আগের পর্বের পর
আসলে সেই আদি থেকে সকল ব্রাহ্মণ ঋষি বশিষ্ঠ, ভার্গব, সুধামা, দধীচি ,অর্জুন মিশ্র ,কমলাকান্ত , কৃপাচার্য , জনক, বোপদেবের মত ছিলেন না, পাশাপাশি পাশাপাশি ঋত্বিকের মত ব্রাহ্মণ পুরোহিত ছিলেন।
পুরোহিত্য প্রথাটা বহু প্রাচীন। হিন্দু শাস্ত্রাদি অনুসারে অনুমান করা যায় এটি মানুষ ও এর বর্ণ সৃষ্টি থেকেই চালু হয়েছে। তবে জোর করে বলা যায় মানুষ সামাজিক ভাবে বসবাস শুরু করার পর থেকে পৌরহিত্য প্রথা চালু হয়েছে। কেননা সমাজবদ্ধ ভাবে বসবাস করতে গেলে সমাজকে পরিচালনা ও দিক নির্দেশনা দেবা জন্য কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হয়। আর সে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল ব্রাহ্মণদের হাতেই।
আমরা যদি প্রাচীণ ইতিহাসের পৃথিবীর অন্য অংশের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব পৌরহিত্য ব্যবস্থা ভারতবর্ষের বাইরেও ছিল এবং সেখানে পুরোহিত ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় সমাজের ব্রাহ্মণদের মতই একদল লোক। বিলুপ্ত মিশরীয় সভ্যতায় তন্ত্র মন্ত্রের প্রচলন ছিল আর এ কাজ করতঃ একশ্রেণীর লোকেরাই যারা রাজ প্রাসাদ থেকে রাজ্যের সর্বত্র আদরণীয় ও ক্ষমতাশালী ছিল। বিলুপ্ত রোম সাম্রাজ্যের দিকে তাকালে দেখা সেখানেও একশ্রেণীর লোক রোম সম্রাটদের কাছাকাছি ও আস্থাভাজন ছিল। বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিসকে হেমলক নামক বিষপানে হত্যা করার সম্রাট কর্তৃক প্রদত্ত বিধানে প্রাসাদের ভেতর ও বাইরের পুরোহিতদের হাত ছিল। কেননা দার্শনিক সক্রেটিস এর কাজ কর্ম ধর্ম বিরুদ্ধ বলে রোমের পুরোহিতরা সম্রাটকে প্রভাবিত করেছিলো। খৃষ্ট ধর্মের প্রবক্তা ঈশ্বর যিশুকে ক্রুশ বিদ্দ করে মারা হয়। সেখানে প্রথাগত পুরোহিতগন ক্ষমতাশালী রাজাকে উৎসাহিত করেছেন এ বলে যে যিশু প্রচলিত ধরমাচারের বিরুদ্ধে এবং রাজার বিরুদ্ধে সড়যন্ত্র করছে।
এতো গেল অন্য ধর্মের পৌরহিত্য প্রথার প্রাচীন রুপ। এখন দেখা যাক আধুনিক সভ্যতা হিন্দু ধর্ম ব্যতীত অন্যান্য ধর্মাবল্ভীদের মধ্যে হিন্দু ধর্মের আদলে ব্রাহ্মণ্য ও পৌরহিত্য প্রথা কিভাবে তৈরী এবং সগৌবরে টিকে আছে।
হ্যাঁ অন্যান্য ধর্মের পৌরহিত্য ব্যবস্থার কথা বলছি। এখন দেখা যাক আধুনিক সভ্যতা হিন্দু ধর্ম ব্যতীত অন্যান্য ধর্মাবল্ভীদের মধ্যে হিন্দু ধর্মের আদলে ব্রাহ্মণ্য ও পৌরহিত্য প্রথা কিভাবে তৈরী এবং সগৌবরে টিকে আছে।
হিন্দু ধর্মের বর্ণনানুযায়ী সমাজের যে অংশ শিক, আধ্যাত্বিক গুরু, শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত এবং বিধান কর্তার ভুমিকায় থাকেন তারা হলেন ব্রাম্মণ এবং পৌরহিত। সুতরাং এই শ্রেণীর মানুষ শুধু হিন্দু ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, অন্যান্য ধর্মাশ্রয়ী মানুষ সমাজেও আছে। আমি প্রথমে অতি সংক্ষেপ খ্রিষ্ট ধর্মে হিন্দু ধর্মের আদলে ব্রাম্মণ পৌরহিত্য প্রথা নিয়ে কিছু বলব এবং পর একই বিষয়ে যথাক্রমে বৌদ্ধ ও মুসলিম ধর্মের উপর সংক্ষেপ আলোকপাত করব।
খ্রিষ্ট ধর্ম ঃ-
আমরা খ্রিষ্ট ধর্মের দিকে তাকালে দেখতে পাই এধর্ম আর্বতিত হয় গির্জা মানে খ্রিষ্টানদের প্রার্থণা গৃহকে কেন্দ্র করে। আর গির্জায় পৌরহিত্য সবাই করতে পারেন না। খ্রিষ্ট ধর্ম চালুর শুরু থেকে ঈশ্বর যিশুকে কেন্দ্র করে একদল লোক গড়ে উঠেছে যারা খ্রিষ্টের বার্তা ও বিধি বিধান ধারণ করেন এবং অন্যের নিকট পৌঁছিয়ে দেন। এদের কে পাদ্রী বলা হয়। এরা বিশেষ কোন পরিবার থেকে আসা মানুষ নয়। সাধারণ খ্রিষ্ট পরিবারের এ সকল মানুষের জন্ম এবং এরা জীবনের শুরুতে সন্যাস ব্রত গ্রহণও ঈশ্বর যীশুর বাণী সাধারণ্যের কাছে পৌঁছানোর ব্রত নিয়ে সন্যান গ্রহণ করতে পারেন। এরা নিজ গৃহ ত্যাগ করে গির্জা ও গির্জা সংলগ্ন ধর্ম নিবাসে বসবাস করেন। সাধারণ পড়াশুনার পাশাপাশি খ্রিষ্ট ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন করতে থাকে এবং পাশাপাশি খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারে ব্রতী হন। এরা চির কুমার কিংবা কুমারী হন। এদের পদবী বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হয়। প্রথমে শিক্ষানবীশ পরে ব্রাদার/সিষ্টার এবং আরো পবে ফাদার/মাদার পদে অভিশিক্ত হন। পূরুষ পার্দ্রী রা নিজেকে ঈশ্বরের সন্তান মনে করেন আর নারীরা নিজেকে ঈশ্বর যিশুর স্ত্রী ও যীশুর সকল সন্তান (অর্থাৎ সকল জীবকে যীশুর সন্তান) রুপে কল্পনা করে জীব সেবায় আত্ম নিয়োগ করেন। এরা শুরুমাত্র খ্রিষ্ট ধর্মীয় বিধানানুসারে খ্রিস্ট সমাজ রক্ষনাবেক্ষন করেন না, এরা আর্থিক ও সামাজিক কল্যাণ মূলক কাজ গুলির সাথেও সম্পৃক্ত থাকেন।
খ্রিস্টানদের কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলির দিকে দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পারি এধরনের বড় বড় পদে আসীন হয়ে আছেন খ্রিষ্টান পাদ্রীরাই। খ্রিষ্ট পরবর্তী খুব কম সময়ের মধ্যে খ্রিষ্ট সমাজের এ শ্রেণীর মানুষ বুঝে গেছেন শুধুমাত্র শুকনো খটখটে ধর্ম কথা বলে কাজ হবে না। বাস্তÍবিক বিদ্যায় উচ্চতর জ্ঞানার্জন, অর্থ উপার্জন ও তা কল্যাণ কর কাজে ব্যয় করতে হবে। আর্তের সেবা করতে হবে। শুধুমাত্র ধর্মের বাণী শুনালে তা টেকশই হবে না, ধর্মের বাণী পৌঁছানের পর তা টেকশই করার জন্য মানুষের অন্যান্য সমস্যা গুলিতে সহমর্মী হতে হবে। খ্রিষ্ট ধর্ম বিপননের জন্য স্থান কাল পাত্র ভেদে নিজেদের মধ্যেও পরিবর্তন আনতে হবে। খ্রিস্টান পাদ্রীগন তাই করে থাকেন। তারা যে ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে ধর্ম প্রচার করেন তখন তার যথা সাধ্য চেষ্টা করেন যেন নতুন দীক্ষিত মানুষ টি তার পরবর্তী কালচার ও কৃস্টির মধ্যে থেকে খ্রিষ্ট ধর্ম ধারণ করুক এবং একই কালচারের মানুষকে আকৃষ্ট করুক। এজন্য দেখবেন স্থান কাল পাত্র ভেদে খ্রিষ্টানদের কৃষ্টি আলাদা। আমেরিকায় এমন এমন গীর্জা আছে যেখানে সবাই নগ্ন হয়ে প্রার্থনা করেন। আবার এমন এমন গীর্জা আছে যেগুলিতে হুইচ বা আত্মার উপসনা করেন। আবার আমাদের দেশে সমতল ও পাহাড়িয়া অঞ্চলের খৃষ্টাণদের কালচার ও আলাদা।
খ্রিষ্টাদের এ ব্যবস্থার কারণে বর্তমান বির্শ্বে জ্ঞানে গরীমায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে অবস্থান করতে সহায়তা করেছে। খ্রিষ্টানদের পাদ্রীশীপে কিছুটা নমনীয় অবস্থা ও আছে। যে কেহ সংসার করতে চাইলে পাদ্রীশীপ ত্যাগ করে পুরোপুরি সংসারী হতে পারেন।
খ্রিষ্টান পার্দ্রীদের ধর্ম বিষয়ে ও ধর্মীয় আববরনে কঠোতার ইতিহাস যেমন অনেক, ঠিক তেমনি মানব কল্যানে কাজ করে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে। খিষ্ট্রান পাদ্রীদের বিবাহ, ধর্মীয় সামাজিক রীতি নীতি ও অন্যান্য বিষয়ে বিধান দানের মতা পূর্বেও ছিল এখনো আছে।
হিন্দু ধর্মের উপনিষদের নির্যাস শ্রী গীতায় যেমন বলা আছে, গুন ও কর্ম ভেদে বর্ণ নির্ধারন হবে, খিষ্টান পাদ্রীরা ঠিক তাই। তারা কোন বিশেষ পরিবারের জন্মগ্রহণ করে পাদ্রী বা পুরোহিত হয়নি। যে যেখানে জন্ম গ্রহণ করেছেন শুধু শিক্ষা, গুন ও কর্ম ভেদে এরা সবাই পাদ্রী বা খ্রিষ্টান পুরোহিত হয়েছেন।
বৌদ্ধ ধর্মে ব্রাম্মণ্য ও পৌরহিত্য-
হিন্দু ধর্মের মতই বৌদ্ধ সমাজের একটি অংশ শিক্ষক, আধ্যাত্বিক গুরু, শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত এবং বিধান কর্তার ভুমিকায় থাকেন তারা হলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু। এরা হিন্দু ধর্মের মত একটি বিশেষ বংশ বা পরিবার কিংবা উত্তরোরধিকার সূত্রে ভিক্ষু হন না। যে কোন পরিবারের বাবা মা কিংবা কেহ যদি ভিক্ষু হতে ইচ্ছা পোষন করেন, তাহলে তাকে পরিবারের সকলের সংঘ ত্যাগ করে বৌদ্ধদের মন্দির প্যাগোডায় ভিক্ষুদের নিকট ধর্ম শাস্ত্র, রীতি নীতি শিক্ষার জন্য দীা নিতে হয়। গৃহত্যাগ করার পর ধর্ম বিষয়ে এ সকল শিক্ষার্থী গেরুয়া পোষাক পরিধান করিরে শুচি শুদ্ধ ভাবে অধ্যয়ন করে। এ সময়টা তিনি বাইরের জগত থেকে প্রায় আলাদাই থাকতে হয়। এভাবে শিক্ষা সমাপনাত্তে একসময় ভান্তে উন্নীত হয়। পরে ভিক্ষুত্ব পায়। ভিক্ষু অর্থাৎ জ্ঞানী।
বৌদ্ধে সমাজের উপর ভিক্ষুদের প্রভাব অনেক বেশী থাকে। ভিক্ষুরা বৌদ্ধ স
অরুন চন্দ্র মজুমদার
মহারাজ সোমক কাতর কন্ঠে রাজপুরোহিত ঋত্বিককে পুত্র স্নেহের জ্বালায় রাজকার্যে বিঘ্ন ঘটেছে, ভবিষ্যতে এমনটা আর হবে না। কিন্তু ঋত্বিক আরো তীর্যকভাবে বৎসনা করে বলল রাজন তুমি পুত্র স্নেহে অন্ধ, তুমি তোমার কথা রাখতে পারবে না, তবে একটা উপায় আছে যা থেকে তুমি পুত্র স্নেহের জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে পার, কিন্তু তা বড়ই কঠিন কাজ, তোমার মত রাজার পক্ষে সম্ভব নয়। মহারাজ রাজপুরোহিত ঋত্বিকের শঠতা বুঝতে না পেরে সহজ সরল ভাবেই বলে বসলেন প্রভূ আমি এ সভাসদ মাঝে কথা দিচ্ছি সন্তান তূল্য প্রজাপালনের যত কঠিনই হোক কাজটি আমি করব, আপনি শুধু উপায় বলুন। রাজপুরোহিত সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি রাজসভার সবাইকে রাজার শপথ স্মরন করিয়ে উপায় বললেন যে যেহেতু পুত্র স্নেহবশে রাজকার্যে বিঘ্ন হচ্ছে তাই এর থেকে মুক্তি পাবার জন্য পথ একটাই তা হলো স্নেহের কারণটিকে অগ্নিতে বিষর্জন দেয়া। রাজপুরোহিত ঋত্বিককের এধরনের বিধানে সভায় উপস্থিত সকলে মুহুর্তের জন্য নির্বাক হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর নিরবতা ভেঙ্গে উপস্থিত সভাসদের অনেকে পুরোহিতকে তার এ বিধান ফিরিয়ে নেবার অনুরোধ করল। রাজপ
মহারাজ সোমক কাতর কন্ঠে রাজপুরোহিত ঋত্বিককে পুত্র স্নেহের জ্বালায় রাজকার্যে বিঘ্ন ঘটেছে, ভবিষ্যতে এমনটা আর হবে না। কিন্তু ঋত্বিক আরো তীর্যকভাবে বৎসনা করে বলল রাজন তুমি পুত্র স্নেহে অন্ধ, তুমি তোমার কথা রাখতে পারবে না, তবে একটা উপায় আছে যা থেকে তুমি পুত্র স্নেহের জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে পার, কিন্তু তা বড়ই কঠিন কাজ, তোমার মত রাজার পক্ষে সম্ভব নয়। মহারাজ রাজপুরোহিত ঋত্বিকের শঠতা বুঝতে না পেরে সহজ সরল ভাবেই বলে বসলেন প্রভূ আমি এ সভাসদ মাঝে কথা দিচ্ছি সন্তান তূল্য প্রজাপালনের যত কঠিনই হোক কাজটি আমি করব, আপনি শুধু উপায় বলুন। রাজপুরোহিত সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি রাজসভার সবাইকে রাজার শপথ স্মরন করিয়ে উপায় বললেন যে যেহেতু পুত্র স্নেহবশে রাজকার্যে বিঘ্ন হচ্ছে তাই এর থেকে মুক্তি পাবার জন্য পথ একটাই তা হলো স্নেহের কারণটিকে অগ্নিতে বিষর্জন দেয়া। রাজপুরোহিত ঋত্বিককের এধরনের বিধানে সভায় উপস্থিত সকলে মুহুর্তের জন্য নির্বাক হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর নিরবতা ভেঙ্গে উপস্থিত সভাসদের অনেকে পুরোহিতকে তার এ বিধান ফিরিয়ে নেবার অনুরোধ করল। রাজপ
ুরোহিত
করো কথা না শুণে বরং রাজাকে রাজধর্ম ও রাজ শপথের কথাটা তীর্যকভাবে মনে করিয়ে দিলেন। শেষে মহারাজ সভাসদে
দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধায়ত কাতর কন্ঠে সবার উদ্দশ্যে জানালেন তিনি জানতেন না রাজপুরোহিত
পাষানতম কঠিন বিধান জানাবেন। যেহেতু
তিনি প্রজাপালক রাজা এবং রাজপুরোহিতের বিধান যত কঠিনই হোক রক্ষা করবেন বলে কথা
দিয়েছেন সুতরাং তিনি রাজপুরোহিতকে বললেন যজ্ঞের আয়োজন করতে এবং রাজপুরোহিতই তার এ
বিধান কার্যকর করুক।
রাজার এ আদেশ অন্তপুরে পৌঁছানোর পর কান্নার রোল উঠল, রাজসভার সবাই পুরোহিতকে ধিক্কার জানাল, কেউ কেউ রাজপুরোহিত পুণঃ পুণঃ অনুরোধ করল এ বিধান প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু কোন কিছুই পুরৌহিত্বের অহংকারের কাছে টিকল না। শেষে যজ্ঞের আগুন জ্বলল, রাজ পুরোহিত ঋত্বিক অন্তপুরে মায়ের কোল থেকে নিস্পাপ শিশু পুত্রটিকে এনে ঐ আগুনে আহুতি দিল। মহারাজ সোমক কথা রাখার জন্য রাজ্য পূঁজিত হলেন, মৃত্যুর পর স্বর্গে গেলেন আর রাজ পুরোহিত ঋত্বিক ব্রাহ্মণত্ব ও পুরৌহিত্বের অহংকারের রাজ পূজা পাওয়া সত্বেও ধিক্কৃত ছিলেন ও মৃত্যুর পর এ কাজের জন্য রাজ পুরোহিত ঋত্বিক নরকগামী হলেন।
রাজার এ আদেশ অন্তপুরে পৌঁছানোর পর কান্নার রোল উঠল, রাজসভার সবাই পুরোহিতকে ধিক্কার জানাল, কেউ কেউ রাজপুরোহিত পুণঃ পুণঃ অনুরোধ করল এ বিধান প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু কোন কিছুই পুরৌহিত্বের অহংকারের কাছে টিকল না। শেষে যজ্ঞের আগুন জ্বলল, রাজ পুরোহিত ঋত্বিক অন্তপুরে মায়ের কোল থেকে নিস্পাপ শিশু পুত্রটিকে এনে ঐ আগুনে আহুতি দিল। মহারাজ সোমক কথা রাখার জন্য রাজ্য পূঁজিত হলেন, মৃত্যুর পর স্বর্গে গেলেন আর রাজ পুরোহিত ঋত্বিক ব্রাহ্মণত্ব ও পুরৌহিত্বের অহংকারের রাজ পূজা পাওয়া সত্বেও ধিক্কৃত ছিলেন ও মৃত্যুর পর এ কাজের জন্য রাজ পুরোহিত ঋত্বিক নরকগামী হলেন।
আসলে সেই আদি থেকে সকল ব্রাহ্মণ ঋষি বশিষ্ঠ, ভার্গব, সুধামা, দধীচি ,অর্জুন মিশ্র ,কমলাকান্ত , কৃপাচার্য , জনক, বোপদেবের মত ছিলেন না, পাশাপাশি পাশাপাশি ঋত্বিকের মত ব্রাহ্মণ পুরোহিত ছিলেন।
পুরোহিত্য প্রথাটা বহু প্রাচীন। হিন্দু শাস্ত্রাদি অনুসারে অনুমান করা যায় এটি মানুষ ও এর বর্ণ সৃষ্টি থেকেই চালু হয়েছে। তবে জোর করে বলা যায় মানুষ সামাজিক ভাবে বসবাস শুরু করার পর থেকে পৌরহিত্য প্রথা চালু হয়েছে। কেননা সমাজবদ্ধ ভাবে বসবাস করতে গেলে সমাজকে পরিচালনা ও দিক নির্দেশনা দেবা জন্য কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতে হয়। আর সে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল ব্রাহ্মণদের হাতেই।
আমরা যদি প্রাচীণ ইতিহাসের পৃথিবীর অন্য অংশের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাব পৌরহিত্য ব্যবস্থা ভারতবর্ষের বাইরেও ছিল এবং সেখানে পুরোহিত ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় সমাজের ব্রাহ্মণদের মতই একদল লোক। বিলুপ্ত মিশরীয় সভ্যতায় তন্ত্র মন্ত্রের প্রচলন ছিল আর এ কাজ করতঃ একশ্রেণীর লোকেরাই যারা রাজ প্রাসাদ থেকে রাজ্যের সর্বত্র আদরণীয় ও ক্ষমতাশালী ছিল। বিলুপ্ত রোম সাম্রাজ্যের দিকে তাকালে দেখা সেখানেও একশ্রেণীর লোক রোম সম্রাটদের কাছাকাছি ও আস্থাভাজন ছিল। বিখ্যাত দার্শনিক সক্রেটিসকে হেমলক নামক বিষপানে হত্যা করার সম্রাট কর্তৃক প্রদত্ত বিধানে প্রাসাদের ভেতর ও বাইরের পুরোহিতদের হাত ছিল। কেননা দার্শনিক সক্রেটিস এর কাজ কর্ম ধর্ম বিরুদ্ধ বলে রোমের পুরোহিতরা সম্রাটকে প্রভাবিত করেছিলো। খৃষ্ট ধর্মের প্রবক্তা ঈশ্বর যিশুকে ক্রুশ বিদ্দ করে মারা হয়। সেখানে প্রথাগত পুরোহিতগন ক্ষমতাশালী রাজাকে উৎসাহিত করেছেন এ বলে যে যিশু প্রচলিত ধরমাচারের বিরুদ্ধে এবং রাজার বিরুদ্ধে সড়যন্ত্র করছে।
এতো গেল অন্য ধর্মের পৌরহিত্য প্রথার প্রাচীন রুপ। এখন দেখা যাক আধুনিক সভ্যতা হিন্দু ধর্ম ব্যতীত অন্যান্য ধর্মাবল্ভীদের মধ্যে হিন্দু ধর্মের আদলে ব্রাহ্মণ্য ও পৌরহিত্য প্রথা কিভাবে তৈরী এবং সগৌবরে টিকে আছে।
হ্যাঁ অন্যান্য ধর্মের পৌরহিত্য ব্যবস্থার কথা বলছি। এখন দেখা যাক আধুনিক সভ্যতা হিন্দু ধর্ম ব্যতীত অন্যান্য ধর্মাবল্ভীদের মধ্যে হিন্দু ধর্মের আদলে ব্রাহ্মণ্য ও পৌরহিত্য প্রথা কিভাবে তৈরী এবং সগৌবরে টিকে আছে।
হিন্দু ধর্মের বর্ণনানুযায়ী সমাজের যে অংশ শিক, আধ্যাত্বিক গুরু, শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত এবং বিধান কর্তার ভুমিকায় থাকেন তারা হলেন ব্রাম্মণ এবং পৌরহিত। সুতরাং এই শ্রেণীর মানুষ শুধু হিন্দু ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, অন্যান্য ধর্মাশ্রয়ী মানুষ সমাজেও আছে। আমি প্রথমে অতি সংক্ষেপ খ্রিষ্ট ধর্মে হিন্দু ধর্মের আদলে ব্রাম্মণ পৌরহিত্য প্রথা নিয়ে কিছু বলব এবং পর একই বিষয়ে যথাক্রমে বৌদ্ধ ও মুসলিম ধর্মের উপর সংক্ষেপ আলোকপাত করব।
খ্রিষ্ট ধর্ম ঃ-
আমরা খ্রিষ্ট ধর্মের দিকে তাকালে দেখতে পাই এধর্ম আর্বতিত হয় গির্জা মানে খ্রিষ্টানদের প্রার্থণা গৃহকে কেন্দ্র করে। আর গির্জায় পৌরহিত্য সবাই করতে পারেন না। খ্রিষ্ট ধর্ম চালুর শুরু থেকে ঈশ্বর যিশুকে কেন্দ্র করে একদল লোক গড়ে উঠেছে যারা খ্রিষ্টের বার্তা ও বিধি বিধান ধারণ করেন এবং অন্যের নিকট পৌঁছিয়ে দেন। এদের কে পাদ্রী বলা হয়। এরা বিশেষ কোন পরিবার থেকে আসা মানুষ নয়। সাধারণ খ্রিষ্ট পরিবারের এ সকল মানুষের জন্ম এবং এরা জীবনের শুরুতে সন্যাস ব্রত গ্রহণও ঈশ্বর যীশুর বাণী সাধারণ্যের কাছে পৌঁছানোর ব্রত নিয়ে সন্যান গ্রহণ করতে পারেন। এরা নিজ গৃহ ত্যাগ করে গির্জা ও গির্জা সংলগ্ন ধর্ম নিবাসে বসবাস করেন। সাধারণ পড়াশুনার পাশাপাশি খ্রিষ্ট ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন করতে থাকে এবং পাশাপাশি খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারে ব্রতী হন। এরা চির কুমার কিংবা কুমারী হন। এদের পদবী বিভিন্ন সময় পরিবর্তন হয়। প্রথমে শিক্ষানবীশ পরে ব্রাদার/সিষ্টার এবং আরো পবে ফাদার/মাদার পদে অভিশিক্ত হন। পূরুষ পার্দ্রী রা নিজেকে ঈশ্বরের সন্তান মনে করেন আর নারীরা নিজেকে ঈশ্বর যিশুর স্ত্রী ও যীশুর সকল সন্তান (অর্থাৎ সকল জীবকে যীশুর সন্তান) রুপে কল্পনা করে জীব সেবায় আত্ম নিয়োগ করেন। এরা শুরুমাত্র খ্রিষ্ট ধর্মীয় বিধানানুসারে খ্রিস্ট সমাজ রক্ষনাবেক্ষন করেন না, এরা আর্থিক ও সামাজিক কল্যাণ মূলক কাজ গুলির সাথেও সম্পৃক্ত থাকেন।
খ্রিস্টানদের কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলির দিকে দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পারি এধরনের বড় বড় পদে আসীন হয়ে আছেন খ্রিষ্টান পাদ্রীরাই। খ্রিষ্ট পরবর্তী খুব কম সময়ের মধ্যে খ্রিষ্ট সমাজের এ শ্রেণীর মানুষ বুঝে গেছেন শুধুমাত্র শুকনো খটখটে ধর্ম কথা বলে কাজ হবে না। বাস্তÍবিক বিদ্যায় উচ্চতর জ্ঞানার্জন, অর্থ উপার্জন ও তা কল্যাণ কর কাজে ব্যয় করতে হবে। আর্তের সেবা করতে হবে। শুধুমাত্র ধর্মের বাণী শুনালে তা টেকশই হবে না, ধর্মের বাণী পৌঁছানের পর তা টেকশই করার জন্য মানুষের অন্যান্য সমস্যা গুলিতে সহমর্মী হতে হবে। খ্রিষ্ট ধর্ম বিপননের জন্য স্থান কাল পাত্র ভেদে নিজেদের মধ্যেও পরিবর্তন আনতে হবে। খ্রিস্টান পাদ্রীগন তাই করে থাকেন। তারা যে ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে ধর্ম প্রচার করেন তখন তার যথা সাধ্য চেষ্টা করেন যেন নতুন দীক্ষিত মানুষ টি তার পরবর্তী কালচার ও কৃস্টির মধ্যে থেকে খ্রিষ্ট ধর্ম ধারণ করুক এবং একই কালচারের মানুষকে আকৃষ্ট করুক। এজন্য দেখবেন স্থান কাল পাত্র ভেদে খ্রিষ্টানদের কৃষ্টি আলাদা। আমেরিকায় এমন এমন গীর্জা আছে যেখানে সবাই নগ্ন হয়ে প্রার্থনা করেন। আবার এমন এমন গীর্জা আছে যেগুলিতে হুইচ বা আত্মার উপসনা করেন। আবার আমাদের দেশে সমতল ও পাহাড়িয়া অঞ্চলের খৃষ্টাণদের কালচার ও আলাদা।
খ্রিষ্টাদের এ ব্যবস্থার কারণে বর্তমান বির্শ্বে জ্ঞানে গরীমায় গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে অবস্থান করতে সহায়তা করেছে। খ্রিষ্টানদের পাদ্রীশীপে কিছুটা নমনীয় অবস্থা ও আছে। যে কেহ সংসার করতে চাইলে পাদ্রীশীপ ত্যাগ করে পুরোপুরি সংসারী হতে পারেন।
খ্রিষ্টান পার্দ্রীদের ধর্ম বিষয়ে ও ধর্মীয় আববরনে কঠোতার ইতিহাস যেমন অনেক, ঠিক তেমনি মানব কল্যানে কাজ করে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে। খিষ্ট্রান পাদ্রীদের বিবাহ, ধর্মীয় সামাজিক রীতি নীতি ও অন্যান্য বিষয়ে বিধান দানের মতা পূর্বেও ছিল এখনো আছে।
হিন্দু ধর্মের উপনিষদের নির্যাস শ্রী গীতায় যেমন বলা আছে, গুন ও কর্ম ভেদে বর্ণ নির্ধারন হবে, খিষ্টান পাদ্রীরা ঠিক তাই। তারা কোন বিশেষ পরিবারের জন্মগ্রহণ করে পাদ্রী বা পুরোহিত হয়নি। যে যেখানে জন্ম গ্রহণ করেছেন শুধু শিক্ষা, গুন ও কর্ম ভেদে এরা সবাই পাদ্রী বা খ্রিষ্টান পুরোহিত হয়েছেন।
বৌদ্ধ ধর্মে ব্রাম্মণ্য ও পৌরহিত্য-
হিন্দু ধর্মের মতই বৌদ্ধ সমাজের একটি অংশ শিক্ষক, আধ্যাত্বিক গুরু, শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত এবং বিধান কর্তার ভুমিকায় থাকেন তারা হলেন বৌদ্ধ ভিক্ষু। এরা হিন্দু ধর্মের মত একটি বিশেষ বংশ বা পরিবার কিংবা উত্তরোরধিকার সূত্রে ভিক্ষু হন না। যে কোন পরিবারের বাবা মা কিংবা কেহ যদি ভিক্ষু হতে ইচ্ছা পোষন করেন, তাহলে তাকে পরিবারের সকলের সংঘ ত্যাগ করে বৌদ্ধদের মন্দির প্যাগোডায় ভিক্ষুদের নিকট ধর্ম শাস্ত্র, রীতি নীতি শিক্ষার জন্য দীা নিতে হয়। গৃহত্যাগ করার পর ধর্ম বিষয়ে এ সকল শিক্ষার্থী গেরুয়া পোষাক পরিধান করিরে শুচি শুদ্ধ ভাবে অধ্যয়ন করে। এ সময়টা তিনি বাইরের জগত থেকে প্রায় আলাদাই থাকতে হয়। এভাবে শিক্ষা সমাপনাত্তে একসময় ভান্তে উন্নীত হয়। পরে ভিক্ষুত্ব পায়। ভিক্ষু অর্থাৎ জ্ঞানী।
বৌদ্ধে সমাজের উপর ভিক্ষুদের প্রভাব অনেক বেশী থাকে। ভিক্ষুরা বৌদ্ধ স
মাজে
সকলের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। এরা সাধারণ
বৌদ্ধদের কাজে সৌম্য,
শান্ত
ও শান্তির প্রতীক রুপে পুজিত হয়। বৌদ্ধ সমাজে
সকল সামাজিক, আধ্যাত্বিক্ত, ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কার্যের নিয়ম
কানুন গুলিতে পৌরহিত্য করেন।
হিন্দু ধর্মে চারটি বর্ণের কথা বলা আছে। এ বর্ন গুলি ব্যক্তির গুন ও কর্ম ভেদে বর্ণ নির্ধারন হবে বলে বলা থাকলেও হিন্দু ধর্মের প্রচলিত রীতি অনুসারে ব্রাম্মনের ছেলেই উপনয়ের অধিকারী হয় এবং পরে ব্রাম্মন পৌরহিত্য করেন। কিন্তু বৌদ্ধদের ধর্মে প্রচলিত প্রথার পরিবর্ততে আমাদের বেদোক্তো নিয়মেই অর্থাৎ ব্যক্তির গুন ও কর্ম ভেদে ভিুত্ব অর্জন করে পৌরহিত্য করে। বৌদ্ধবা হিন্দু না হয়েও বেদোক্ত নিয়ম পালন করেন।
হিন্দু ধর্মে চারটি বর্ণের কথা বলা আছে। এ বর্ন গুলি ব্যক্তির গুন ও কর্ম ভেদে বর্ণ নির্ধারন হবে বলে বলা থাকলেও হিন্দু ধর্মের প্রচলিত রীতি অনুসারে ব্রাম্মনের ছেলেই উপনয়ের অধিকারী হয় এবং পরে ব্রাম্মন পৌরহিত্য করেন। কিন্তু বৌদ্ধদের ধর্মে প্রচলিত প্রথার পরিবর্ততে আমাদের বেদোক্তো নিয়মেই অর্থাৎ ব্যক্তির গুন ও কর্ম ভেদে ভিুত্ব অর্জন করে পৌরহিত্য করে। বৌদ্ধবা হিন্দু না হয়েও বেদোক্ত নিয়ম পালন করেন।
ইসলাম ধর্মে ব্রাম্মণ্যবাদ ও
পৌরহিত্য ঃ-
আমাদের দেশ মুসলিম প্রধান দেশ। তাই আমরা হিন্দুরা যতটা আমাদের বিষয়ে জানি তার চেয়ে অধিক জানি এ ধর্মটির বিষয়ে । কেননা জানার সুযোগ নানান ভাবে এসেছে। বর্ণ শিক্ষার পাঠ্য বই থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ ডিগ্রিটার পাঠ্য বইয়ের মধ্যে এ ধর্ম বিষয়ে কিছু না কিছু আছে। তাছাড়া প্রতিদিনের পত্র পত্রিকা, রাস্তায় চলার সময় মসজিদ কিংবা খোলা মাঠ থেকে ভেসে আসা ওয়াজ মাহফিল ইত্যাদি তো আছেই। ইসলামী বিধান মোতাবেক এদের এক আল্লা আর তার পর রসুল ব্যতীত আর কেহ নাই। আমার বলার বিষয় হলো হিন্দু ধর্মের আদলে ইসলাম ধর্মে ব্রাম্মন্যবাদ ও পৌরহিত্য প্রথা। কথা শুনে শুধু ইসলামানুসারী মানুষ নয় আমার হিন্দু ধর্মীয়রাও রাগ করতে পারেন। বলতে পারেন এ ধর্মে আবার পূজো অর্চ্চনা হয় নাকি? না পূজা অর্চ্চনা হয় না। তবে বেদে বর্ণ চুতষ্ঠয়ের মধ্যে মানুষের মধ্য
আমাদের দেশ মুসলিম প্রধান দেশ। তাই আমরা হিন্দুরা যতটা আমাদের বিষয়ে জানি তার চেয়ে অধিক জানি এ ধর্মটির বিষয়ে । কেননা জানার সুযোগ নানান ভাবে এসেছে। বর্ণ শিক্ষার পাঠ্য বই থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ ডিগ্রিটার পাঠ্য বইয়ের মধ্যে এ ধর্ম বিষয়ে কিছু না কিছু আছে। তাছাড়া প্রতিদিনের পত্র পত্রিকা, রাস্তায় চলার সময় মসজিদ কিংবা খোলা মাঠ থেকে ভেসে আসা ওয়াজ মাহফিল ইত্যাদি তো আছেই। ইসলামী বিধান মোতাবেক এদের এক আল্লা আর তার পর রসুল ব্যতীত আর কেহ নাই। আমার বলার বিষয় হলো হিন্দু ধর্মের আদলে ইসলাম ধর্মে ব্রাম্মন্যবাদ ও পৌরহিত্য প্রথা। কথা শুনে শুধু ইসলামানুসারী মানুষ নয় আমার হিন্দু ধর্মীয়রাও রাগ করতে পারেন। বলতে পারেন এ ধর্মে আবার পূজো অর্চ্চনা হয় নাকি? না পূজা অর্চ্চনা হয় না। তবে বেদে বর্ণ চুতষ্ঠয়ের মধ্যে মানুষের মধ্য
ে
ব্রাম্মনদের বিষয়ে যে ব্যাখা দেয়া আছে তদানুযায়ী একদল লোক আছেন যারা ইসলাম ধর্মীয়
সমাজের শিক্ষক, আধ্যাত্বিক
গুরু, ধর্ম বিষয়ে
শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত এবং ফতোয়া দানের (বিধান কর্তার) ভুমিকায় থাকেন। তারা হলেন মৌলভী, হাফেজ,
মুফতি, শায়েখ ইত্যাদি। যে নামেই হোক না কেন এদের সকলের কাজ কিন্তু একটা, তা হল ধর্ম শাস্ত্র অধ্যয়ন, রক্ষনাবেক্ষন, শিক্ষাদান, দাওয়াত (শুধুনিজ ধর্মের লোক নয়, অন্যধর্মের লোকদেরকেও), হাদিস মোতবেক ফতোয়া (ধর্মীয় রায়)
ইত্যাদি।
আমরা এ ধর্মটি শুরুর দিকে তাকালে দেখতে পাব, এ ধর্মের প্রচারক নবীর বিশেষ কয়েকজন সাহাবী ছিলেন, যাহা নবীর বানী ও ধর্ম প্রচারে সাহায্য করেছেন, বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার মূহুর্তে ফতোয়া বা ইসলামী রায় দিতে নবীকে সাহায্য করেছেন। পরবর্তী নবীর মাধ্যমে যখন কোরান নাজিল (আবির্ভাব) হয়, তখন নবী একদল লোক প্রস্তুত করেন যারা ৩০ পারা (অধ্যায়ের) কোরানের প্রথমে এক একজন এক এক অধ্যায় পরবর্তীতে সম্পূর্ণ কোরান মুখ¯Í করার পর হাফেজ পদবী দিয়ে সমাজের সম্মানিত আসনে অধিষ্ঠিত করিয়েছেন (তখন কোরান পু¯Íক আকারে প্রকাশিত হয়নি)। নবী ও নবী পরবতী খলিফাগন এদেরকে হাদিস তৈরী এবং কোরান ও হাদিস অনুযায়ী রায় প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে খলিফা কিংবা বাদশাগন তাদেরকে মসনদের পাশের আসনে বসিয়েছেন। অনেকটা বৈদিক যুগে হিন্দু রাজা মহারাজারা যা করেছিলেন।
মুসলিম সমাজের এ শ্রেণীর মানুষ গুলি এ পদ্ধতিটি চালু হবার পর থেকে সমাজের উচু আসনে অধিষ্ঠিত হয়ে আছেন। তাদের আর্থিক কষ্ট কিংবা সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করতে হত না। যেমনটি হিন্দু সমাজে সেই বৈদিক যুগেও একটি শব্দ ছিল দরিদ্র ব্রাম্মন, কিন্তু কদাচিত কখনো শুনা কিংবা দেখা যায়নি দরিদ্র মৌলভী, হাফেজ, ক্কারী, শায়েখ ইত্যাদি।
যাহোক, হিন্দু সমাজের সমাজে ধর্ম রক্ষনাবেক্ষন, সংরক্ষন, নির্দেশনা দান, ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট কাজের মত ইসলাম ধর্মেও মৌলভী, হাফেজ, ক্কারী, শায়েখদের মত এত একদল লোক কাজ গুলি করে থাকে। নতুন কোন জন্ম কিংবা কারো মৃত্যু, নিকাহ (বিবাহ), তালাক (ছাড়াছাড়ি), হিন্দুদের পূর্জাচ্চনার মত মিলাদ/মৌলুদ ইত্যাদিতে এ শ্রেণীর যে কোন একজন এমামতি (পৌরহিত্য) করেন। দৈনন্দিন নামায পরিচালনার ক্ষেত্রেও এ শ্রেণীর একজনই পরিচালনা করেন।
হিন্দু ধর্মের বেদোক্ত নিয়মেই অর্থাৎ ব্যক্তির গুন ও কর্ম ভেদে যে কেহ এ দলের অংশীদারিত্ব গ্রহণ করতে পারে। কেহ মৌলভীর ছেলে মৌলবী না হয়ে ধর্মীয় পড়াশুনা এবং কার্যাবলীতে অংশগ্রহনের গুন অর্জনের মাধ্যমে এ দলের অংশ গ্রহণ করতে পারে।
আমরা এ ধর্মটি শুরুর দিকে তাকালে দেখতে পাব, এ ধর্মের প্রচারক নবীর বিশেষ কয়েকজন সাহাবী ছিলেন, যাহা নবীর বানী ও ধর্ম প্রচারে সাহায্য করেছেন, বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার মূহুর্তে ফতোয়া বা ইসলামী রায় দিতে নবীকে সাহায্য করেছেন। পরবর্তী নবীর মাধ্যমে যখন কোরান নাজিল (আবির্ভাব) হয়, তখন নবী একদল লোক প্রস্তুত করেন যারা ৩০ পারা (অধ্যায়ের) কোরানের প্রথমে এক একজন এক এক অধ্যায় পরবর্তীতে সম্পূর্ণ কোরান মুখ¯Í করার পর হাফেজ পদবী দিয়ে সমাজের সম্মানিত আসনে অধিষ্ঠিত করিয়েছেন (তখন কোরান পু¯Íক আকারে প্রকাশিত হয়নি)। নবী ও নবী পরবতী খলিফাগন এদেরকে হাদিস তৈরী এবং কোরান ও হাদিস অনুযায়ী রায় প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে খলিফা কিংবা বাদশাগন তাদেরকে মসনদের পাশের আসনে বসিয়েছেন। অনেকটা বৈদিক যুগে হিন্দু রাজা মহারাজারা যা করেছিলেন।
মুসলিম সমাজের এ শ্রেণীর মানুষ গুলি এ পদ্ধতিটি চালু হবার পর থেকে সমাজের উচু আসনে অধিষ্ঠিত হয়ে আছেন। তাদের আর্থিক কষ্ট কিংবা সামাজিক মর্যাদার কথা চিন্তা করতে হত না। যেমনটি হিন্দু সমাজে সেই বৈদিক যুগেও একটি শব্দ ছিল দরিদ্র ব্রাম্মন, কিন্তু কদাচিত কখনো শুনা কিংবা দেখা যায়নি দরিদ্র মৌলভী, হাফেজ, ক্কারী, শায়েখ ইত্যাদি।
যাহোক, হিন্দু সমাজের সমাজে ধর্ম রক্ষনাবেক্ষন, সংরক্ষন, নির্দেশনা দান, ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট কাজের মত ইসলাম ধর্মেও মৌলভী, হাফেজ, ক্কারী, শায়েখদের মত এত একদল লোক কাজ গুলি করে থাকে। নতুন কোন জন্ম কিংবা কারো মৃত্যু, নিকাহ (বিবাহ), তালাক (ছাড়াছাড়ি), হিন্দুদের পূর্জাচ্চনার মত মিলাদ/মৌলুদ ইত্যাদিতে এ শ্রেণীর যে কোন একজন এমামতি (পৌরহিত্য) করেন। দৈনন্দিন নামায পরিচালনার ক্ষেত্রেও এ শ্রেণীর একজনই পরিচালনা করেন।
হিন্দু ধর্মের বেদোক্ত নিয়মেই অর্থাৎ ব্যক্তির গুন ও কর্ম ভেদে যে কেহ এ দলের অংশীদারিত্ব গ্রহণ করতে পারে। কেহ মৌলভীর ছেলে মৌলবী না হয়ে ধর্মীয় পড়াশুনা এবং কার্যাবলীতে অংশগ্রহনের গুন অর্জনের মাধ্যমে এ দলের অংশ গ্রহণ করতে পারে।
******ক্রমশ চলবে*******
মজার বিষয় কি জানেন, একটা ধর্ম উৎপত্তির পর যত সময় যায়, ধীরে ধীরে মানুষ ধর্মের মূল বিষয়গুলো থেকে সরে আসে। মানুষ নিজেই বিভিন্ন নিয়ম তৈরী করে। এলাকাগত ট্রেডিশন, একই এলাকার অন্যান্য ধর্মের সংস্পর্শ ইত্যাদির দ্বারা নিয়মগুলো তৈরী হয়। এক সময় দেখা যায়, ধর্মের মূল কথাগুলোর কথা কেউ জানেনা, মানুষ যেটা দেখাচ্ছে, সেগুলোকেই মনে হয় ধর্মের মূল বিষয়।
ReplyDelete