। তারা দ্রুত মন্দির কমিটির লোকজনকে খবর দেন। কমিটির লোকজনের কাছে খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসে।
মন্দিরের ব্যবস্থাপক তপন ভট্টাচার্য্য সাংবাদিকদের জানান, দুর্বৃত্তরা মন্দির থেকে প্রায় ২০০ ভরি স্বর্ণ, নগদ প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা এবং ৫-৬ ভরি রৌপ্য চুরি করেছে।
মন্দিরের নিরাপত্তায় ছিল পুলিশের তিন সদস্য :ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নিরাপত্তায় নিয়মিতই পুলিশ পাহারা দেয়। শনিবার রাতেও পুলিশের তিনজন সদস্য ছিলেন মন্দিরের নিরাপত্তা রক্ষায়। ওই রাতে তাদের মন্দিরের মূল গেটে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। এছাড়াও রাতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আশপাশের রাস্তায় রাতভর থাকে পুলিশের টহল গাড়ি। পুলিশ ছাড়াও মন্দিরের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী রয়েছে। বেসরকারি একটি সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানের ৬ জন নিরাপত্তা কর্মী মন্দিরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন বলে মন্দির সংশ্লিষ্ট লোকজন জানায়। শনিবার রাতে নিরাপত্তাকর্মী আনিসুর রহমান ছিলেন দায়িত্বে। কিন্তু পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের এত নিরাপত্তার পরও মন্দিরের অন্তত ৩টি গেট পার হয়ে শক্তিশালী লোহার গেটের তালা ভেঙে চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন মন্দির সংশ্লিষ্ট লোকজন।
এরপর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শনিবার রাতে চুরি হয়েছে। এরপর মন্দিরে পূজা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। পরে ১৭ জানুয়ারি শাস্ত্রীয় নিয়ম অনুযায়ী ঢাকেশ্বরী মন্দিরের মূল প্রতিমায় পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
পরদিন ১০ জানুয়ারি সোমবার সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ কয়েকজন নেতা ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ দাবি জানান।
গয়েশ্বর বলেন, "ঢাকেশ্বরী মন্দির দেশের হিন্দু স¤প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র। এখানে এরকম ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। সরকার ও প্রশাসনকে বলবো অতিদ্রুত এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিন।" শনিবার রাতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের তালা ভেঙে দুর্বৃত্তরা দেবী মূর্তির প্রায় ২১শ ভরি সোনার গহনা, দুটি প্রণামী বাক্স থেকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রি নিয়ে যায়।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেন, "এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে দেশের মানুষের আজ কোনো নিরাপত্তা নেই। সরকারি দলের সাংসদের বাসায় ডাকাতি হয়েছে। ইন্দিরা রোডে মা ও ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তা হলে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কি করছে?"
"এতো ঘটনার পর দায়িত্ববোধ থাকলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করতেন। উল্টো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাকি ভালো", বলেন তিনি।
এ সময় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, "এ ঘটনায় হিন্দু স¤প্রদায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।"
তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দেশের সব মন্দিরের নিরাপত্তার দাবি জানান।
চুরির ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিকালে ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে প্রতিবাদ সভা এবং ১২ জানুয়ারি সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী নিতাই রায় চৌধুরী, গৌতম চক্রবর্তী, স্থানীয় কমিশনার সাহিদা মোর্শেদ, জয়ন্ত কুণ্ড, অর্পণা রায় ঢাকেশ্বরী মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চুরির পুরো ঘটনা শোনেন।
পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সহ-সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু, মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বীরেশ চন্দ্র সাহা মন্দিরে তাদের স্বাগত জানান।
২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি সার্ভিসের এডিসি মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো মোবাইল মেসেজে ৯ জন দুর্বৃত্ত গ্রেফতারের কথা জানালেও প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় মাত্র ৪ জন দুর্বৃত্ত গ্রেফতারের কথা বলেন অভিযান পরিচালনাকারী টিমের কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন। বিকেলের দিকে গোয়েন্দা পুলিশ যে প্রেসবিজ্ঞপ্তিটি পত্রিকা অফিসগুলোতে পাঠায় তাতে ৪ জন দুর্বৃত্তসহ ৮ জনের গ্রেফতারের কথা জানায়। এতে সাংবাদিকরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। সকাল ১১টায় ৩৬, মিন্টু রোডের গোয়েন্দা দফতরে প্রেস ব্রিফিং ডাকেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ওই ব্রিফিংয়ে বলা হয় ৪ জনকে গ্রেফতারের কথা। ব্রিফিংয়ে এদের নাম প্রকাশ করা হলেও বাকি ৫ জনের নাম প্রকাশে গড়িমসি শুরু করেন সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বাধীন টিমের কর্মকর্তারা। সাংবাদিকদের জানানো হয়, যে ৫ জন গোয়েন্দা হেফাজতে রয়েছেন তারা সরাসরি চৌর্যবৃত্তির সাথে জড়িত না থাকলেও চোরাই সোনা কেনা-বেচার সাথে জড়িত। টিমের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসানের কাছে বাকিদের নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, নাম প্রকাশ করা যাবে না। মন্দিরের চোরাই কেনা-বেচার সাথে জড়িত থাকলে তাদের নাম কেন প্রকাশ করা যাবে না জানতে চাওয়া হলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান কোন সদুত্তর দেননি।
বিকেলে মিডিয়ার অফিসগুলোতে গোয়েন্দা পুলিশ সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত যে প্রেসরিলিজটি পাঠায় তাতে ৯ জনের পরিবর্তে ৮ জনকে গ্রেফতারের কথা বলা হয়। তাতে আরো বলা হয়, এদের সকলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ৪ জন দুর্বৃত্ত বাদে বাকিদের নাম প্রেসরিলিজে প্রকাশ করা হয়নি। সকালে মোবাইল ফোনে ৯ জনকে গ্রেফতারের সংবাদ পাঠিয়ে পরে কেন গোয়েন্দা পুলিশ ৪ জনের গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে, আবার বিকেলে প্রেসরিলিজে ৮ জন গ্রেফতারের কথা বলা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি সার্ভিসের এডিসি মাসুদুর রহমান শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, ''আসামির সংখ্যা জানাতে তিনি ভুল করেছেন। আসলে গ্রেফতারকৃত আসামির সংখ্যা হচ্ছে ৮ জন।"
এদিকে এই মন্দিরে চুরির ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। এদের মধ্যে ৫ জনের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। শুক্রবার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম ঢাকা মহানগর আদালতের কাছে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে ম্যাজিস্ট্রেট জয়নব বেগম আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিরা হচ্ছে_ গরীবুল্লাহ ওরফে গরীব আসলাম (২৪), মোহাম্মদ মনির (২৭) ও তার সম্বন্ধী মনির (২৪), সেলিম (৩৫) ও শহীদুল্লাহ (২৮)।
এর আগে সকাল ১১টায় শহীদুল্লাহ ছাড়া বাকি ৪ জনকে নিয়ে ৩৬, মিন্টু রোডের গোয়েন্দা দফতরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় মন্দিরে চুরির ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতারের কথা বললেও সাংবাদিকদের সামনে ৫ জনকে হাজির করে। তারা বাকিদের নামও প্রকাশ করেনি। পরে আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হলে সেখানে শহীদুল্লাহর নাম উঠে আসে।
ব্রিফিংয়ে পুলিশের উপ-কমিশনার গোয়েন্দা (দক্ষিণ) মনিরুল ইসলাম জানান, দুর্বৃত্তদের নেতা গরীবুল্লাহ গত ৯ জানুয়ারি তিন সহযোগীকে নিয়ে লালবাগ ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যায়। সেখানে বিভিন্ন প্রবেশপথের ১১টি তালা ভেঙে মন্দিরে প্রবেশ করে। এ সময় মন্দিরের সেবায়েতরা গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন ছিলো। এদের কাছ থেকে মন্দিরে চুরি যাওয়া বেশকিছু স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, এর পরিমাণ জানাতে পারেননি গোয়েন্দা পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, মন্দিরে চুরিকৃত স্বর্ণ কেনা-বেচার সাথে জড়িত থাকা ৫ জনের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গরীবুল্লাহ জানায়, মন্দির থেকে মোট ২শ ৪০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরির পর তারা রিকশাযোগে কারওয়ান বাজার যায়। পুলিশের নজর এড়াতে সেখান থেকে তারা ২০টি ফুলকপি কেনে সেগুলোর , ভেতরে স্বর্ণালঙ্কার রাখে। পরে তারা মুন্সীগঞ্জে গিয়ে স্বর্ণালঙ্কারগুলো বিক্রি করে। গরীবুল্লাহ আরো জানায় এক সময় সে তার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জে বিভিন্ন বাড়ি থেকে হাঁস-মুরগি চুরি করত। দেড় বছর আগে নারায়ণগঞ্জের দুর্গাপূজার সময় একটি মন্দিরে গিয়ে পুরোহিতের কাছে প্রসাদ চায়। পুরোহিত তাকে ধাক্কা দিয়ে মন্দির থেকে বের করে দেয়। তখন পুরোহিত তাকে মসজিদে গিয়ে প্রসাদ চাওয়ার কথা বলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে মন্দিরে চুরির সিদ্ধান্ত নেয়। গোয়েন্দাদের প্রশ্নের জবাবে গরীবুল্লাহ বলে, এ পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩২টি মন্দিরে চুরি করেছে সে। চুরির কাজে ব্যবহারের জন্য তাদের একটি নিজস্ব রিকশাও রয়েছে। রিকশাটিও গোয়েন্দারা উদ্ধার করেছে।
গোয়েন্দা পুলিশ ইন্সপেক্টর শফিকুর রহমান শীর্ষ নিউজ ডটকমকে জানান, ঢাকেশ্বরী মন্দির ছাড়াও সবুজবাগের কালী মন্দির, সূত্রাপুরে জয়কালী মন্দিরে চুরির সাথে গরীবুল্লাহ ও তার দলবল জড়িত। এদেরকে লক্ষ্মীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য খুব কম সময়ের ব্যবধানে রাজারবাগে বরদেশ্বরী কালীমন্দির, ওয়ারীর জয়কালী মন্দির, নারায়ণগঞ্জে বালাজোড় আখড়া মন্দির, টানবাজার আখড়া মন্দির, বলদেব আখড়া মন্দির, গৌর নিতাই আখড়া মন্দির, মুন্সিগঞ্জের জয় কালীমাতা মন্দির, আবদুল্লাপুর শ্মশানকালী মন্দির, মীরকাদিম মদন মোহন মন্দির ও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মিঠাছড়া মহামায়া মন্দিরে একই ধরনের চুরির ঘটনা ঘটে।
এরপরের খবর আর কেউ জানে না। মন্দিরে চুরির অপরাধে ঐ নরপশুদের কি সাজা হয়েছিল? কেন মিডিয়া আপডেট দেওয়া বন্ধ করে দেয়? নাকি সুলতান মাহমুদের উত্তরসূরিরা ছাড়া পেয়ে যায়? এবং আবার পৈশাচিক তাণ্ডব শুরু করে হিন্দু মন্দিরগুলোতে?
No comments:
Post a Comment