Hinduism in Indian Nationalism & role of Islam
দুই বন্ধু, সূর্য ও বিদ্যুৎ একদিন আড্ডা মারতে মারতে হটাৎই ঘটী-বাঙ্গালের দ্বৈরথে জড়িয়ে পড়ল, এটা তারই এক মজার উপাখ্যান। ঘটনাক্রমে সূর্যের পরিবার পশ্চিমবঙ্গীয় আর বিদ্যুতের পরিবারের আদি নিবাস ছিল পূর্ববঙ্গে যদিও এই প্রজন্মের দুই বন্ধুরই জন্ম ও কর্মস্থান ভারতের এই পশ্চিমবাংলা রাজ্য।
সূর্যঃ কাল তাহলে আমাদের মোহনবাগান তোদের ইস্টবেঙ্গলকে ২-০ তে হারাল?
বিদ্যুতঃ কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিচ্ছিস, বল বল এক মাঘে শীত যায় না। আই লীগ চ্যাম্পিয়নশিপে কিন্তু আমরাই এগিয়ে।
সূর্যঃ ধন্যি তোরা, ইস্টবেঙ্গল বলে আজ দুনিয়ায় কোন জায়গাই নেই অথচ তোরা এখনও সে নামে ক্লাব চালাস।
বিদ্যুতঃ আজ নেই তো কি হয়েছে, বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে যখন দলটির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তখন তো পূর্ববঙ্গ ভারতেই ছিল।
সূর্যঃ আমাদের মোহনবাগান কিন্তু আরও অনেক পুরনো তাহলে তোদের আলাদা ক্লাবের প্রয়োজন হল কেন, তখন তো দেশভাগ হয়নি?
বিদ্যুতঃ সেই ১৯১১এর পুরনো কাসুন্দির দিকে ইঙ্গিত করছিস?
সূর্যঃ আমাদের দলের সে বছর সাহেবদের ইষ্ট ইয়র্ক দলকে হারিয়ে আই এফ এ শীল্ড জেতা ও একই সাথে বঙ্গভঙ্গ রোধ হওয়া স্বাধীনতা আন্দোলনে যে এক নতুন জোয়ার এনেছিল সেকথা অস্বীকার করতে পারিস?
বিদ্যুতঃ না তা বলছি না, তাই তো অনেক বয়স্ক পূর্ববঙ্গীয় এখনো মোহনবাগানকেই নিজেদের ক্লাব ভাবেন। যেমন বিধান রায় বা জ্যোতি বসু দুজনেই প্রকাশ্যে মোহনবাগানী ছিলেন। তবে ১৯০৫ থেকে ১৯১১ অব্ধি যে ইস্টবেঙ্গল রাজ্য ছিল তা আর না থাকলেও ১৯২১ থেকে গোটা বাংলাই মুসলমান প্রধান হয়ে যায় বিশেষত পুব-বাংলা, তাই বাঙ্গালী হিন্দুর স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করতেই এই ক্লাবের আবির্ভাব কারণ ততদিনে কলকাতা ময়দানে বাংলার তথা অখণ্ড ভারতের মুসলমানদের নিজস্ব মহামেডান ক্লাবও এসে গেছে। আর আমাদের আদিবাড়ি কিন্তু মহারাজা প্রতাপাদিত্যের যশোরে যা প্রথম বঙ্গভঙ্গের সময় খুলনার সাথে পশ্চিমবঙ্গেই ছিল এবং তখন শুধু পদ্মাপারের লোকদেরই ভাষাগত কারণে বাঙ্গাল বলা হতো, আমাদের মতো নদীয়ার স্ট্যান্ডার্ড ভাষা বলা দক্ষিনবঙ্গীয়দের না। তবে এখন তো আমাদের সাথে সাথে অসমের শ্রীহট্ট থেকে আসা সিলেটীদেরও বাঙ্গাল বলা হয় যেহেতু সে সব স্থানই এখন বিদেশী ইসলামিক বাংলাদেশের হাতে পড়েছে!
সূর্যঃ বুঝলাম তবে আমাদের পাশের বাড়ির সৈকত আবার মামার বাড়ির প্রভাবে পড়ে ইস্টবেঙ্গল সাপোর্টর হয়ে গেছে যদিও ওর বাবা একেবারে খাঁটি মেদিনীপুরের।
বিদ্যুতঃ এতবছর পরেও তাহলে আমরা সম্পূর্ণ এক হতে পারি নি আর তুই আমাদের ক্লাব তুলে দেওয়ার কথা বলছিস!
সূর্যঃ অথচ পাঞ্জাবে দেখ, সেখানেও একসময় পূর্বপাঞ্জাব ও পশ্চিম পাঞ্জাবের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বৈচিত্র্য আমাদের থেকে অনেক বেশী ছিল কিন্তু আজ সব ভারতীয় পাঞ্জাবিরা সমস্ত এক হয়ে গেছে।
বিদ্যুতঃ এখানে সেটা না হওয়ার জন্য প্রধানত কিন্তু তোরা ঘটীরাই দায়ী।
সূর্যঃ কেন একথা বলছিস তোরা বাঙ্গালরাও তো কিছু কম হিংসা করিস না আমাদের।
বিদ্যুতঃ আরে সেসব অসম প্রতিযোগিতাই হত না যদি পাঞ্জাবের মত উদ্বাস্তু সমস্যার সুষ্ট সমাধান হত এখানে।
সূর্যঃ কেন তোরা তো আমাদের অনেক পুরনো জমিদারদের জমি ও সরকারী খাস জমি দখল করে রিফিউজি কলোনী বানিয়েছিস।
বিদ্যুতঃ হ্যাঁ তবে দরিদ্র ছিন্নমূল পরিবারগুলো বেশিরভাগই পাঞ্জাবের হিন্দু-শিখদের মতো সরকারী সাহায্য পায়নি আর তোরাও পাঞ্জাবীদের মতো দেশ বিভাজনের সময় মুসলমানদের ওপারে না পাঠানোয়, জন-বিনিময় বা সম্পত্তি বিনিময় কোনটাই ঠিকঠাক করা যায়নি।
সূর্যঃ আমদের পূর্বপুরুষেরা সেটা করলে অবশ্য পশ্চিমবাংলায় যে শুধু জমির উপর জনসংখ্যার চাপ বা বস্তি সংখ্যাই কম হতো বা আমরাও পাঞ্জাবের মতো উন্নত হতে পারতাম তা নয়, আজকের মতো এরাজ্য জিহাদীদের স্বর্গরাজ্যও হয়ে উঠত না। কত হিন্দুর লাশের বিনিময়ে, কত বাঙ্গালী নারীর ইজ্জতের বিনিময়ে যে দাঙ্গার মাধ্যমে দেশভাগ ও স্বাধীনতা এসেছিল এবং শুধুমাত্র হিন্দুধর্ম টিকিয়ে রাখতে তোরা ওপার থেকে চলে আস্তে বাধ্য হয়েছিলি তার জন্য এতটুকু নিশ্চয় করা উচিত ছিল। না হলে তো তোরা ধর্ম পরিবর্তন করে রাজকীয়ভাবে ওখানে থেকে যেতে পারতিস। কিন্তু শুধুমাত্র ‘স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়, পরধর্ম ভয়াবহ’ এই গীতার বাণী সম্বল করে অনিশ্চিতের পথে পা বাড়িয়েছিলি আর আজ এই খণ্ড পশ্চিমবাংলাতেও আমরা এক না হলে বাংলাদেশ থেকে আসা স্রোতের মতো বিদেশী মুসলমান দখলদার আমাদের নিজ দেশে আবার পরবাসী করে ছাড়বে। তারা শুধু জনবিন্যাসই বদলায় নি,এখানের গরীবদের কাজ ছিনিয়ে নিয়েছে মুর্শিদাবাদী লেবার-মিস্ত্রী ও বাড়ির কাজের লোকের ছদ্মবেশে, মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যবৃদ্ধি,খাদ্যাভাব, অপরাধ বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি ভোট ব্যাঙ্কের মাধ্যমে রাজ্যের অধিকাংশ এম পি ও এম এল এ গঠনের চাবিকাঠি পকেটস্থ করে ফেলেছে।
বিদ্যুতঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সমস্ত বাঙ্গালী হিন্দুর জন্যই পাকিস্তান ভেঙ্গে পশ্চিমবাংলার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন না হলে মুসলমান সংখ্যাগুরু হওয়ার ফলে পুরো বাংলাই পূর্ব পাকিস্তানে (ইসলামিক বাংলাদেশে) চলে যেত।
সূর্যঃ তবে যে তোদের অনেক শিক্ষিত কলকাতাবাসী বুদ্ধিজীবী দেশভাগের জন্য হিন্দুদেরই দায়ী করে আর এখানে মুসলমান সংখ্যালঘু তোষণ ও সংরক্ষণের কথা বলে।
বিদ্যুতঃ ওই আরবের পেট্রোডলার পুষ্ট দুর্বুদ্ধিজীবীরা বলা ও লেখা তো দূরের কথা দাঁড়ানোর স্থানই পেত না যদি না অবিভক্ত মুসলমান প্রধান বেঙ্গল এসেম্বলীর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে দুই বঙ্গের তৎকালীন হিন্দু এম এল এরা হিন্দু প্রধান পশ্চিমবাংলা সব বাঙ্গালী হিন্দুর জন্য ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাশ করাতো।
সূর্যঃ এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মুসলমান ভোটের লোভে প্রায় দুই কোটি অবৈধ মুসলমান বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে বিতাড়ন না করে রেশন কার্ড জোগাড় করে দিয়ে আবার এই হিন্দু বাংলাকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে। না হলে বল এবাংলায় ১৯৬১ তে ৯% থেকে ২০১১ তে ৩৫% বা ৫০ বছরে মুসলমানের এই চারগুণ বৃদ্ধি কি স্বাভাবিক, যেখানে কোটি কোটি হিন্দু বাঙ্গালী উদ্বাস্তু পরিবার তোদের মতো এপারে চলে এসেছে? উলটে তো হিন্দুর সংখ্যাই বাড়া উচিত ছিল কারণ বাংলাদেশে দেশ বিভাজনের সময়ের ৩০% থেকে কমে হিন্দু এখন সেখানে মাত্র ৮% এবং তাদের যদি অবিলম্বে এপারে পুনর্বাসন না দেওয়া হয় যেমন স্বাধীনতার সময়ের দেশনেতারা সংসদে কথা দিয়েছিলেন তাহলে তো তাদেরও ধ্বংস সুনিশ্চিত। তাই এখনই প্রয়োজন তাদের সঙ্গে এখানের অবৈধ মুসলমান বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ১০০% জন-বিনিময়।
বিদ্যুতঃ হ্যাঁ, একদম ঠিক কথা আর তাই আমরা বাঙ্গালী হিন্দু যদি আজও এক না হই তাহলে নিকট ভবিষ্যতে ওই ৩৫% মুসলমান, ভিন্ন আইন ও জন্মনিয়ন্ত্রণ না মানার ফলে খুব শীঘ্র আবার এরাজ্যেও সংখ্যাগুরু হয়ে কাশ্মীরের পাঁচ লক্ষ হিন্দুদের মতো আমাদের তাড়িয়ে দিতে পারে।
সূর্যঃ আর এবারে কিন্তু ভাই আমাদের আর পালানোরও কোন জায়গা নেই।
বিদ্যুতঃ যা বলেছিস, ভারতে জাতীয় জীবনের মূল ধারা মানে হিন্দুত্ব তাই যেখানে হিন্দু সংখ্যালঘু ভারতের সেখানেই বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসবাদ, সে মুসলমান প্রধান কাশ্মীরই হোক আর খৃষ্টান প্রধান নাগাল্যান্ড, মেঘালয়া বা মিজোরাম যেখান থেকেও প্রায় তিন লক্ষ হিন্দু আদিবাসী ভূমিপুত্র রিয়াং-ব্রু-কাছাড়িদের এখন অব্ধি বিতাড়ন সম্পূর্ণ হয়েছে।
No comments:
Post a Comment