নিরাপত্তাহীনতার কারণে বিপুল সংখ্যক হিন্দু পরিবার পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর জন্য নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান সরকার। বৃহস্পতিবার এক ইফতার অনুষ্ঠানে পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রেহমান মালিক সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, যে ২৫০টি হিন্দু পরিবারের ভারতে যাওয়ার জন্য ভিসা ইস্যু করা হয়েছে, তা একটি চক্রান্ত। অথচ ওই ঘটনাগুলোর কোনো তদন্তই করা হয়নি। তদন্ত না করেই এসব ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সিন্ধু ও বেলুচিস্তান প্রদেশের ৬০টি হিন্দু পরিবারের দোকানপাট লুট, ঘরবাড়িতে হামলা ভাংচুর এবং নারীদের জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠার পর তারা ভারতে যাচ্ছে কেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এরই মধ্যে সিন্ধু প্রদেশ থেকে নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় গত বুধবার রাতে ৯০ জন নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে এমন ৭টি হিন্দু পরিবার পাকিস্তান ছেড়ে ভারত চলে গেছে। এসব পরিবার জাকোবাবাদ, থুল ও বখশপুর অঞ্চলের অধিবাসী ছিল। একইভাবে গত ছয় মাস আগেও সিন্ধুর একই অঞ্চল থেকে ৫২টি হিন্দু পরিবার বাসে চড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। বখশপুরের বাসিন্দা অমেশ কুমার বলেন, তার পরিবার ছিল পেশায় ব্যবসায়ী। কিন্তু তাদের ঘরবাড়ি, দোকানপাট লুটপাট, মেয়েদের অপরণ, হয়রানি, নির্যাতন করে অবৈধভাবে নিজেদের মাতৃভূমি ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়। অমেশ জানান, নিজের ছেলেমেয়ে, পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে মাতৃভূমি ছাড়তে তারা বাধ্য হয়েছেন।
দি হিন্দু জেনারেল পঞ্চায়েতের প্রধান বাবু মহেশ কুমার লখানি বলেন, আইনের শাসনের অনুপস্থিতিই হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। বাবু মহেশ বলেন, এখানে হিন্দু মেয়েরা অপহরণের শিকার হচ্ছে। তাদের সম্প্রদায়ের লোকজন অন্যায় অত্যাচারের মুখোমুখি হচ্ছে সব সময়। অথচ তাদের ব্যাপারে কারও কোনো পরোয়া নেই। তিনি বলেন, তাদের সমস্যার ব্যাপারে সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তবে সিন্ধুর জাকোবাবাদের এসএসপি মোহাম্মদ ইউনুস চান্দিও দাবি করে বলেন, জেলার সংখ্যালঘুদের জন্য পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রয়েছে। তিনি বলেন, তাদের পাঠানো হয়নি, বরং তারা ভারত যাচ্ছে নিজেদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করার জন্য। তারা আবার শিগগিরই ফিরে আসবে। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মালিক জানিয়েছেন, জাকোবাবাদ থেকে হিন্দুদের ভারত যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। পুলিশের ভ্যারিফিকিশন সম্পন্ন করার পরই তাদের ভারতে যাওয়ার অনুমতি দেয়া যেতে পারে।
No comments:
Post a Comment