প্রথমেই আমরা কোরানের নিচের আয়াতগুলো দেখতে পারি-
9:123: হে ঈমানদারগণ,
তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক আর জেনে রাখ, আল্লাহ মুত্তাকীদের সাথে
9:5: অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
৯:২৯: তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।
5:10:যারা অবিশ্বাস করে এবং আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার দোযখী।
5:10:যারা অবিশ্বাস করে এবং আমার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে, তার দোযখী।
3:28:মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কেন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন। এবং সবাই কে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে।
9:23:হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় পিতা ও ভাইদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরকে ভালবাসে। আর তোমাদের যারা তাদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তারা সীমালংঘনকারী।
5:33:যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।
2:216:তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।
47:4:অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তাËেদরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।
9:111:আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ
সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর
আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে
লেন-দেনের উপর, যা
তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ
হল মহান সাফল্য।
এখন বলা হবে উক্ত আয়াতগুলো কোন প্রেক্ষিতে নাজিল হয়েছিল। কথা হলো যে প্রক্ষিতেই নাজিল হোক না কেন উক্ত আল্লাহর আদেশ গুলো কিন্তু উক্ত সময় পরবর্তীতে সব সময়ের জন্যই প্রযোজ্য হবে।কারন আল্লাহর আদেশ অপরিবর্তনীয়।কোরানের
মাদানী সূরা গুলো মোহাম্মদের শেষ জীবনের দিকে নাজিল হয়েছিল।সুতরাং নাসিক মানসুক (রহিতকরন বিধি) অনুযায়ী মক্কায় নাজিলকৃত শান্তিপূর্ণ আয়াত গুলো বাতিল হয়ে শেষ দিককার আয়াতগুলোর বিধান অত:পর কেয়ামত অবধি চালু থাকবে।
এটা যে সত্যি সত্যি তাই তার বিবরণ আছে কতিপয় হাদিসে যেমন-
ইবনে উমর বর্ণিত- আল্লাহর নবী বলেছেন-
আল্লাহ ও
তার রসুল হিসাবে মোহাম্মদকে স্বীকার না
করা পর্যন্ত আমি যুদ্ধ করার জন্য আদিষ্ট হয়েছি। বুখারি, ভলিউম-১, বই-২, হাদিস-২৫
উক্ত আয়াতগুলোতে যে বলা হচ্ছে অমুসলিমদের সাথে সব সময় যুদ্ধ করতে হবে, তাদেরকে পাকড়াও করতে হবে , হত্যা করে তাদের মালামাল লুঠ করতে হবে তা মোহাম্মদ সুন্দরভাবে তার হাদিসে বর্ণনা করেছেন কোন রকম রাখ ঢাক ও প্রেক্ষাপট ছাড়াই।
এসব আয়াত নাজিলের পর আর কোন আয়াত নাজিল হয়নি যা দিয়ে বলা হয়েছে যে – মুসলিম ও অমুসলিমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করবে।সুতরাং যে উক্ত আয়াতদ্বারা যে সকল আয়াতের বিধান বাতিল হবে তা হলো –
দ্বীন নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি নেই। সূরা বারাকা, ০২:২৫৬ (মাদানি সূরা)
এসব আয়াত নাজিলের পর আর কোন আয়াত নাজিল হয়নি যা দিয়ে বলা হয়েছে যে – মুসলিম ও অমুসলিমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করবে।সুতরাং যে উক্ত আয়াতদ্বারা যে সকল আয়াতের বিধান বাতিল হবে তা হলো –
দ্বীন নিয়ে কোন বাড়াবাড়ি নেই। সূরা বারাকা, ০২:২৫৬ (মাদানি সূরা)
উল্লেখ্য সূরাটি মাদানি হিসাবে বর্ণিত হলেও এর দুই তৃতীয়াংশই নাজিল হয় মক্কাতে , বাকি একভাগ মদিনাতে অন্য কথায় সূরা বাকারা প্রথম মাদানি সূরা। অর্থাৎ উক্ত আয়াতটি মক্কাতেই নাজিল হয়েছিল বলে ধরা যায় যদি তা ঠিক নাও হয় তবে উক্ত আয়াতটি মোহাম্মদের মদিনা যাওয়ার পর পরই নাজিল হয়।আর বলা বাহুল্য , তখনও মোহাম্মদ মদিনার শাসক হয়ে ওঠেন নি। আর তাই তার মুখে শান্তির বানী। এছাড়া আর যে সব শান্তির আয়াত উপরোক্ত মাদানি আয়াতগুলো দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে তা হলো -
আর তোমার পরওয়ারদেগার যদি চাইতেন, তবে পৃথিবীর বুকে যারা রয়েছে,
তাদের সবাই ঈমান নিয়ে আসতে সমবেতভাবে। তুমি কি
মানুষের উপর জবরদস্তী করবে ঈমান আনার জন্য? সুরা ইউনুস, ১০:৯৯ (মক্কায় অবতীর্ণ)
তোমাদের ধর্ম তোমাদের জন্যে এবং আমার ধর্ম আমার জন্যে। সূরা ফুরকান, ১০৯:০৬(মক্কায় অবতীর্ণ)
কোরানে নাসিক মানসুক যে বিধিতে কাজ করে তা হলো-একই বিষয়ে দুই বা ততোধিক আয়াত নাজিল হলে , সর্বশেষ আয়াতের বিধান কার্যকরী থাকবে। উক্ত বিধি অনুযায়ী, মক্কা বা মদিনার প্রাথমিক যুগে সহাবস্থান বিষয়ক যে সব শান্তির আয়াত নাজিল হয়েছিল মদিনার সর্বশেষ আয়াত দ্বারা তা বাতিল হয়ে , অত:পর সর্বশেষ আয়াতগুলোর বিধানই কার্যকর থাকবে।এ বিধি যে কোন রাষ্ট্রেও সমানভাবে ক্রিয়াশীল বিশেষ করে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে। সুতরাং এতদসংক্রান্ত আলোচনাতে এটাই বোঝা গেল যে, যে প্রেক্ষিতেই আল্লাহ পরবর্তীতে যুদ্ধ, দখল, হত্যা, লুন্ঠন সম্পর্কিত আয়াত নাজিল করুক না কেন , যেহেতু অত:পর আর কোন আয়াত দ্বারাই তা বাতিল করা হয় নি , তাই শেষোক্ত আয়াতগুলোই কেয়ামত অবধি চালু থাকবে, কেননা আল্লাহর বানী অপরিবর্তনীয়।এ ছাড়া কোরানে পরিস্কার করে এ কথা বলাও হয় নি যে শুধুমাত্র সেই সাময়িক সময়ের জন্য উক্ত আয়াতগুলোর কার্যকরী থাকবে। অত:পর তা বাতিল বলে গণ্য হবে।কোরানে আল্লাহই যেহেতু বার বার বলেছে যে তার বানী সুস্পষ্ট ও পরিস্কার তাই এ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করাটাও আল্লাহর সাথে পাল্লা দেয়ার শামিল।
তাহলে একজন নিবেদিত প্রান মুসলমানের দায়িত্ব কি দাড়ায় উক্ত আয়াত অনুযায়ী ? এখন দেখা যাকে এ বিষয়ে মোহাম্মদের আদেশ কি ।
তাহলে একজন নিবেদিত প্রান মুসলমানের দায়িত্ব কি দাড়ায় উক্ত আয়াত অনুযায়ী ? এখন দেখা যাকে এ বিষয়ে মোহাম্মদের আদেশ কি ।
আবু হুরায়রা বর্ণিত- আল্লাহর নবী বলেছেন,ভয়
সৃষ্টির মাধ্যমে আমাকে বিজয়ী করা হয়েছে।Sahih
Bukhari 4:52:220
আবু হুরায়রা বর্ণিত- নবী বলেন, আমাকে সুন্দর কথা বলা ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আর দেয়া হয়েছে ভয় সৃষ্টির মাধ্যমে বিজয়ী হওয়া ক্ষমতা। Sahih Bukhari 9:87:127
আবু হুরায়রা বলেন, আল্লাহর নবী বলেছেন- অন্য নবীদের থেকে আমাকে ছয়টি বিষয়ে বেশী অধিকার দেয়া হয়েছে তা হলো-সুনির্দিষ্ট ও সংক্ষিপ্ত বাক্য ব্যবহার, ভয় সৃষ্টি দ্বারা বিজয়ী হওয়া, গণিমতের মাল বিধিসম্মত করা, দুনিয়াটকে আমার জন্য পরিস্কার, দুনিয়াটাকে প্রার্থনার স্থান করা এবং আমাকে সমস্ত মানব জাতির জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। Sahih Muslim 4:1062
আবু হুরায়রা বর্ণিত, আল্লার নবী বলেছেন- আমাকে ভয় প্রদর্শন করার মাধ্যমে সাহায্য করা হয়েছে। Sahih Muslim 4:1066
হাম্মাম বিন মুনাব্বি বর্ণিত-
আবু হোরায়ারা মাধ্যমে আমি জেনেছি – ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে আমাকে সাহায্য করা হয়েছে।
Sahih Muslim 4:1067
যেহেতু নবীর কাজ হলো ভয় সৃষ্টির মাধ্যমে তার ইসলাম প্রচার করা যা তিনি তার জীবদ্দশায় খুব ভাল মতো করেও গেছেন,যাকে বলা হয় পবিত্র জিহাদ।কারন ইসলাম প্রচারের জন্যই এ যুদ্ধ ও ভয় প্রদর্শন।তাই নবীর সুন্নাহ পালন করতে গেলে তার উম্মতকেও তো সেটাই অনুসরণ করতে হবে। তাই নয় কি ? একজন নিবেদিত প্রান মুসলমানকে সব সময় অমুসলিমদেরকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করতে হবে ও সে অনুযায়ী নানা রকম নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালতে হবে, যাতে তারা এক সময় ভয় পেয়ে ইসলামের পতাকাতলে আগমন করে। মোহাম্মদকে অনুসরণ না করলে সে যে মুসলমানই নয় তা দেখা যায় কোরানে , যেমন-
বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও
তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর
আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।সূরা আল ইমরান,৩:৩১
বলুন, আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য প্রকাশ কর। বস্তুতঃ যদি তারা বিমুখতা অবলম্বন করে, তাহলে আল্লাহ কাফেরদিগকে ভালবাসেন না।সূরা আল ইমরান, ৩:৩২
যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল। আর
যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপনাকে (হে
মুহাম্মদ), তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি। সূরা নিসা,৪:৮০
এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে কেউ আল্লাহ ও
রসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন, যেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ
হল বিরাট সাফল্য। সূরা নিসা, ৪:১৩
যে কেউ আল্লাহ ও
রসূলের অবাধ্যতা করে এবং তার সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সে
সেখানে চিরকাল থাকবে। তার জন্যে রয়েছে অপমানজনক শাস্তি। সূরা, ৪:১৪
স্বয়ং আল্লাহ বলে দিচ্ছে যে মোহাম্মদের আদেশ হলো আল্লাহর আদেশ, তাই মোহাম্মদের আদেশ আল্লাহর আদেশ অমান্য করার শামিল। আর সেটা যদি কেউ করে সে মুসলমান থাকে কি করে , সে তো চিরকাল দোজখের আগুনে পুড়ে মরবে।কোন নিবেদিত প্রান মুসলমান যাবে দোজখের আগুনে পুড়তে ?
এবং পরিশেষে যেটা করতে হবে তা হলো মোহাম্মদকে ভালবাসতে হবে নিজের মা বাবা ভাই বোন , ছেলে মেয়ে আত্মীয়স্বজনের চেয়ে বেশী না হলে সে ঈমানদার মুসলমানই নয় যেমন-
বল, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তান,
তোমাদের ভাই তোমাদের পত্নী,
তোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ,
তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর
এবং তোমাদের বাসস্থান-যাকে তোমরা পছন্দ কর-আল্লাহ,
তাঁর রসূল ও তাঁর রাহে জেহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত, আর
আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। সূরা আত
তাওবা, ৯:২৪।
সুতরাং মোহাম্মদকে সবচাইতে বেশী ভাল না বাসলে আল্লাহ তার হেফাজত করবে না, এ ধরনের ঝুকি নিতে যাবে কোন মুমিন বান্দা?
আল্লাহ কাদেরকে সব চাইতে বেশী ভালবাসে? দেখতে হবে সেটাও –
আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর। সূরা আছ
ছফ, ৬১:০৪
একজন সাচ্চা মুসলমানের কাছে সব চাইতে শ্রেষ্ট কাজ কি ? সেটাও জানাটা বিশেষ জরুরী। সেটা জানা যাবে নিচের হাদিস থেকে
আবু হুরায়রা বর্ণিত, আল্লাহর নবীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল,
সব চেয়ে ভাল কাজ কোনটি? তিনি উত্তর দিলেন-
আল্লাহ ও
তার নবীকে ভালবাসা। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো – তার পর ? তিনি বললেন- জিহাদে অংশগ্রহন করা। বুখারি, ভলিউম-১, বই-২, হাদিস-২৫
জিহাদে অংশ নিয়ে জয়ী বা শহিদ হলে কি লাভ হবে তাও আছে হাদিসে, যেমন-
আল্লাহর নবী বলেছেন – যে
লোক আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে যোগদান করবে শহিদ হলে আল্লাহ তাকে বেহেস্তে প্রবেশ করাবেন বিজয়ী হলে গণিমতের মালসহ তাকে পুরস্কৃত করবেন। বুখারি, ভলিউম-৯, বই-৯৩, হাদিস-৫৫৫
সর্বশেষে, কোন মুসলমানের মর্যাদা বেশী?
যারা অক্ষম তারা বাদে যারা ঘরে বসে থাকে তাদের মর্যাদা যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে তাদের সমান নয়। সূরা নিসা-৪:৯৫
এত কিছুর পরে যদি কোন সাচ্চা বা ঈমানদার মুসলমান কোন কিছু না করে চুপ চাপ বসে থাকে , তাহলে তার অবস্থা কি হবে , সেটা কি একবার কেউ ভেবে দেখেছে? পৃথিবীতে বর্তমানে ৭০০ কোটির বেশী মানুষ বাস করে যার মাত্র ১৫০ কোটির মত মুসলমান। এখনো ৫৫০ কোটি মানুষ আল্লাহর রাস্তায় আসে নি। এ মত অবস্থায় একজন সাচ্চা মুসলমান যদি চুপ চাপ বসে থেকে মহানন্দে দিন কাটায় , সে কি বেহেস্তে যেতে পারবে ? তাহলে দুনিয়ার সব মুসলমানের দায়িত্বটা কি হওয়া উচিত ? মোহাম্মদের সুন্নাহ অনুসরণ করে সর্ব প্রকার জিহাদে ঝাপিয়ে পড়া উচিত নয় কি ? ২১ বছরের টগবগে তরুন নাফিস অতি অল্প বয়েসেই ইসলামের মাহাত্ম অনুধাবন করে তার সাধ্যমত জিহাদে ঝাপিয়ে পড়েছে। কারন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হলো একটা কাফের রাস্ট্র যারা সব সময় মুসলমানদের উপর অত্যাচার করে চলেছে, ইহুদিদেরকে মদদ দিয়ে চলেছে। এরা ইসলামের বড় শত্রু। এখন এদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে পারলে, ইসলাম প্রচার ও প্রসারের অনেক সুবিধা হয়। বিষয়টা নাফিস খুব ভালমতো বুঝতে পেরেছিল।যেমনটা বুঝতে পেরেছিল ওসামা বিন লাদেন।নাফিস আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য নবীর দেখানো পথে আমেরিকাকে ভয় দেখাতে চেয়েছিল।আর এটাই তো হলো একজন সাচ্চা মুসলমানের কাজ , তাহলে সে ভুলটা করল কি ? আজকে যারা নানা ভাবে প্রচার করার চেষ্টা করছে যে নাফিস কিছু উগ্রবাদি লোকের পাল্লায় পড়ে বিভ্রান্ত হয়েছিল- তারা কি ঠিক কথা বলছে? তারা কি ইসলামকে জেনে শুনে এ কথা বলছে নাকি স্রেফ কথার কথা বলছে? আমাদেরকে প্রকৃত সত্য জানতে হবে , না জেনে না বুঝে নিজেদের মতামতকে ইদানিং ইসলামি বিধান বলে চালানোর এক অপকৌশল ব্যপকভাবে দেখা যাচ্ছে। আসুন প্রথমে ভাল করে জানি ইসলাম কি বলছে, যদি মনে করি সেটাই সঠিক পন্থা , তাহলে আসুন সবাই জিহাদে ঝাপিয়ে পড়ি। যদি বুঝি যে এরকম মারামারি হত্যা খুন লুটপাট নাশকতামূলক কাজ কোন সৃষ্টি কর্তার আদেশ হতে পারে না ,তাহলে সঠিক রাস্তা অনুসন্ধান করত: তার অনুসরণ করি। মনের গভীরে পোষন করব ইসলাম হলো একমাত্র সঠিক ও সত্য রাস্তা , আবার ইসলামি বিধান অনুযায়ী জিহাদে ঝাপিয়ে পড়লে বলব এটা ইসলামি বিধান নয়, বিভ্রান্ত মতবাদের শিকার- এ ধরনের লুকোচুরি, আত্ম প্রবঞ্চনা আর স্ব বিরোধী আচরন কোন জাতিকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারে না।
No comments:
Post a Comment