Hinduism in Indian Nationalism & role of Islam
সুদীর্ঘ ২৫০০ বছর
পরে ১৭ জানুয়ারী, ২০০৯ দিল্লীতে এক ভাষনে বৌদ্ধ ধর্মগুরু চতুর্দশ দালাই লামা বলেছেন, ‘অহিংসা দ্বারা সন্ত্রাসবাদ দমন করা সম্ভব নয়। সন্ত্রাসীরা মেধাবী এবং শিক্ষিত, কিন্তু তাদের মনের দ্বার অবরুদ্ধ হয়ে আছে।’ অহিংসবাদী বৌদ্ধ, জৈন ও বৈষ্ণব দলভুক্ত এক বিরাট সংখ্যক ভারতীয় হিন্দু
ভক্তিবাদ আর অদৃষ্টবাদের উপর নির্ভরশীল হয়ে আত্মরক্ষায় অক্ষম হয়ে পড়েছে। এরা দেশরক্ষার কথা একটুও ভাবেন না। সেই কারনে
পূর্ববঙ্গ থেকে হিন্দুরা ১৯৪৬ থেকে শুরু করে আজও জন্মভূমি ত্যাগ করছেন। ৪৭ এর দেশভাগের পর পাকিস্তান থেকেও হিন্দুরা ভারতে চলে আসছেন। পাকিস্তান-আফগানিস্তান আজ হিন্দু শূন্য যদিও স্বাধীনতার সময় সেখানে প্রায় ২৫% ও
ইসলামিক বাংলাদেশে ৩০% হিন্দু ছিলেন যা মোটেই আত্মরক্ষার প্রয়োজনে কম নয়। ইয়ূরোপের বলকান অঞ্চলে ১২% সার্ব ক্রোয়েশিয়ায়, ১৭% ক্রোট বসনিয়ায় ও ৮% আরমেনীয় আজারবাইজানে নিজস্ব রাজ্য
গঠন করেছে। দক্ষিনপূর্ব সিন্ধু (পাকিস্তান), পশ্চিম বাংলাদেশ, উত্তর শ্রীলংকা
এবং দক্ষিন ভূটানে বেশ কিছু জায়গা হিন্দু অধ্যুষিত হওয়া সত্ত্বেও সেসব স্থান এমনকি
বৌদ্ধ ভূটান ও শ্রীলংকা থেকেও লক্ষ লক্ষ হিন্দু বিতাড়িত হয়ে ভারতের বিভিন্ন
উদ্বাস্তু শিবিরে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। দক্ষিন ভূটান থেকে
ভূটানী সেনা দিয়ে বহিষ্কৃত লক্ষাধিক হিন্দু এখন ভারতের উদ্বাস্তু শিবিরে আছেন। স্বাধীনতার সময় ৩০% থেকে হিন্দুর সংখ্যা শ্রীলংকায় কমে এখন মাত্র ১৫% কারন
বেশীরভাগ হয় খুন হয়েছেন নয় চেন্নাই সহ তামিল নাড়ুর রিফিউজী ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছেন
অথচ দক্ষিন ভূটানের মত উত্তরপূর্ব শ্রীলংকাও হিন্দু সংখ্যাগুরু অঞ্চল। আজকাল আবার হিন্দু প্রধান নেপাল পর্যন্ত চিনের দালাল মাওবাদীদের খপ্পরে পড়ে
হিন্দু রাষ্ট্রের ইতি ঘটিয়ে ভারতের সাথে শত্রুতা শুরু করেছে। সর্বহারা ছিন্নমূল মানুষেরা পর্যন্ত ধর্ম এবং আত্মরক্ষার্থে আজীবন ধর্মযোদ্ধা
সুদর্শনধারী শ্রীকৃষ্ণকে ভুলে শুধুই কেন বংশীধারী শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করেন? অশুভশক্তির
বিরুদ্ধে শুভশক্তির সংগ্রাম ও বিজয়ই মহাভারত তথা হিন্দুধর্মের পবিত্রতম গ্রন্থ “ভগবৎ গীতা”র সার।
হিন্দুদের
দুর্দশার প্রধান কারন ছিল অনৈক্য ও জাতিভেদ এবং সুখের কথা জাত-পাতের মাধ্যমে যে
একতার অভাব তা অনেকাংশে কমেছে। তবে
আত্মকেন্দ্রিকতা ও সামাজিক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ ঘটায় অনৈক্য এখনো প্রকট। বাবা রামদেব, আন্না হাজারে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ প্রভৃতি এব্যাপারে চেষ্টা চালাচ্ছে। পশ্চিম বাংলায় বাম সরকার সাড়ে তিন দশকে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট করে
দিয়েছে। অপরদিকে পরবর্তী সরকার নির্বাচনে ভোটব্যাঙ্কের লোভে
উন্নয়নের নামে মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যালঘু তোষন করছে। দশ হাজার অবৈধ মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যা সেখানে ছাত্র সংখ্যা বাড়াতে
ও কেন্দ্রীয় অনুদান পেতে প্রভুত সাহায্য করবে। প্রতিটিতে গড়ে একশ ছাত্র হলেও দশ বছরে এই খন্ডিত বাংলা নতুন করে এক কোটি
জেহাদী পাবে। বহুদিন ধরেই গোয়েন্দা ও বিভিন্ন সরকারী বিভাগ প্রমান দিয়ে
চলেছে যে বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত নতুন গজিয়ে উঠা মাদ্রাসা-মসজিদ গুলো জিহাদী
তৈরী এবং ভারতবিরোধী চক্রান্তের আঁতুড়ঘর।
শুধু এই
ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাতেই পাশের ইসলামিক বাংলা থেকে ২০১১ এর মধ্যে দুকোটির উপর অবৈধ
বাংলাদেশী মুসলমান ঢুকে পড়েছে, সারা ভারতে যাদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। বাংলাদেশ থেকে হিন্দু শরনার্থী আত্মরক্ষার্থে ভারতে এলে তাদের বি এস এফ দিয়ে
ফের ওপারে তাড়িয়ে দেয়া হয়, ভারত ঢুকতে দেয়না। কিন্তু বাংলাদেশ
থেকে অনুপ্রবেশকারী মুসলিম এলে সি পি এম ভোটার তালিকায় নাম তুলে দেয় তো কংগ্রেস
রেশন কার্ড বানিয়ে দেয়। বাংলাদেশের জনগননার সাথে যুক্ত সরকারী সংস্থা বি বি এস জানিয়েছে
যে তাদের দেশ থেকে এক কোটি লোক শুধুমাত্র দশ বছরে ১৯৮১-১৯৯১ এর মধ্যে বেপাত্তা হয়ে
গেছে যারা প্রায় সবাই বিনা ভিসায় ভারতে ঢুকে পড়েছে। কিছু পাসপোর্ট নিয়ে এসেছে চিকিৎসা, ভ্রমন বা আত্মীয়ের সাথে দেখা করার নামে কিন্তু ফিরে যায়নি ও
তাদের সংখ্যাও লক্ষ লক্ষ, তবু নির্বোধ নেতাদের কথায় ভারত সরকার এখনও ওদেশের
মুসলমানদের ভিসা দিচ্ছে। প্রতি বছর শুধু মেদিনীপুর শহরে উরস করতে এক ট্রেন মুসলিম
বাংলাদেশী আসে কিন্তু ট্রেনটা প্রায় খালি ফিরে যায়। এদের বসবাসের ফলে যে শুধু পশ্চিম বাংলার ৭-৮টি সীমান্তবর্তী জেলায় ভূমিপুত্র
হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে গেছে তাই নয় জনবিন্যাস বদলে দিয়ে তারা দেশের সুরক্ষার
অন্তরায় হয়ে উঠেছে। গোহত্যা, নারী ও শিশু পাচার এবং চোরাচালান এদের পেশা। অনতিবলম্বে সরকার আইনসম্মতভাবে এদের মিলিটারী দিয়ে ঘার ধাক্কা দিয়ে সীমান্ত
পার না করে দিলে এরা বৃহত্তর ইসলামিক বাংলাদেশ গড়েই ছাড়বে কোটি কোটি হিন্দুর প্রান-মান-ইজ্জত
এবং ভারতমাতার অখন্ডতা ও সম্ভ্রমের বিনিময়ে। সরকারের খাতায়
শুধু কলকাতায় ২০ লক্ষ বিদেশী মুসলমানের হিসেব আছে। নেতাদের শুধু লক্ষ্য সামনের নির্বাচন। জ্যোতি বসুর সি পি
এম সরকার অপারেশন সানসাইন নামে কলকাতায় হকার উচ্ছেদ করতে গিয়ে পূর্ববঙ্গ থেকে আসা
সব হিন্দু হকারদের তুলে দিলেন কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আসা উর্দুভাষী হকারদের ছেড়ে
দিলেন কারন তাদের পিছনে ছিল ডেপুটি স্পীকার তথা ফরয়োর্ড ব্লকের খাদ্য মন্ত্রী
কলিমুদ্দিন শামস যিনি প্রত্যেক মিটিংএ বলতেন, ‘আমি আগে মুসলমান পরে ভারতীয়।’ আমাদের সাংবাদিকরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হলে হিন্দু-মুসলিম
ঐক্যের জন্য লেখে ‘দুই
গোষ্ঠীর সংঘর্ষ’, রায়ট যাতে না ছড়ায়
সেই বৃহত্ত্বর স্বার্থে সত্য গোপন হয়। তবে হিন্দু ঐক্য
ভাঙ্গতে এরাই আবার দুই হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু হলে ফলাও করে হেডলাইন করে ‘দলিতদের উপর বর্ণহিন্দুদের নারকীয় অত্যাচার’। আবার হিন্দুদের সঙ্গে মুসলিমদের সংঘাতে কোন এক শ্রেনীর হিন্দু যদি সেখানে বেশী
থাকে তো বলে, “ঘোষেদের
সাথে মুসলমানদের রায়ট” বা “খটিকদের সাথে মুসলিমদের সংঘর্ষ” যেন ঘোষেরা ও
খটিকরা হিন্দু নন! আসামের মুসলমান অনুপ্রবেশ বিরোধী দীর্ঘ, শক্তিশালী
আন্দোলনকে এরা খাটো করে দেখিয়েছে চিরকাল, অন্যরকম রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে বাঙ্গালী বিরোধী সংগ্রাম
বলে। যদিও সত্যিটা খুবই সরল যে বাংলাভাষী মুসলমান বাংলাদেশী অবৈধ
দখলদারদের বিরুদ্ধে এই লড়াই আসামের সমস্ত হিন্দুর অস্তিত্বের প্রশ্ন। সারা দেশের উর্দু চ্যানেলগুলোর আর্তনাদ শুনলেই বোঝা যায় এর লক্ষ্য ঠিক কারা। আসাম থেকে খুব তাড়াতাড়ি যদি এক কোটির মত বাংলাদেশী মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের না
তাড়ানো হয় তো বাংলাদেশের জাহাঙ্গির নগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ওখানের গুপ্তচর সংস্থা ডি
জি এফ আই এর প্ল্যান অনুযায়ী আসাম ও উত্তরপূর্ব ভারতকে শিলিগুড়ির ‘চিকেন নেক’ অঞ্চলে বিছিন্ন করে বাংলাদেশের অঙ্গ করে নেওয়া হবে। হিটলারের জার্মানির জমি নীতি নিয়ে ওরা একে নাম দিয়েছে ‘অপারেশন ল্যাবেনস্রউম’। ল্যাবেনস্রউম মানে
বাঁচার জন্য জায়গা অর্থাৎ তাদের জনবিস্ফোরনের সমাধান অপরের অধিক জায়গা নিয়ে করা। আসামের যুবকরা যখন সচেতন হয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে চাইছে তখন মুসলিম ভোট লোভী
তরুন গোগৈর কংগ্রেস সরকার আদালতের আদেশ অমান্য করে সব উল্টে দিতে চাইছে।
সংগঠিত
ধর্মান্তরকরন আইন করে নিষিদ্ধ করেছে বেশ কিছু বি জে পি শাসিত রাজ্য সরকার যা সারা
দেশে হওয়া প্রয়োজন। ভারতীয় সংবিধান যখন সর্ব ধর্মকে সমান অধিকার দিয়েছে তখন
বিদেশী অর্থপুষ্ট সংগঠনগুলো কেন এব্যাপারে কাজ করছে খৃষ্টান মিশনারী ও মৌলবীদের
হয়ে? ভারতে অভিন্ন দেওয়ানী আইন ও মুসলমানদের জন্মনিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে সরকার উদাসীন। হিন্দু পরিবারগুলোতে এখন গড়ে একটি সন্তান, সে নিম্নবিত্ত হোক বা উচ্চবিত্ত, যেখানে প্রতি
মুসলমান পরিবারের গড় সাড়ে তিন এবং এভাবে চললে বাংলা ২০২০ খৃঃ ও ভারত ২০৩০ খৃঃ তে
গনতান্ত্রিকভাবেই ইসলামিক দেশ হয়ে যাবে। তাছাড়া বাপ-মা দুই
জন প্রতি হিন্দুদের একটি সন্তান হওয়ার ফলে মানসিক, সামাজিক সমস্যা ছাড়াও প্রতি প্রজন্মে জনসংখ্যা অর্ধেক হয়ে
যাবে যা হিন্দুদের সামগ্রিক শক্তিও হ্রাস করে অচিরেই এক লুপ্ত জাতির রূপ নেবে। ভারতের স্থায়িত্ব নষ্ট করে তখন মুসলমান হয়ে ৩-৪ সন্তানের পিতা মাতা হওয়ার থেকে
এখন থেকেই যদি ২-৩ সন্তানের বাবা-মা হন তো সেদিন দেখতে হয় না। হিন্দুস্থানে মুসলমানের বিবাহ আইন পৃথক। হিন্দু একটার বেশী
বিয়ে করতে পারবে না কিন্তু মুসলমান পুরুষ চারটে বিয়ে করতে পারবে। তাদের স্লোগান হাম পাঁচ (বর ও চার বউ), হামারে পঁচিশ। এই ব্যবস্থা
পাশাপাশি আর চলতে দেওয়া উচিত নয়। ভারতে
স্যেকুলারিজিমের আরো মহিমা হচ্ছে, কোন হিন্দু লোক বিশেষ কারনে যদি দুটো বিয়ে করতে যায় তাকে
গ্রেফতার করতে পারে তিন বিবি রাখা কোন মুসলিম পুলিশ অফিসার আর তাকে বিচার করে সাত
বছরের দন্ড দিতে পারে চার বেগামের মালিক কোন মুসলমান জজসাহেব! পাকিস্তান, বাংলাদেশে
বাধ্যতামূলকভাবে মুসলমানের জন্মনিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, একের বেশী স্ত্রী রাখা যায়না, এখানে কি শুধু তাদের হাতে দেশকে তুলে দিতে হবে বলে এমন
সর্বনেশে আইন?
প্রাকৃতিক ও মানব
সম্পদে ভরপুর ভারত কেন দিনের পর দিন দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে এখন তা ভাবার সময়
এসেছে। বৈদিক যুগে কর্ম ও গুনভিত্তিক চতুর্বর্ণ ব্যবস্থা প্রচলিত
ছিল ভারতে। প্রতি চার বছর অন্তর কর্ম ও গুনের নিরিখে প্রত্যেকের বর্ণ
যাচাই হত। কিছু ব্রাহ্মণ এর বিরোধিতা করে জন্মভিত্তিক জাতব্যবস্থায়
বিশ্বাসী হয়ে উঠেন। এমতোবস্থায়ঃ অজ্ঞেয়বাদী প্রতিবাদী আন্দোলন বৌদ্ধ ও জৈনরা
শুরু করে, যার প্রায় চারশ বছর পর আস্তিক্য দর্শনে বিশ্বাসী কিছু ব্রাহ্মন আরেক প্রতিবাদী
বৈষ্ণব আন্দোলন শুরু করেন খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে। একে অপরের দ্বারা প্রভাবিত এরা সবাই অহিংসার ওপর অতিমাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে থাকে
যা ভারতীয় সমাজে গভীর প্রভাব ফেলে। যার ফলে আমরা দিনে
দিনে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছি ও আজ আমরা আত্মরক্ষায় এতটাই অক্ষম যে দেশরক্ষার
কথা চিন্তাই করি না। এই মতবাদ্গুলো যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন পরমত অসহিষ্ণুতা ও
হিংসাকে সম্বল করে বিদেশী আব্রাহামিক ধর্মগুলো যথা ইসলাম বা খৃষ্টানিটির স্থাপনা
হয়নি কিন্তু এখন অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বিগত হাজার বছর ভারত বিদেশীদের পদানত ছিল মূলতঃ এই সব কারনেই, তাই স্বামী
বিবেকানন্দ শক্তি উপাসনার কথা বলেছেন। এর মধ্যে আটশ বছর
মুসলমান শাসন চলেছে, যা পশ্চিম বাংলায় প্রায় ৫৬০ বছর এবং পূর্ব বাংলায় এখনো চলছে। তবু অনেক হিন্দু নামধারী কবি-সাহিত্যিক এমনকি সাধু-সন্ত বিন্দুমাত্র কোরান না
পড়েই ইসলামের গুনগানে মূখর হচ্ছেন কোন যুক্তি-তথ্যের ধার না ধরেই।
তুর্কিস্তান থেকে
আগত মুসলমান অনুপ্রবেশকারী ইখতিয়ারুদ্দিন বখতিয়ার খিলজী ১১৯৬ তে বিশ্ব সভ্যতার
গৌরব নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে। হাজার হাজার
নিরস্ত্র বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে জীবন্ত দগ্ধ করা হয়েছিল ও বাকি বেশ কয়েক হাজারকে কেটে
ফেলা হয়। পারস্যের ঐতিহাসিক মিনহাজের মতে, আগুন ধরিয়ে দেওয়া
ওখানকার বিশাল পাঠাগারের ধোঁয়া কয়েকমাস ধরে পাশের ছোট পাহাড়গুলো ঢেকে রেখেছিল। ১২০৩ এ অশ্বব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে রাতের দিকে আচমকা হানায় প্রায় বিনা বাধায়
বাংলার তৎকালীন রাজধানী নদীয়া জয় করে যখন থেকে সিরাজউদ্দৌলা পর্যন্ত এপার বাংলায়
মুসলমান তান্ডব চলতে থাকে যা ওপার বাংলায় এখনো বিনা বাধায় চলছে এবং পশ্চিম বঙ্গেও
নতুন করে শুরু হচ্ছে। মাঝখানে রাজা গনেশ ও তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মহেন্দ্রদেব
কয়েকবছরের জন্য অনেক কষ্টে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিল। ইতিহাস বলে একসময় পৃথিবীর ৩৩% মানুষ বৌদ্ধ হয়েছিলেন যা বর্তমানে মাত্র সাড়ে
পাঁচ শতাংশ কারন পূর্ব্বাংলা, তুর্কিস্তান, গান্ধার, পাকিস্তান, কাশ্মীর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি অহিংস বৌদ্ধ প্রধান হওয়ায় যুদ্ধে বিফল
হয়ে আজ সহজেই মুসলমান হয়েছে। তাই নেড়া মাথা
বৌদ্ধ ধর্মগুরুদের জোর করে মুসলমান করায় তাদের বাংলায় নেড়া মুসলমান বলে যাদের
সামান্য কিছু বিদেশী মুসলমানদের খানদানি বংশধররা অত্যন্ত নিচু চোখে দেখে এবং এটাই
বাংলাদেশ যুদ্ধের কারন। যে বৌদ্ধ সহজিয়া-তান্ত্রিকরা অনুরূপভাবে বৈষ্ণব হয়ে যায়
তাদেরও পুরোন হিন্দুরা নেড়া-নেড়ি বলে থাকে। বাংলায় এইসব
জাতপাত ও অসপৃশ্যতার উচ্ছেদের জন্যই মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের গৌড়ীয় বৈষ্ণব
সম্প্রদায়ের উদ্ভব। তিনি অত্যাচারী নবাব হোসেন শাহের কাজীর নির্দেশ অমান্য করে
কষ্ণনাম কীর্তন করেছিলেন। শুধু তাই নয় হাজার হাজার ভক্ত নিয়ে হিন্দুবিদ্বেষী কাজীর
অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রথম বাঙ্গালী হিসেবে মিছিল করেছিলেন, নিরামিশ না মশাল
মিছিল। নবদ্বীপের মুসলমান কাজী কোরান মেনে চৈতন্যের কীর্তন নিষিদ্ধ
করায় অনেক বৈষ্ণব ভয়ে আসাম ও ওড়িশা পালিয়ে গেল কিন্তু বাকীদের মহাপ্রভু নিজে অভয়
দিয়ে বল্লেন কাজীর আদেশ অমান্য করে নিজভূমিতে থেকে নগর সংকীর্তন করবেনঃ
“ভাঙ্গিব কাজীর ঘর কাজীর দুয়ারে।
কীর্তন করিব দেখি
কোন কর্ম করে।।
তিলার্ধেকো ভয় কেহ
না করিও মনে।”
সুবিশাল জনসমুদ্র
মার মার কাট কাট করে কাজীর বাড়ির দিকে অগ্রসর হচ্ছে দেখে বাধা দেওয়ার কথা ভুলে
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে কাজী প্রানভয়ে পালিয়েছিল। মহাপ্রভুর এই পৌরুষের কথা ভুলে যাওয়া তাঁর বর্তমান ভক্তরা তাই শহরজুড়ে
নামকীর্তন করে কিন্তু ভয়ে মুসলমান পাড়া বা মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়
নামগান বন্ধ করে দেন। কিছু হিন্দু অবশ্য এখনের মতো তখনো হোসেন শাহের দালালী
করেছেন। হিন্দু মন্দির ধ্বংসকারী হোসেনকে কবি যশোরাজ খান ‘জগৎ ভূষণ’ এবং কবীন্দ্র পরমেশ্বর‘কলিযুগের কৃষ্ণ উপাধি দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক
রমেশচন্দ্র মজুমদার একে মধ্যযুগের বাঙ্গালী কবির দীর্ঘ দাসত্বজনিত নৈতিক অধঃপতন বলে
বর্ণনা করেছেন। --- বাংলাদেশের ইতিহাস, দ্বিতীয় খন্ড।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী
আম্বেদকরজী এও লিখেছেন যে একসময় এশিয়ার সর্বত্র এমনকি বৃটেনের কেল্টরাও বৌদ্ধ
হয়েছিলেন এবং ইসলামের আবির্ভাবের কারনেই বহির্বিশ্বে বৌদ্ধ ধর্ম আজ নিশ্চিহ্নপ্রায়। শিখ সম্প্রদায়ের সময় অহিংসা মন্ত্র ছিল তাদের অন্যতম স্তম্ভ যার সুযোগে মোগলরা
তাদের কচুকাটা করতে থাকে। তখন গুরু গোবিন্দ সিং হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে বলেছিলেন, “তরবারিই ভগবান, ভগবানই তরবারি” --- ভারত কোষ, ৩/১৬৩। পরধর্ম সহিষ্ণুতার
ক্ষেত্রে বর্তমান হিন্দুরা যে বিশ্বরেকর্ড করেছে সে বিশ্বপ্রেম দুর্বলের
বিশ্বপ্রেম মাত্র, যা দিয়ে ভারতের গরীব, পতিত বা দলিতদের কোন উপকারই হয় না। শুধু লাভ তুলছে খৃষ্টান ও মুসলমান যাদের ধর্মে অহিংসার বালাই নেই। ভারতীয় হিন্দুদের বিশ্বপ্রেম আছে কিন্তু আত্মপ্রেম নেই। আমরা আজও আর্য-অনার্যের দ্বন্দ ঘোচাতে পারিনি, পারিনি হিংসা-অহিংসা বা ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণের দ্বন্দ ঘোচাতে। স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী, বিবেকানন্দ এবং আম্বেদকর প্রমান করেছেন যে আর্যরা বহিরাগত
নয়, তারা ভারতীয় ও আর্য শব্দের অর্থ সংস্কারিত ব্যক্তি। আর্য-অনার্য ভেদটা বৃটিশদের গড়া একটি দ্বিজাতি তত্ত্ব। দুঃখজনক যে অনেক আম্বেদকরপন্থী তথাকথিত দলিত নেতৃবর্গ আম্বেদকরজীর এই
সিদ্ধান্ত না মেনে ক্ষতি করছে হিন্দু সমাজের। তারা প্যান ইসলাম ও খৃষ্টান চার্চের সাথে মিলে বলছে আদিবাসী, শুদ্র এবং
অতিশুদ্ররা সবাই অনার্য ও তাই দলিত-মুসলিম ঐক্য বা খৃষ্টান হয়ে তারা মোক্ষ পাবে।
ভারত সেবাশ্রম
সংঘের স্বামী নির্মলানন্দ যথার্থ বলেছেন, “পূর্ব বাংলায়, বেলুচিস্তানে, পশ্চিম পাঞ্জাবে, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে, আসামের শ্রীহট্টে
সমগ্রভাবে হিন্দুদের গুরু, গোঁসাই, সাধু, সন্ত এবং ধর্মীয় আশ্রম, আখড়া, মঠ মিশন, মন্দির, উৎসব পার্বণাদি কি কিছু কম ছিল? কিন্তু সেখান থেকে
কোটি কোটি হিন্দু বিতাড়িত কেন?” আমাদের দেশের সব অমুসলমান হিন্দু-মুসলিম মিলনের জন্য উঠে
পড়ে লেগেছে, ভাল কথা যেন এ দায় শুধু আমাদের হিন্দুদের কিন্তু একজন মুসলমানকেও কেউ কোন দিন
সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছে বলে দুর্নাম দিতে পারবে না। কারন কোরান সে কাজ আদেউ সমর্থন করেনা।
ডঃ বি আর আম্বেদকর
বলেছেন, মহামানব বুদ্ধদেব কেবলমাত্র যাগ-যজ্ঞের ক্ষেত্রে জীব হত্যা নিষিদ্ধ ঘোষনা
করেছিলেন। তিনি প্রয়োজনে জীব হত্যাকে সমর্থন করেছেন --- ‘বুদ্ধা এন্ড হিস ধম্মা’, পৃঃ ৩৪৫। তাই আমরা দেখি
জাপানী, কোরিয়ান, থাই প্রমুখ বৌদ্ধরা শুধু যে আমিষ খান তাই নয় দেশ রক্ষার ব্যাপারেও খুব সচেতন। ইসলামের উৎপত্তি সম্বন্ধে গবেষক ডঃ আম্বেদকর বলেছেন, ‘মুসলমানের কাছে প্রতিমা পূজা বা বৌদ্ধ ধর্ম সমার্থক। আরবি ভাষায় বুদ্ধের অপভ্রংশ “বুত” বলে একটা শব্দ আছে মানে দেবমূর্তি। এই বুতের শত্রু হিসেবেই ইসলামের আবির্ভাব। তাই মুসলমান জন্মের প্রধান কাজ প্রতিমা ধ্বংস করা।’ --- ডঃ বাবাসাহেব, রাইটিং এন্ড স্পীচেস, ভলিউম ৩। আফগানিস্তানের
বামিয়ানে সুবিশাল বুদ্ধমূর্তি একারনেই ভাঙ্গা হয়। এজন্যই ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সামনে থেকে বাউল লালন ফকিরের মূর্তি
সরিয়ে ফেলা হয় কারন বাংলাদেশের হজ যাত্রীদের নাকি যাওয়া আসার পথে ওটি দেখলে পাপ
লাগত।
১৯০৯ থেকেই জাতীয়
কংগ্রেস মুসলমান তোষন শুরু করে যার ফলে পরবর্তী মাত্র ৩১ বছরের মধ্যে তারা
পকিস্তান দাবী করে ও আরো ৭ বছরের মধ্যে মাত্র ২৩% মুসলমান ভারত বিভাজন করে নেয়। এখন তাদের লক্ষ সমগ্র ভারতকে মুসলিম রাষ্ট্র বানানো তাই চলছে হিন্দুদের মধ্যেই
বিভেদ তৈরী। মানুষের মতো বেঁচে থাকার জন্য মানুষের শান্তি চাই, শান্তি চাই
উন্নতির জন্য। কিন্তু সে শান্তি কি আসবে আশান্তির বেদীমূলে আঘাত না করে? শত্রু-মিত্র সকলকে
তোষন করে? যারা হোমযজ্ঞ, ধর্মাচরণ করে বা বিশ্বশান্তি চায় তাদের মনে রাখা উচিত এজন্য আগে তাদের ভারতকে
শত্রুমুক্ত করতে হবে। একমাত্র হিন্দুরা হিন্দু হিসেবে ভারতে টিকে থাকলেই তো বাকি
সব করা সম্ভব। আমাদের আজ সময় নেই ভাববার পূর্ণিমা শীলের মতো শিশুরা কেন এক
ডজন জেহাদী নরপশুর হাতে এক রাতে তার মায়ের সামনে গনধর্ষিতা হয়। সেখানে খৃষ্টান ও মুসলমান ধর্মগুরুরা কিন্তু নিয়ত তাদের লোকজনকে শত্রু-মিত্রের
পাঠ দিচ্ছে। আত্মরক্ষা, দেশরক্ষা ও ধর্মরক্ষার ব্যাপারে তাই তারা গভীরভাবে সচেতন
কিন্তু আমাদের নেতা ও অভিভাবকরা এক্ষেত্রে কি করেন? স্বামী বিবেকানন্দর নির্দেশ, “গর্বের সাথে বল আমি হিন্দু”। কিন্তু এদেশে মঠ-মন্দির, সাধু-সন্ত কিছু কম না হলেও হিন্দুদের এক বিরাট ফাঁকি আমরা
জাতি হিসেবে খুব স্বার্থপর এবং আমাদের জীবনচর্চায় দেশ, সমাজ বা রাষ্ট্রকে
খুব একটা স্থান দিই নি। এজন্য হিন্দু সমাজ আত্মবিশ্বাসহীন, স্ববিরোধী হয়ে
পড়েছে। তাই অনেকে হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজকে সংকীর্ণ কাজ
মনে করে। আর তাদের দিন কাটে রাজনীতিতে দলাদলি, সিনেমা-থিয়েটার, জাত-পাত, টি ভি ধারাবাহিক, ক্লাব ভেদ, ঈর্ষা বুদ্ধি
প্রভৃতির অকারণ নিষ্প্রয়োজন উত্তেজনায়। তারা গর্ভধারিনী
মাকে খেতে না দিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছে আর কালিঘাট-তারাপীঠ কাঁপিয়ে দিচ্ছে মা মা চীৎকারে। এরাই চায়ের টেবল রাজনীতি করে হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের আওয়াজ তুলে, দুনিয়ার মজদুরকে
এক করার কথা বলে। হীন প্রবৃত্তিপরায়ণ, আখের গোছানো এই স্বার্থপরেরা ঈশ্বরকে পর্যন্ত নির্বোধ ভেবে
সবাইকে বঞ্চিত করে জপ, কীর্তন, পূজায় ভগবানকে সন্তুষ্ট করতে চায়। হিন্দুস্থানের বেশীরভাগ রাজনৈতিক দলই এখন পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আই এস আই
এর লোক দাউদ, মেমন, রশিদ খানদের এজেন্ট তাই যখন হিন্দুরা প্রতিবাদ করে তখন তারা হই হই করে উঠে। গুজরাটের গোধরা গ্রামে মুসলমানরা যখন ৫৯ জন অযোদ্ধা ফেরত হিন্দু
তীর্থযাত্রীদের জান্ত্য জ্বালিয়ে মারল ট্রেনের কামরায়, ওড়িশার কন্ধমলে
খৃষ্টান মিশনারীরা গুলি করে খুন করল আদিবাসীদের জন্য কাজ করা ৮০ বছরের প্রবীন
সন্ন্যাসী স্বামী লক্ষনানন্দ ও তাঁর ৫ সন্ন্যাসী সহযোগীকে, কেওনঝাড়ে অস্ট্রেলিয়ার
মিশনারী আদিবাসীদের হনুমান মন্দিরে প্রস্রাব করল তখন এই নেতারা চুপ ছিল কিন্তু যেই
হিন্দুরা সব এক হয়ে প্রতিরোধ করল তখন এরাই রই রই করে গেল গেল রবে জগতকে বিচলিত করে
তুলল। এই দ্বিমুখী আক্রমণ থেকে ভারতকে বাঁচাতে পারে একমাত্র
হিন্দুর সংগঠিত শক্তি।
ঈদের নামাজের পর, ধর্ম্প্রাণ মুসলমানরা আরবিতে যে অবশ্য পাঠ্য খুতবা পড়েন এবং
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা দিদিকেও প্রকাশ্যে যাতে অংশগ্রহন করতে দেখা গেছে
তার বঙ্গানুবাদ –
“হে আল্লাহ, ইসলাম ও মুসলিমদের চিরকাল জয়যুক্ত করুন। আর অবাধ্য কাফের, বেদায়াতী, মুশরিকদেরকে (মুশরিক অর্থাৎ যারা শরিক করে বা অংশীবাদী মানে
যারা আল্লাহ ছাড়াও অন্য কোন ইশ্বরকে মানে) সর্বদা পদানত ও পরাস্ত করুন। হে আল্লাহ! যে বান্দা তোমার আজ্ঞাবহ হবে, তাঁর রাজ্য চির অক্ষয় রাখুন, তিনি রাজার পুত্র রাজা হউন, কিংবা খাকান পুত্র খাকান হউন, ...... হে আল্লাহ! আপনি তাঁকে সর্বদিক দিয়া সাহায্য করুন,...... হে আল্লাহ! আপনি
তাঁর পৃষ্টপোষক, রক্ষক ও সাহায্যকারী হোন। তাঁরই তরবারী
দ্বারা– কাফের, মহাপাতকী, অবাধ্যদের
মস্তকছেদন করে নিশ্চিহ্ন করে দিন। ...... হে আল্লাহ! আপনি
ধ্বংস করুন সমস্ত অমুসলমান, মুশরিক ও বিদ্রোহীদের।” --- মুসলিম পঞ্জিকা।
বিশ্বপ্রেম থাকলেও
আমাদের হিন্দুদের প্রকৃত আত্মপ্রেম না থাকায় ভারত বারংবার বিদেশী শক্তির কাছে
পরাজিত হয়েছে। এর জন্যই হিন্দুবিরোধী মৌলবাদ ও জঙ্গীদের এত বাড়বাড়ন্ত। ভারতের জাতীয় সংহতি আজ বিপন্ন।
পশ্চিমবাংলা ১৯৭০ এর
দশকে প্রবেশ করেছিল “মুক্তির দশক” স্লোগান মুখে নিয়ে। বঙ্গ প্রদেশ লাল
হয়েছিল মানুষ খুনের রক্তে। পশ্চিমবঙ্গের
মাথায় এই দশক শেষে রক্তমাখা বামপন্থীরা আসীন হলেন শাসন ক্ষমতায়। স্বাধীনতার আগে থেকে যে লাল আফিম হিন্দু বাঙ্গালীকে পরিকল্পনা করে খাওয়ানা
শুরু হয় তাতে নেশাগ্রস্ত হয়ে অনেকে ভাবতে থাকেন নিজ ধর্ম, সংস্কৃতি, জাতীয়তাবাদ এবং
বাপ-ঠাকুর্দার প্রতি শ্রদ্ধার চেয়ে প্রগতিশীলতা ভাল, নিজের পায়ের নিচের জমির থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বেশী দামী, মা-বোনের
সম্ভ্রমের থেকেও বামপন্থা বড়, বিবেকানন্দ-নেতাজী-ক্ষুদিরামের চেয়েও লেনিন-স্ট্যালিন-মাও
বেশী প্রাসঙ্গিক। স্বধর্ম এবং হিন্দু সভ্যতায় ভক্তি অস্বীকার ও অবজ্ঞা করে
বাঙ্গালী নিজের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছিল।
হিন্দুস্থানের
তাবৎ অর্থনৈতিক দুর্ভোগ ও মনুষ্যত্বের অবক্ষয়ের জন্য দায়ী করা হয় দেশ বিভাগকে। এই বিভাজন ছিল এদেশের হিন্দু নেতৃত্বের নির্বুদ্ধিতার পরিণাম। বেশীরভাগ মুসলমানের দাবী ছিল, হিন্দু-মুসলিম দুটি আলাদা জাতি ও এক সঙ্গে থাকলে মুসলমানদের
ঘৃন্য অমুসলমানদের সঙ্গে থেকে ইসলামিক ধর্ম-সংস্কৃতির ক্ষতি হবে এবং সেজন্য পৃথক
বাসভূমি পাকিস্তান চাই। তখন হিন্দু নেতারা জনতাকে বোঝাতে ব্যাস্ত ছিলেন যে না এরা
আলাদা নয় একই ভারতীয় জাতি। ফল হল অসংখ্য জীবন, চোখের জল, রক্ত আর নারীর
সতীত্বের বিনিময়ে রক্তে রাঙ্গা পাকিস্তান – হিন্দু ও মুসলিম
দুটি পৃথক জাতি এই সত্যকে স্বীকার করে নিয়ে। দুই কোটি হিন্দুর
সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হল পাকিস্তান থেকে। স্বাধীনতা আন্দোলনে হিন্দু তার প্রান দিয়েছে ভাববাদে ভেসে গিয়ে যখন মুসলমান
ভারতকে দুভাগ করার স্ট্রাটেজী তৈরী করেছে ইংরেজের সাথে বসে। পূর্ববঙ্গ ইসলামিক বাংলাদেশ হল সেখানে মুসলমানের সংখ্যা বেশী বলে কিন্তু
ফাঁসীর মঞ্চে ওপার বাংলারই বেশী লোক প্রানদান করেছে। অথচ আত্মবলিদানের তালিকায় শুধু পূর্ব কেন গোটা বাংলায় কোন মুসলিমের নাম নেই। গুলিতে, ফাঁসীতে প্রান দেওয়া পূর্ববঙ্গের হিন্দুদের প্রান নিয়ে পালিয়ে আসতে হল ভারতে
বাস্তুচ্যুত, রিফিউজী, শরনার্থী হয়ে।
ভারতকেশরী
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ৩৭০ ধারার উচ্ছেদ করে কাশ্মীরের পূর্ণ ভারতভুক্তি
চেয়েছিলেন। তবে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ নেতারা অর্ধেক কাশ্মীর
পাকিস্তানকে দিয়ে বাকিটা প্রায় পাকিস্তান বানিয়ে রেখেছে। কাশ্মীর তথা ভারতের অর্ধেক দিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও আবার সেই একই পরিস্থিতি। নিয়ন্ত্রনহীন কাশ্মীর পুরোটাই চলে যেতে পারে পাকিস্তানে যাদের বিভিন্ন উগ্রপন্থী
ও গোয়েন্দা সংস্থা আই এস আই বাস্তবে আজ ভারতীয় কাশ্মীরকে চালাচ্ছে। দেশজুড়ে অসংখ্য মিনি পাকিস্তান আর বিদেশী অর্থপুষ্ট দেশদ্রোহীরা সেখান থেকে
অপারেট করছে। ভারত আবার খন্ডিত হতে পারে। এ জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ুন হিন্দুত্ব আন্দোলনে। রাজনৈতিক দলগুলোর সংখ্যালঘু তোষনে ক্রমেই তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। ১৯৮৬ তে ভারতীয় মুসলমান প্রজাতন্ত্র দিবস বয়কট করেছে। সরকারী চাকরিতে মুসলমান ও খৃষ্টানদের সংরক্ষন চালু। বেআইনীভাবী সরকারী জমি দখল করে রাজাবাজার-পার্কসার্কাসে প্রচুর বাড়ী আর মসজিদ
তৈরী করছে। দিল্লীর শাহী ইমাম ও কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম
বুখারী বলছে তারা এদেশের আইন-কানুন মানে না। পার্লামেন্টে আগুন
ধরিয়ে দেবে ইত্যাদি উত্তেজিত বক্তৃতা দিয়ে দাঙ্গা করাচ্ছে মীরাটে, গুজরাটে, আলিগড়ে, মউতে, হায়দ্রাবাদে।
হকি, ক্রিকেটে জিতলে
মুসলিম মহল্লা টি ভিতে মালা দেয়। খিদিরপুর, এন্টালীতে মিছিল বের
হয় ব্যান্ড সহযোগে। ফুটবলে মহামেডান স্পোর্টিং জিতলে আল্লা হো আকবর ধ্বনি দেয় ও
এসবের একটাই অর্থ তাদের আনুগত্য দেশের বাইরে। লখনউয়ের মুসলমানরা আবার শিয়া-সুন্নিতে বিভক্ত। বাড়ি বাড়ি আছে খোমেইনি ও লাদেনের ছবি। তারা আরব ও ইরানের
সমর্থকে ভাগাভাগি। মুসলমান পাড়ায় তাই নিজেদের মধ্যে প্রানঘাতী সংঘাত হয়, বিশেষতঃ মহরমের
দিন প্রতি বছর প্রায় নিয়ম করে দাঙ্গা তো আছেই। প্রশ্ন ওঠে ভারতে তাহলে ভারতপন্থী মুসলমান কয়জন?
স্বাভাবিকভাবে
গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ভারতীয় সংবিধানের এই তিনটি আদর্শই সম্পূর্ণ
হিন্দু সংখ্যাগুরুর উপর নির্ভরশীল। ভারতের সে সকল
অঞ্চলে যেখানে হিন্দু সংখ্যালঘু, সেখানে এই সব অচল যেমন কাশ্মীর বা উত্তরপূর্ব ভারত। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, পাকিস্তানে ওসব নিয়ে কেউ চর্চাও করে না। কাকাবাবু মুজ্জফর
আহমেদ নিজে মুসলমান হয়েও জন্মভূমি বাংলাদেশের সন্দ্বীপ (নোয়াখালি জেলা) থেকে
পালিয়ে এসে মার্ক্সবাদী সাম্যবাদ প্রচার করলেন কলকাতায় বসে। নেত্রকোনার জমিদারপুত্র কমরেড মনি সিংহ তো কমিউন্যিষ্ট পার্টির নেতৃত্ব দেওয়ার
অপরাধে জীবনের বেশীরভাগ সময় বাংলাদেশের জেলেই কাটিয়ে দিলেন। আফগানিস্তানের তালিবানি নগর কান্দাহার একসময় ভারতের গান্ধার ছিল আর সেদেশটি যে
ভারতেরই অঙ্গ ছিল তা দুদেশের লোকই ভুলে গেছে। কাশ্মীরে ভারত সরকার একটাকা কেজি চাল ও দুটাকা কেজি চিনি খাইয়ে এবং ডাক্তারী, ইঞ্জিনিয়ারিং, এম এ পর্যন্ত বিনে
পয়সায় পড়িয়েও সেখানের সংখ্যাগুরু মুসলমানের মন পেতে ব্যর্থ। অনেক বেশী দরিদ্র বিহার বা ঝাড়খন্ডে কিন্তু এসব সমস্যা নেই তারা হিন্দু প্রধান
হওয়ায়। দেশভাগের দাঙ্গায় যে দেড় লক্ষ হিন্দু-শিখ পাকিস্তান থেকে
পালিয়ে ভারতীয় কাশ্মীরে আশ্রয় নিয়েছিল তাদের এখনো সেখানের রাজ্য সরকার অমুসলমান
হওয়ার অপরাধী বলে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয় নি! ফারুখ আব্দুল্লার আমলে কাশ্মীরে একটা
আইন হল যে ১৯৪৭-৪৮ এ স্বেচ্ছায় পাকিস্তানে চলে যাওয়া মুসলমানদের জমি-সম্পত্তি
ফিরিয়ে দেওয়া হবে যেখানে বাংলাদেশে হিন্দুর বাধ্য হয়ে ফেলে যাওয়া সম্পত্তি শত্রু
সম্পত্তি আইনের মাধ্যমে সরকার সেসব সংখ্যাগুরু মুসলমানকে বন্টন করে দিয়েছে। দেশদ্রোহিতার অপরাধে এগারো বছর জেল খাটা ফারুখের পিতা শেখ আব্দুল্লাকে
মুখ্যমন্ত্রী করা হয় ও পুরষ্কার স্বরূপ শ্যামাপ্রসাদকে শ্রীনগরের জেলে বিষ খাইয়ে
খুন করে, কারন তাঁর অপরাধ কাশ্মীরের সম্পূর্ণ ভারতভুক্তি দাবী করা। শুধুমাত্র হিন্দু সেখানে সংখ্যালঘু বলে ফারুখের পর মুখ্যমন্ত্রী হয় তার পুত্র
ওমর আব্দুল্লা। ১৯৯০ এ সেখান থেকে ৫ লক্ষ হিন্দুকে খুন, জখম করে তাড়িয়ে
দেওয়া হয়েছে যারা আর হয়ত কখনো নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারবে না ও বর্তমানে দিল্লী-জম্মুর
উদ্বাস্তু শিবিরে পচে মরছে।
রাষ্ট্রসংঘ একটি
গুরুত্বপূর্ণ সমীক্ষায় হিসেব কষে দেখিয়েছে যে ভারতে ব্যাপক বাংলাদেশী (ও কিছু
পাকিস্তানি) মুসলিম অনুপ্রবেশ ও ভারতীয় মুসলিমদের অনিয়ন্ত্রিত জন্মহারের ফলে ২০৩০ খৃষ্টাব্দের
মধ্যে মুসলমান ভারতে সংখ্যাগুরু হয়ে যাবে। তখন কি আমাদের
অবস্থা কাশ্মীরের হিন্দুদের থেকেও খারাপ হবে না? হিন্দুদের বিপুল সংখ্যায় গনধর্মান্তরিত করার জন্য তাই আরব
থেকে কোটি কোটি টাকা আসছে যা দিয়ে প্রথমেই আমাদের বুদ্ধিজীবী ও সংবাদমাধ্যমকে কিনে
ফেলার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে। একথা ভারত সরকারের
স্বরাষ্ট্র দপ্তর স্বীকার করছে কিন্তু হিন্দু এখনও এক না হওয়ায় সে অনৈক্যের সুযোগ
নিয়ে মুসলমান ভোটের লোভে রাজনৈতিক নেতারা চুপচাপ আছে। হাজার হাজার বছরের প্রাচীন মীনাক্ষীপুরমে মাত্র আট-নশ হিন্দু মুসলমান হয়ে
যাওয়ার সঙ্গেই সেখানের নাম হয়েছে রহমতনগর। হিন্দু সংখ্যালঘু
হলে ভারত কি আর তাহলে ভারত থাকবে? অহিন্দু দেশভক্ত এবং ভারতপ্রেমীরাও তাই সাবধান!
কিছুদিন পূর্বে
রামকৃষ্ণ মিশনের একটি সম্মেলন হয়েছিল বেলুড়ে সর্বধর্ম সমন্বয় নিয়ে। সেখানে গুরুগম্ভীর আলোচনা হল কি করে এ মহৎ কাজ করা যায়, যেন সমস্ত দায় একা
হিন্দুদের। তার আগে যে এক মহারাজকে মুসলমানরা গাছে বাঁধে মারল
দক্ষিনবঙ্গে আর মেঘালয়ের মিশনে খৃষ্টানরা জলের পাইপ কেটে ও নানা ভাবে অত্যাচার করল
সে নিয়ে সবাই চুপ থাকলেন। অন্যদের হাতে নিয়মিত মার খাওয়া আর সর্বধর্ম সমন্বয়ের চেষ্টা
করা এদেশের কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের একমাত্র কাজ। অনেক বিশিষ্ট হিন্দু লক্ষ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন তাকে যখন মাদার
টেরেসা জীবিত ছিলেন। তাকে মা করুনাময়ী জগজ্জননী বলে খুব নাচানাচিও হল। ওই টাকা দিয়ে পোপের নির্দেশে তিনি হাজার হাজার হিন্দুকে খৃষ্টান বানালেন ও
পুরষ্কারে নোবেল পেলেন। ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে যাবতীয় সমস্যার কারন সেখানের এই
ধর্মান্তরিত খৃষ্টানরা যারা আসাম, মনিপুর, ত্রিপুরায় শয়ে শয়ে হিন্দুকে খুন করেছে। মাদারের আসল পরিচয় এই নিহত হিন্দুদের জন্য এক ফোঁটা চোখের জল বা দুটি শব্দও
তিনি খরচ করেননি। গরু যেমন মহানন্দে জাবর কাটতে কাটতে গরুর মাংস গাড়ীতে করে
নিজের পিঠে বয়ে চলে যায় আধুনিক হিন্দুদের সেই অবস্থা। হিন্দুত্বের সম্পূর্ণতা, শ্রেষ্ঠত্ব সম্বন্ধে কোন ধারনাই না থাকায় আমরা শত্রু-মিত্র, ভাল-মন্দ, জয়-পরাজয় চেনার
ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি।
হিন্দু ছাড়া জগতে
কেউ কোথাও যত মত তত পথের কথা বলে না তবে এসবের জন্য আগেতো হিন্দু সংখ্যাগুরু জনগন
চাই, হিন্দুভূমির দরকার তা আমরা ভুলে বসেছি। বিদেশী খৃষ্টান
রাষ্ট্র, মুসলমান রাষ্ট্র থেকে কর্মী ও অর্থ এখানে আসে কোন সাহসে? সবাই জেনে গেছে
নিজেদের উদার, সবজান্তা মনে করা হিন্দুরা এখন উদাসীন, শিথিল, ক্রয়যোগ্য হয়ে পড়েছে। খৃষ্টান মিশনারীরা
মার খাওয়ার ভয়ে কখনও মুসলমান পাড়ায় ঢোকেনা তারা শুধু শিকারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়
হিন্দু বস্তিতে। বেশকিছু পূর্ববঙ্গ থেকে আগত গুরুনির্ভর নব্য হিন্দু
সম্প্রদায় এপার বাংলায় প্রচার করে যে রামও যে রহিমও সে। কিন্তু আল্লাহ ও রামের সহাবস্থান বাংলাদেশে হলনা। আল্লার অনুগামীদের অত্যাচারে ভিটে মাটি ছেড়ে এপারে পালিয়ে আসার পরও এতো ঔদার্য
সহিষ্ণুতা না আত্মহত্যার লক্ষণ? গত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী দার্শনিক বর্ধ্মানের কালনার
শ্রী শিবপ্রসাদ রায় তাই যথার্থ বলেছেন, ‘এই খন্ডিত বঙ্গে এখন মুসলমানদের সংখ্যা ৩৫%। এই সংখ্যা একান্নতে পৌঁছলেই গান্ধীবাদ, মার্ক্সবাদ, ভজন, কীর্তন, মালা, টিকি, মহোৎসব, ভোগারতি সব শেষ হয়ে যাবে। “সব ধর্ম সমান”, “খেটে খাওয়া মানুষের কোন জাত নেই”, “হিন্দু মুসলিম ঐক্য চাই”, “এই দেশ ধর্মনিরপেক্ষ”, “এখানে শুধু হিন্দুর কথা বলছেন কেন” – এসব বলার জন্য তখন
কেউ থাকবে না। ইসলামিক বাংলাদেশে এই ধরনের কথা আর কেউ বলতে পারে না। রমনার প্রাচীন কালিমন্দিরটা যখন কামান দেগে চূর্ণ করে ট্যাঙ্ক দিয়ে সমান করা
হল তখনও ঢাকায় কেউ একটি কথা বলেনি।’
ভারতবিরোধী
চক্রান্তের জন্য ফাদার ফেরার ও মাইকেল স্কটকে দেশ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। সম্প্রতি ফাদার ডি সুজাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরদিকে ক্রিকেটে দেশের সঙ্গে গদ্দারী করার জন্য খেলার জগতে চিরনির্বাসিত
মহম্মদ আজহারউদ্দিন আজমগড় থেকে কংগ্রেস দলের এম পি হয়েছেন সে জেলাটি মুসলিম প্রধান
হওয়ার সুবাদে এবং অভিনেতা শাহরুখ খানের প্রচারের জোরে। মোরাদাবাদে, বিহার শরীফে মুসলিম মহল্লায় বন্দুক, মর্টার তৈরীর কারখানা পাওয়া যাচ্ছে। লখনৌয়ের মসজিদে পনের হাজার তাজা বোমা ও ধানবাদের মুসলমান হোটেল থেকে পাওয়া গেল
টন টন ডিনামাইট। বাক্স বাক্স জোরালো আর ডি এক্স উদ্ধার হয়েছে মোমিন
মাফিয়াদের হাত থেকে। ধর্মপ্রসারের নামে তথাকথিত সংখ্যালঘুদের এই খোলাখুলি
রাষ্ট্রদ্রোহিতা টনক নড়িয়ে দিচ্ছে অচলায়তন হিন্দু সমাজের।
কিছু সর্বজ্ঞ
হিন্দু গোহত্যার পক্ষে কথা বলে যদিও আধুনিক বিজ্ঞান ও কোরানে মহম্মদ বলে মানুষের
পক্ষে গরুর মাংস ক্ষতিকারক। আরবে গরু খুব কম
আর আমাদের গোপালের দেশ। গরু কাটলে বেশীরভাগ শ্রদ্ধাশীল হিন্দুর মনে লাগে। মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন স্বাধীনতা প্রাপ্তির চেয়ে গোহত্যা বন্ধ বেশী জরুরী। ঐক্যর জন্য নেতাজী আজাদ হিন্দ বাহিনীতে গরু খাওয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন। সংবিধানে গোহত্যা বন্ধের নির্দেশ আছে। কলকাতা হাই কোর্ট
ও সুপ্রীম কোর্টের ফুল বেঞ্চ গো হত্যা বন্ধের পক্ষে রায় দিয়েছে কিন্তু সরকার
সঙ্ঘবদ্ধ মুসলমানদের অন্যায় ইচ্ছার কাছে মাথা পেতে এসকল মানছে না। অপরদিকে বুদ্ধিজীবীরা ভয়ে অনেক সুযুক্তি সত্ত্বেও শুয়োর খাওয়ার পক্ষে কেউ কলম
ধরেন না! কিন্তু সব কিছু উপেক্ষা করে আমাদের অপমান করা যায় যেহেতু হিন্দু এখনো
পূর্ণরূপে সংগঠিত হয়নি। প্রগতিশীল হওয়ার তীব্র ইচ্ছায় বিকৃত মস্তিস্ক বুদ্ধিজীবীরা
গল্প-উপন্যাস হিন্দুদের অকারন ছোট করে দেখায়, গীতিকার, শিল্পীরা কৃষ্ণ-গৌর-নিতাইকে নিয়ে কুরুচিকর গান বাঁধে কারন
তারা জেনে গেছে হিন্দুরা প্রতিবাদ করেনা কিন্তু এসমস্ত কেউ যীশু, মহম্মদ বা আল্লাকে
নিয়ে ভুলেও করে না। এদের সাহায্যে সরকার সুপ্রীম কোর্টের শাহবানু মামলার রায়
সংসদে পাল্টে দেয় যা ইসলামিক বিধানের বিপক্ষে গিয়ে আধুনিকা মুসলিম মহিলাদের তালাকের
ক্ষেত্রে প্রাক্তন স্বামীদের থেকে খোরপোষের অধিকার দিত। আবার এদেরই কথায় দয়াপরবশ হয়ে সংখ্যাগুরু হিন্দুর করের টাকায় ওই মুসলমান
মহিলাদের সরকার নিজে খোরপোষ দিচ্ছে। যেমন মুসলিমদের
আরবের মক্কা-মেদিনায় হজ করতে যাওয়ার খরচও ভারত সরকার দেয়। অন্যদিকে কৈলাস-মানসসরোবর যেতে হিন্দুদেরকে ভারত ও চীন সরকার উভয়কেই কর দিতে
হয়। বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরগুলোর অর্থ একইভাবে সরকার বিভিন্ন
ট্রাস্ট বসিয়ে আত্মসাৎ করছে, নিচ্ছে প্রাচীন হিন্দু তীর্থস্থানগুলো থেকে তীর্থ কর যা
দিয়ে মুসলমানদের মাদ্রাসায় আরবি ও তাদের ধর্মীয় শিক্ষা দিচ্ছে, সেখানের শিক্ষক ও
প্রচুর মসজিদের ইমামদের মাইনে এবং পেনশনও হচ্ছে। এদিকে টাকার অভাবে হিন্দু সমাজের কোন কাজ হচ্ছে না, সংস্কৃত, পৌরোহিত্য ও
হিন্দু দর্শন শিক্ষা লোপাট হয়েছে। মন্দিরে দান করা
ভক্তদের অর্থে গরীব হিন্দুদের উন্নয়নও করা যাচ্ছে না। এসব নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ তথা গোটা দক্ষিণভারত জুড়ে হিন্দুরা জাগ্রত হয়ে আন্দোলনে
নেমেছে মন্দিরগুলো সরকারী নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার জন্য। তবে পরমাশ্চর্য দুটি ঘটনা হল রাহুল গান্ধী-মনমোহন সিংহের পরিচালিত কেন্দ্রীয়
সরকার খৃষ্টান সোনিয়ার প্ররোচনায় তিরুপতি তীর্থের সাতটা পাহাড়ের তিনটা খৃষ্টান মিশনারীদের
দান করেছে সম্পূর্ন বেআইনিভাবে। শ্রীলংকা-ভারতের
মধ্যে রামসেতু ভাঙ্গতে যাওয়ার এবং কাশ্মীরে অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের জন্য সরকারী খাস
জমি ফিরিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা হিন্দুরা দেশজুড়ে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে আটকে
দিয়েছে। রাহুল-সোনিয়ার কংগ্রেস সরকার তাই সংখ্যালঘুদের তুষ্ট করতে
নতুন আইন করেছে মারা যাওয়া জঙ্গীদের প্রত্যেকের পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকার মাসে
মাসে পেনশন দেবে যাতে তাদের কোন কষ্ট না হয়! কংগ্রেসের বড় নেতা এবং রাহুল গান্ধীর “মেন্টর” দিগ্বিজয় সিং দিল্লীর জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চার
জিহাদী ছাত্র পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গেলে কাঁদতে কাঁদতে তাদের বাড়ি চলে যায় ও
দাবী করে তারই সরকারের পুলিশের এই ঘটনা ভুয়ো সংঘর্ষ এবং তখনকার ভি সি মুশিরুল
হাসানকে দিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে কেস লড়ার জন্য সরকারী অর্থ জোগাড় করে দেন। এতে রুষ্ট হয়ে সংঘর্ষে মৃত পুলিশ অফিসার মোহন চাঁদ শর্মার বিধবা স্ত্রী সরকারী
ক্ষতিপূরণ নিতে অস্বীকার করেন।
এসব নেতা-বুদ্ধিজীবী-সমাজকর্মী
মানবতাবাদী সাজার জন্য হিন্দুদের সর্বনাশ করতেও পিছপা হয়না। যুক্তিহীন প্রবন্ধ লেখে খবরের কাগজে হিন্দু সংগঠনের বিরুদ্ধে হিন্দু রাষ্ট্রের
বিরোধিতা করে। অর্থহীনভাবে বলে হিন্দু রাষ্ট্রের কথা বললে নাকি শিখ, বৌদ্ধরাও নিজেদের
আলাদা রাষ্ট্র চাইবে। এই আহাম্মকেরা হয়ত কোনদিন ভারতের সংবিধানটাও খুলে দেখে নি
না হলে জানত যে তাতে লেখা আছে বৌদ্ধ-শিখ-জৈন সবাই ভারতীয় হিন্দু সমাজের অন্তর্গত। হিন্দু-মুসলমানের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হল কিন্তু দেশের নেতাদের একজাতিতত্ত্বের
মিথ্যা ফানুসটা ফাঁসল না। পাকিস্তান-বাংলাদেশ থেকে হিন্দু প্রায় শূন্য হতে চলল আর
আমাদের নেতৃত্ব জিন্নার দেওয়া লোক বিনিময়ের বাস্তব সমাধান মানল না। অতএব যে মুসলিমরা হিন্দুদের সাথে থাকবে না বলে পাকিস্তানের পক্ষে রায় দিয়েছিল
তাদের বিরাট অংশটাই থেকে গেল ভারতে। তাদের কিছু হারাতে
হল না ছিন্নমূল হিন্দুদের মতো। ভারত দুভাগ হয়ে
মুসলিম তার ইসলামিক রাষ্ট্র বুঝে নিল তবে আমরা হিন্দু রাষ্ট্র এখনও হলাম না। হিন্দু রাষ্ট্রে পরধর্ম বিপন্ন হয় না, নেপাল যখন মাওবাদীদের আসার আগে হিন্দু রাষ্ট্র ছিল সেখান
থেকে ৫% মুসলমানের একজনকেও ভাগানো হয়নি। বাংলাদেশে-পাকিস্তানে
হিন্দু কিন্তু বলির পাঁঠার চেয়েও বেশী অসহায়। যখন খুশি হিন্দু মেয়েদের অপহরণ করা যায়, বলপূর্ব্বক ধর্মান্তরকরণ ও বিয়ে করা যায়। ভারতে একজন মুসলমানেরও এর জন্য কষ্ট হয়না বা তারা প্রকাশ্যে কিছু বলেনা। ভারতীয় হিন্দু কিন্তু প্যালেস্তাইনের মুসলমান উদ্বাস্তু বা লিবিয়ার যুদ্ধে
হারা মুসলিম দের জন্য রাস্তায় চোখের জল ফেলতে ফেলতে মোমবাতি মিছিল করে, স্লোগান দেয় এবং
তাদের সমর্থনে ইস্রায়েল-আমেরিকার কালো হাত ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়! ১৯৪৭ এ
২৩% ভারতীয় আর্থাৎ সমস্ত মুসলমানের জন্য ভারতের ৩০% জমি দেওয়া হয় যা তাদের
প্রাপ্যর চেয়েও বেশী। যারপরও বিনা ক্ষতিপূরণে দুই কোটি হিন্দুকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকার এই উদ্বাস্তু হিন্দুদের জন্য আইনসম্মত ক্ষতিপূরণ আদায়
করতে তো পারেয়নি, এখন যখন বাংলাদেশের দুই কোটি নিপীড়িত হিন্দুর জন্য জমির অধিকার দাবী করে
বঙ্গসেনা প্রানের ঝুঁকি নিয়ে ন্যায়ের লড়াই করছে তখন আমাদের সংবাদপত্রগুলো
নির্বিকার। পশ্চিম বাংলাদেশের আটটি জেলা নিয়ে তারা ভারতের মধ্যে ‘বঙ্গভূমি’র আন্দোলন
করছে। জমি পেলে যে উদ্বাস্তু-অনুপ্রবেশে জমি সঙ্কটে থাকা
পশ্চিমবঙ্গ প্রান ফিরে পায় সে কথা কেউ বলছে না যদি ভারতীয় মুসলমানরা আবার নিজভূমি
চায়। আমাদের বোঝা উচিত যে দেশ বিভাজন করে মুসলমান নিজেদের
রাষ্ট্র বুঝে নিয়েছে এবং যারা সেখানে না গিয়ে এখানে স্বেচ্ছায় পড়ে আছে সেটা তাদের
ব্যাপার, কিন্তু যুক্তি বলে আবার জমি চাইলে তাদের সীমান্তের কাঁটাতার পার করে দিতে হবে।
মহাপ্রভু
গৌরাঙ্গদেব বলে গেছেন, ‘সঙ্ঘ শক্তি কলৌযুগে’ কারন কলিযুগে সঙ্ঘবদ্ধ শক্তি ছাড়া বাঁচা অসম্ভব। ঠাকুর ঘরে সব হিন্দুদেবতার হাতে অস্ত্র কিন্তু কারো বাড়িতে আত্মরক্ষার জন্য
একটা লাঠিও নেই। এসব ভুলে আমরা নিজেদের বিপন্ন করে তুলেছি। বাংলার নিজস্ব মার্শাল আর্টস ‘রায় বেঁশে’ বা মহারাজা প্রতাপাদিত্য প্রচলিত লাঠিখেলা আজ লুপ্তপ্রায় আর
আমরা ক্যারাটে, কুংফুর কোচিং নিয়ে ব্লেক বেল্ট, ব্রাউন বেল্ট হই। সুখের কথা যে চিন্তাশীল
কিছু মানুষ ভাবনা চিন্তা করে এগুলো আবার নতুন করে চালু করছেন। জাতি বাঁচলে, রাষ্ট্র বাঁচলে তবেই আমরা সবাই বাঁচতে পারব নয়তো নয়।
রাজনীতিকদেরও
প্রয়োজন প্রাদেশিকতা-জাতিভেদ থেকে মুক্ত করে হিন্দুদের এক বিরাট শক্তিতে পরিণত করা
না হলে তাদের ব্যবসাও অচল হয়ে পড়বে। এম সি চাগলা, এ পি জে আব্দুল
কালাম প্রমুখ যে অল্পসংখ্যক উদারপন্থী মুসলমান দেশপ্রেমিক আছেন তাঁদের জন্যও
হিন্দু সমাজকে সংগঠিত রাখা দরকার। মুসলমান সমাজে
তাঁদের স্থান হয়নি, পাকিস্তান বা ইরানে থাকলে, ধর্মে মুসলমান কিন্তু জাতিতে হিন্দু বলার অপরাধে তাঁদের ঢিল
মেরে কোতল করা হত। সঙ্গীত সাম্রাজ্ঞী নূরজাহান তাঁর কাছে সুর প্রার্থনা ও
সঙ্গীত ঈশ্বর বলায়, পাকিস্তানে দাবী উঠল নতুন করে তাঁকে মুসলমান হতে হবে। হিন্দু প্রধান যে কোন রাজ্যে খৃষ্টান-মুসলমান মুখ্যমন্ত্রী হয় যেমন বিহারে
আব্দুল গফুর, মহারাষ্ট্রে আব্দুর রহমান আন্তুলে, রাজস্থানে বরকতউল্লা, আসামে আনোয়ারা তৈমুর, কেরালায় এন্টোনী, কর্নাটকায় অস্কার ফার্নান্ডেজ। কিন্তু কাশ্মীর, মেঘালয়া, নাগাল্যান্ড বা মিজোরামে কোন হিন্দু মুখ্যমন্ত্রীর কথা কেউ
কল্পনাও করতে পারবে না। অতএব যা কিছু শুভঙ্কর ও কল্যানময় তার জন্যই যে কোন মূল্যে
পৃথিবীর একশ কোটির হিন্দু জাতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
রামায়ণ, মহাভারত, বেদ, উপনিষদ, গীতা যাদের আধার, জগতের সেই
সর্বাপেক্ষা উদার, পরধর্মসহিষ্ণু, নিরীহ হিন্দুরা সভ্যতার হাজার হাজার বছর ধরে নিজেদের
সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা ধরে রেখেছে শুধু সর্বমানবেই নয়, পশুপক্ষী, কীটপতঙ্গ এমনকি কীটানুকীট, ধূলিকণায় দিব্যভাব উপলব্ধি করে যা বিজ্ঞানের বোসন (বিজ্ঞানী
সত্যেন্দ্রনাথ বসু আবিস্কৃত ও তাঁর নামে নামাঙ্কিত) কণা বা ঈশ্বর কণা আজ প্রমাণ
দিচ্ছে। মানবাত্মার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটেছে যাদের ধর্ম-দর্শনে সেই
আত্মিক শক্তিতে বলীয়ান হিন্দুজাতির কাছে সর্বাপেক্ষা সৎ, শুভ্র এবং পবিত্র
জীবনদর্শনে সমুজ্জ্বল হিন্দুত্বকে বাঁচাতে এখন সংগঠন শক্তি ও আদম্য আত্মবিশ্বাস
নিয়ে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। মহান হিন্দুজাতির
বর্তমান উত্তরসূরীরা দীর্ঘদিনের কালিমা রাম জন্মভূমির উপর থেকে বাবরি মসজিদ সরিয়ে
দিয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও ইস্কন এ পর্যন্ত পঞ্চাশ লক্ষ মুসলমান
ও দশ লক্ষ খৃষ্টানকে হিন্দু সমাজে ফিরিয়ে নিয়েছে। মীরাটের প্রাক্তন ইমাম সৈয়দ মেহেবুব আলী ও চেন্নাইয়ের প্রাক্তন ইমাম শেখ আমির
মহম্মদের মত শতাধিক পন্ডিত হিন্দুধর্ম গ্রহন করে তার প্রচার করছেন। প্রাক্তন খৃষ্টান মিশনারী এন্ড্যারসন মাউরি, হিপসন রয়, প্রমুখ হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন করে ভারতের উত্তরপূর্বে
হিন্দুধর্ম পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার কাজে যুক্ত রয়েছেন। দীর্ঘদিনের দাসত্ব কাটিয়ে যুবহিন্দু জাগ্রত হচ্ছে সিংহবিক্রমে আর হিমালয় থেকে
ইন্দু সরোবর (ভারত মহাসাগর), হিন্দুস্থানের নগরে-বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে হিন্দু সংগঠন ঠিক দাবানলের মতোই ছড়িয়ে পড়ছে।
No comments:
Post a Comment