অচিন্ত্য মজুমদার॥
টেবিলে বইয়া পড়তে পড়তে চোখে ঘুম আসে ,লাইট নিভাইয়া বিছানায় শুইয়া পড়ি হঠাৎ ঘুমের মইধ্যে মনে হইল আমার চোখ-মুখে গায়ে জ্বালাপোড়া করতাছে। আমি জ্বালাতন সইতে না পাইরা পুকুরে ঝাপাইয়া পড়ি,এর পর আমি কিছু কইতে পারিনা। জ্ঞান আহনের পর দেহি আমার মুখ আর শরীর পুইড়া কালা হইয়া গেছে। এসব কথা বলতে বলতে ভোলা সদর হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডের ৮৭ নং বেডে চিকিৎসাধীন বিথিকা রানী দাস সীমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার দড়ি চাঁদপুর গ্রামের ঘোষ বাড়ির হতদরিদ্র বাবুল চন্দ্র দাসের মেয়ে তজুমদ্দিন ফজিলেতুন্নেছা সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী বিথিকা রানী দাস সীমা (১৩)। বহু দিন ধরে স্থানীয় বেকারির ভ্যান ড্রাইভার সালাউদ্দিন (২১) ও তার সহযোগী মিরাজ (২০) স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে তাকে যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন ভাবে উত্তপ্ত করত। ৪জুন বুধবার স্কুল থেকে আসার পথে একই ভাবে উত্তপ্ত করা শুরু করে। এসময় সীমার সহপাঠিরা একত্রিত হয়ে ওই দুই বখাটেকে প্রতিহত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন রাতেই সালাউদ্দিন ও মিরাজ ঘুমন্ত সীমার মুখে এসিড ছুড়েছে বলে জানায় সীমা। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সালাউদ্দিন নামের এক বখাটেকে আটক করেছে। এসিড আক্রান্ত ছাত্রীর বাবা বাবুল চন্দ্র দাস জানান, ৪ জুলাই পড়াশুনা শেষে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পরে সীমা। এই সুযোগে মিরাজ ও সালাউদ্দিন নামের স্থানীয় দুই বখাটে ঘরের বেড়ার ফাঁক দিয়ে সীমার গায়ে এসিড ছুড়ে মারে , মুহুর্তের মধ্যে চিৎকার দিয়ে সীমা পাশের পুকুরে ঝাপিয়ে পরে নিজেকে রক্ষা করে ।এসময় তার চিৎকারে পাশের ঘরের লোকজন এসে পুকুর থেকে উদ্ধার করে তাকে রাত ৯টায় তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে ।পরে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। এদিকে, ভোলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডাঃ শরীফ আহমেদ জানান, সীমার বর্তমানে অবস্থা আশংকা জনক। তাকে পর্যবেক্ষনে করা হচ্ছে, সীমার বাম চোখটি নষ্ট হতে পারে। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় রেফার করা হবে। এব্যাপারে, তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, এঘটনায় এসিড আক্রান্ত সীমার অভিযোগের ভিত্তিতে সালাউদ্দিন নামের এক ভ্যান চালককে আটক করা হয়েছে। অপরজনকেও আটকের চেষ্টা চলছে।
No comments:
Post a Comment